সাকরাইন

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উৎসব।

সাকরাইন উৎসব, মূলত বাঙালি মুসলমানদের পৌষসংক্রান্তি, ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত, বাংলাদেশে শীত মৌসুমের বাৎসরিক উদ্‌যাপন, ঘুড়ি উড়িয়ে পালন করা হয়। সংস্কৃত শব্দ 'সংক্রান্তি' ঢাকাইয়া অপভ্রংশে সাকরাইন রূপ নিয়েছে। পৌষ ও মাঘ মাসের সন্ধিক্ষণে, পৌষ মাসের শেষদিন সারা ভারতবর্ষে সংক্রান্তি হিসাবে উদযাপিত হয়। তবে পুরান ঢাকায় পৌষসংক্রান্তি বা সাকরাইন সার্বজনীন ঢাকাইয়া উৎসবের রূপ নিয়েছে। বর্তমানে দিনভর ঘুড়ি উড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি ও রঙবেরঙ ফানুশে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী শহরের আকাশ। এক কথায় বলা যায় সাকরাইন হচ্ছে এক ধরনের ঘুড়ি উৎসব।[১] বাংলা বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস পৌষ মাসের শেষ দিনে আয়োজিত হয় যা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিকার হিসেবে জানুয়ারি মাসের ১৪ অথবা ১৫ তারিখে পড়ে।[১] বাংলায় দিনটি পৌষ সংক্রান্তি এবং ভারতীয় উপমহাদেশে মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত।

সাকরাইন উৎসব
সাকরাইন উৎসবে আতশবাজি
অন্য নামসংক্রান্তি
ধরনঋতুভিত্তিক, ঐতিহ্যবাহী
উদযাপনঘুড়ি উড়ানো, আতশবাজি ও রঙবেরঙ ফানুশ উড়ানো
তারিখবর্তমানে ১৪/১৫ জানুয়ারি

বাংলাদেশের প্রাচীন উৎসব সমূহের মধ্যে পুরান ঢাকার সাকরাইন উৎসব অন্যতম। যদিও এটা সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী পালিত হয় না কিন্তু খুব জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশি সংস্কৃতি। এটাকে ঐক্য এবং বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।

অনুষ্ঠান

ঢাকা শহরে উৎসবমুখর পরিবেশে সাকরাইন উৎসব পালন করা হয়[২]। মূলত পুরান ঢাকার হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাতে বেশি জমজমাট ভাবে উদযাপিত হয় পৌষসংক্রান্তি তথা সাকরাইন। শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, গোয়ালনগর, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, লালবাগ ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে ছোট, বড় সকলেই মেতে উঠে এ উৎসবে। বিকেল বেলা এই সব এলাকায় আকাশে রঙ বেরঙের ঘুড়ি ওড়ে। ছাদে কিংবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘুড়ি ওড়ানো হয়[১][৩] । অধিকাংশ সময়ে ভোঁ কাট্টা'র (ঘুড়ি কাটাকাটি) প্রতিযোগিতা চলে। একজন অপরজনের ঘুড়ির সুতা কাটার কসরৎ করে[৩]

রাত নামলে পুরান ঢাকার আতশবাজির আলোয় উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। আগুন মুখে নিয়ে খেলা দেখানো কসরৎবিদগণ ছাদে দাঁড়িয়ে দর্শকদের তাদের কারুকাজ দেখায়[১]। সন্ধ্যার পর আকাশে ওড়ে রঙবেরঙা ফানুশ ও ঘরে ঘরে পিঠাপুলির আয়োজন।

বিতর্ক ও সমালোচনা

সাম্প্রতিক সময়ে গত কয়েকবছর ধরে এই সাকরাইন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ও বিতর্ক চলছে। অনেকেই ধর্মীয় ও পরিবেশগত আপত্তির কারণে সাকরাইন পালন করে না। যে সময়ে পুরান ঢাকায় সাকরাইন পালন হয় অর্থাৎ ১৪ বা ১৫ জানুয়ারি সে সময়ে ভারতের হরিয়ানা,পাঞ্জাব,উত্তরপ্রদেশ,গুজরাট ও তার আশপাশের প্রদেশগুলোর অধিকাংশ এলাকায় মকর সংক্রান্তি এবং পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে তিরমুরি ও জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে লাহোর ও সিয়ালকোট সহ পাঞ্জাব প্রদেশের অনেক এলাকায় বসন্ত মেলা বা বসন্ত পঞ্চমী পালন করে অনেকেই। এই মকর সংক্রান্তি ও বসন্ত মেলা এগুলো হিন্দু ও শিখ ধর্মাবলম্বীদের সাংস্কৃতিক উৎসব যেকারণে পুরান ঢাকার অনেক মুসলিমরা এসব পালন করা থেকে বিরত থাকেন।

চিত্রমালা

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী