শ্রীকাকুলাম জেলা
শ্রীকাকুলাম জেলাটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের উপকূলীয় অন্ধ্র অঞ্চলের নয়টি জেলার একটি এবং এর সদর দপ্তর শ্রীকাকুলামে অবস্থিত[৫]। জেলাটি রাজ্যের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটি পূর্বে চিকাকোল নামে পরিচিত ছিল[৬]।
শ্রীকাকুলাম জেলা | |
---|---|
অন্ধ্রপ্রদেশের জেলা | |
![]() বৌদ্ধ স্তুপের ধ্বংসাবশেষ | |
![]() অন্ধ্রপ্রদেশের মধ্যে শ্রীকাকুলাম জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ১৮°২৫′ উত্তর ৮৪°০১′ পূর্ব / ১৮.৪১৭° উত্তর ৮৪.০১৭° পূর্ব | |
Country | India |
State | Andhra Pradesh |
Headquarters | শ্রীকাকুলাম |
প্রশাসনিক বিভাগ | |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্রের তালিকা | লোকসভা কেন্দ্র |
আয়তন[২]:২৯ | |
• অন্ধ্রপ্রদেশের জেলা | ৫,৮৩৭ বর্গকিমি (২,২৫৪ বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা[২]:২৮ | ১৮৬.০৪ বর্গকিমি (৭১.৮৩ বর্গমাইল) |
• গ্রামীণ[২]:২৮ | ৫,৬৫০.৯৬ বর্গকিমি (২,১৮১.৮৫ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | 22nd |
জনসংখ্যা (2011)[৩] | |
• অন্ধ্রপ্রদেশের জেলা | ২৭,০৩,১১৪ |
• ক্রম | 21st |
• জনঘনত্ব | ৪৬৩/বর্গকিমি (১,২০০/বর্গমাইল) |
• ঘনত্বের ক্রম | 6th |
• পৌর এলাকা[২]:১৪ | ৪,৩৬,৭০৩ |
• গ্রামীণ[২]:১৪ | ২২,৬৬,৪১১ |
• Households | ৬,৮১,৩৩০ |
• লিঙ্গানুপাত | ১,০০০ জন পুরুষ প্রতি ১,০১৫ জন মহিলা |
Languages | |
• সরকারি | তেলুগু ভাষা |
ভারতে সাক্ষরতা | |
• Literates | 1495381 |
সময় অঞ্চল | IST (ইউটিসি+5:30) |
Postal Index Number | 532xxx |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-AP |
যানবাহন নিবন্ধন | AP–39 (from 30 January 2019)[৪] |
ওয়েবসাইট | srikakulam |
ইতিহাস
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/7/75/Megalithic_Dolmen_at_Dannanapeta_03.jpg/255px-Megalithic_Dolmen_at_Dannanapeta_03.jpg)
প্রাগৈতিহাসিক
এই জেলাতে প্রাগৈতিহাসিক সময়ের অর্থাত প্রস্তর যুগ এবং লৌহ যুগের জনবসতির চিহ্ন প্রমাণ পাওয়া গেছে সংগামায়া কোন্ডা এবং দান্নানপেটায়। ডান্নানপেটা লৌহযুগ মেগালিথিক সাইটের বিশেষত্ব হ'ল ডলম্যান হিসাবে একটি বিশাল একক ক্যাপস্টোন যার দৈর্ঘ্য ৩৬ ফুট এবং প্রস্থ ১৪ ফুট এবং ২ ফুট পুরু। জেলার আমুদলাওয়ালাস মন্ডলে অবস্থিত শৈলদা পাহাড়ে ৩৬ টি খাড়া প্রাকৃতিক গুহা রয়েছে যা লৌহযুগের বাসিন্দারা ব্যবহার করতেন বলে ঐতিহাসিকরা মনে করেন[৭]।
.
জৈনধর্ম ও বৌদ্ধধর্মের আমল
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/55/Salihundam_Historic_Buddhist_Remains_3_by_GPuvvada_2010.jpg/255px-Salihundam_Historic_Buddhist_Remains_3_by_GPuvvada_2010.jpg)
সংঘামায়া কোন্ডার নিকটে জৈন স্মৃতিসৌধ এবং বৌদ্ধ অবশিষ্টাংশের প্রমাণ পাওয়া গেছে। জেলার আমুদালাভালাসের নিকটে ডান্নানপেটে পাওয়া গিয়েছিল জৈন স্থাপত্যের নিদর্শন । কলিঙ্গপট্টনম থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং শ্রীকাকুলাম শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে বংশধারা নদীর দক্ষিণ তীরে একটি বিখ্যাত বৌদ্ধ অবশিষ্টাংশ রয়েছে- সালিহুন্দম .[৮]
স্বাধীনতোত্তর আমলে
শ্রীকাকুলাম জেলা ১৯৫০ সালে বিশাখাপত্তনম জেলা থেকে দ্বিখণ্ডিত করে তৈরি হয়েছিল। ১৯৬৯ সালের নভেম্বর মাসে সালুরু তালুকের ৬৩ টি গ্রাম ও বব্বলি তালুকের ৪৪টি গ্রাম বিশাখাপত্তনম জেলার গজপতিনগরম তালুকে স্থানান্তরিত করা হয়।
১৯৭৯ সালের মে মাসে, জেলাটির সীমানার ব্যপক পরিবর্তন হয়। ভিজিয়ানাগ্রামে সদর দফতর সহ একটি নতুন ভিজিয়ানাগ্রাম জেলা গঠনের সাথে সাথে শ্রীকাকুলাম জেলার সালুর, বববিলি, পার্বতীপুরম এবং চিপুরুপল্লী তালুককে নতুন জেলায় স্থানান্তর করা হয়। শ্রীকাকুলামের সংস্কৃতি ঐতিহ্যবাহী উৎসব, খাবার, সংগীত এবং থিয়েটারগুলির মিশ্রণ.[৯]
ভূগোল
শ্রীকাকুলাম জেলার ক্ষেত্রফল ৫৮৩৭ বর্গকিলোমিটার (২,২৪৪ বর্গ মাইল) , যা অস্ট্রেলিয়ার মেলভিল দ্বীপের ক্ষেত্রফলের সমান[১০][১১]। এটি ১৮°২০' এবং ১৯ °১০' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৩°৫০' এবং ৮৪°৫০' পূর্ব দ্রাঘিমা-এর মধ্যে অবস্থিত। জেলাটি জায়গায় জায়গায় কান্দিভালাসাগেদ্দা, বংশধারা এবং বহুদা নদীর প্রবাহ দ্বারা এবং উত্তরপূর্বে পূর্বঘাট পর্বতমালার দ্বারা আবদ্ধ। জেলার দক্ষিণ ও পশ্চিমে ভিজিয়ানাগ্রাম জেলা, উত্তরে ওড়িশা রাজ্য এবং পূর্বে বঙ্গোপসাগর বিস্তৃত। শ্রীকাকুলাম জেলা দুটি প্রধান স্বতন্ত্র প্রাকৃতিক বিভাগে বিভক্ত । শ্রীকাকুলাম জেলার একটি অংশ কৃষিযোগ্য সমতল ভূখণ্ড এবং অন্যটি বনভূমি দ্বারা আবৃত পাথুরে এবং পার্বত্য অঞ্চল। মহেন্দ্রগিরি পর্বতের কিছু অংশ রয়েছে শ্রীকাকুলাম জেলা জুড়ে। জেলার বেশিরভাগ বনাঞ্চল কৃষিক্ষেত্রে পরিবর্তন করা হয়েছে। কোথথুরু, হীরামণ্ডলম, পাঠপট্টম, কলিঙ্গদল জলাধার এবং আরও কিছু অঞ্চল এখনও ঘন বনাঞ্চলে আবৃত। শ্রীকাকুলাম বিশাখাপত্তনম থেকে ১০০ কিলোমিটার (62 মাইল) উত্তরে।
জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রধান নদী হ'ল নদী নাগাবালী, বংশধারা, মহেন্দ্রতনয়া, চম্পাবতী, বাহুদা, কুম্ভিকোটা গেদা, সুবর্ণামুখী, বেগবতী, গোমুখী প্রভৃতি। নাগাবালী ও বংশধারা শ্রীকাকুলাম জেলার প্রধান নদী। এই দুটি নদীর অববাহিকা একত্রে প্রায় ৫% অঞ্চল নিয়ে গঠিত। মহেন্দ্রতনয়া এবং বাহুদা নদীটি জেলার দুটি ছোট নদী অববাহিকা। এই নদীগুলির উপর প্রধান সেচ প্রকল্পগুলি - বংশধারা প্রকল্প, নারায়ণপুরম আনিকুট, থোটাপল্লি নিয়ন্ত্রক - এবং ওডিগডা পাইডিগাম প্রকল্পের কয়েকটি মাঝারি প্রকল্প।
জনমিতি
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে শ্রীকাকুলাম জেলার জনসংখ্যা ২,৭০৩,১১৪ জন,যা প্রায় কুয়েত বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা রাজ্যের সমান। এটি এটিকে ভারতে মোট ৬৪০টি জেলার মধ্যে ১৪৭তম স্থান দেয়। এই জেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৬২ জন (১২০০ জন / বর্গ মাইল)। ২০০১-২০১১ এর দশকে এর জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৩৮%। শ্রীকাকুলামের প্রতি ১০০০ জন পুরুষের ১০১৪ জন মহিলা এবং সাক্ষরতার হার ৬২.৩%.
বছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ১০,৬০,৪৬৭ | — |
১৯১১ | ১১,০১,১৯৯ | +৩.৮% |
১৯২১ | ১১,২৩,৪৬১ | +২% |
১৯৩১ | ১২,২২,৭৬৭ | +৮.৮% |
১৯৪১ | ১৩,৩৩,৩৪১ | +৯% |
১৯৫১ | ১৪,০৫,৭৯২ | +৫.৪% |
১৯৬১ | ১৫,৫৫,৩৬৯ | +১০.৬% |
১৯৭১ | ১৭,৬৯,৯৬৮ | +১৩.৮% |
১৯৮১ | ১৯,৫৯,৩৫২ | +১০.৭% |
১৯৯১ | ২৩,২১,১২৬ | +১৮.৫% |
২০০১ | ২৫,৩৭,৫৯৩ | +৯.৩% |
২০১১ | ২৭,০৩,১১৪ | +৬.৫% |
বিভাগ
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/a/a4/Revenue_divisions_map_of_Srikakulam_district.png/220px-Revenue_divisions_map_of_Srikakulam_district.png)
জেলায় তিনটি রাজস্ব বিভাগ রয়েছে - শ্রীকাকুলাম, পালকোন্ডা এবং তেক্কালি। এগুলি জেলার ৩৮ টি মন্ডলে বিভক্ত। এই জেলার ১২ টি শহর এবং ৯৭৩টি গ্রাম রয়েছে। একটি পৌর কর্পোরেশন, তিনটি পৌরসভা, দুটি নগর পঞ্চায়েত এবং সাতটি জনগণনা শহর রয়েছে। জেলার পৌর কর্পোরেশন হ'ল শ্রীকাকুলাম এবং জেলার তিনটি পৌরসভা হল আমডালভালসা, ইছাপুরম, পালাসা-কাসিবুগা, এবং রাজামের পালকান্দার নাগর পঞ্চায়েত। ছয়টি সেন্সাস শহর হ'ল বালাগা, হীরামণ্ডলাম, নারসন্নাপেতা, পন্ডুরু, সোমপেটা, তেক্কালিয়া.[১২]
অর্থনীতি
জেলার মোট জেলা গার্হস্থ্য পণ্য (জিডিডিপি) ১৯,৯৪২ কোটি টাকা (মার্কিন ডলার ২.৮ বিলিয়ন) এবং এটি মোট রাজ্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে (জিএসডিপি) ৩.৮% অবদান রাখে।[১৩]
সংস্কৃতি
জেলা বুড়িথী বেল এবং ব্রাস ক্রাফট, যা বুথিঠি গ্রামে তৈরি হয়, পিতলের পণ্যগুলির জন্য খ্যাত। এগুলি অন্ধ্র প্রদেশের জি আই বা ভৌগোলিক নিশানা হিসাবে নিবন্ধিত রয়েছে.[১৪]
স্পোর্টস
অলিম্পিক পদকজয়ী কর্ণম মালেশ্বরী এই জেলার বাসিন্দা। জেলাতে ভারোত্তোলনের বেশ প্রভাব রয়েছে।
শিক্ষা
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার ব্যবস্থা রাজ্যর স্কুল শিক্ষা বিভাগের অধীনে সরকারী, সহায়ক ও বেসরকারী স্কুল দ্বারা করা হয়[১৫][১৬]।২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের বিদ্যালয়ের তথ্য প্রতিবেদন অনুসারে এখানে ৩৮৭৫ টি স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫৫ টি সরকারী, ২৮৮৩ টি মন্ডল ও জেলা পরিষদ পরিচালিত, ১ টি আবাসিক, ৫৭৩ টি বেসরকারি, ১৪ টি মডেল, ৩২ টি কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয় (কেজিবিভি), ৮৫ টি পৌরসভা পরিচালিত এবং ২৮২ টি অন্যান্য স্কুল[১৭]। জেলার প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৭১,৪৭২জন.[১৮]