সুবেদার
সুবেদার ( উর্দু: صوبیدار ) মূলত মুগল সাম্রাজ্যের একজন প্রবীণ আধিকারিকের সাথে সম্পর্কিত যা একটি নির্ধারিত "সুবাহ" ("প্রদেশ") শাসন করে ঐতিহাসিক নাগরিক বা সামরিক পদমর্যাদার। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে, "সুবেদার" হ'ল একজন ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তাকে অধিনায়কের সমতুল্য পদমর্যাদার এক পদবি দেওয়া হয়েছিল।
সুবাদার | |
---|---|
সুবাহ্-দার | |
দেশ | মোগল সাম্রাজ্য ভারত পাকিস্তান |
যুদ্ধসমূহ | মুঘল-মারাঠা যুদ্ধ মুগল সাম্রাজ্য জড়িত যুদ্ধ |
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/53/Asif_muharram_1795_1.jpg/300px-Asif_muharram_1795_1.jpg)
আজ র্যাংঙ্ক ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বজায় রেখেছে।
সুবেদার (অন্য উচ্চারণঃ সুবাদার, সুবাহদার, সুবেহদার) বলতে মোগল আমলে যেকোন সুবাহ তথা প্রদেশের প্রশাসক বা গভর্নরকে বুঝানো হতো। সুবাহদারকে নাজিম, সাহিব-ই-সুবাহ, ফৌজদার-ই-সুবাহ ইত্যাদি নামেও অভিহিত করা হয়।[১] সূত্র অনুসারে, সুবাহদার আউলিয়া খান ছিলেন বাংলার খলজি রাজবংশ (১২০৪-১২৩১) এর একজন বিখ্যাত এবং বিশ্বস্ত সুবাহদার যার উপাধি সাহেব-ই-সুবাহ ছিল। সুবাহদার আউলিয়া খান ছিলেন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির পরম বন্ধু পরবর্তীকালে, বাংলা বিজয়ের সময় সুবাহদার আউলিয়া খান তার সহযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধ করেছিলেন । তার পূর্বপুরুষ অঘুয তুর্কী কায়ি গোষ্ঠীর বেই এর বংশধর ছিলেন। ইসলামের সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য দ্যা গ্রেট সেলজুক সাম্রাজ্যে এর বিস্তারের সময় এই অঞ্চলে আসেন এবং আফগানিস্তানের গরমশিরে খালজি গোষ্ঠীতে আস্রয় নেন। বর্তমানে মহান সুবাহদার আউলিয়া খানের বংশধররা প্রায় নয়শত বছর ধরে বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার ফুলদী গ্রামে বসবাস করছেন এবং সুবাহদার আউলিয়া খানের বংশধর মেসবাহউদ্দিন আহমেদ খান আবদু মিয়া ছিলেন ভাওয়াল এস্টেটের একমাত্র সুন্নি মুসলিম জমিদার।
শাব্দিক অর্থ
সুবাহদার ফারসী শব্দ। এর শাব্দিক অর্থে সুবাহ এর অধিকারীকে সুবাহদার বলা হয়। কখনো কখনো সিপাহীদের অধিনায়ক বুঝাতেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়।[২]
নিয়োগ
মোগল আমলে সমগ্র দেশকে কয়েকটি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত করে শাসনকার্য পরিচালনা করা হতো। এই সব প্রসাশনিক অঞ্চলকে বলা হতো সুবাহ। সাধারণত উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা এবং শাহজাদাদের বা রাজবংশের বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের সুবাহদার হিসেবে নিযুক্ত করে পাঠানো হতো। সুবাহদার নিয়োগ রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আঞ্চলিক পর্যায়ে সুবাহদারের মাধ্যমেই কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার আনুগত্য নিশ্চিত করা হয়।[১]
প্রশাসনিক ক্ষমতা
একজন সুবাহদার তার অধীনে থাকা সুবাহ তথা প্রদেশে মোগল বাদশাহর পক্ষ থেকে সর্বময় ক্ষমতা লাভ করেন। পদাধিকারবলে তিনি একই সাথে সামরিক ও বেসামরিক বিভাগের প্রধানের ক্ষমতা লাভ করেন। কেন্দ্রের সমস্ত আদেশ সুবাহদার আঞ্চলিক পর্যায়ে বাস্তবায়ন করে থাকেন। কোন অঞ্চলে বিদ্রোহ দেখা দিলে তা দমন করার ক্ষমতা সুবাহদারের থাকে। সুবাহদারের অধীনে দিওয়ান, বকশী, ফৌজদার, কোতয়াল, কাজী, সাদর, ওয়াকা-ই-নাভিস, পাটোয়ারী ইত্যাদি পদাধিকারী কাজ করেন।
অভিশংসন
বাদশাহ চাইলেই কোন সুবাহদারকে পদচ্যুত করতে পারতেন। কোন সুবাহদার বিদ্রোহ করলে যুদ্ধের মাধ্যমে তাকে পরাজিত করা হতো।
ব্যাজ এবং পোশাক
১৮৫৮ অবধি সুবেদাররা প্রতিটি কাঁধে দুটি ছোট বুলিয়ান ফ্রিঞ্জ সহ দুটি এপোলেট পরতেন। ১৮৫৮ এর পরে, তারা দুই অতিক্রম সুবর্ণ তলোয়ার পরতেন, বা, এ গুর্খা রেজিমেন্ট, দুই সুবর্ণ অতিক্রম, নিমা এর কলার প্রতিটি পাশ দিয়ে বা ডান বুকে কুর্তা । ১৯০০ এর পরে, সুবেদাররা প্রতিটি কাঁধে দুটি পিপস পরেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রতিটি পিপের নীচে একটি লাল-হলুদ-লাল ফিতা চালু করা হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, এই ফিতাটি কাঁধের শিরোনাম এবং র্যাঙ্ক প্রতীক (উভয় কাঁধে দুটি ব্রাস তারকা)।
ব্রিটিশ শাসনের সময়কালে, সুবেদার এবং অন্যান্য ভিসিওরা স্বতন্ত্র ইউনিফর্ম পরিধান করতেন যা ব্রিটিশ এবং ভারতীয় উভয় সামরিক পোশাকের সমন্বিত বৈশিষ্ট্য ছিল। [৩]
মারাঠা সাম্রাজ্য
সব তিনটি থেকে মারাঠা সাম্রাজ্যের ব্রাহ্মণ ইন: সুবেদার এবং পাহাড় দুর্গ কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ করা হয়। শিবাজি এবং তাঁর দুই পুত্রের সময়ে দেশস্থ ব্রাহ্মণরা ছিল প্রধান প্রভাবশালী দল। [৪]
মারাঠা কনফেডারেসির অধীনে সুবেদাররা পেশোয়া সেনাপতিদের কাছে জবাবদিহি করেছিলেন।
হায়দ্রাবাদ রাজ্য
নিজামের অধীনে রাজপুত্র রাজ্য হায়দ্রাবাদে প্রশাসক এবং কর আদায়কারীদের শীর্ষ পদকে সুবেদার বলা হত। যদিও তারা সরাসরি নিজামের প্রতি দায়বদ্ধ ছিল, তারা দিল্লির মোগুলের প্রতিও কিছুটা দায়িত্ব নিয়েছিল।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- WWW। Bharat-Rakshak.com/Army/Ranks.html - তিনটি সুবেদার ইনজিনিয়া ডিজাইন সহ বিভিন্ন সামরিক ইনজিনিয়াসের চিত্র।