পিকে (ইংরেজি: PK; অনু. মাতাল)[৪] ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয়হাস্যরসাত্মক-নাট্য চলচ্চিত্র।[৫][৬][৭] এই চলচ্চিত্রটির পরিচালক রাজকুমার হিরানী এবং প্রযোজক হিরানী, বিধু বিনোদ চোপড়া ও সিদ্বার্থ রায় কাপুর। এই চলচ্চিত্রের কাহিনী লিখেছেন রাজকুমার হিরানী এবং অভিজিৎ জোশী।[৮] ২০১৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রের পিকে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আমির খান এবং অন্যান্য চরিত্রে অনুষ্কা শর্মা, সুশান্ত সিং রাজপুত, সঞ্জয় দত্ত, বোমান ঈরানী ও সৌরভ শুকলা। চলচ্চিত্রটিতে পিকে নামের এক মানব-আকৃতির ভিনগ্রহবাসীর গল্প বলা হয়েছে, যে এক তরুণী টিভি সাংবাদিকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে এবং ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
নির্মাতা হিরানীর মতে চলচ্চিত্রে তিনি আমিরের পিকে চরিত্রটি আব্রাহাম কোভুর নামে এক যুক্তিবাদীর বাস্তব জীবনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সাজিয়েছেন।[৯]
কাহিনী
সুদূর মহাকাশের পৃথিবী-সদৃশ এক গ্রহ থেকে মানুষের গঠন ও আকৃতিবিশিষ্ট একটি প্রাণী (আমির খান) পৃথিবীতে আসে। অবতরণের কিছু পরেই তার গলায় ঝোলানো লকেট আকৃতির রিমোট চুরি হয়ে যায়, যেটা দিয়ে সে নিজের মহাকাশ-যানকে ফিরিয়ে আনতে পারতো। রিমোটের খোঁজে পৃথিবীর মানুষের বৈচিত্রময় ভাষা, নিয়ম-রীতি, ধর্ম ও সংস্কৃতির সম্পর্কে ধারণাহীন পিকে একের পর এক নতুন নতুন মতানৈক্যের সমস্যায় পড়তে থাকে, উক্ত যাত্রায় নিজ অদ্ভুত আচরণের জন্য সে প্রায় সবার কাছ থেকে পিকে (মাতাল) উপাধি ডাকনাম হিসেবে লাভ করে। ঈশ্বরকে ক্রমাগত খুঁজে চলে পিকে যে একমাত্র তার হারানো রিমোটটি ফিরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু ইশ্বর খুঁজতে গিয়ে সে এও বুঝতে পারে যে প্রত্যেক ধর্ম নিজেদের মত করে ঈশ্বরকে ব্যখা করেছে এবং ঈশ্বর ব্যবসার অস্ত্রে পরিণত। এক পর্যায়ে এক গুজরাটি ব্যান্ডবাদক বড়ভাই ভৈরন সিংহ (সঞ্জয় দত্ত) ও এক দুঃসাহসী তরুণী টিভি সাংবাদিক জগজ্জননী সাহানি বা জাগগু'র (অনুষ্কা শর্মা) সাহায্য নিয়ে সেগুলো নিরসনে একরোখাভাবে লেগে থাকে। প্রচন্ড কৌতূহলী এলিয়েনটি একপর্যায়ে আবিষ্কার করে যে কুসংষ্কার ও ধর্মান্ধতার আশ্রয় নিয়ে তপস্বী মহারাজ (সৌরভ শুকলা) নাম্নী প্রতারক এক ধর্মগুরু তার চুরি যাওয়া বিরল আকৃতির দৃষ্টিনন্দন রিমোটটিকে বেদখল করে ধর্মাশ্রয়ী মিথ্যা ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছে। এরপর ঐ ধর্মগুরুর সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের তুমুল প্রকাশ্য বিতর্ক, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও টেলিভিশনে সরাসরি তর্কযুদ্ধে তাকে প্রতারক ও মিথ্যা প্রমাণের পর সবশেষে সে তার রিমোট ফিরে পায়। পাশাপাশি এরই মধ্য দিয়ে অভূতপূর্বভাবে উপহার দেয় বিশ্বমানবতার অন্ধ ধর্মীয় বিশ্বাস ও কুসংষ্কার নিয়ে বিভ্রান্তি ও মতানৈক্যের এক সার্বজনীন, চিরসত্য, যৌক্তিক ও বাস্তববাদী সমাধান।