শামসুল হক ফরিদপুরী

বাংলাদেশী ইসলামি চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ ও লেখক

শামসুল হক ফরিদপুরী(রহ.) একজন বাংলাদেশী ইসলামি চিন্তাবিদ, প্রখ্যাত আলেম, সমাজ-সংস্কারক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি লালবাগ জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া কওমি মাদ্রাসা সহ গওহরডাঙ্গা কওমি মাদ্রাসা, ফরিদাবাদ কওমি মাদ্রাসা এবং বড় কাটারা কওমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় নেতা।[৩][১][৪]

মুজাহিদে আযম, আল্লামা
শামসুল হক ফরিদপুরী(রহ.)
উপাধিসদর সাহেব হুজুর, শাইখুল হাদীস, আল্লামা, মুজাহিদে আজম[১]
জন্ম১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দ
গওহরডাঙ্গা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা, গোপালগঞ্জ জেলা
মৃত্যু২১ জানুয়ারি ১৯৬৯(1969-01-21) (বয়স ৭২–৭৩)[২]
সমাধি স্থানগওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা
জাতিভুক্তবাংলাদেশী
মাজহাবহানাফি
শাখাদেওবন্দি
মূল আগ্রহইসলাম,হাদিস, রাজনীতি, সমাজসেবা, সমাজ সংস্কার
লক্ষণীয় কাজলালবাগ জামিয়া আরাবিয়া কুরআনিয়া প্রতিষ্ঠা, জামেয়াতুল আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, ইসলামি গবেষণাগার ইদারাতুল মা'আরিফ প্রতিষ্ঠা, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম তাফসীর গ্রন্থ রচনা
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন
স্বাক্ষর

জন্ম ও পরিবার

তিনি ১৩০২ বঙ্গাব্দের ২ ফাল্গুন গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের ঘোপেরডাঙ্গা (গওহরডাঙ্গা) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষগণ প্রায় তিনশো বছর পূর্বে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আরব থেকে বাংলায় আগমন করেন। তার পিতার নাম মুন্সি মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ এবং মাতার নাম আমেনা খাতুন। তার পিতা মুন্সি আবদুল্লাহ ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে সিপাহী বিপ্লবে এবং তার দাদা চেরাগ আলী সৈয়দ আহমদ শহীদের শিখ-ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[২][৫]

শিক্ষাজীবন

ছদর সাহেব(রহ.) পাটগাতীর স্থানীয় জনৈক হিন্দু পণ্ডিতের কাছে লেখাপড়া শুরু করেন। এরপর টুঙ্গিপাড়া এবং বরিশালের সুটিয়াকাঠি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নোয়াপাড়ার বাঘরিয়া হাই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখা-পড়া সমাপ্ত করার পর সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় এবং ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসার এ্যাংলো পার্সিয়ান (ইংলিশ মিডিয়াম) বিভাগ থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি স্কলারশিপ নিয়ে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। কিছুদিন পর শুরু হয় মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন। তখন তিনি কলেজ ত্যাগ করে থানাভবনে হাকীমুল উম্মাত মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর কাছে চলে আসেন।[৬]

এরপর তিনি থানভী রহ.এর পরামর্শে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে সাহারানপুরের মাযাহিরুল উলুম মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে ইসলামিয়্যাতে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক শিক্ষা অর্জন করেন। (কাফিয়া থেকে মেশকাত পর্যন্ত) এরপর দারুল উলুম দেওবন্দে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেন। আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী, শায়খুল ইসলাম মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী ও শায়খুল আদব এজাজ আলী প্রমুখ মনীষীগণের নিকট তিনি হাদীস অধ্যয়ন করেন। তিনি মাওলানা জাফর আহমাদ উসমানী ও মাওলানা আব্দুল গনী প্রমুখ মনীষীগণ থেকেও খেলাফত লাভ করেন।

কর্মজীবন

কর্মজীবনে পূর্ণ সময়ে তিনি হাদীস অধ্যাপনায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দেশে ফিরে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসায় অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থিত জামিয়া ইউনূসিয়ায়। এরপর ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ছিলেন ঢাকার আশরাফুল উলুম বড় কাটারায় । ১৯৫১ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হাদীসের দরস দেন ঢাকার ঐতিহাসিক মাদরাসা জামিয়া কুরআনিয়া লালবাগে। কর্মময় জীবনে তিনি বহু মাদরাসা ও মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। তন্মধ্যে ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে বাগেরহাটের গজালিয়া মাদ্রাসা, ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে আশরাফুল উলূম বড় কাটরা মাদ্রাসা, ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা, ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার লালবাগে জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ, ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার ফরিদাবাদের জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম উল্লেখযোগ্য।[৬]

পারিবারিক জীবন

তাঁর দুই পুত্র। কনিষ্ঠ পুত্র বাইতুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমিন। মাওলানা আব্দুল মান্নান কাশিয়ানী তাঁর জামাতা।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী