সুকুমার

ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক

সুকুমার বন্দরেড্ডি (জন্ম: ১১ জানুয়ারি, ১৯৭০) হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার। তিনি মূলত তেলুগু ছবিতে কাজ করেন। অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলায় রাজোলের কাছে মত্তপররুতে সুকুমারের জন্ম। চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশের পূর্বে তিনি প্রায় ছয় বছর কাকিনাডার আদিত্য জুনিয়র কলেজে গণিত ও পদার্থবিদ্যার প্রভাষকের কাজ করেন। তিনি কাহিনিকার হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং মোহন ও ভি. ভি. বিনায়ককে সহায়তা করেন।

সুকুমার
১: নেনোক্কডিনে (২০১৪) ছবির প্রচারকালে সাংবাদিক সম্মেলনে সুকুমার
জন্ম
সুকুমার বন্দরেড্ডি

(1970-01-11) ১১ জানুয়ারি ১৯৭০ (বয়স ৫৪)[১][২]
পেশা
কর্মজীবন২০০৪–বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীতবিতা (বি. ২০০৯)
সন্তান

সুকুমার পরিচালিত প্রথম ছবি আর্য মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। এই ছবির সাফল্য পরিচালককে বিশেষ খ্যাতি এনে দেয়। আর্য ছবির জন্য সুকুমার শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার – তেলুগু ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে নন্দী পুরস্কার জয় করেন। সুকুমার পরিচালিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল জগদং (২০০৭), আর্য ২ (২০০৯), ১০০% লাভ (২০১১), ১: নেনোক্কডিনে (২০১৪), নান্নকু প্রেমতো (২০১৬) ও রঙ্গস্থলং (২০১৮)। তিনি জটিল ও বহু-স্তরবিশিষ্ট চিত্রনাট্য রচনার জন্য পরিচিত, যা তাঁকে এক মেধাবী চিত্রনাট্যকারের খ্যাতি এনে দিয়েছে। এছাড়াও সুকুমার ছবির প্রধান চরিত্রের চিত্রণে অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকগুলি যুক্ত করার জন্যও পরিচিত।

সুকুমার রাইটিংস-এর ব্যানারে তিনি প্রথম যে ছবিটি প্রযোজনা করেছিলেন সেটি হল কুমারী ২১এফ (২০১৫)। এই ছবির কাহিনি ও চিত্রনাট্য তিনিই রচনা করেছিলেন। তেলুগু চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিনি ২০১৪ সালে কে. ভি. রেড্ডি স্মৃতি পুরস্কার অর্জন করেন।

প্রারম্ভিক ও ব্যক্তিগত জীবন

১৯৭০ সালের ১১ জানুয়ারি[১][২] অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার রাজোলের কাছে মত্তপররু গ্রামে সুকুমার জন্মগ্রহণ করেন।[৩] সুকুমারের বাবা তিরুপতি নাইডু ছিলেন এক চাল ব্যবসায়ী ও মা বীরা বেণী ছিলেন গৃহবধূ। নাইডু ও বেণীর ছয় সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠ হলেন সুকুমার। ৬ বছর বয়সে পছন্দের একটি পোষা মোরগকে খাওয়ার জন্য কাটা হলে সুকুমার নিরামিষ ভোজন শুরু করেন।[৩] তিনি রাজোলের জেলা পরিষদ হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীকালে গণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।[৪] পরে তিনি কাকিনাডার আদিত্য জুনিয়র কলেজে গণিত ও পদার্থবিদ্যার প্রভাষকের কাজ করেন।[৫] ছয় বছর পরে[৬] সুকুমার ও তাঁর নিম্নপদস্থ প্রভাষক প্রকাশ টোলেটি মনে করেন যে প্রভাষক হিসেবে তাঁদের জীবন অত্যন্ত একঘেয়ে হয়ে পড়েছে এবং তাঁদের এবার সৃষ্টিশীল কিছু করা উচিত।[৭]

সুকুমার ও টোলেটি তেলুগু চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং কয়েকটি ছবির চিত্রনাট্য রচনা করেন। জয়ন্ত সি. পরঞ্জির ববগরু বগুন্নর? (১৯৯৮) ছবির তিনটি দৃশ্যের চিত্রনাট্য রচনার পর কলেজের পক্ষ থেকে তাঁদের ডাকা হয় ছাত্র ভর্তির কাজে সাহায্য করার জন্য। নৈতিকতার খাতিরে তাঁরা ছবির কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে আসেন।[৭] অর্থাভাবের কারণে সুকুমার কিছুকাল ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে কিছু অর্থ উপার্জন করে আবার ফিরে আসেন চলচ্চিত্র জগতে।[৫] পরে সুকুমার জয়ম রাজার বাবা মোহন রাজাকে ক্ষেমাঙ্গ বেল্লি লবঙ্গ রন্ডি (২০০০) ও হনুমান জংশন (২০০১) ছবির কাজে সহায়তা করেন। প্রথম চলচ্চিত্র পরিচালনার পূর্বে সুকুমার ভি. ভি. বিনায়কের অধীনে দিল ছবিতে সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৬]

সুকুমারের সঙ্গে তবিতার একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে।[৮] তবিতার সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয় তাঁর প্রথম পরিচালিত ছবি আর্য-র প্রদর্শনীর সময় হায়দ্রাবাদের আরটিসি এক্স রোডসের সুদর্শন থিয়েটারে। ২০০৯ সালে নিজের বাবা-মা ও বোনের উপস্থিতিতে তবিতাকে বিবাহ করেন সুকুমার।[৫] সুকুমার চলচ্চিত্রের টেকনিশিয়ান হওয়ায় তবিতার বাবা-মা এই বিবাহের বিরোধিতা করলেও পরে বিবাহ মেনেও নেন।[৫] সুকুমার ও তবিতার এক কন্যা ও এক পুত্র রয়েছে।[৮]

চলচ্চিত্র জীবন

প্রথম পরিচালনা এবং খ্যাতি অর্জন: ২০০৪–২০১১

২০১৮ সালে একটি সাক্ষাৎকার কালে সুকুমার।

বিনায়কের দিল ছবির সেটে যোগদানের পূর্বেই বিশাখাপতনমে সুকুমার তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি আর্য-র (২০০৪) চিত্রনাট্যের কাজ শুরু করেন। দিল ছবির প্রযোজক দিল রাজু তাঁকে কথা দেন যে দিল ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হলে তিনি আর্য প্রযোজনা করবেন।টেমপ্লেট:Sfnচিন্নরয়ন সুকুমার এমন একটি গল্প বেছে নেন যাতে একটি ছেলে প্রথমেই একটি মেয়ের প্রতি নিজের ভালোবাসা ব্যক্ত করবে। উল্লেখ্য, এই ধারণা ডর (১৯৯৩), কভি হাঁ কভি না (১৯৯৪) ও কাধল কোন্ডেইন (২০০৩) ছবির ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত, যেখানে নায়িকার প্রতি নায়কের ভালোবাসা বা আকর্ষণবোধ গল্পের শেষের দিকে প্রকাশিত হয়েছে। সুকুমার শেষোক্ত ধারণাটিকে ‘সেকেলে’ মনে করেই পরিত্যাগ করেছিলেন।[৬] সুকুমারের চিত্রনাট্য রাজুর পছন্দ হয় রবি তেজ, নীতিন ও প্রভাসের কথা বিবেচনার পরে ছবির নায়ক হিসেবে অল্লু অর্জুনকে বেছে নেওয়া হয়। অপর দুই প্রধান চরিত্রে বেছে নেওয়া হয় অনুরাধা মেহতা ও শিব বালাজিকে।[৯] ছবির আলোকচিত্র পরিচালক ও সংগীত পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হন যথাক্রমে আর. রত্নবেলু ও দেবী শ্রী প্রসাদ; দু’জনেই সুকুমারের পরবর্তী অনেকগুলি ছবিতে কাজ করেছিলেন। আর্য বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য অর্জন করে; ৪ কোটি টাকার বাজেটে নির্মিত এই ছবি মোট লাভ করে ১৬ কোটি টাকা।[৯] এই ছবির সাফল্যে সুকুমারকে দ্রুত খ্যাতি এনে দেয়।[৬] ৫২তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ তেলুগু পরিচালক বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জয় করেন তিনি।[১০] সেই সঙ্গে বার্ষিক নন্দী পুরস্কার অনুষ্ঠানে তিনি জয় করেন শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার পুরস্কারও।[১১]

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী