হিম (চলচ্চিত্র)

হিম (ইংরেজি: Him, অনুবাদ'সে (পুরুষবাচক অর্থে)') ১৯৭৪ সালের আমেরিকান পূর্ণদৈর্ঘ্য সমকামি পর্নোগ্রাফিক চলচ্চিত্র। সমকামী দর্শকদের জন্য নির্মিত চলচ্চিত্রটি এড ডি. লুই পরিচালনা করেছিলেন।[১][২] ধারণা করা হয় পরিচালক এক্ষেত্রে ছদ্মনাম ব্যবহার করেছিলেন। চলচ্চিত্রে যিশুখৃস্ট ও তার শিষ্যদের মাঝে সমকামিতার যোগসূত্র দেখানোর প্রয়াস আছে।[২] যিশুকে একজন উদগ্র সমকামী হিসেবে চিত্রায়ণ করা হয়েছে।[৩] এইছবির সকল শিল্পী পুরুষ ছিলেন।[৪] সমকামী ম্যুরাল শিল্পী গুস্তাভ "তাভা" ভন উইল যিশুর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।[২] চিত্রনাট্যে একজন সমকামী তরুণ যিশু ও শিষ্যদের ভাতৃত্ববোধে সমকামিতার অভিপ্রায় খোঁজেন, পাশাপাশি তার সুন্দর প্রতিবেশীকে ভালবাসার জন্য বাইবেলের বিভিন্ন গল্পে সমকামিতা খুঁজে নতুন আধ্যাত্ববাদ খোঁজ করেন। ১৯৭৪ সালে মুক্তির পর ১৯৭৬ পর্যন্ত আমেরিকার বিভিন্ন বড় শহরের প্রেক্ষাগৃহে চলে তবে ১৯৭৯ পর্যন্ত চলচ্চিত্রটি সমকামি দর্শক বাদে সর্বসাধারণের অগোচরে ছিল। এটি সবচেয়ে বেশি খোঁজ করা নিখোঁজ চলচ্চিত্রগুলির একটি এবং বর্তমানে এর কোন টিকে থাকা অনুলিপি পাওয়া যায়নি।

হিম
নিউইয়র্কের ৫৫তম স্ট্রিট প্লেহাউজে প্রদর্শনীর বিজ্ঞাপন
মূল শিরোনামHim
পরিচালকএড ডি. লুই
শ্রেষ্ঠাংশেগুস্তাভ "তাভা" ভন উইল
মুক্তি
  • ২৭ মার্চ ১৯৭৪ (1974-03-27)
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি

পটভূমি

“এই উদ্ভাবনী চলচ্চিত্রটি, যিশুখৃস্টের কামোত্তেজক কর্মজীবনের বিশদ বিবরণে শুধুমাত্র সমকামী দর্শকদের জন্য নকশা করা হয়েছে। ছায়াছবির বিজ্ঞাপনগুলি ... জিজ্ঞাসা করে "আপনি কি তার যৌন জীবন সম্পর্কে আগ্রহী?" চলচ্চিত্র নির্মাতা এড ডি. লুই আমাদের সেই কৌতূহল মেটান যে মানবপুত্র একজন উদাগ্র সমকামী ছিলেন।(... কেন তিনি শিষ্যদের সাথে আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতেন?)”

—মাইকেল মেদভেদ[৫]:১৬৫

হিম চলচ্চিত্রটি একজন তরুণ সমকামী ব্যক্তি কেন্দ্রিভূত যিনি যিশুখৃস্টের জীবনের সাথে নিজের জীবনের কামোত্তেজক প্রেমমূলক স্থিরতা বিকাশ করেন। চলচ্চিত্রের শিরোনামীয় চরিত্র যিশু। তার সকল পুরুষ শিষ্যদের সাথে সময় কাটানো ও আড্ডা দেওয়ার আগ্রহ থেকে সেই সমকামি ব্যক্তি অনুমান করেন তাদের সম্পর্ক নিছক ভ্রাতৃত্ববাদের চেয়ে বেশি কিছু ছিল। যিশুর ঘটনার পাশাপাশি সেই তরুণ সমকামী পুরুষের একটি সমসাময়িক গল্প বর্ণিত হয়েছে যেখানে তরুণ তার সুন্দর সুঠাম প্রতিবেশীকে ভালবাসার জন্য সুসমাচারের সমকামি দিকগুলি খুঁজে বের করে সমকামীদের জন্য নতুন আধ্যাত্মবাদের ভাবনা বিকাশ করেন।[৬] যিশুর প্রতি আধুনিক কালের এই তরুণের কামাত্মক আকর্ষণ সুসমাচারের "গোপন অর্থ" বুঝতে সাহায্য করে।

প্রচারণা ও মুক্তি

হিম-এর প্রচারণার ক্ষেত্রে পোস্টার ও পত্রিকার বিজ্ঞাপনে পরিচালক যিশুর চরিত্রে রূপায়নকারী তাভা'র একচোখে একটি উজ্জ্বল ক্রুশ শহ মুখছবি ব্যবহার করেছেন, এছাড়া দর্শকদের আগ্রহী করার জন্য "আপনি কি তার যৌন জীবন সম্পর্কে কৌতূহলী?" প্রশ্ন জুড়ে দেয়া হয়েছিল।[৩]

হিম ১৯৭৪ সালের ২৭ শে মার্চ নিউ ইয়র্ক শহরের ১৫৪ ওয়েস্ট ৫৫ তম স্ট্রিটের ৫৫ তম স্ট্রিট প্লেহাউসে প্রথম প্রদর্শিত হয়েছিল।[৪] এখানে চলচ্চিত্রটি ১৯৭৪ সালের ২৩ মে পর্যন্ত প্রদর্শিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালের ৬ ডিসেম্বর[৭] এবং ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে প্লেহাউসে পুনরায় প্রদর্শনের জন্য মুক্তি দেয়া হয়েছিল।[৮] এটি ১৯৭৫ সালে শিকাগোর বিজু থিয়েটার,[৯] সান ফ্রান্সিসকোর নোব হিল থিয়েটার,[১০] ফিলাডেলফিয়ার সানসম সিনেমা,[১১] আটলান্টার গে পারি থিয়েটার,[১২] হাইল্যান্ড পার্কের উড সিক্স ১ থিয়েটার,[১৩] নিউ ইয়র্ক শহরে ডেভিড থিয়েটার[১৪] এবং পিটসবার্গে পেন্টহাউস II থিয়েটারে প্রদর্শিত হয়েছিল।[১৫]

নিখোঁজ চলচ্চিত্র

কার্যত ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রটি সবার অগোচরে ছিল। ১৯৮০ সালে হিম চলচ্চিত্র সম্পর্কে মাইকেল ও হ্যারি মেদভেদ রচিত বাজে ও কম বাজেটে নির্মিত চলচ্চিত্রের সমালোচনামূলক দ্য গোল্ডেন টার্কি এওয়ার্ডস বইয়ে উদ্ধৃতি দেয়ার পর চলচ্চিত্রটি সবার নজরে আসে, সেখানে হিম-কে "পর্নোগ্রাফির সবচেয়ে কম কামোত্তেজক ধারণা" শিরোনামের তালিকায় রাখা হয়েছিল।[৫]:১২২

মাইকেল মেদভেদ তাদের বইয়ে দাবী করেছিলেন, বইটি ৪২৫টি আসল চলচ্চিত্রের সমালোচনা করেছেন, ১টি সমালোচনা ভুয়া ছিল। লেখকদ্বয় পাঠকদের সেই একটি বানোয়াট চলচ্চিত্র সনাক্ত করার জন্য আহবান জানিয়েছিলেন। লেখকের এমন দাবীর কারণে অনেক ইন্টারনেট সাইট হিম চলচ্চিত্রটিকে ভুয়া এবং কখনো এটি আদৌ নির্মিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছে[১৬] যদিও নিউ ইয়র্কের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের সময় উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় ছায়াছবির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল।[২][৩] পরবর্তীতে জানা যায়, সেই বইয়ের ডগ অব নরওয়ে চলচ্চিত্র সমালোচনাটি বানোয়াট ছিল। এই কাল্পনিক চলচ্চিত্রের জন্য ব্যবহৃত স্থিরচিত্রটি মেদভেদের পোষা কুকুরের ছিল।[২]

২০২৩-এর হিসাব অনুযায়ী, চলচ্চিত্রটির কোন টিকে থাকা অনুলিপি কোথাও পাওয়া যায়নি। অনলাইন ম্যাগাজিন ফিল্ম থ্রেট এটিকে সর্বাধিক খোঁজ করা- হারিয়ে যাওয়া চলচ্চিত্রগুলির একটি হিসেবে উল্লেখ করেছে।[১৭]

মূল্যায়ন

স্ক্রু ম্যাগাজিন, ভ্যারাইটি, এবং দ্য ভিলেজ ভয়েস পত্রিকা থেকে চলচ্চিত্রটির মূল্যায়ন উন্মোচিত হয়েছে।[১][২][১৮] মাইকেল মেদভেদের মতে "নিছক স্বাদহীনতার জন্য, এই চলচ্চিত্রের কোনও সমতুল্যতা নেই।"[৩][৫]:১৬৮ ১৯৯২ সালে প্রকাশিত রয় কিনার্ড ও টিম ডেভিসের ডিভাইন ইমেজেস: এ হিস্টরি অব জেসাস অন স্ক্রিন গ্রন্থে যিশুকে নিয়ে ১৯৭৬ সালের অপর পর্নোগ্রাফি "আই স জেসাস ডাই"-এর সাথে এই ছবির উদ্ধৃতি দিয়েছেন।[৩][১৯]:১৮

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী