শূলে চড়ান

প্রাচীন মৃত্যুদন্ড কার্যকরের পদ্ধতি।

শূলে চড়ান (ইং: Impalement) একটি প্রাচীন যন্ত্রণা প্রদান এবং মৃত্যুদণ্ড কাযর্করণ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির প্রায়শই ধড়ের সম্পূর্ণ বা আংশিক বিদ্ধ করে এমন কোন বস্তু যেমন খুঁটি, খাম্বা, বর্শা বা আংটার মতো কোনও বস্তুর সাথে আটকে বা ঝুলিয়ে রাখা হতো। এতে ঐ ব্যক্তি অনেক যন্ত্রণা ভোগ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তো। এটি বিশেষত "রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ" এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে ব্যবহৃত হতো এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিতে এটি অত্যন্ত কঠোর মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি হিসাবে বিবেচিত হতো। পৌরাণিক কাহিনীতেও শূলে চড়ানোর কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে। যুদ্ধের সময় বিদ্রোহ দমন, বিশ্বাসঘাতক বা তার সহযোগীদের শাস্তি এবং সামরিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার শাস্তি হিসাবে এটি ব্যবহৃত হতো। নিঃসন্দেহে এটি ছিল ভয়াবহ ও বর্বরোচিত শাস্তি। [১]

ইতিহাস

প্রথম শূলে চড়ানোর ইতিহাস পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ১৭৭২ সালে,[২] প্রস্তর খোদাই থেকে যানা যায় ব্যাবিলনের রাজা হাম্মুরাবি একজন নারীকে শূলে চড়িয়েছিলেন, যিনি অন্য একজনের পক্ষে তার স্বামীকে হত্যা করেছিলেন। [৩]

মিশরে খিস্টপূর্ব ৭৫০-৬৮১ সময়ে শূলে চড়ানোর দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। মিশরের রাজা দ্বিতীয় সার্জন তার রাজধানীতে আক্রমণ ও বিদ্রোহ করার দায়ে ১৪ জন রাজদ্রোহীকে জনসমক্ষে শূলে চড়ান।

পারস্যের রাজা প্রথম দারিউস (খিস্টপূর্ব ৫৫০-৪৮৬) ব্যাবিলন জয় করার পর প্রায় ৩ হাজার ব্যাবিলনীয়কে শূলে চড়িয়েছিলেন। [৪] শূলে চড়ানোর মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি কুখ্যাত ছিল প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের ওয়ালেশিয়া রাজ্যের যুবরাজ তৃতীয় ভ্লাদ, যাকে বলা হয় ড্রাকুলা। তৎকালীন তুরস্কে এ পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। তুর্কিরাও এ পদ্ধতিটি শিখে নিয়েছিল। ড্রাকুলা যুদ্ধবন্দি ও রাজদ্রোহীদের শূলে চড়াত সাধারণ প্রজাদের সম্মুখে যাতে তারা ড্রাকুলাকে ভয় পায়। তার শত্রুদের জন্যও এটা ছিল তার ভয়াবহতার ইঙ্গিত। তবে ড্রাকুলার শূলে চড়ানোর পদ্ধতি ছিল ভিন্নতর। পেট অথবা পিঠের মধ্য দিয়ে সুচালো কোনো দণ্ড ঢুকিয়ে দিয়ে তা মাটিতে গেঁড়ে দেওয়া হতো। এভাবে একসঙ্গে অনেক মানুষকে শূলে চড়িয়েছেন ড্রাকুলা।

কুখ্যাত ড্রাকুলাকে নিয়ে সিনেমাও নির্মিত হয়েছে। কিছু কিছু সিনেমায় শূলে চড়ানোকে ভ্যাম্পায়ারদের হত্যা করার পদ্ধতি হিসেবে দেখানো হয়েছে।

আফ্রিকান উপজাতি জুলুদের মধ্যে শূলে চড়ানো প্রচলিত ছিল। জাপান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়ায়ও একসময় এ পদ্ধতি প্রচলিত ছিল।পাক-ভারত উপমহাদেশের মধ্যে ভারতের তামিলনাড়ু ও কেরালা প্রদেশে নিকট অতীতে শূলে চড়ানোর মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো।

প্রক্রিয়া

একটি সুচালো দণ্ড বা খুঁটিকে দেহের বিভিন্ন ছিদ্রপথে বিশেষ করে পায়ুপথে প্রবেশ করানো হতো। তারপর খুঁটিটিকে মাটিতে গেঁড়ে দেওয়া হতো। একসময় সুচালো অংশটি অপরাধীর শরীর ভেদ করে বুক অথবা ঘাড় দিয়ে বেরিয়ে যেত। অনেক সময় খুঁটির মাথা সুচালো না করে ভোঁতা রাখা হত যাতে হৃৎপিণ্ড বা অন্যান্য প্রধান অঙ্গ বিদ্ধ হয়ে তাড়াতাড়ি মারা না যায়। এতে অপরাধী বেশি কষ্ট পেত। কেননা মারা যেতে কয়েক মিনিট [৫] বা ঘণ্টা [৬] এমনকি কয়েকদিনও সময় লাগত। [৭]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী