হিন্দ বিনতে উতবা

হিন্দ বিনতে উতবা (আরবি: هند بنت عتبة) ছিলেন উতবাহ ইবনে আবি রাবিআহ'র কন্যা এবং আবু সুফিয়ান এর স্ত্রী। উহুদের যুদ্ধের সময় হামজার কলিজা বের করে চিবিয়ে খাওয়ার জন্য কুখ্যাত হয়েছিলো,[১][২][৩] তিনি উমাইয়া খিলাফতের প্রতিষ্ঠাতা মুয়াবিয়ার মা ছিলেন।

পরিচয়

হিন্দ বিনতে উতবা এর পিতার নাম ছিলো উতবাহ ইবনে আবি রাবিআহ ইবনে আবদু মান্নাফ ইবনে আবদু শামস, এবং মায়ের নাম ছিলো সাফিয়া বিনতে উমাইয়া ইবনে হারিসা আস সুলামিয়া। তিনি মক্কার অভিজাত ‍কুরাইশ বংশের কন্যা ছিলেন।[৪][৫][৬] তার অন্য একটি পরিচয় তিনি উমাইয়া খিলাফতের প্রতিষ্ঠাতা মুআবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ানের মা।

দাম্পত্য জীবন

প্রথম বিবাহ

কুরাইশ বংশের যুবক ফাকিহ‌ ইবনে আল মুগিরা আল মাখযুমির সাথে হিন্দ এর প্রথম বিয়ে হয়, কিন্তু সে বিয়ে টেকেনি, ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ফাকিহ ইবনে আল মুগিরার ঘরে বহু মানুষের যাতায়াত ছিলো, এই ধরনের একটি ঘটনা থেকে নিছক সন্দেহের বসে, ফাকিহ ইবনে আল মুগিরা হিন্দকে ব্যভিচারী বলে তালাক দিয়ে দেয়। এরপরে হিন্দের পিতা বিষয়টি শুনে রাগান্বিত হয়, এবং ইয়ামেনের একজন বিখ্যাত ভবিষ্যদ্বক্তার নিকট বিচার পেশ করেন। ইয়ামেনের সেই ভবিষ্যৎবক্তা হিন্দকে নিষ্পাপ ঘোষণা করেন, বিখ্যাত পুত্র সন্তান মুয়াবিয়ার সুসংবাদ দেন। ফলে ফাকিহ তার স্ত্রী হিন্দকে ফেরত নিতে চায়, কিন্তু হিন্দ বিনতে উতবা অস্বীকার করেন।[৭][৮]

দ্বিতীয় বিবাহ

এরপরে আবু সুফিয়ানসুহাইল ইবনে আমর বিয়ের পয়গাম দেয়। এদের মধ্য থেকে দূরদৃষ্টিসম্পর্ণ নারী আবু সুফিয়ানকে বেছে নেয়। তার ঔরসেই মুয়াবিয়া নামের পুত্রের জন্ম জন্মগ্রহণ করে। সুহাইল ইবনে আমর হিন্দকে না পেয়ে আহত হয়ে একটি কবিতায় রচনা করেন। আবু সুফিয়ানও একটি কবিতায় তার জবাব দেন।[৯][১০]

এই হিন্দ বিনতে উতবার সাথে রূপ-সৌন্দর্যে, কাব্য প্রতিভা সম্পন্ন কিন্তু দরিদ্র ছেলে মুসাফির ইবনে আবি আমরের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো। হিন্দ তাকে পাশের কোন রাজ্যে গিয়ে কিছু সম্পদের মালিক হয়ে ফিরে আসতে বললেন। মুসাফির নিকটস্থ হিরা রাজ্যে আন নুসান ইবনে আল মুনযিরের নিকট যাওয়ার কিছুদিন পর সে জানতে পারলো আবু সুফিয়ান ইবন হারব হিন্দকে বিবাহ করেছেন। মুসাফির আহত হয়ে নিম্নের চরণ দু‘টি আবৃত্তি করেছিলো

ওহে,

হিন্দ তোমার জন্য নিষিদ্ধ হয়ে গেছে

এবং নিকৃষ্টতম নিষিদ্ধ বস্তুতে পরিণত হয়েছে।

সে এমন খারাপ মানুষের মত হয়ে গেছে যে তার অস্ত্র কোষমুক্ত করে,

তীর-ধনুক দু‘হাত দিয়ে উল্টে-পাল্টে দেখে। [১১]

ইবনে সাদ অবশ্য বলেছেন, হিন্দের প্রথম স্বামী হাফস ইবনে আল মুগিরা ইবনে আবদুল্লাহ এর ঔরসে হিন্দের পুত্র আবান জন্ম লাভ করেন।[৪]

তার দ্বিতীয় স্বামী আবু সুফিয়ান উসমানের খিলাফতকালে ইনতিকাল করলে জনৈক ব্যক্তি হিন্দের পুত্র মুয়াবিয়ার নিকট হিন্দকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠালে তিনি ভদ্রভাবে বলেন যে, তিনি এখন বন্ধ্যা হয়ে গেছেন, তার বিয়ের আর প্রয়োজন নেই।[১২][১৩]

ইসলাম পূর্ব জীবন

হিন্দ ইসলামের প্রতি প্রচণ্ড বিদ্বেষী[১৪] সত্ত্বেও প্রখর আত্মমর্যাদাবোধ এবং নারী জাতির প্রতি তীব্র সহানুভূতি সম্পন্ন নারী ছিলেন। রাসূলুল্লাহর মুহাম্মাদের কন্যা যায়নাবের মক্কা থেকে মদিনা হিজরতের সময় তিনি বহু সাহায্য করেছিলেন,

এরপর যখন যে মদিনার উদ্দেশ্যে রওনা হলো তখন কুরাইশরা তাকে বাঁধা প্রদান করলো, এবং তার সাথে খারাপ আচরণ করলো, এমনকি কুরাইশরা তাকে উটের পিঠ থেকে থাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলো ফলে, সন্তানসম্ভবা জয়নাব বেশ আঘাত পেয়েছিলো। এরফলে হিন্দ ক্ষেপে গিয়েছিলো, এবং কুরাইশদের লক্ষ্য করে বলেছিলো, "সন্ধি ও শান্তির সময় কঠিন ও কঠোর গাধার মত আচরণ করতে পার, আর রণক্ষেত্রে ঋতুবতী নারীর রূপ ধারণ কর। " [১৫][১৬]

অবশেষে হিন্দ তাকে নিজের কাছে রেখে সেবা শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন। এর ফলে কুরাইশরা তার সমালোচনা করেন।

বদরের যুদ্ধ

হিজরী ২য় সনে মক্কার কুরাইশরা আরবে নিজেদের অবস্থান সুস্থিত করতে মদিনার মুসলমানদের বিরুদ্ধে বদরের অভিযান প্রেরন করেন। এই যুদ্ধে কুরাইশদের মধ্যে বাছাইকৃত নেতারা অংশগ্রহণ করেন। মক্কার পৌত্তলিক বাহিনীতে ছিল হিন্দের পিতা উতবাহ ইবনে রাবিয়াহ, আপন ভাই, চাচা ও তার স্বামী আবু সুফিয়ান। আর মুসলিম বাহিনীতে ছিলো তার ভাই হুজাইফা ইবনে উতবা ও তাদের আযাদকৃত দাস সালিম মাওলা। হিন্দ তার ভাই হুজাইফাকে তাদের বিপক্ষে অস্ত্রধারণ করার জন্য নিন্দাবাদ জানান।[১৭][১৮]

যুদ্ধের সূচনা হলে হিন্দের পিতা উতবাহ ইবনে রাবিয়াহ, ভাই ও চাচা সহ পৌত্তলিক বাহিনীর ৭০ জন গুরুত্বপূর্ণ সৈনিকও নিহত হয়। ফলে হিন্দ ও তার স্বামী আবু সুফিয়ান এই মৃত দেহ ফেলে তাদের বাকি সৈনিকদের নিয়ে মক্কার পথে পালিয়ে যায়।

ফলে কুরাইশরা দুঃখ পেতে শুরু করলেন, এই সময়ে হিন্দ কুরাইশদের পুনরায় জাগ্রত করার জন্য বহু কবিতা রচনা করেন, এবং শপথ করেন, প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত তেল-সুগন্ধি আমার জন্য হারাম। কবিতাগুলো এরকম ছিলো।[১৯]

তোমার ধ্বংস হোক! জেনে রাখ,

আমি কাঁদছি সৎকর্মশীল উতবা, শায়বা এবং গোত্রের নিরাপত্তা বিধানকারী তার সন্তানের জন্য।

তারা সবাই গালিবের বংশধরের মধ্যে উঁচু মর্যাদার অধিকারী।

তাদের সম্মান ও মর্যাদা অনেক।’

হিন্দ প্রচুর কুরাইশদের প্রতিশোধ নেওয়ার অনুপ্রেরণায় এতই কবিতা রচনা করেছিলেন, সেগুলো তিনি উকাজ মেলায় আল খানসার সাথে আবৃত্তি করতেন।[২০]

উহুদের প্রস্তুতি

বদরের পরাজয়ের পর উহুদের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো কুরাইশরা, হিন্দও প্রায় ১৫ জন মহিলা সুসংগঠিত করলো নিজের নেতৃত্বে।[২১] মক্কা থেকে আর যে সকল নারী উহুদে গিয়েছিল তাদের অন্যতম হলো : সাফওয়ান ইবন উমাইয়ার স্ত্রী বরযায বিনতে উমউদ আস সাকাফি, তালহা ইবনে আবি তালহার স্ত্রী সালামা বিনতে সাদ, হারিস ইবন হিশামের স্ত্রী ফাতিমা বিনতে আল ওয়ালীদ ইবন আল মুগিরাআমর ইবনে আল আস স্ত্রী হিন্দ বিন‌তে মুনাব‌বিহ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।[২২]

বদরে মুহাম্মাদের চাচা হামযা ইবনে আবদুল মুত্তালিব হিন্দের প্রিয়তম ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। তাই হামযাকে হত্যা করার জন্য হাবশী ক্রীতদাস ওয়াহশীকে প্রচুর স্বর্ণ-অলঙ্কার ও অর্থ দেবার অঙ্গীকার দিয়েছিলো। এই ওয়াহশী ছিলেন জুবায়র ইবন মুতইমের ক্রীতাদাস।

যুদ্ধের বর্ণনা

উহুদের ময়দানে উভয় বাহিনী পরস্পর মুখোমুখি হলো। উভয় পক্ষ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে। কুরাইশরা বদরে নিহতদের স্মৃতিচারণ করছে। হিন্দের নেতৃত্বে কুরাইশ নারীরা দফ তবলা বাজিয়ে সারিবদ্ধ সৈনিকদের সামনে ঘুরে ঘুরে গান গাইতে লাগলো।[২৩] গানটি এরকম ছিলো

"তারকার কন্যা মোরা,

নিপুণ চলার ভঙ্গি।

সামনে যদি এগিয়ে যাও জড়িয়ে নেবো বুকে।

আর যদি হটে যাও পিছে, পৃথক হয়ে যাব চিরদিনের তরে।"

যুদ্ধের প্রথম দিকে পৌত্তলিক বাহিনীর পরাজয় অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিলো। কুরাইশ বাহিনী বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়লো। কিন্তু যুদ্ধের এমন এক পর্যায়ে কিছু মুসলিম সৈনিক শত্রুপক্ষের পরিত্যক্ত জিনিসপত্র সংগ্রহে মনোযোগী ও পাহাড়ের উপর নিয়োগকৃত তীরন্দায বাহিনীর কিছু সদস্য মুহাম্মাদের নির্দেশের কথা ভুলে গিয়ে পাহাড়ের স্বীয় স্থান ত্যাগ করলো। মুহূর্তের মধ্যে যুদ্ধের রূপ পাল্টে গেল। পলায়নপর পৌত্তলিক বাহিনী মুসলমানদের এই দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করে তারা পাল্টা আক্রমণ করে বসলো। মুসলিম বাহিনী হতচকিত হয়ে পড়লো। আবার যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো, ৭০ জন মুসলিম সৈনিক শাহাদাত বরণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটলো। ওয়াহশীর হাতে হযরত হামযা শহীদ হলেন।

হামযার কলিজা ভক্ষন

হিন্দ তার পিতা হত্যার প্রতিশোধ নিতে কুরাইশ নারীদের সঙ্গে নিয়ে নিহত মুসলিম সৈনিকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং তাদের নাক, কান, হাত, পা ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে চরমভাবে বিকৃতি সাধন করলেন।

এই নিষ্ঠুর ও অমানবিক কাজের দায়ভার কুরাইশ দলপতি আবু সুফিয়ান নিতে অস্বীকার করেন।[২৪] খন্দকের যুদ্ধ, হুদাইবিয়ার সন্ধি প্রভৃতি সবগুলো যুদ্ধে হিন্দ ও তার স্বামী আবু সুফিয়ান মুসলিমদের বিরোধিতা করেছেন। সবশেষে কোন উপায় না দেখে মুহাম্মাদ মক্কায় প্রবেশের আগের দিন কুরাইশ নেতা হিন্দের স্বামী আবু সুফিয়ান মুহাম্মাদের নিকট গেলেন মক্কাবাসীদের নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনার জন্য, সেখানেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। এই খবর শুনে তখনো হিন্দ তার স্বামীকে তিরস্কার করেন, এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলে মুহাম্মাদকে হত্যা করতে বলেন।[২৫]

ইসলাম গ্রহণ ও বায়‘আত

মক্কা বিজয়ের দিন হিন্দ একটি ইসলাম কবুলকারী একটি দলের সাথে ইসলাম গ্রহণ করেন। হিন্দ ও তার স্বামী খুব আতঙ্কিত ছিলেন, কেননা মক্কা বিজয়ের দিন মুহাম্মাদ ৬ জন পুরুষ ও ৪ জন মহিলাকে ক্ষমার আওতার বাইরে রাখেন এবং তাদেরকে নাগালের মধ্যে পাওয়া মাত্র হত্যার নির্দেশ দেন।[২৬][২৭]


পুরুষরা হলোঃমহিলারা হলোঃ
ইকরিমা ইবনে আবি জাহ‌ল,হিন্দ বিনতে উতবা
হাব্বাব ইবনে আল আসওয়াদসাবা ( আব্দুল মুত্তালিবের দাসী)
আবদুল্লাহ ইবনে সাদ ইবনে আবি সারাহফারতানা (আবদুল্লাহর গায়িকা)
মুকায়িস ইবনে সুবাবাআরনা (আবদুল্লাহর গায়িকা)
আল হুয়ায়রিস ইবনে নুকায়য।

ইবনে হাজার এর বাইরে আরো কিছু নারী-পুরষের নাম উল্লেখ করেছেন।[২৮] এটা শোনার পরে হিন্দ চোখ-মুখ ঢেকে মুহাম্মাদের মজলিসে প্রবেশ করেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন।[২৯] এরপর মুহাম্মাদ তাকে কিছু নসিহত প্রদান করেন।[৩০] মুহাম্মাদ আবু সুফিয়ান ও হিন্দের পূর্বের বিয়েকে বহাল রাখেন।[৩১][৩২][৩৩][৩৪]

পরবর্তী জীবনে তারমধ্যে ইসলামের একাগ্র চেতনা লক্ষ্য করা যায়।[৩৫][৩৬][৩৭] এবং মুহাম্মাদ তার জন্য দোয়া করেছেন যাতে তিনি দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা পান। হিন্দ মুহাম্মাদের জন্য মাঝে মধ্যে উপহার পাঠাতেন।[৩৮]

উমরের আমলে

উমরের সাথে আবু সুফিয়ানের পরিবারের ভালো সম্পর্ক ছিলো। হিন্দ সবসময় উমরকে শ্রদ্ধা ও বিনয়ের চোখে দেখতেন। উমরের আমলে আবু সুফিয়ানের পুত্র ইয়াযিদ ইবন আবি সুফিয়ানকে শামের ওয়ালী নিয়োগ পান। ওখানে ইয়াযিদ প্লেগ রোগে মারা গেলে মুয়াবিয়াকে শামের ওয়ালি নিয়োগ দেন।

হিন্দ একবার উমরের নিকট হতে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ৪০০০ দিরহাম ঋণ নেন, তার সাথে তার স্বীয় পুত্র মুয়াবিয়া ছিলো, তারা মদিনার "কালব গোত্রে" ব্যবসা করতে চলে যান। কিন্তু ব্যবসা করে লাভবান হতে পারেননি, তাই তারা উমরের রাজকোষে টাকা দিতে গরিমসি করেন, পরে উমর কঠোর অবস্থান নিলে তারা টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হন।[৩৯][৪০]

হিন্দ ইয়ারমুকের যুদ্ধে যোগদান করেন এবং যুদ্ধের ময়দানে মুসলিম সৈনিকদের রোমানদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করার জন্য কবিতা আবৃত্তি করেন।[৪১][৪২]

হিন্দ-এর জ্ঞানগর্ভ বাণী

হিন্দের মুখ নিঃসৃত অনেক জ্ঞানগর্ভ বাণী আছে যা প্রায় প্রবাদ-প্রবচনে পরিণত হয়েছে। শব্দগুলোতে তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা, চমৎকার চিন্তা, অভিজ্ঞতা, সিদ্ধান্তে দৃঢ়তা, দূরদর্শিতা, সত্যকে মেনে নেওয়ার ক্ষমতা ইত্যাদি গুণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।[৪৩]

১। তিনি বলেছেনঃ ‘নারী হলো বেড়ি। তার জন্য অবশ্যই একটি কণ্ঠের প্রয়োজন। তোমার কণ্ঠে ধারণ করার পূর্বে ভালো করে দেখে নাও, কাকে ধারণ করছো।[৪২][৪৪]

২। পুরুষদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব-ফাসাদ তা নারীদের সম্পর্কে কোন রকম প্রভাব ফেলে না।[১৫]

হিন্দ ও মুয়াবিয়া

হিন্দ তার ছেলে মুয়াবিয়াকে দুধ পান করানো কাল থেকেই আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন, উদার, ভদ্র গুণে গুণনান্বিত করে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। হিন্দ তার শিশু ছেলেকে কোলে নিয়ে এই গান গাইতেন।

‘আমার ছেলে সম্ভ্রান্ত মূল বা খান্দানের।

তার পরিবারের মধ্যে অতি প্রিয় ও বিচক্ষণ।

সে অশ্লীল কর্ম সম্পাদনকারী নয় এবং নীচ প্রকৃতিরও নয়।

ভীরু ও কাপুরুষ নয় এবং অশুভ ও অকল্যাণের প্রতীকও নয়।

বানূ ফিহরের শীলা, তাদের নেতা।

মানুষের ধারণা ও অনমানকে সে মিথ্যা হতে দেয় না

এবং ভীত হয়ে পালিয়েও যায় না।’

হিন্দ তার শিশু বাচ্চাকে নিয়ে অনেক আশা করতেন যে, এই বাচ্চা এইদিন আরবের নেতা হবেন।[৪৫] আবার তিনি তার গোত্র ও বিভিন্ন মানুষদের থেকে আশ্বাস পেয়েছেন, এই বালক একদিন বড় নেতা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী ব্যক্তি হবে।[৪৬][৪৭][৪৮]

মুয়াবিয়াও তার মায়ের তেজস্বী, প্রতিবাদি, দূরদর্শী গুণের প্রশংসা করতেন এবং সেগুলোর চর্চা করতেন।[৪৯]

হাদিস বর্ণনা

হিন্দ বিনতে উতবা কয়েকটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি সাধারণ মুয়াবিয়া ও উম্মুল মু‘মিনীন আয়িশার সূত্র উল্লেখ করেছেন। সেগুলো তিরমিযী ছাড়া সিহাহ সিত্তার অন্য পাঁচটি গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।[৩৬][৫০] তবে ইবনুল জাওযীআল-মুজতানা’' গ্রন্থে বলেছেন, হিন্দ মুহাম্মাদ থেকে সরাসরি কিছু বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই।[৫১]

মৃত্যু

হিন্দ উমারের খিলাফতকালে ১৪ হিজরি, ৬৩৫ খ্রিস্টাব্দে ইনতিকাল করেন। তিনি ও আবু বকরের পিতা হযরত আবু কুহাফা একই দিনে ইনতিকাল করেন।[৫২][৫৩]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী