লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড

লন্ডনের ঐতিহাসিক ক্রিকেট খেলার মাঠ
(লর্ডস থেকে পুনর্নির্দেশিত)

লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড (ইংরেজি: Lord's Cricket Ground) সচরাচর লর্ডস নামেই ক্রিকেট বিশ্বে সমধিক পরিচিত। লন্ডনের সেন্ট জন’স উড এলাকায় অবস্থিত একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট মাঠ। মাঠটি যুক্তরাজ্যের সর্ববৃহৎ ক্রিকেট মাঠ; এর পরের অবস্থানেই রয়েছে এজবাস্টন[১] মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসি’র স্বত্ত্বাধিকারী ও মাঠের প্রতিষ্ঠাতা টমাস লর্ডের নামানুসারে এ মাঠের নামকরণ করা হয়েছে। মিডলসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব, ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি), ইউরোপীয় ক্রিকেট কাউন্সিলের (ইসিসি) সদর দফতর এখানেই অবস্থিত। আগস্ট, ২০০৫ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সদর দফতর এখানে ছিল। বৈশ্বিকভাবে লর্ডসকে ক্রিকেটের আবাসভূমি নামে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।[২] এছাড়াও, বিশ্বের প্রাচীনতম ক্রীড়া যাদুঘরের কেন্দ্রস্থল এটি।[৩] বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১০টি ফাইনাল খেলা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সাতটি মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তন্মধ্যে, লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড একমাত্র স্টেডিয়াম হিসেবে ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮৩১৯৯৯ - চারবার ফাইনাল খেলা আয়োজন করেছে।[৪]

লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড
লর্ডস
লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের বৃহৎ স্থিরচিত্র
স্টেডিয়ামের তথ্যাবলি
অবস্থানসেন্ট জন’স উড, লন্ডন
দেশইংল্যান্ড
প্রতিষ্ঠা১৮১৪
ধারণক্ষমতা২৮,০০০
স্বত্ত্বাধিকারীমেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব
ভাড়াটেইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড
প্রান্তসমূহ
প্যাভিলিয়ন এন্ড
নার্সারি এন্ড
আন্তর্জাতিক খেলার তথ্য
প্রথম পুরুষ টেস্ট২১ জুলাই ১৮৮৪:
ইংল্যান্ড  বনাম  অস্ট্রেলিয়া
সর্বশেষ পুরুষ টেস্ট১৭ জুলাই ২০১৪:
ইংল্যান্ড  বনাম  ভারত
প্রথম পুরুষ ওডিআই২৬ আগস্ট ১৯৭২:
ইংল্যান্ড  বনাম  অস্ট্রেলিয়া
সর্বশেষ পুরুষ ওডিআই৩১ মে ২০১৪:
ইংল্যান্ড  বনাম  শ্রীলঙ্কা
ঘরোয়া দলের তথ্য
মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব(১৮১৪-বর্তমান)
মিডলসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব(১৮৭৭-বর্তমান)
১৫ এপ্রিল ২০১৪ অনুযায়ী
উৎস: CricketArchive

ইতিহাস

বর্তমানের লর্ডস মাঠটি তার প্রকৃত অবস্থানে নেই। ১৭৮৭ থেকে ১৮১৪ সালের মধ্যে লর্ড কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তিনটি মাঠের মধ্যে তৃতীয় হিসেবে এ মাঠটি বিবেচিত হয়ে আসছে। প্রথম মাঠ লর্ডস ওল্ড গ্রাউন্ড বর্তমানে ডরসেট স্কয়ার নামে পরিচিত। দ্বিতীয় মাঠ লর্ডস মিডল গ্রাউন্ড ১৮১১ থেকে ১৮১৩ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত যা রিজেন্ট’স ক্যানেলের জন্যে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বর্তমানের লর্ডস মাঠটি মিডল গ্রাউন্ডের উত্তর-পশ্চিমাংশের ২৫০ গজ দূরে অবস্থিত। বড় ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হিসেবে আসন সংখ্যা দশ হাজার বৃদ্ধিসহ আরও ভবন নির্মাণের পরিকল্পনাটি এমসিসি’র বিতর্কিত ভূমিকার জন্যে অদ্যাবধি অনুমোদিত হয়নি।[৫][৬]

২২ জুন, ১৮১৪ সালে বর্তমান লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম খেলা হয় মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব বনাম হার্টফোর্ডশায়্যারের মধ্যেকার ক্রিকেট খেলার মাধ্যমে।[৭]

মাঠের বিবরণ

স্ট্যান্ড

লর্ডসের বর্তমান স্ট্যান্ডসমূহ

বর্তমানে লর্ডসে নিম্নবর্ণিত স্ট্যান্ড রয়েছে:-

  • দ্য প্যাভিলিয়ন
  • ওয়ার্নার স্ট্যান্ড
  • গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড
  • কম্পটন স্ট্যান্ড
  • মিডিয়া সেন্টার
  • এডরিচ স্ট্যান্ড
  • মাউন্ড স্ট্যান্ড
  • ট্যাভার্ন স্ট্যান্ড
  • অ্যালেন স্ট্যান্ড

বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধ্বে অধিকাংশ স্ট্যান্ডের পুণনির্মাণ করা হয়। ১৯৮৭ সালে নতুন মাউন্ড স্ট্যান্ড স্যার মাইকেল হপকিন্সের নকশায় তৈরী করা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে নিকোলাস গ্রিমশয়ের নকশায় গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ফিউচার সিস্টেমসের মাধ্যমে মিডিয়া সেন্টার গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস কর্তৃক ১৯৯৯ সালে মিডিয়া সেন্টারের নির্মাণশৈলীর জন্য স্টার্লিং পুরস্কার লাভ করে। বর্তমানে মাঠে সর্বোচ্চ ৩২,০০০ দর্শক ধারণ করতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের পীচের নামকরণ করা হয়েছে প্যাভিলিয়ন এন্ড; যেখানে প্যাভিলিয়নের প্রধান সদস্যরা অবস্থান করেন। অন্যদিকে মিডিয়া সেন্টার বরাবর উত্তর-পূর্ব প্রান্তে নার্সারী এন্ড রয়েছে।

প্যাভিলিয়ন

ভিক্টোরিয়া যুগের স্থাপনা হিসেবে প্যাভিলিয়নসহ লং রুমটি ১৮৮৯-৯০ মৌসুমে স্থাপিত হয়। এটি বিখ্যাত স্থপতি টমাস ভেরিটি কর্তৃক নকশামাফিক তৈরী করা হয়েছে। ঐতিহাসিক স্থাপনাটি দ্বিতীয় স্তরের তালিকাভূক্ত ভবন হিসেবে ২০০৪-০৫ মৌসুমে পুণঃনির্মাণ পরিকল্পনায় আট মিলিয়ন পাউন্ড-স্টার্লিং বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রধানত এমসিসি’র সদস্যদের জন্য প্যাভিলিয়নটি তৈরী করা হয়েছে। ক্রিকেট খেলা দেখার জন্য আসন, লং রুম, লং রুম বার, বোলার্স বার, সদস্যদের জন্য দোকানপাট ইত্যাদি সুবিধাদি এখানে রয়েছে। মিডলসেক্সের খেলার সময় প্যাভিলিয়নটি ক্লাবের সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এছাড়াও, প্যাভিলিয়নে পোশাক বদলের জন্য ড্রেসিং রুম, খেলা দেখার জন্য খেলোয়াড়দের ছোট্ট বারান্দার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দু’টো প্রধান ড্রেসিং বোর্ডে অনার্স বোর্ড আছে যাতে টেস্টে ব্যাটসম্যানদের সেঞ্চুরি ও ইনিংসে পাঁচ উইকেট এবং টেস্টে দশ উইকেট লাভকারী বোলারদের তালিকা উল্লেখ করা থাকে। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ৩১ জুলাই, ১৮৯৯ সালে মন্টি নোবেলের বলে প্যাভিলিয়নে বল ঢুকিয়েছেন আলবার্ট ট্রট

অন্যান্য

বর্তমান মাঠে ২০১৪ সালে দুইশত বছর উদ্‌যাপন করা হয়। এ উপলক্ষে ৫ জুলাই, ২০১৪ তারিখে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) বনাম বহিঃবিশ্ব একাদশ দলের মধ্যকার ৫০ ওভারের লিস্ট এ ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়। দল দুইটিতে যথাক্রমে শচীন তেন্ডুলকরশেন ওয়ার্ন অধিনায়কত্ব করেন।[৮] খেলায় অ্যারন ফিঞ্চের দায়িত্বশীল অপরাজিত ১৮১ রানের কল্যাণে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটের ব্যবধানে বহিঃবিশ্ব একাদশকে পরাজিত করে।

টেস্ট রেকর্ডসমূহ

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী