ম্যারি টড লিংকন

ম্যারি অ্যান টড লিংকন (ইংরেজি: Mary Ann Todd Lincoln; ১৩ ডিসেম্বর ১৮১৮ - ১৬ জুলাই ১৮৮২) ১৮৬১ থেকে ১৮৬৫ সালে তার স্বামী মার্কিন রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকন আততায়ীর হাতে খুন হওয়া পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি ছিলেন।[১]

ম্যারি টড লিংকন
১৮৬১ সালের আলোকচিত্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি
দায়িত্বরত
৪ মার্চ ১৮৬১ – ১৫ এপ্রিল ১৯৬৫
রাষ্ট্রপতিআব্রাহাম লিংকন
পূর্বসূরীহ্যারিয়েট লেন (ভারপ্রাপ্ত)
উত্তরসূরীএলাইজা জনসন
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মম্যারি অ্যান টড
(১৮১৮-১২-১৩)১৩ ডিসেম্বর ১৮১৮
লেক্সিংটন, কেন্টাকি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু১৬ জুলাই ১৮৮২(1882-07-16) (বয়স ৬৩)
স্প্রিংফিল্ড, ইলিনয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সমাধিস্থললিংকন টুম্ব
দাম্পত্য সঙ্গীআব্রাহাম লিংকন (বি. ১৮৪২; মৃত্যু ১৮৬৫)
সন্তান
  • রবার্ট
  • এডওয়ার্ড
  • উইলি
  • ট্যাড
পিতামাতারবার্ট স্মিথ টড
এলিজাবেথ অ্যান পার্কার টড
স্বাক্ষর

ম্যারি বড় ও ধনাঢ্য ক্রীতদাস মালিক কেন্টাকি পরিবারের সদস্য ছিলেন। তিনি সুশিক্ষিত ছিলেন। তার জন্মনাম ম্যারি অ্যান টড হলেও তার ছোট বোন অ্যান টড (পরবর্তীকালে ক্লার্ক) জন্মগ্রহণ করার পর তার নাম থেকে অ্যান বাদ দিয়ে দেন। কৈশোরে বিদ্যালয়ের পাঠ গ্রহণ শেষ হওয়ার পর তিনি ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের স্প্রিংফিল্ডে তার বিবাহিত বোন এলিজাবেথ এডওয়ার্ডসের সাথে বাস করতেন। আব্রাহাম লিংকনের সাথে বিবাহের পূর্বে তিনি আব্রাহামের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ স্টিফেন এ. ডগলাসের প্রণয়প্রার্থী ছিলেন। ম্যারি লিংকন তার স্বামীকে তার রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে গেছেন এবং মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময় জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি বিলাসবহুল বলনৃত্য ও বিপুল খরচ করে হোয়াইট হাউজ সাজানোর মাধ্যমে হোয়াইট হাউজের সামাজিক কার্যকলাপের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন; তার ব্যয় আতঙ্কের সৃষ্টি করত। ১৮৬৫ সালের ১৪ই এপ্রিল ওয়াশিংটন, ডি.সি.'র টেন্থ স্ট্রিটের ফোর্ড্‌স থিয়েটারের প্রেসিডেন্ট্‌স বক্সে আব্রাহাম লিংকন আততায়ীর হাতে খুন হওয়ার সময় ম্যারি তার পাশেই বসে ছিলেন।

লিংকন দম্পতির চার পুত্র ছিল, তন্মধ্যে শুধু বড় পুত্র রবার্ট বেঁচে ছিলেন। বাকি পুত্ররা তার জীবদ্দশায় মারা যান। ম্যারি লিংকন বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যার মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করেন। তার প্রায়ই মাইগ্রেনের ব্যাথা দেখা দিত, যা মূলত ১৮৬৩ সালে মাথায় আঘাতের ফলে হয়েছিল। তিনি জীবনের অনেকটা সময় হতাশায় কাটিয়েছেন, কিছু ইতিহাসবিদ মনে করেন তিনি দ্বিপ্রান্তিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন। ১৮৭৫ সালে স্বল্প সময়ের জন্য তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, কিন্তু পরে তাকে তার বোনের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। তিনি ১৮৮২ সালে ৬৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা

টড ১৮১৮ সালের ১৩ই ডিসেম্বর কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের লেক্সিংটনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রবার্ট স্মিথ টড ও এলিজাবেথ "এলাইজা" (পার্কার) টডের সাত সন্তানের মধ্যে চতুর্থ। তার যখন ছয় বছর বয়স, তখন তার মা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। দুই বছর পর তার পিতা এলিজাবেথ "বেটসি" হামফ্রিসকে বিয়ে করেন। তাদের নয় সন্তান ছিল।[২][ক] সৎ মায়ের সাথে টডের সম্পর্কে টানাপোড়েন ছিল।

১৮৩২ থেকে ম্যারি ও তার পরিবার লেক্সিংটনের ৫৭৮ ওয়েস্ট মেইন স্ট্রিটে অবস্থিত ১৪ কক্ষের বাসভবনে বসবাস করতেন, যা বর্তমানে ম্যারি টড লিংকন হাউজ নামে পরিচিত।[৩]

বিবাহ ও পরিবার

ম্যারি লিংকন ১৮৪৬/১৮৪৭
আব্রাহাম লিংকন ১৮৪৬

ম্যারি টড ১৮৪২ সালের ৪ নভেম্বর স্প্রিংফিল্ডে তার বোনের বাড়িতে আব্রাহাম লিংকনকে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় তার বয়স ছিল ২৩ এবং আব্রাহামের বয়স ছিল ৩৩।

এই দম্পতির চার পুত্র ছিল, তারা হলেন:

  • রবার্ট টড লিংকন (১৮৪৩-১৯২৬), আইনজীবী, কূটনীতিক, ব্যবসায়ী
  • এডওয়ার্ড বেকার লিংকন, "এডি" নামে পরিচিত (১৮৪৬-১৮৫০), যক্ষায় মারা যান[২]
  • উইলিয়াম ওয়ালেস লিংকন, "উইলি" নামে পরিচিত (১৮৫০-১৮৬২), লিংকন যখন রাষ্ট্রপতি তখন টাইফয়েড জ্বরে মারা যান[২]
  • টমাস লিংকন, "ট্যাড" নামে পরিচিত (১৮৫৩-১৮৭১), ১৮ বছর বয়সে প্লুরিজি[২] বা নিউমোনিয়া,[৪] বা হৃৎপিণ্ডের অকৃতকার্যতা,[৫] কিংবা যক্ষায়[৬] মারা যান

রবার্ট ও ট্যাড তাদের পিতার মৃত্যু পর্যন্ত জীবিত ছিলেন এবং শুধু রবার্ট তার মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে

চলচ্চিত্রে একাধিক অভিনেত্রী ম্যারি লিংকনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তন্মধ্যে ডি.ডাব্লিউ. গ্রিফিথ পরিচালিত আব্রাহাম লিংকন (১৯৩০)-এ কে হ্যামন্ড, জন ফোর্ড পরিচালিত ইয়াং মিস্টার লিংকন (১৯৩৯)-এ মার্জরি উইভার, এব লিংকন ইন ইলিনয় (১৯৪০)-এ রুথ গর্ডন, দ্য লাস্ট অব মিসেস লিংকন (১৯৭৬)-এ জুলি হ্যারিস, ১৯৮৮ সালের টিভি মিনি ধারাবাহিক লিংকন-এ ম্যারি টাইলার মুর, ১৯৯৮ সালের টিভি চলচ্চিত্র দ্য ডে লিংকন ওয়াজ শট-এ ডোনা মার্ফি, স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালিত লিংকন (২০১২)-এ স্যালি ফিল্ড,[৭] সেভিং লিংকন (২০১২)-এ পেনেলোপি অ্যান মিলার, ও মার্কিন গৃহযুদ্ধের পটভূমিতে আব্রাহাম লিংকন: ভ্যাম্পায়ার হান্টার (২০১২)-এ ম্যারি এলিজাবেথ উইনস্টিড।[৮]

ইতিহাসবিদদের মূল্যায়ন

বিভিন্ন জরিপে ম্যারি লিংকন সবচেয়ে অবমূল্যায়িত ফার্স্ট লেডিদের একজন।[৯]

ক্রমবর্ধমান মূল্যায়নের ভিত্তিতে লিংকনের র‌্যাংকিং নিচে দেওয়া হল:

  • ১৯৮২ সালে ৪২ জনের মধ্যে ৪২তম[৯]
  • ১৯৯৩ সালে ৩৭ জনের মধ্যে ৩৭তম[১০]
  • ২০০৩ সালে ৩৮ জনের মধ্যে ৩৬তম[৯]
  • ২০০৮ সালে ৩৮ জনের মধ্যে ৩৫তম[১০]
  • ২০১৪ সালে ৩৯ জনের মধ্যে ৩১তম[১১]

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

সম্মানজনক পদবীসমূহ
পূর্বসূরী
হ্যারিয়েট লেন
ভারপ্রাপ্ত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি
১৮৬১-১৮৬৫
উত্তরসূরী
এলাইজা জনসন

টেমপ্লেট:আব্রাহাম লিংকন

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী