শিবাজি গণেশন

ভারতীয় অভিনেতা এবং রাজনীতিবিদ

শিবাজি গণেশন (তামিল: சிவாஜி கணேசன்; ১৯২৮-২০০১) ভারতের তামিল চলচ্চিত্র শিল্পের একজন অভিনেতা ছিলেন। তামিল চলচ্চিত্র শিল্পে পঞ্চাশের দশকে নায়ক হিসেবে কাজ শুরু করা শিবাজি নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত অভিনয়ে সক্রিয় ছিলেন। তার চলচ্চিত্রে অভিনয় এবং সংলাপ ভারতীয় সেরা অভিনেতাদের অভিনয় এবং সংলাপগুলোর মধ্যে অন্যতম। তামিল ভাষায় তাকে সম্মানের সঙ্গে বলা হয় নাদিগার তিলাগাম যার বাংলা অর্থ হচ্ছে অভিনেতাদের গর্ব। এছাড়াও তাকে বলা হয় ভারতের মার্লোন ব্রান্ডো[৭][৮] তিনি তামিল, তেলুগু, কন্নড়, মালায়ালাম এবং হিন্দি ভাষায় মোট ২৮৮টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন এবং অধিকাংশই ছিলো তামিল ভাষার।[৯]

শেভালিয়ার পদ্মভূষণ

শিবাজি গণেশন
শিবাজি সর্ববামে এবং তার পাশে রাজনীতিবিদ করুণানিধি
জন্ম
ভেট্টাইতিডাল চিন্নাইয়া মানরায়ার গণেশমূর্তি

(১৯২৮-১০-০১)১ অক্টোবর ১৯২৮[১][২][৩][৪][৫]
ভেট্টাইতিডাল,মান্নারগুড়ি, তাঞ্জাবুর জেলা, তামিলনাড়ু
মৃত্যু২১ জুলাই ২০০১(2001-07-21) (বয়স ৭২)
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামনাদিগার তিলাগাম[৬]
কর্মজীবন১৯৫২-১৯৯৯
দাম্পত্য সঙ্গীকমলা
সন্তানরামকুমার গণেশন
প্রভু, শান্তি, দেনমোড়ি
পিতা-মাতাপিতা : চিন্নাইয়া মানরায়ার
মাতা : রাজমণি আম্মাল
পুরস্কার

পূর্ব জীবন

১৯২৮ সালের ১ অক্টোবর তামিলনাড়ু রাজ্যের তাঞ্জাবুর জেলাতে জন্মগ্রহণ করেন শিবাজি, জন্মের পর তার বাবা-মা তার নাম গণেশমূর্তি রেখেছিলেন। তার বাবার নাম ছিলো চিনরাইয়া মানরায়ার এবং মায়ের নাম ছিলো রাজমণি আম্মাল। তিনি ছিলেন চতুর্থ সন্তান। শৈশবে শিবাজি মঞ্চনাটকে অভিনয় করতেন। মূলত "শিবাজি কান্ডা হিন্দু রাজ্যম" নামের একটি মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের পর শিবাজি নিজেই নিজের নাম "শিবাজি" ধারণ করেন। এই নামটিই তার পছন্দ হয়েছিলো। তখন তিনি কুড়ি বছরের তরুণ।

চলচ্চিত্র জগতে পদচারণা

১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ সাল

১৯৪০ এবং ১৯৫০-এর দশকের তামিল চলচ্চিত্র জগতে তেলুগুভাষী লোকদের প্রাধান্য ছিলো। তখনকার তামিল চলচ্চিত্রের অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও ছিলেন তেলুগু। শিবাজি একজন তেলুগু চলচ্চিত্র অভিনেতার একটি তামিল চলচ্চিত্রের তামিল সংলাপ ডাবিং করে দিয়েছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে সিএন আন্নাদুরাই এবং করুণানিধি মুথুবেল-এর মত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের কারণে তামিল ভাষার মর্যাদা বাড়তে থাকে। ১৯৫২ সালে "পরাশক্তি" নামের তামিল চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি নিজের চলচ্চিত্র অভিনয় জীবন শুরু করেন।[১০] এই "পরাশক্তি" চলচ্চিত্রের নায়িকা ছিলেন পান্ডারী বাই

পঞ্চাশের দশকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে স্থান করে নেন শিবাজি, তিনি আরেক তামিল অভিনেতা এমজিআরের সঙ্গে জনপ্রিয়তার পরীক্ষা দিতেন এবং পারতেনও।[১১]

১৯৫৪-১৯৬৮; ষাটের দশকের জনপ্রিয়তা

১৯৫৯ সালের চলচ্চিত্র "বীরপান্ডিয়া কাট্টাবোম্মান" এর জন্য শিবাজি ১৯৬০ সালে কায়রোতে অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশীয় চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান।[১২] শিবাজি ভারতের প্রথম অভিনেতা ছিলেন যিনি বিদেশী পুরস্কার পেয়েছিলেন।

ষাটের দশকের তামিল চলচ্চিত্র জগতে শিবাজি ছিলেন শীর্ষ অভিনেতা, তিনি এমজিআর এবং জেমিনি গণেশনকেও জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। সাবিত্রী (জেমিনি গণেশনের পত্নী হন পরে) যিনি ছিলেন তেলুগুভাষী মানুষ তার সঙ্গে অভিনীত "পাশামালার" (১৯৬১) চলচ্চিত্রকে ধরা হয় শিবাজি এবং সাবিত্রীর একসঙ্গে অভিনয় করা সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র। এই সাবিত্রীর সঙ্গেই শিবাজী তার কর্মজীবনের শততম চলচ্চিত্র "নবরাত্রি" (১৯৬৪)তে অভিনয় করেছিলেন।[১৩] ষাটের দশকে "উটি ভারাই উরাভু" এবং "পুদিয়া পারভাই" চলচ্চিত্রে তিনি যথাক্রমে কে আর বিজয়া এবং বি. সরোজা দেবীর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন, এই নায়িকাদ্বয় তৎকালীন তামিল চলচ্চিত্র জগতে বেশ কিছু ভালো চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছিলেন। "দেইবা মাগান" (১৯৬৯) ছিলো পরবর্তী জীবনের রাজনীতিবিদ জয়রাম জয়ললিতার সঙ্গে অভিনয় করা একটি চলচ্চিত্র যেটাও ষাটের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় তামিল চলচ্চিত্র ছিলো। একই বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র "সিভানদা মান"-এর হিন্দি সংস্করণ ধরতী (১৯৭০)-এ শিবাজি সহ-ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, "সিভানদা মান"-এ শিবাজি ছিলেন নায়ক আর নায়িকা ছিলেন কাঞ্চনা, হিন্দি সংস্করণে নায়ক ছিলেন রাজেন্দ্র কুমার আর নায়িকা ছিলেন ওয়াহিদা রেহমান, শিবাজি এই হিন্দি চলচ্চিত্রে মূল তামিল চলচ্চিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা আর. মুথুরমণের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

পরবর্তী চলচ্চিত্র জীবন

সত্তরের দশকেও শিবাজি কয়েকটা চলচ্চিত্রে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন যেমন "ডক্টর শিবা" চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে তার চেয়ে বয়সে অনেক ছোটো সহ-অভিনেত্রী মঞ্জুলা বিকিনি পরেছিলেন; শিবাজি রাজেশ খান্না অভিনীত ষাটের দশকের চলচ্চিত্র "আরাধনা" চলচ্চিত্রের পুনঃনির্মাণ "শিবাগামিইন সেলভান" (১৯৭৫)-এ অভিনয় করেছিলেন। ১৯৮০-এর দশকে শিবাজি বড় পুলিশ কর্মকর্তা বা অভিভাবকের ভূমিকায় অভিনয় করা শুরু করেন, ১৯৯০-এর দশকে পর্যন্ত তিনি এ-ধারা চালু রাখেন, কমল হাসনের সঙ্গে অভিনয় করা "তেবর মাগান" (১৯৯২)-এ তার অভিনয় ছিলো ভূয়সী প্রশংসিত।[১৪]

ব্যক্তিগত জীবন

শিবাজি ১৯৫২ সালে কমলা নামের এক নারীকে অভিভাবক দ্বারা বিয়ে করেন, তাদের দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে হয়; এক ছেলে প্রভু আশির দশকে তামিল চলচ্চিত্র জগতে অভিনেতা হিসেবে যোগ দিয়ে ভালো পরিচিতি অর্জন করতে সক্ষম হন। প্রভু শিবাজির কাছ থেকেই অভিনয় শিখেছিলেন।[১৫][১৬] তার অন্য ছেলের নাম রামকুমার, আর দুই মেয়ের নাম হলো শান্তি আর দেনমোড়ি।

মৃত্যু

২০০১ সালের ২১শে জুলাই শিবাজি চেন্নাইতে মারা যান, তার হৃদরোগ ছিলো।[১৭]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী