সত্য

সত্য হচ্ছে ধর্মশাস্ত্রদর্শনশাস্ত্রের একটি মৌলিক শক্তি যা দ্বারা বিশাল এ জগৎ সৃষ্ট হয়েছে এমন বিশ্বাস বা ধারণা যা প্রকৃত বিষয় বা ঘটনার সাথে যোগাযোগের সেতুবন্ধন গড়ে তুলে। পবিত্র ধর্মশাস্ত্রাদি একসুরে বলছে মহামহিম ঈশ্বরই একমাত্র সত্য । বিশাল বিস্তৃত এ সৃষ্টি সসীম ও অসত্য , শুধু তার গহীন ইচ্ছাসমুদ্রের কোনো বন্দরে হয়তো বিদ্যমান।

সত্যের পথনির্দেশ বহনকারী একজন স্বর্গদূত , রোজলিন, মিডিওথিয়ান

যদি কোনো বিষয় প্রকৃতই ঘটেছে বলে মনে করা হয়, তখন তা সত্য হিসেবে বিবেচিত হয় ।[১] যিনি সত্যকথা বলেন বা লিখেন, সমাজে তিনি সত্যবাদী নামে পরিচিতি পান । পৌরানিক উপাখ্যানে যুধিষ্ঠিরকে সত্যবাদী ও ধর্মরাজ হিসেবে পরিচিতি ঘটানো হয়েছে । মহান দার্শনিক এরিস্টটল বলেছেন , ‘যদি বলা হয় যে এটি না অথবা না-কে হ্যাঁ বলা হয় তবে তা মিথ্যা এবং যদি কোন কিছু সমন্ধে জানতে চাওয়া হয় যে এটি কি এবং যদি না-কে না বলা হয় তখন তা সত্য।[২] উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যদি বলা হয় মানুষের রক্ত নীল তখন তা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে; কিন্তু স্বতঃসিদ্ধ সত্য বিষয় হচ্ছে মানুষের রক্ত লাল। শৈশবকাল থেকেই ‘সদা সত্য কথা বলবে’ বলে উৎসাহিত করা হয়ে থাকে।

ইসলাম ধর্মে হযরত বায়েজিদ বোস্তামী কর্তৃক ডাকাত দলের কাছে স্বর্ণমুদ্রা থাকার সত্য কথা বলার উপকথা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত পেয়েছে। অসত্য কোন কিছুর বর্ণনাকে মিথ্যার পর্যায়ে ফেলা হয়। অর্ধ-সত্য বিষয়ে সত্য-মিথ্যার সংমিশ্রণ থাকে অথবা কিছু সত্য বিষয় তুলে ধরা হলেও পূর্ণাঙ্গ বিষয়টি উপস্থাপন করা হয় না। যদি কোন কিছুকে সত্য বলা হয় তখন বক্তার কথাই সত্য বা সে সত্য কথা বলেছে। আবার, কোন কিছুকে অসত্যরূপে বললে বা বিবৃত করলে তখন তা মিথ্যার পর্যায়ে উপনীত হয়। যদি কেউ মিথ্যাকে সত্য বলার চেষ্টা চালায় তাহলে তা মিথ্যারূপে প্রমাণিত হয়। কারণ, সত্যের জয় চিরদিনই হয়। যিনি মিথ্যা কথা বলেন, তিনি মিথ্যাবাদী বা মিথ্যুক নামে সমাজে পরিচিতি পান ও সকলেই তাকে ঘৃণা করে থাকে। এছাড়াও মহামান্য আদালতে সাক্ষ্য প্রদানের সময় ব্যক্তিকে - ‘যাহা বলিব, সত্য বলিব। সত্য বই মিথ্যা কথা বলিব না।’ - মর্মে শপথবাক্য পাঠ করতে হয়।

সত্য তত্ত্ব

সত্যের প্রধান মানদণ্ড কী তা নিয়ে দার্শনিক-মহলে নানা রকম প্রশ্ন রয়েছে। সাধারণতঃ শব্দ, প্রতীক, চিন্তাধারা এবং বিশ্বাসবোধ নিয়ে ব্যক্তি কিংবা পুরো সমাজের মাধ্যমে সত্যকে জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়। সত্য আসলে কি তা বোঝার জন্য হাজার হাজার বছর ধরে দার্শনিকেরা চেষ্টা চালিয়েছেন। তারা প্রধান পাঁচটি তত্ত্বের মাধ্যমে এ প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ পেয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে - যোগাযোগ, প্রায়োগিক, সংলগ্নতা, সত্যের অবপাত।[৩][৪][৫] এ সকল তত্ত্ব বৈশ্বিকভাবে গবেষকগণ কর্তৃক স্বীকৃত।যোগাযোগ তত্ত্বের প্রাচীনতম সংস্করণটি খ্রিষ্ট-পূর্ব চতুর্থ শতকে গ্রীক দার্শনিক প্লেটো’র মাধ্যমে বিবৃত হয়েছে। তিনি জ্ঞানের অর্থ এবং কীভাবে তার স্ফূরণ ঘটে তা অনুসন্ধান করেছেন। প্লেটো সত্য বিশ্বাস এবং মিথ্যা বিশ্বাসের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন। তিনি এ সমন্বীয় তত্ত্বে ঘটনার সাথে সত্য বক্তব্যের যোগাযোগ ও বাস্তবতার সম্পর্ক পান যা মিথ্যা বক্তব্যের মধ্যে অনুপস্থিতির কথা তুলে ধরেন। কিন্তু বিংশ শতকে এসে ব্রিটিশ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল এ তত্ত্বকে অনুপযুক্ত হিসেবে হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার মতে, এ তত্ত্বে মিথ্যা বিশ্বাসকে অনুমোদন করেনি।

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী