দার্দীয় ভাষাসমূহ
দার্দীয় ভাষাগুলি ইন্দো-ইরানীয় কতগুলি ভাষার একটি দল, যা পূর্ব আফগানিস্তান, উত্তর পাকিস্তান এবং বিতর্কিত জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে প্রচলিত।
দার্দীয় | |
---|---|
ভৌগোলিক বিস্তার | আফগানিস্তান (পূর্ব) ভারত (উত্তর-পশ্চিম) পাকিস্তান (উত্তর) |
ভাষাগত শ্রেণীবিভাগ | ইন্দো-ইউরোপীয়
|
দার্দীয় ভাষাগুলিকে সাধারণত ইরানীয় ভাষাসমূহ কর্তৃক প্রবলভাবে প্রভাবিত ইন্দো-আর্য ভাষার একটি উপদল হিসেবে গণ্য করা হয়। কোন কোন ভাষাবিজ্ঞানী এই ভাষাগুলিকে ইন্দো-আর্য ও ইরানীয় --- এই দুই শাখা হতেই স্বতন্ত্র একটি শাখার ভাষা হিসেবে দাবী করেন, কিন্তু তাদের এই দাবী বিতর্কিত।
আফগানিস্তানে প্রচলিত নুরিস্তানি ভাষাগুলিকেও কখনো কখনো দার্দীয় ভাষা বলে উল্লেখ করা হত, তবে বর্তমানে এগুলিকে দার্দীয় অপেক্ষা আলাদা একটি শাখা (ইন্দো-আর্য ভাষার একটি উপশাখা বা ইন্দো-ইরানীয় ভাষার স্বতন্ত্র শাখা) হিসেবে গণ্য করা হয়।
কাশ্মিরি ভাষা বাদে সব দার্দীয় ভাষাই অত্যন্ত ক্ষুদ্র, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে প্রচলিত ভাষা বলে এগুলি ঠিকমত এখনও গবেষণা সম্পন্ন হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলি পাহাড়ি অঞ্চলে, কিংবা সশস্ত্র যুদ্ধ চলছে এমন অঞ্চলে প্রচলিত বলে এগুলি নিয়ে সরাসরি গবেষণাকাজ পালন করা দুরূহ। প্রায় সমস্ত দার্দীয় ভাষাই পার্শ্ববর্তী অ-দার্দীয় ভাষাগুলির দ্বারা ঐতিহাসিকভাবে প্রভাবিত হয়েছে, তাই এগুলি ঠিকমত শ্রেণীকরণ করাও কষ্টসাধ্য।
দার্দীয় ভাষাগুলিকে মোটামুটি ছয় ভাগে ভাগ করা যায় [১]: পাশাই, কুনার, চিত্রাল, কোহিস্তানি, শিনা এবং কাশ্মিরি। কাশ্মিরি ভাষায় প্রায় ৪০ লক্ষ লোক কথা বলেন। চিত্রাল দলের খোওয়ার ভাষায় প্রায় ৩ লক্ষ লোক কথা বলেন।
দার্দীয় ভাষাগুলির মধ্যে কেবল কাশ্মিরি ভাষাটিরই একটি উন্নত সাহিত্য আছে যার সর্বপ্রাচীন প্রাপ্ত নিদর্শন ১৩শ শতকে রচিত হয়েছিল। পূর্বে কাশ্মিরি ভাষা শারদা লিপিতে লেখা হত, তবে বর্তমানে এটি ফার্সি-আরবি লিপির অনুকরণে নির্মিত নাস্তালিক লিপিতে রচিত হয়। শিনা ভাষাগুলি ও খোওয়ার ভাষার জন্যও ফার্সি-আরবি লিপির একটি রূপভেদ ব্যবহার করে একটি লিখন পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে।