সাদা গোলাপ

নাৎসি জার্মানি সময়কালে গঠিত একট অহিঙ্গিস, বুদ্ধিজীবীর দল।

সাদা গোলাপ, (জার্মান: die Weiße Rose) মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল অধ্যাপক এবং শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে তৃতীয় রাইখের সময়কালে গঠিত একটি অহিংস, বুদ্ধিজীবী প্রতিরোধী দল। এই দলের সদস্যরা নাৎসি পার্টির বিরুদ্ধে আত্মগোপন রেখে লিফলেট বিতরণ এবং গ্রাফিতি বা দেয়াললিখন প্রচারণা চালাতো। ১৯৪২ সালে ২৭ জুন মিউনিখে দলটির কার্যক্রম শুরু হয়, এবং ১৯৪৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গেস্টাপো কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার কারণে তাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।[১] সেইসাথে দলের অন্যান্য সদস্যদের এবং প্যামফলেট বহনকারী সমর্থকদের নাৎসি গণআদালতে (Volksgerichtshof) বিচারের আওতায় আনা হয়েছিল। নাৎসিবিরোধী বক্তব্য প্রচারণার দায়ে তাদের অনেককেই মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

মিউনিখের মিউনিখ লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে "ওয়াইসে রোজ" স্মারক

দলটি তাদের লেখা, মুদ্রণ এবং প্রাথমিকভাবে বুহত্তর মিউনিখ অঞ্চলে তাদের প্যামফলেট বিতরণ করে। পরবর্তীতে, গোপন বাহকরা অন্যান্য শহরগুলিতে, বেশিরভাগই জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলে তাদের প্যামফলেটগুলি নিয়ে আসে। সাদা গোলাপ, সর্বমোট ছয়টি লিফলেট রচনা করেছিল, যার মুদ্রণ ছিল ১৫,০০০ কপি। তারা নাৎসি শাসনের অপরাধনিপীড়নের নিন্দা জানিয়েছে এবং প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছিল। তাদের দ্বিতীয় লিফলেটে, তারা খোলাখুলিভাবে ইহুদিদের প্রতি অত্যাচার ও গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছে।[২] গ্রেফতারকালীন সময়ে, সাদা গোলাপের সদস্যরা ক্রেইসউউ সার্কেল বা রেড অর্কেস্ট্রার শুলজ-বয়েজেন / হারনাক (Schulze-Boysen/Harnack) দলের মতো অন্যান্য জার্মান প্রতিরোধক গোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ স্থাপনের প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। বর্তমানে, সাদা গোলাপ জার্মানি এবং বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত।

সদস্য ও সমর্থক

মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাদা গোলাপ দলের মূল সংগঠক ছিল: দুই সহোদর হান্স শোল এবং সোফি শোল, আলেক্সান্ডার শ্মোরেল, ভিলি গ্রাফ, ক্রিস্টফ প্রোবস্ট সহ, সঙ্গীতকলা ও দর্শনের অধ্যাপক কুর্ট হবার দলের গ্রুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।

দলটির অন্যান্য সমর্থকদের মধ্যে ছিলেন ট্রাউতে লাফ্রেনৎয, কাথারিনা শুডেকোফ, লিইসেলটে (লিলো) ব্রেন্ডল, ইওরগেন উইটেনস্টাইন, মারি-লুইস ইয়ান, ফাল্ক হারনাক, হুবার্ট ফুর্টোয়াঙ্গঙ্গার, ভিলহেল্ম গায়ার, ম্যানফ্রেড আইখমায়ার, ইয়োসেফ সোনগেন, হাইনরিখ গুটার, হেনরিচ বোলিঙ্গনার, হেলমুট বাউয়ার, হারাল্ড ডোরন, হান্স কনরাড লাইপেল্ট, গিসেলা শেরটলিঙ্গি, রুডি আল্ট[৩] এবং উলফগ্যাং ইগার।[৪] এদের বেশিভাগের বয়স সে সময়ে বিশের কোঠায় ছিলো। ভিলহেল্ম গায়ার, আলেক্সান্ডার শ্মোরেলকে কীভাবে টিনের টেমপ্লেট দিয়ে গ্রাফিতির প্রচারণার কাজ করতে হয় শিখিয়েছিলেন। স্টুটগার্ডের ইউজিন গ্রিমিনগার (১৮৯২-১৯৮৬) তাদের অপারেশনের অর্থ যোগান দিতেন। গ্রিমিনগার ১৯৪৩ সালের ২ মার্চ এই "দোষে" গ্রেফতার হন এবং "গণআদালত" তাকে ১৯৪৩ সালের ১৯শে এপ্রিল দশ বছরের কারাদন্ড দেয়, এবং তাকে লুডভিগবুর্গের পেনাল ইন্সটিটিউশনে ১৯৪৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বন্দী রাখা হয়। তার স্ত্রী জেনিকে ১৯৪৩ সালের ২ ডিসেম্বর (সম্ভবত) আউশভিৎয-বিরকেনাউ ক্যাম্পে হত্যা করা হয়। গ্রিমিনগারের সহকারী, টিলি হান নিজস্ব অর্থায়নে সাদা গোলাপ দলকে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন। তিনিই মুলত দলটির সাথে গ্রিমিনগারের যোগাযোগে মধ্যকুশলী হিসেবে কাজ করতেন। হান প্রায়ই স্টুটগার্ড থেকে মিউনিখে প্রচারণার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক অনুষঙ্গ আনা-নেয়া করতেন। এছাড়াও জার্মানির উল্‌ম শহরের কিছু শিক্ষার্থীর দল দলটির প্রচারণা লিফলেট বিতরন করেছিলো। এই দলের মাঝে সোফি শোলের ছেলেবেলার বন্ধু সুসান হিৎযেল, তার কিশোর ভাই হান্স হিৎজেল ও ফ্রানৎজ যে মুলার অন্যতম।[৫]

প্রাথমিক উৎস

সমস্ত ৭টি লিফলেটের ইংরেজি অনুবাদ এখানে রয়েছে: লিফলেট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ জুন ২০১৯ তারিখে

সাদা গোলাপ লিফলেটসমূহ

প্রাথমিক উৎস উপকরণের ইংরেজি অনুবাদ

তথ্যসূত্র

আরো পড়ুন

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Z148

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী