সঞ্চয়ী হিসাব

ব্যাংক হিসাব

সঞ্চয়ী হিসাব (ইংরেজি: Savings account) বলতে কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত একটি সুদ-প্রদানকারী জমা হিসাব বোঝায়, যা থেকে স্বল্প হারের সুদ আয় করা যায়। প্রতি মাসে সঞ্চয়ী হিসাবে কতবার অর্থ উত্তোলন করা যাবে, তার সংখ্যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সীমিত করতে পারে। এছাড়া হিসাবে প্রতি মাসে একটি গড় পরিমাণ অর্থ না থাকলে ব্যাংক অতিরিক্ত খরচ কেটে নিতে পারে। অতীতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলি সঞ্চয়ী হিসাবের সাথে কোনও চেক ব্যবহারের সুবিধা প্রদান না করে বরং পাসবুক ব্যবহার করা হত।[১] বর্তমানে প্রায় সকল ব্যাংক সঞ্চয়ী হিসাবধারী গ্রাহকদের চেক বই ব্যবহারের সুবিধা দিচ্ছে।

এটি ১৯০৩ সালের শেয়ার বাজারের একটা " stock certificate "

কোনও ব্যক্তি যে অর্থ দৈনন্দিন বা নিয়মিতভাবে ব্যয় করে না, সেটিকে সাধারণত সঞ্চয়ী হিসাবে গচ্ছিত রাখে। চলতি হিসাবের মত এটি থেকে অহরহ চেক বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে তহবিল থেকে টাকা উত্তোলনের ব্যাপক সুবিধা থাকে না; প্রতি মাসে কেবল সীমিত সংখ্যক বারের জন্য এই লেনদেনগুলি সম্পন্ন করা যায়। অপ্রয়োজনীয় অর্থ ফেলে না রেখে সঞ্চয়ী হিসাবে গচ্ছিত রাখলে সুদ আয় করার সুবিধা ভোগ করা যায়।[২] এছাড়া নগদ অর্থ ও চলতি হিসাব ব্যতীত সঞ্চয়ী হিসাব হচ্ছে সবচেয়ে তরল বিনিয়োগগুলির একটি। সঞ্চয়ী হিসাব কেবল সহজে অর্থ সঞ্চয়ের সুবিধাই দেয় না, বরং খুব সহজে এর তহবিল ব্যবহার করার সুবিধা দেয়। এর বিপরীতে সঞ্চয়পত্র, অংশীদারী পত্র বা শেয়ার বা অন্যান্য সম্পদ থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন করা অনেক বেশি দুষ্কর।[১]

সঞ্চয়ী হিসাবের তুলনামূলক তারল্য এর মূল সুবিধাগুলির একটি হলেও উত্তোলনের সহজতার কারণে এটির অর্থ তুলে ব্যয় করে ফেলার আকর্ষণ থেকে যায়। তাছাড়া এটির সুদের হার অন্যান্য আর্থিক পণ্যের সুদের হার থেকে সাধারণত বেশ কম হয়। তাই সঞ্চয়ী হিসাব দীর্ঘ মেয়াদের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।[১]

আর্থিক পরামর্শদাতারা সঞ্চয়ী হিসাবে দৈনন্দিন জীবনের তিন থেকে ছয় মাসের ব্যয়ের সমপরিমাণ অর্থ সঞ্চয়ী হিসাবে গচ্ছিত রাখার পরামর্শ দেন। ফলে হিসাবের মালিক কোনও কারণে তার জীবিকা বা চাকুরি হারালে কিংবা জটিল ব্যয়বহুল চিকিৎসা বা অন্য কোন জরুরী অবস্থার সম্মুখীন হলে হিসাবটি থেকে সহজে অর্থ উত্তোলন করে দ্রুত তার ব্যয় মেটাতে পারেন। বেশিরভাগ বিশ্লেষকই মনে করেন যে এর চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ সঞ্চয়ী হিসাবে না রেখে উচ্চ সুদ প্রদানকারী কোন হিসাবে রাখা উচিত।[১]

সঞ্চয়ী হিসাব বা সঞ্চয় জমা খাতা (ভারতে)

১৯২০ খ্রিস্টাব্দের আগে ভারতে সঞ্চয়ী হিসাব তথা সঞ্চয় জমা খাতার কোন অস্তিত্ব ছিল না। কেবল মাত্র মেয়াদি জমায় সঞ্চয় করা যেত। কানাড়া ব্যাঙ্কই প্রথম (তৎকালীন কানাড়া ব্যাঙ্কিং কর্পোরেশন লিমিটেড) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে কঠোর নিয়মাবলীতে সঞ্চয়ী হিসাব তথা সঞ্চয় জমা প্রকল্পের প্রবর্তন করে। নূন্যতম এক টাকা এবং সর্বাধিক এক হাজার টাকা পরিমাণ অর্থ জমা করা যেত। কিন্তু কখনো দুই হাজার টাকার বেশি অর্থ হিসাবে তথা খাতায় রাখা যেত না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল - যে কোন পরিমাণ অর্থ তুলতে গেলে "তিনদিনের নোটিশ" বা আবেদন করতে হত। তাও আবার এক শত টাকার বেশি অর্থ তোলা যেত না।এই সঞ্চয়ী হিসাব বা সঞ্চয় জমা খাতা হতে ব্যাঙ্কগুলিও তাদের এক আয়ের উৎস স্থির করেছিল। ২৫ পয়সার বিনিময়ে পাসবুক প্রদানের ব্যবস্থা ছিল। এই জমায় সুদের হার নির্ধারণ ব্যাঙ্কগুলি নিজেরাই স্থির করত। [৩]বর্তমানে অবশ্য দেশের সমস্ত ব্যাঙ্কগুলিকে আপনার গ্রাহককে জানুন অর্থাৎ কেওয়াইসি নীতিমালা সহ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সঞ্চয় জমা খাতা সম্পর্কিত নির্দেশিকা মেনে চলতে হয়। ২০১১ খ্রিস্টাব্দের পর অবশ্য সুদের হার নির্ধারণ পুনরায় ব্যাঙ্কগুলিকে দেওয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী