হিলদা (গায়িকা)
মিরিয়াম আলেহান্দ্রা বিয়াঞ্চি (স্পেনীয়: Gilda; জন্ম: ১১ অক্টোবর, ১৯৬১ - মৃত্যু: ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬) বুয়েন্স আয়ার্সে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা আর্জেন্টিনীয় কুম্বিয়া ধাঁচের গায়িকা ও বিশিষ্ট গীতিকার ছিলেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সময়কালে আর্জেন্টিনার গানের ভুবনে তিনি হিলদা নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন।
হিলদা | |
---|---|
![]() | |
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্মনাম | মিরিয়াম আলেহান্দ্রা বিয়াঞ্চি |
জন্ম | বুয়েনোস আইরেস, আর্জেন্টিনা | ১১ অক্টোবর ১৯৬১
মৃত্যু | সেপ্টেম্বর ৭, ১৯৯৬ ভিলা পারানাসিতো, আর্জেন্টিনা | (বয়স ৩৪)
ধরন | কুম্বিয়া |
পেশা | গায়িকা |
কার্যকাল | ১৯৯১-১৯৯৬ |
প্রারম্ভিক জীবন
প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্র গিল্ডায় রহস্যময়ী ও নৈরাশ্যবাদী নারীর স্থবির চরিত্ররূপে রিটা হেওয়ার্থের অসামান্য অভিনয়ের প্রেক্ষিতে ও হেওয়ার্থের সম্মানার্থে সঙ্গীতাঙ্গনে তিনি এ নামে নামাঙ্কিত হন। ক্যাথলিক স্কুলে সঙ্গীত উৎসব আয়োজনকালে হিলদা সঙ্গীতের দিকে ঝুঁকে পড়েন।
কর্মজীবন
বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ ও প্রতিনিধি জুয়ান কার্লোস ‘টোটি’ গিমেনেজের সাথে স্বাক্ষাতের পর বিকল্প গায়িকা হিসেবে ‘লা বারা’ ব্যান্ডে যোগদান করেন। এর অল্পকিছুদিন পর দ্বিতীয় ব্যান্ড দল ‘ক্রেমা আমেরিকানা’য় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯৩ সালে গিমেনেজের পরামর্শক্রমে এককভাবে সঙ্গীত জীবনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। স্থানীয় লেবেল মাজেন্টার সাথে চুক্তিবদ্ধ হন ও দে কোরাসন আ কোরাসন ("হৃদয় থেকে হৃদয়ে") শিরোনামীয় গান যন্ত্রে ধারণ করেন। পরের বছর কোরাসন এররিদো ("ভগ্ন হৃদয়") ও লা পুয়ের্তা ("দরজা") সমৃদ্ধ লা উনিকা ("অদ্বিতীয়া") মুক্তি পায়।
১৯৯৫ সালে পাসিতো আ পাসিতো ("পায়ে পায়ে") মুক্তি পায়। এতে নো মি আরেপিয়েন্তো দে এস্তে আমর ("এই প্রেম নিয়ে আমার অনুশোচনা নেই") শিরোনামীয় গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। উল্লেখ্য এ গানটি তার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় গানগুলোর অন্যতম ছিল।
দেহাবসান
৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় হিলদা-র দেহাবসান ঘটে। এ সময় তিনি তাঁর সর্বশেষ ও সর্বাপেক্ষা সফলতম অ্যালবাম কোরাসন বালিয়েন্তে-র ("সাহসী হৃদয়") প্রচারণায় দেশব্যাপী ভ্রমণ করছিলেন। মা, নিজ কন্যা, তিনজন সঙ্গীতশিল্পী ও বাস চালক তাঁর সাথে ছিলেন। এন্ত্রে রিওস প্রদেশের ন্যাশনাল রুট ১২-এর ১২৯ কিলোমিটার সামনে এক ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে তারা সবাই নিহত হন।
কীর্তগাঁথা
মৃত্যুর অল্পকিছুদিন পরই হিলদা তাঁর সমর্থকদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব খ্যাতি অর্জন করেন ও কেউ কেউ তাঁকে ‘সন্ন্যাসিনী’ নামে আখ্যায়িত করেন।[১][২] তার জন্মদিনে শুভানুধ্যায়ীরা দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে ও নীল মোমবাতি, ফুল, উপহার ও অন্যান্য শ্রদ্ধার্ঘ্য দ্রব্যাদি রাখেন।
মৃত্যুকালীন হিলদা একটি নতুন অ্যালবাম নিয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু ঐ অ্যালবামে পাঁচটিমাত্র গান ছিল। ১৯৯৭ সালে মৃত্যু-পরবর্তীকালে ‘নো এস মি ডেসপেডিডা’ (নট মাই ফেয়ারওয়েল) শিরোনামের অ্যালবামে ঐ গানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অ্যালবামটিতে তার অন্যতম সেরা সফল গান: ‘সে মি হা পারদিদো আন কোরাজন’, দুইটি সরাসরি ধারনকৃত গান ও অন্যান্য গায়কদের গান ছিল। ১৯৯৯ সালে অপ্রকাশিত দলিল ও সংক্ষিপ্ত আকারে বিজ্ঞাপনধর্মী বিষয়াদি নিয়ে ‘লাস অ্যালাস দেল আলমা’ শিরোনামে আরও একটি অ্যালবাম মুক্তি পায়। তার সেরা অন্যান্য গানের মধ্যে ‘ফুইস্তে’ (ইউ অয়ার), ‘নো মি আরেপিয়েন্তো দে এস্তে অ্যামর’ ও ‘নো এস মি দেসপেদিদা’ উল্লেখযোগ্য।
তার কিছু গান মৃত্যু-পরবর্তীকালে পুনরায় সম্পাদনা করে প্রকাশ করা হয়। তন্মধ্যে, ‘আতাকুই ৭৭’ সংস্করণের ‘নো মি আরেপিয়েন্তো দে এস্তে অ্যামর’ অন্যতম।
গণমাধ্যমে
২০১২ সালে সাংবাদিক আলেহান্দ্রো মার্গেলিসের সম্পাদনায় গ্রুপো এডিটোরিয়াল প্লানেতা থেকে ‘হিলদা, লা আবান্দারাদা দে লা বাইলান্তা’ শিরোনামে আত্মজীবনী প্রকাশিত হয়। এটিই তার একমাত্র অনুমোদিত গ্রন্থ ছিল।[৩][৪][৫] ২০১৫ সালে বুয়েনোস আইরেসে হিলদা নাটক মঞ্চস্থ হয়। ফ্লোরেন্সিয়া বার্থহোল্ড এ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন ও ইভান এসপেচে নাটকটি পরিচালনা করেন।[৬] ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সালে তার মৃত্যুর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আত্মজীবনী নিয়ে আই’ম গিল্ডা শিরোনামীয় আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্র মুক্তি পায়।[৭] এতে হিলদা চরিত্রে উরুগুয়ে-আর্জেন্টিনা বংশোদ্ভূত নাতালিয়া ওরেইরোসহ তার মূল ব্যান্ডের বেশ কয়েকজন সঙ্গীতজ্ঞ অংশ নেন।[৮]
ডিস্কোগ্রাফী
স্টুডিও অ্যালবাম
- ১৯৯২ - দে কোরাজন এ কোরাজন - ডিসগাল এস.এ.
- ১৯৯৩ - লা ইউনিকা - ক্ল্যান মিউজিক
- ১৯৯৪ - পাসিতো এ পাসিতো কন ... (সিডি) - ক্ল্যান মিউজিক
- ১৯৯৫ - পাসিতো এ পাসিতো কন ... হিলদা (এলপি) - সান্তা ফে রেকর্ডস
- ১৯৯৫ - কোরাজন ভ্যালেন্তে (আর্জেন্টিনায় গোল্ড ও ডাবল প্লাটিনাম অ্যালবাম)
- ১৯৯৬ - সাই হে আলগুইয়েন এন তু ভিদা
- ১৯৯৭ - এন্ত্রে এল সাইলো ওয়াই লা তাইরা (মরণোত্তর) - লিডার মিউজিক
অন্যান্য অ্যালবাম
- ১৯৯৭ - ১৭ গ্রান্দেস এক্সিটস ওয়াই রেমিস্কেস - পোর সিয়েম্প্রে হিলদা - ইউনিভার্সেল মিউজিক গ্রুপ
- ১৯৯৭ - আন সুনো হেকো রিয়ালিদাদ - ম্যাগনেটিকা ডিস্কোস
- ১৯৯৮ - পোর সিয়েম্প্রে হিলদা ২২ - গ্রান্দেস এক্সিটোস ওয়াই রেমিক্সাদোস - ইউনিভার্সেল মিউজিক গ্রুপ
- ১৯৯৯ - কুয়ান্দো কান্তা এল কোরাজন - ইউনিভার্সেল মিউজিক গ্রুপ
- ১৯৯৯ - লাস অ্যালাস দেল আলমা - লিডার মিউজিক
- ১৯৯৯ - আন সুনো হেকো রিয়ালিদাদ ২ - তেমাস ইন্দেদিতোস - ম্যাগনেটিকা ডিস্কোস
- ১৯৯৯ - হিলদান্স - মিউজিকাভিসন
- ১৯৯৯ - এল অ্যালবাম দে অরো - ইউনিভার্সেল মিউজিক গ্রুপ
- ২০০০ - দেসদে এল আলমা [গ্রান্দেস এক্সিতোস] - ইউনিভার্সেল মিউজিক গ্রুপ
- ২০০৪ - কালেসিওন ফিউরিয়া ত্রপিক্যাল - ওয়ার্নার ব্রোস. রেকর্ডস
- ২০০৫ - কালেসিওন দে অরো ভল ১ - ম্যাগনেটিকা ডিস্কোস
- ২০০৫ - কালেসিওন দে অরো ভল ২ - ম্যাগনেটিকা ডিস্কোস
- ২০০৬ - ম্যাগামিক্স (২৪ হিটস) - লিডার মিউজিক
- ২০০৭ - লা ইউনিকা - লিডার মিউজিক
- ২০০৮ - লা মাস গ্রান্দে - ম্যাগনেটিকা ডিস্কোস
- ২০১১ - আন আমর ভার্দাদেরো (ডিভিডি) - লিডার মিউজিক
- ২০১১ - ২০ গ্রান্দেস এক্সিতোস - লিডার মিউজিক
- ২০১১ - নো মি আরেপাইন্তো দে এস্তে আমর - লিডার মিউজিক
- ২০১৪ - গ্রান্দেস এক্সিতোস - ম্যাগনেটিকা ডিস্কোস