লুত (ইসলাম)
লুত ইবনে হারান (لوط, Lūṭ), যিনি সচরাচর হযরত লুত নামে অভিহিত, বাইবেল এবং কুরআনে উল্লেখিত আল্লাহ প্রেরিত একজন পয়গম্বর যাকে সদোম ও গোমোরাহ নামক শহরদ্বয়ের অধিবাসীদের নবী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল।[১][২] তিনি ছিলেন নবী ইব্রাহীমের আপন ভাতিজা।[৩] ইব্রাহীমের সঙ্গে তিনি কেনানে চলে আসেন। সেখানেই তার উপর নবুয়াতের দায়িত্ব অবতীর্ণ হয়। [৪]পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবীর মধ্যে ইসলামের একজন নবী যাকে সমকামিতায় লিপ্ত থাকা স্বীয় জাতির সতর্ককারী হিসেবে আল্লাহ তাআলা নিয়োজিত করেছিলেন। সমকামিতা ত্যাগ না করায় তারা আল্লাহর আযাবে সমূলে ধ্বংস হয়েছিলো।
জন্ম | কল্দীয় দেশের ঊর, ইরাক |
---|---|
মৃত্যু | বনী নাঈম, পশ্চিম তীর |
অন্যান্য নাম | লোট (হিব্রু ভাষায়: לוֹט) লূত বিন হারান (আরবি: لوط بن هاران) |
দাম্পত্য সঙ্গী | লূতের স্ত্রী |
সন্তান | লূতের কন্যাগণ |
পিতা-মাতা | হারান (পিতা) |
আত্মীয় | ইব্রাহিম (চাচা) |
কুরআনের বর্ণনানুসারে লূত (আঃ) এবং তার সম্প্রদায়ের কাহিনী
পবিত্র কুরআনে ১৫,২৬,২৯ এবং ৬৬ নম্বর সূরাসমূহের বিভিন্ন অংশে লূত (আঃ) এর কাহিনী বর্ণনা করেন।
লূত (আঃ) এর জাতি পার্থিব উন্নতির চরম উৎকর্ষে পৌছে যাওয়ার কারণে বিলাসিতার অতিশয্যে সীমালঙ্ঘনের দিক দিয়ে তাদের পূর্বের গযবপ্রাপ্ত জাতিগুলোকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। লূত (আঃ) এর জাতি ব্যভিচার ও অজাচার তো করতোই, তার উপর সমকামিতার মত চরম সীমালঙ্ঘনও তারাই প্রথম শুরু করে, যা তাদের পূর্বে কেউ কখনো করে নি; উপরন্তু, তারা এর ফলে বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত না হয়ে গর্ব ভরে তা সমাজে প্রকাশ করে বেড়াত এবং প্রকাশ্যে ও নির্লজ্জভাবে এসব নিষিদ্ধ কাজগুলো করত। এজন্য আল্লাহ তা'আলা লূত (আঃ) কে তার জাতির জন্যে সতর্ককারী নবী হিসেবে মনোনীত করলেন এবং আল্লাহ তা'আলা নির্দেশে তাদেরকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বললেন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে সতর্ক করার পরও যখন তাদের পরিবর্তন হল না তখন আল্লাহ তা'আলা চূড়ান্ত বিপর্যয়ের মাধ্যমে সমগ্র এলাকা উল্টিয়ে দেন, আকাশ থেকে একাধারে বৃষ্টি ও পাথর বর্ষণ করে সমগ্র জাতিকে সমুলে নিশ্চিহ্ন করে দেন। বর্ণিত আছে, বর্তমান মৃত সাগর বা ডেড সি হল লূত (আঃ) এর জাতির সেই বাসস্থান, যেখানে তাদের ধ্বংস করা হয়েছিলো।
লূত (আঃ)-এর স্ত্রী‘র অবস্থা
লূত (আঃ) এর স্ত্রী কুরআনে সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে বর্নিত হয়েছে। কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী সডোম ও গোমরাহ অঞ্চলের অধিবাসীদের সঙ্গে তার মৃত্যু হয়।।
বাইবেল-এর বর্ণনানুসারে লূত-এর কাহিনী
বাইবেলেও লূত (আঃ) এর কাহিনী পাওয়া যায়।[৫] তবে জেনেসিস, ১৯ অধ্যায় (আয়াত ৪ - ৯) এর অতিরিক্ত কিছু কাহিনী (তার কন্যাদের সংশ্লিষ্ট) নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের (অর্থাৎ বাইবেলের তথা জেনেসিসের নির্ভেজাল সংস্করণ) অভাবে বিতর্কিত হয়ে আছে। তাই লভ্য বাইবেলের (জেনেসিস, ১৯ অধ্যায়) বর্ণনা ইসলামে সর্বাংশে গ্রহণ করা হয়নি।