শাহ মীর রাজবংশ

শাহ মীর রাজবংশ ভারতীয় উপমহাদেশের একটি মুসলিম রাজবংশ, যারা কাশ্মীর অঞ্চল শাসন করেছে।[১] ১৩৩৯ থেকে ১৫৬১ সাল পর্যন্ত এই রাজবংশের শাসনামলে কাশ্মীরে ইসলাম দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

শাহ মীর রাজবংশ

১৩৩৯–১৫৬১
শাহ মীর রাজবংশ কাশ্মীর-এ অবস্থিত
Srinagar
Srinagar
Rajauri
Rajauri
Budhal
Budhal
Swat, Pakistan
Swat, Pakistan
Gilgit
Gilgit
Leh
Leh
কাশ্মীরের অঞ্চল এবং প্রধান শহরগুলি
রাজধানীশ্রীনগর
প্রচলিত ভাষাকাশ্মিরি,
পারস্য
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম
সরকাররাজতন্ত্র
সুলতান 
• ১৩৩৯-১৩৪২
শামস-উদ-দ্বীন
• ১৪১৮-১৪১৯
১৪২০-১৪৭০
জঈন-উল-আবিদীন
ইতিহাস 
• প্রতিষ্ঠা
১৩৩৯
• বিলুপ্ত
১৫৬১
মুদ্রাস্বর্ণ দিনার,
রৌপ্য দিরহাম,
তাম্র মুদ্রা.
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
লোহারা রাজবংশ
চক রাজবংশ

উৎস

শ্রীনগর
রাজৌরি
বুধাল
সোয়াত, পাকিস্তান
গিলগিত
লেহ
কাশ্মীর

১৩৩৯ খ্রিস্টাব্দে শাহ মীর রাজবংশটি প্রতিষ্ঠা করেন, শাহ মীরের উৎপত্তি সম্পর্কে দুটি তত্ত্ব রয়েছে। ঐতিহাসিক এ.কিউ. রফিক বলেন যে কাশ্মীরের কিছু পারস্য ইতিহাসে শাহ মীরকে সোয়াত শাসকদের বংশধর হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।[ক] তিনি আরও মনে করেন যে সম্ভবত তিনি সোয়াতের পারস্য বা তুর্কি অভিবাসীদের বংশধর।[৩] আরও বলা হয় যে তিনি এমন একটি পরিবারের ছিলেন, যারা তপস্বী মীর সাইয়্যিদ আলী হামাদানীর সাথে ছিলেন, এবং যারা কাশ্মীরের কুবরাভিয়া’ সুফি গোষ্ঠীর সাথে জড়িত ছিলেন।[৪]

অন্যদিকে, ১৫শ শতাব্দীর কাশ্মীরি ঐতিহাসিক জোনারাজা শাহ মীরের বংশধর বুদশাহর দরবারে উৎকীর্ণ লেখা থেকে বলেন যে, শাহ মীর পঞ্চগহ্বর (রাজৌরি ও বুধালের মধ্যবর্তী পাঞ্চগব্বার উপত্যকা হিসাবে চিহ্নিত) থেকে তাঁর উপজাতির সাথে কাশ্মীরে এসেছিলেন। তিনি পার্থ নামে এক পূর্বপুরুষের পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যাকে দ্বিতীয় পার্থ (মহাভারতের বীর অর্জুনের ইঙ্গিত) হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।[৫][৬] কিছু বুদ্ধা মনে করেন যে, পঞ্জগব্বর উপত্যকাটিতে খাসাগণ বসবাস করে এবং তাই শাহ মীরকে খাসা জাতিসত্তার বলে পরিচয় দেয়।[৭][৮][৯]

বেশিরভাগ আধুনিক ইতিহাসবিদ শাহ মীরের সোয়াতি উৎস গ্রহণ করেন। সোয়াতি হলো আফগানরা যারা গজনভীর সময়ে দির মালাকান্দ অঞ্চলে এসেছিল।[৪][১০][১১][১২] কাশ্মীরি পণ্ডিত এন. কে. জুতসি সমালোচনামূলকভাবে সূত্রগুলি পরীক্ষা করে দেখেছিলেন যে দুটি পার্সিয়ান ইতিহাসে সোয়াতের পরিবর্তে সোয়াদগীরের উল্লেখ রয়েছে, যা "গাবরের উপশহর", যা জোনরাজের পঞ্চগহ্বর-সিমানি (পঞ্চগাগভরার সীমান্তে) বর্ণনার সাথে মিলে যায়।[১৩]

এ. কিউ. রফিকী বলেন:

সুহাদেবের (১৩০১-১৩২০) রাজত্বকালে শাহ মীর তাঁর পরিবারসহ ১৩১৩ সালে কাশ্মীরে এসেছিলেন, তার চাকরিতে তিনি প্রবেশ করেছিলেন। পরবর্তী বছরগুলিতে বিচক্ষণতা ও দক্ষতার জন্য শাহ মীর খ্যাতি লাভ করেন এবং তাঁর সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিনত হন।[১৪]

স্থাপত্য

কাশ্মীরে এই রাজবংশ দ্বারা নির্মিত উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য প্রকল্পের মধ্যে আছে:

  • শ্রীনগরের জামিয়া মসজিদ
    জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের জামিয়া মসজিদ
  • জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের খাঁনকাহ-ই-মউলা
  • জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের আলী মসজিদ
  • শ্রীনগরে অবস্থিত জয়ন-উল-আবিদিনের মায়ের সমাধি
    জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে জয়ন-উল-আবিদীন মায়ের সমাধি
  • গিলগিট-বালতিস্তানের শিগরের আম্বুরিক মসজিদ
  • গিলগিট-বালতিস্তানের খাপলুতে চকচান মসজিদ

শাহ মীর

শাহ মীর কাশ্মীরে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন এবং তাঁর বংশধর শাসকগণ বিশেষকরে সিকান্দার বুতশিকান তাঁর সহযোগী ছিলেন। তিনি ১৩৩৯–৪২ সাল পর্যন্ত তিন বছর পাঁচ মাস রাজত্ব করেন। তিনি কাশ্মীরের শাসক এবং শাহ মীর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তাঁর পরে তাঁর দুই পুত্র পর পর রাজা হন।[১৫]

জামশিদ

সুলতান শামসুদ্দীন শাহের পরে তাঁর বড় ছেলে সুলতান জামশিদ এক বছর দুই মাস রাজত্ব করেন। ১৩৪৩ সালে সুলতান জামশিদ তার ভাইয়ের কাছে পরাজিত হন যিনি ১৩৪৭ সালে সুলতান আলাউদ্দীন নামে সিংহাসনে আরোহণ করেন।[১৫]

আলাউ’দ-দীন

সুলতান আলাউদ্দীনের দুই পুত্র পর পর রাজা হন, সুলতান শিহাবুদ্দীন এবং সুলতান কুতবুদ্দীন। [১৫]

রাজত্ব এবং উত্তরাধিকার

অগ্রগণ্যতানামখ্রিস্টাব্দ
শামসুদ্দীন শাহ১৩৩৯
জামশেদ১৩৪২
আলাউদ্দীন১৩৪৩
শিহুদ্দীন১৩৫৪
কুতুবুদ্দীন১৩৭৩
সিকান্দার১৩৮৯
আলী শাহ১৪১৩
জয়নুল আবেদীন১৪২০
হাসান শাহ১৪৭২
১০মুহাম্মদ শাহ (i)১৪৮৪
১১ফতেহ শাহ (i)১৪৮৬
১২মুহাম্মদ শাহ (ii)১৪৯৩
১৩ফতেহ শাহ (ii)১৫০৫
১৪মুহাম্মদ শাহ (iii)১৫১৪
১৫ফতেহ শাহ (ii1)১৫১৫
১৬মুহাম্মদ শাহ (iv)১৫১৭
১৭ইব্রাহীম শাহ (i)১৫২৮
১৮নাজুক শাহ (i)১৫২৯
১৯মুহাম্মদ শাহ (v)১৫৩০
২০শামসুদ্দীন (ii)১৫৩৭
২১ইসমাইল শাহ (i)১৫৪০
১৭নাজুক শাহ (ii) (i)১৫৪০
১৮ইব্রাহীম শাহ (i)১৫৫২
১৯ইসমাইল শাহ (ii) (v)১৫৫৫
২০হাবিব শাহ১৫৫৭-১৫৬১

[১৬]

দ্রষ্টব্য: মুহাম্মদ শাহের ১৪৮৪ থেকে ১৫৩৭ সাল পর্যন্ত পাঁচটি আলাদা শাসনকাল ছিল। [১৭]

আরও দেখুন

  • সিকান্দার বুতশিকান
  • জয়নুল আবেদীন
  • মীর সাইয়িদ আলী হামাদানী
  • সুন্নি মুসলিম রাজবংশের তালিকা

টীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী