যৌন নির্যাতন

একজনের উপর অন্যজনের চাপিয়ে দেওয়া অনিচ্ছাকৃত যৌন আচরণকে যৌন নির্যাতন বা উৎপীড়ন বলা হয়। যখন প্রত্যক্ষভাবে স্বল্প সময়ের জন্যে অথবা পরোক্ষভাবে জোর করা হয় তখন তাকে যৌন লাঞ্ছনা বলা হয়। অপরাধীকে যৌন নির্যাতক (যদি হানিকর হয়) বা উৎপীড়ক বলে অভিহিত করা হয়। [১] যদি কোন প্রাপ্তবয়ষ্ক লোক বা তরুণ কোন শিশুকে যৌন কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্যে অনুপ্রেরণা দেয় তাকেও যৌন নির্যাতন বলা হবে। শিশু বা নাবালকের সাথে অনুপ্রেরণা দিয়ে যৌন কাজে লিপ্ত হলে তাকে শিশু যৌন নির্যাতন বা বিশেষ আইনের আওতায় ধর্ষন বলা হয়।

যৌন নির্যাতন

নির্যাতিত

স্বামী বা স্ত্রী

দাম্পত্য যৌন নির্যাতন পারিবারিক সহিংসতার একটি রূপ । যখন জোরপূর্বক আরেকজন সঙ্গীকে (স্বামী বা স্ত্রী) যৌন কাজে লিপ্ত করা হয় বা লাঞ্ছিত করা হয় তখন আইনের ভাষায় তাকে ধর্ষন বলা যায় ।

শিশু

শিশু যৌন নির্যাতন শিশু নির্যাতনের একটা রূপ যা কোন প্রাপ্তবয়ষ্ক লোক বা তরুণ তাদের যৌন পরিতৃপ্তির জন্য ব্যবহার করে । [২][৩] এটা কোন প্রাপ্তবয়ষ্ক লোকের যৌন পরিতৃপ্তি অর্জনের জন্যে শিশুকে রাজি করিয়ে বা চাপ প্রয়োগ করে বা ভয় দেখিয়ে বা জবরদস্তি করে বা পর্ণোগ্রাফী দেখিয়ে বা পর্ণোগ্রাফী তৈরির উদ্দ্যেশে সরাসরি যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে হতে পারে বা বিশেষ অঙ্গে (যোনীতে, স্তনের বোঁটায় ইত্যাদি) অশালীন সংস্পর্শের মাধ্যমে হতে পারে ।[৪][৫]

শিশু যৌন নির্যাতনের প্রভাবের মধ্যে লজ্জা ও আত্নগ্লানি,[৬] হতাশা, দুশ্চিন্তা, ট্রমা পরবর্তী স্ট্রেস ডিসঅর্ডার,আত্নসম্মানের অভাব, যৌন অক্ষমতা, প্রজনন অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাথা, আসক্তি, নিজেকে আঘাত করা, আত্নহত্যার প্রবণতা, বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, পরবর্তীতে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতা অন্তর্ভুক্ত ।[৭] আত্নহত্যার প্রচেষ্টার ঝুকিপূর্ণ প্রভাবক হল শিশু যৌন নির্যাতন ।[৮] নির্যাতিত হওয়ার অনেক বছর পরেও নির্যাতিতের মাঝে অধিকাংশ ক্ষতিই দৃশ্যমান থাকে ।

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পারিবারিক সদস্য বিশেষ করে পৈতৃক মাধ্যম দ্বারা যৌন নির্যাতিত হলে লম্বা সময়ের জন্যে মানসিক ট্রমাসহ ভয়াবহ প্রভাব পড়তে পাড়ে ।[৯]

বিশ্বে ১৮ – ১৯% মহিলা এবং ৮% পুরুষ তাদের শৈশবকালে যৌন নির্যাতিত হওয়ার কথা প্রকাশ্যে এনেছে । [১০][১১] মেয়েদের উচ্চমাত্রায় নির্যাতিত হওয়া বা ছেলেদের যৌন নির্যাতনের কথা প্রকাশ্যে না আনার প্রবণতা বা উভয় কারণের জন্য লিঙ্গ বৈষম্যই মূলত দায়ী । অধিকাংশ শিশু যৌন নির্যাতনকারী নির্যাতিতের পূর্বপরিচিত; ৩০% নির্যাতনকারী খুব নিকট আত্নীয় এমনকি পিতা, কাকা, মামা অথবা কাজিনও হতে পারে; অন্যান্য ৬০% পরিচিতের মধ্যে পারিবারিক বন্ধু, বেবীসিটার অথবা প্রতিবেশী হতে পারে; এছাড়া মাত্র ১০% নির্যাতনকারী অপরিচিত হয়ে থাকে। অধিকাংশ শিশু যৌন নির্যাতন পুরুষের দ্বারা হয়ে থাকে; মহিলাদের দ্বারা সংঘটিত নির্যাতনের ১৪%মেয়েদের প্রতি এবং ৬% ছেলেদের প্রতি হয়ে থাকে বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে ।[১২] যতক্ষণ না পর্যন্ত শিশু বয়সন্ধিকালে পৌছায় ততক্ষণ পর্যন্ত যৌন নির্যাতনকারী শিশুদের প্রতি যৌনতায় আগ্রহ থাকে না । [১৩] তবে বর্তমানে ১২-১৬ বছরের মানুষ / কিশোর দের মধ্যে পর্নোগ্রাফির আসক্ততির কারণ

এ কিশোর -কিশোরীদের কম বয়সে যৌনতা করতে আরোম্ভ করে।যার কারণে কিশোরীরা গর্ভবতী হয়।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ যৌন নির্যাতনের শিকার হতে পারে । গবেষণা অনুযায়ী, চাহিদাসম্পন্ন মানুষ বোধশক্তির অভাবে যৌন লাঞ্ছিত বা নির্যাতিত হওয়ার বড় ঝুঁকিতে আছে । (Sobsey & Varnhagen, 1989)

মানসিক সমস্যাসম্পন্ন মানুষ

বয়স্ক মানুষ বিশেষকরে যাদের মানসিক সমস্যা আছে তারা যৌন নির্যাতনের ঝুঁকিতে আছে । ইংল্যান্ড এর বিভিন্ন কেয়ার হোমে ২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ৬০০০ টি “সুরক্ষা উদ্বেগ ও সতর্কতা” ("safeguarding concerns and alerts") সংক্রান্ত অভিযোগ প্রণিত হয় । এর মধ্যে তথাকথিত ভুল স্পর্শ ও অন্যান্য অভিযোগ ছিল । অপরাধীদের কিছু হোমের কর্মী ছিল কিন্তু অধিকাংশ বাইরের বাসিন্দা ছিল । কিছু কিছু হোমকে সন্দেহ করা হয়েছে যারা ইচ্ছেকরে এই অপরাধ করেছে ।[১৪]

অনেক সময় নির্যাতিতদের বিশ্বাস করা হয় না কারণ মানসিক সমস্যার কারণে তাদেরকে বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষী হিসেবে বিবেচনা করা হয় না । অপরাধীরা বারবার এদের টার্গেট করে কারণ তারা জানে এরা বিশ্বাসের অনুপযোগী । অনেক সময় স্বামী বা স্ত্রী ও সঙ্গী কোন অধিকার নেই এটা অনুধাবন না করে যৌন সম্পর্ক চালিয়ে যায় কারণ মানসিক সমস্যাসম্পন্ন মানুষ কোন কিছুতে সম্মতি দিতে পারে না । [১৫]

বয়ঃজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি

নার্সিং হোমে নির্যাতনের অন্যতম রূপ হল যৌন নির্যাতন । যদি নার্সিং হোম তার কর্মচারীদের পটভূমি পরীক্ষা করে না দেখে যারা পরবর্তীতে তারা যদি যৌন নির্যাতন করে তাহলে হোম এই উদাসীনতার জন্য দায়ী থাকবে । যদি নার্সিং হোম তার কর্মী বা প্রশিক্ষণরত কর্মীদের তাদের নির্যাতনের চিহ্ন চিনতে ব্যর্থ হয় তাহলে এই উদাসীনতার জন্যও দোষী হবে।[১৬] রক্ষণাবেক্ষণকারীদের দ্বারা নির্যাতন একটি অপরাধ। নির্যাতিতরা আত্মসম্মানের ভয়ে বা বিশেষ অঙ্গের উল্লেখের অনিচ্ছার জন্যে নির্যাতনের কোন রিপোর্ট করে না বা তদন্তকারীকে সহায়তা করে না।

চিকিৎসা

ধর্ষিত মহিলাদের ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয় কারণ ৫% ধর্ষণের ক্ষেত্রে গর্ভধারণ হতে পারে । [১৭]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী