জেনন

গ্যাসীয় মৌলিক পদার্থ যার পারমাণবিক সংখ্যা ৫৪
(Xenon থেকে পুনর্নির্দেশিত)

জেনন পর্যায় সারণীর ৫৪তম মৌলিক পদার্থ। এটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস

জেনন   ৫৪Xe
Spectral lines of Xenon
উচ্চারণ
উপস্থিতিবর্ণহীন গ্যাস
আদর্শ পারমাণবিক ভরAr°(Xe)
পর্যায় সারণিতে জেনন
হাইড্রোজেনহিলিয়াম
লিথিয়ামবেরিলিয়ামবোরনকার্বননাইট্রোজেনঅক্সিজেনফ্লোরিননিয়ন
সোডিয়ামম্যাগনেসিয়ামঅ্যালুমিনিয়ামসিলিকনফসফরাসসালফারক্লোরিনআর্গন
পটাশিয়ামক্যালসিয়ামস্ক্যান্ডিয়ামটাইটেনিয়ামভ্যানাডিয়ামক্রোমিয়ামম্যাঙ্গানিজআয়রনCobaltNickelCopperZincGalliumGermaniumArsenicSeleniumBromineKrypton
RubidiumStrontiumYttriumZirconiumNiobiumMolybdenumTechnetiumRutheniumRhodiumPalladiumSilverCadmiumIndiumTinAntimonyTelluriumIodineXenon
CaesiumBariumLanthanumCeriumPraseodymiumNeodymiumPromethiumSamariumEuropiumGadoliniumTerbiumDysprosiumHolmiumErbiumThuliumYtterbiumLutetiumHafniumTantalumTungstenRheniumOsmiumIridiumPlatinumGoldMercury (element)ThalliumLeadBismuthPoloniumAstatineRadon
FranciumRadiumActiniumThoriumProtactiniumUraniumNeptuniumPlutoniumAmericiumCuriumBerkeliumCaliforniumEinsteiniumFermiumMendeleviumNobeliumLawrenciumRutherfordiumDubniumSeaborgiumBohriumHassiumMeitneriumDarmstadtiumRoentgeniumCoperniciumNihoniumFleroviumMoscoviumLivermoriumTennessineOganesson
Kr

Xe

Rn
আয়োডিনজেননসিজিয়াম
পারমাণবিক সংখ্যা৫৪
মৌলের শ্রেণীনিষ্ক্রিয় গ্যাস
গ্রুপগ্রুপ  ১৮; (নিষ্ক্রিয় গ্যাস)
পর্যায়পর্যায় ৫
ব্লক  পি-ব্লক
ইলেকট্রন বিন্যাস[Kr] ৪d১০ ৫s ৫p
প্রতিটি কক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা2, 8, 18, 18, 8
ভৌত বৈশিষ্ট্য
দশাgas
গলনাঙ্ক161.4 কে ​(-111.7 °সে, ​-169.1 °ফা)
স্ফুটনাঙ্ক165.03 K ​(-108.12 °সে, ​-162.62 °ফা)
ঘনত্ব5.894 গ্রা/লি (০ °সে-এ, ১০১.৩২৫ kPa)
ত্রৈধ বিন্দু161.405 কে, ​81.6[৫] kPa
পরম বিন্দু289.77 কে, 5.841 MPa
ফিউশনের এনথালপি2.27 kJ·mol−১
বাষ্পীভবনের এনথালপি12.64 kJ·mol−১
তাপ ধারকত্ব20.786 J·mol−১·K−১
বাষ্প চাপ
P (Pa)১০১০০১ k১০ k১০ k
at T (K)8392103117137165
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য
জারণ অবস্থা0, +1, +2, +4, +6, +8 ​rarely more than 0)
(weakly acidic oxide
তড়িৎ-চুম্বকত্ব2.6 (পলিং স্কেল)
পারমাণবিক ব্যাসার্ধcalculated: 108 pm
সমযোজী ব্যাসার্ধ130 pm
ভ্যান ডার ওয়ালস ব্যাসার্ধ216 pm
বিবিধ
কেলাসের গঠন ​face-centered cubic (fcc)
Cubic face centered জন্য কেলাসের গঠনজেনন
শব্দের দ্রুতি(liquid) 1090 m·s−১
তাপীয় পরিবাহিতা5.65x10-3  W·m−১·K−১
চুম্বকত্বnonmagnetic
ক্যাস নিবন্ধন সংখ্যা7440-63-3
জেননের আইসোটোপ
প্রধান আইসোটোপ[৬]ক্ষয়
প্রাচুর্যতাঅর্ধায়ু (t১/২)মোডপণ্য
১২৪Xe০.০৯৫%১.৮×১০২২ y[৭]εε১২৪Te
১২৫Xeসিন্থ১৬.৯ hβ+১২৫I
১২৬Xe০.০৮৯%স্থিতিশীল
১২৭Xeসিন্থ৩৬.৩৪৫ dε১২৭I
১২৮Xe১.৯১০%স্থিতিশীল
১২৯Xe২৬.৪০১%স্থিতিশীল
১৩০Xe৪.০৭১%স্থিতিশীল
১৩১Xe২১.২৩২%স্থিতিশীল
১৩২Xe২৬.৯০৯%স্থিতিশীল
১৩৩Xeসিন্থ৫.২৪৭ dβ১৩৩Cs
১৩৪Xe১০.৪৩৬%স্থিতিশীল
১৩৫Xeসিন্থ৯.১৪ hβ১৩৫Cs
১৩৬Xe৮.৮৫৭%২.১৬৫×১০২১ y[৮][৯]ββ১৩৬Ba
বিষয়শ্রেণী [[:বিষয়শ্রেণী:জেনন|বিষয়শ্রেণী: জেনন]]
লুয়া ত্রুটি মডিউল:Navbar এর 58 নং লাইনে: শিরোনাম অবৈধ তথ্যছক_জেনন | তথ্যসূত্র

আবিষ্কার

ক্রিপ্টন এবং নিয়ন আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানী উইলিয়াম র‍্যামজি এবং মরিস ট্র্যাভার্স তরল বায়ু নিয়ে তাদের গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৮৯৮ সালের ১১ই জুলাই তারা যথারীতি তরল বায়ুকে বিভিন্ন অংশে পৃথক করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। মধ্যরাত্রির মধ্যে তারা ৫০-টিরও বেশি অংশ সংগ্রহ করেন এবং ৫৬তম অংশে গিয়ে ক্রিপ্টন পান। এরপর যন্ত্রটিকে আরও উত্তপ্ত করে ৫৭তম অংশ পান যাতে মূলত কার্বন ডাই অক্সাইড ছিল। তখনই এ গবেষণা চালিয়ে যাবেন কি-না এ নিয়ে তারা আলোচনা করেন এবং আলোচনার শেষে এর উপযোগিতা সম্বন্ধে নিশ্চিত হন। অগত্যা গবেষণা চালিয়ে যান। পরের দিন সকালে এই ৫৭তম অংশের বর্ণালী বিশ্লেষণ করে বিস্মিত হন, কারণ তা একেবারেই অস্বাভাবিক ছিল। তৎক্ষণাৎ তারা সিদ্ধান্তে আসেন যে, এটি একটি নতুন মৌল। সে হিসেবে ১৮৯৮ সালের ১২ই জুলাই তারিখে জেনন আবিষ্কৃত হয়।[১০] ১৯০২ সালে উইলিয়াম র‍্যামজি উল্লেখ করেন, বায়ুতে জেননের পরিমাণ দুই কোটি ভাগের এক ভাগ।

নামকরণ

উইলিয়াম র‍্যামজি নতুন এই গ্যাসের নাম প্রস্তাব করেন জেনন। শব্দটি গ্রিক শব্দ ξένον (জেনন) থেকে এসেছে যা ξένος (জেনোস) শব্দের একবচন। গ্রিক ভাষায় জেনোস শব্দের অর্থ আগন্তুক

ইতিহাস

জেনন সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন স্কটল্যান্ডের বিজ্ঞানী উইলিয়াম র‍্যামসে ও ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী মরিস ট্র‍্যাভের্স ১৮৯৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, ক্রিপ্টননিয়ন আবিষ্কারের কয়েকদিন পরে। বাষ্পীভূত তরল গ্যাসের অবশিষ্টাংশ হিসেবে তাঁরা জেননকে আবিষ্কার করেন। র‍্যামসে গ্রিক শব্দ থেকে জেনন নামটি গ্রহণ করেন যার সমার্থক শব্দ ছিল "বিদেশি", " অতিথি", "আগন্তুক" ও এই নামটিই আবিষ্কৃত মৌলের নাম রাখার জন্য প্রস্তাব দেন। ১৯০২ সালে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে জেননের অনুপাত সম্পর্কে অনুমিত ধারণা প্রদান করেন। তাঁর মতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের উপাদানের ২০ মিলিয়নের এক ভাগ জেনন দখল করে আছে।

১৯৩০ সালের দিকে আমেরিকান প্রকৌশলী হ্যারোল্ড এজার্টন অতি দ্রুত গতিসম্পন্ন আলোকচিত্রের জন্য স্ট্রোব লাইট প্রযুক্তি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন। ফলস্বরূপ একদিন তিনি জেনন বাতি আবিষ্কার করেন। জেনন গ্যাস ভর্তি একটি টিউবের মধ্য দিয়ে অল্পখানি বিদ্যুৎ প্রবাহ হওয়ার কারণে বাতিটিতে আলো জ্বলে ওঠে। এই প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে এজার্টন ১৯৩৪ সালে মাত্র এক মিলিসেকেন্ড সময়ের জন্য জেনন বাতি দিয়ে আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছিলেন।

১৯৩৯ সালে আমেরিকান চিকিৎসক গভীর সমুদ্রের ডুবুরিদের মাতাল হয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। তিনি অতঃপর শ্বাস প্রশ্বাস সংশ্লিষ্ট সকল জিনিস পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন যে জেনন গ্যাস এক্ষেত্রে এনেস্থেসিয়া হিসেবে ব্যবহার করা যায়৷ রাশিয়ান টক্সিকোলজিস্ট (বিষ-সংক্রান্ত বিষয়ে জ্ঞানী) নিকোলায় ভি. লাজারেভ সর্বপ্রথম ১৯৪১ সালে জেনন এনেস্থেসিয়ার উপর গবেষণা চালান কিন্তু গবেষণার বিবরণ প্রকাশিত হয় ১৯৪৬ সালে আমেরিকান চিকিৎসা গবেষক জন এইচ দ্বারা।

লরেন্স ইঁদুরের উপর প্রথমে জেনন এনেস্থেসিয়া প্রয়োগ করেন। চিকিৎসায় সর্বপ্রথম জেনন এনেস্থেসিয়ার প্রয়োগ হয় ১৯৫১ সালে। আমেরিয়ান চিকিৎসক স্টুয়ার্ট সি কুলেন সফলভাবে দুইজন রোগীর উপরে জেনন এনেস্থেসিয়া প্রয়োগে সক্ষম হন। [১১]

জেনন এবং অন্যান্য কিছু উৎকৃষ্ট গ্যাসকে একসময় রাসায়নিকভাবে নিষ্ক্রিয় মনে করা হতো। অর্থাৎ, ভাবা হতো যে এরা রাসায়নিক বিক্রিয়াতে অংশ নেয় না ও যৌগ গঠন করে না। যা হোক, একদিন ইউনিভার্সিটি অফ কলোম্বিয়ার একজন রসায়নবিদ নেইল বার্টলেট আবিষ্কার করেন যে প্লাটিনাম হেক্সাফ্লুরাইড (PtF₆)একটি শক্তিশালি বিজারক ও এটি অক্সিজেন গ্যাসের (O₂) জারণ ঘটিয়ে ডাইঅক্সিজেনাইল হেক্সাফ্লুরোপ্লাটিনেটে (O₂⁺[PtF₆]⁻) রূপান্তর করে।[১২] যেহেতু অক্সিজেন (১১৬৫ কিলোজুল/মোল) ও জেননের (১১৭০ কিলোজুল/মোল) আয়নিকরণ বিভব প্রায় সমান তাই বার্টলেট অনুমান করেন যে প্লাটিনাম হেক্সাফ্লুরাইডও বোধহয় জেননকে জারিত করতে পারবে। ১৯৬২ সালের ২৩শে মার্চ তিনি গ্যাসদ্বয়ের বিক্রিয়া ঘটান ও এবং সর্বপ্রথম উৎকৃষ্ট গ্যাস যৌগটি প্রস্তুত করেন যার নাম জেনন হেক্সাফ্লুরোপ্লাটিনেট। [১৩][১৪]

জেনন স্পেকট্রাম

বার্টলেট ভেবেছিলেন যে এক্ষেত্রে আয়নিক রূপ হবে Xe⁺ (PtF₆⁻)। কিন্তু পরে জানা যায় যে এটি আসলে বিভিন্ন ধরনের জেনন লবণের মিশ্রণ। [১৫][১৬][১৭] এর পর থেকে অনেক ধরনের জেনন যৌগ আবিষ্কৃত হয়েছে।[১৮] যেমনঃ আর্গন, ক্রিপ্টনরেডন এর সাথে বিক্রিয়া করে জেনন আর্গন ফ্লুরোহাইড্রাইড (HArF), ক্রিপ্টন ডাইফ্লুয়োরাইড(KrF2) ও র‍্যাডন ফ্লুওরাইড তৈরি করে৷[১৯][২০][২১][২২] ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সর্বমোট ৮০ টি জেনন যৌগ আবিষ্কৃত হয়েছে। [২৩][২৪]১৯৮৯ সালের নভেম্বর মাসে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিন্স কর্পোরেশন (আইবিএম) একটি প্রযুক্তি দেখায় যা পরমাণুকে নিজের মত করে ব্যবহার করতে পারে৷ পরবর্তীতে স্ক্যানিং টানেলিং মাইক্রোস্কোপ-এর মাধ্যমে জেনন পরমাণুকে সমতলে স্থাপন করা হয়। উল্লেখ্য, স্ক্যানিং ট্যানেলিং মাইক্রোস্কোপ দ্বাএয়া কোনো ছবি বা বস্তুর ভেতরের পরমাণু সূক্ষভাবে দেখা যায়। এটি ছিল পরমাণুসমূহের কোনো সমতল স্থানে স্থাপনের প্রথম ঘটনা। [২৫]

বৈশিষ্ট্য

জেননের পারমাণবিক সংখ্যা ৫৪, যা দ্বারা বোঝায় জেননের নিউক্লিয়াস ৫৪টি প্রোটন ধারণ করে। আদর্শ তাপমাত্রা ও চাপে জেনন গ্যাসের ঘনত্ব ৫.৭৬১ কিলোজুল/মোল, যা সমুদ্র সমতলে পৃথিবীর ঘনত্বের (১.২১৭ কিলোজুল/মোল) প্রায় ৪.৫ গুণ। [২৬] তরল হিসেবে জেননের ঘনত্ব ৩.১০০ গ্রাম/মিলিলিটার। ত্রৈধবিন্দুতে এর ঘনত্ব হয় সর্বাধিক। [২৭] তরল জেননের পারমাণবিক সংখ্যা উচ্চ হওয়ার কারণে এর যথেষ্ট পোলারায়ন ক্ষমতা আছে যার কারণে এটি একটি শক্তিশালী দ্রাবক হিসেবে ক্রিয়া করে। এটি জৈব যৌগ বা হাইড্রোকার্বন, জৈব কণা এমনকি পানিকেও দ্রবীভূত করতে পারে৷[২৮] একইভাবে, আদর্শ তাপমাত্রা ও চাপে কঠিন জেননের ঘনত্ব ৩.৬৪০ গ্রাম/ঘন সে.মি, যা গ্রানাইট এর ঘনত্ব (২.৭৫ গ্রাম/ঘন সে.মি) অপেক্ষা তুলনামূলকভাবে বেশি।[২৭] চাপ প্রয়োগ যখন গিগাপ্যাসকেল এককে পৌঁছে তখন জেনন ধাতব দশায় উত্তীর্ণ হয়। [২৯]

নিম্ন চাপে কঠিন জেনন Face-centred Cubic কেলাস থেকে Hexagonal close packed কেলাসে পরিণত হয় এবং ১৪০ গিগাপ্যাস্কেল চাপে পুনরায় কঠিন (ধাতব) অবস্থায় রূপধারণ করতে থাকে। কঠিন বা মেটাল রূপ ধারণের সময় জেনন আকাশী ও নীল রঙ প্রাপ্ত হয় কারণ এটি লাল রঙ শোষণ করে ও অন্যান্য দৃশ্যমান কম্পাঙ্ক নির্গত করে। এমন বৈশিষ্ট্য কোনো ধাতুর সাধারণত দেখা যায় না তবে জেননের এরূপ হয় তুলনামূলক ক্ষুদ্র ইলেক্ট্রন ব্যান্ডের কারণে। [৩০][৩১]

কক্ষ তাপমাত্রায় কঠিন কোনো খনিজ দ্রব্যে Xe⁺ আয়ন স্থানান্তর করলে তরল কিংবা কঠিন জেনন ন্যানোকণা তৈরি করা সম্ভব। কিছু কঠিন পদার্থের ল্যাটিস ধ্রুবক জেননের ল্যাটিস ধ্রুবকের চেয়ে ছোট। যার কারণে জেননের স্থানান্তরকৃত Xe⁺ আয়নের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং কখনো কখনো এই চাপের প্রভাবে জেনন তরল বা কঠিনে রূপান্তরিত হয়৷ [৩২]

জেনন গ্যাসের যোজনী শুন্য। অর্থাৎ এর শেষ কক্ষপথ অষ্টক পূর্ণ বা যোজ্যতাস্তর আটটি ইলেকট্রন দ্বারা পূর্ণ যে কারণে এটি উৎকৃষ্ট বা নিষ্ক্রিয় গ্যাস যা কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেয় না। আটটি ইলেক্ট্রন যোজ্যতাস্তরে থাকার ফলে স্থায়ী, কম শক্তিসম্পন্ন গঠন তৈরি হয় যাতে শেষ কক্ষপথের ইলেক্ট্রন শক্তভাবে আবদ্ধ থাকে। [৩৩]

গ্যাসভর্তি পাত্রে ইলেক্ট্রিক ডিসচার্জের ফলে উত্তেজিত হলে জেনন নীল কিংবা হালকা বেগুনি রঙ- এর আলো নির্গত করে।[৩৪] জেনন দৃশ্যমান বর্ণালি রেখা নির্গত করে এবং সবচেয়ে তীব্র রেখা উৎপন্ন হয় নীল আলোর এলাকায়। [৩৫]

সংঘটন ও প্রস্তুতি

পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে জেনন একটি ট্রেস গ্যাস যার পরিমাণ হলো ৮৬-৮৮ প্রতি বিলিয়নে এক অংশ, অথবা অনুমান করা হয় এর পরিমাণ প্রতি ১১.৫ মিলিয়নে ১ অংশ।[৩৬] খনিজ ঝর্ণা হতে বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান থেকেও জেনন আহরণ করা হয়৷

বাণিজ্যিকভাবে বায়ুকে অক্সিজেননাইট্রোজেন মৌলে আলাদা করার সময় উৎপাদ হিসেবে জেনন পাওয়া যায়৷[৩৭] এ বিভক্তিকরণ প্রক্রিয়া হয় আংশিক পাতন এর মাধ্যমে। এভাবে বায়ুর উপাদান আলাদা করার সময় তরল অক্সিজেন তৈরি হয় যা ক্ষুদ্র পরিমানে জেনন ও ক্রিপ্টন ধারণ করে৷ পরবর্তীতে আংশিক পাতন প্রক্রিয়া সচল রেখে তরল অক্সিজেনকে মিশ্রণে ০১%-০.২% জেনন কিংবা ক্রিপ্টন ধারণে বাধ্য করা হয়, যা হয় সিলিকা জেল আর নয়ত পাতন থেকে সংগ্রহ করা হয়। অবশেষে, আবারও পাতন প্রক্রিয়া চালু করে জেনন ও ক্রিপ্টনের মিশ্রণ থেকে জেনন এবং ক্রিপটনকে আলাদা করা হয়। [৩৮][৩৯]

১৯৯৮ সালে বিশ্বব্যাপী জেননের মোট প্রস্তুতির পরিমাণ ছিল ৫০০০ থেকে ৭০০০ ঘনমিটার। গ্যাসটির দুর্লভতার জন্য অন্যান্য উৎকৃষ্ট গ্যাস হতে এটি বেশি ব্যয়বহুল। ১৯৯৯ সালে ইউরোপে ১ লিটার জেননের দাম ছিল প্রায় ১০ ইউরো, যেখানে ক্রিপ্টন ও জেননের দাম ছিল যথাক্রমে ১ ইউরো ও ০.২০ ইউরো (প্রায়) এবং ১ লিটারের বেশি পরিমানে আর্গনের দাম তুলনামূলকভাবে আরো কম ছিল। [৪০]

সৌরজগতে জেননের নিউক্লিওন বিভাজন ১.৫৬x১০^-৮। [৪১]সূর্য, পৃথিবী, গ্রহাণুধূমকেতুতে জেননের মাত্রা যথেষ্ট কম। বৃহস্পতি গ্রহে জেননের পরিমাণ সূর্যে জেননের পরিমানের ২.৬ গুণ কম।[৪২][৪৩] জেননের পরিমাণ স্থানভেদে এমন কম হওয়ার কারণ এখনো জানা যায়নি তবে ধারণা করা হয়, প্রিসোলার ডিস্ক উত্তপ্ত হওয়ার আগে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপগ্রহাংশের জন্য স্থানভেদে জেননের পরিমাণ এরূপ কম হয়৷[৪৪] (অন্যথায়, জেননের প্ল্যানেটেসিমালসের বরফে থাকার কথা না)। ইংরেজিতে উক্ত ক্ষুদ্র উপগ্রহের অংশগুলোকে এদেরকে প্ল্যানেটেসিমালস বলা হয়৷ পৃথিবীতে জেনন কোয়ার্টজ এর সহায়তায় অক্সিজেনের সাথে সমযোজী বন্ধন গঠন করে, যার ফলে জেননের মাত্রা হ্রাস পায়। [৪৫]

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী