মোটর সাইকেল
মোটর সাইকেল, মোটর বাইক, বাইক (ইংরেজি: motorcycle, motorbike, bike, moto) যন্ত্রচালিত পরিবহণের একটি বিশেষ রূপ; যার সাহায্যে একজন মোটর চালক একস্থান থেকে অন্যস্থানে দ্রুত গমন করে থাকেন। সাধারণতঃ এ পরিবহনটি দ্বি-চক্রযানের ন্যায় দুই চাকাবিশিষ্ট ও মোটর যুক্ত থাকে।[১] কখনো কখনো এটি তিন চাকাবিশিষ্ট[২] হয়ে থাকে, কিন্তু বাস কিংবা ট্রাক আকৃতির নয়। সচরাচর একজন ব্যক্তি কর্তৃক এ যানবাহন চালনা করা হয়। যিনি মোটর সাইকেল চালনা করেন, তিনি মোটর চালক নামে পরিচিত। মোটর চালকের পিছনে কিংবা সামনে যিনি আরোহণ করেন, তিনি মোটর আরোহী হিসেবে আখ্যায়িত হন। অনেক সময় মোটর সাইকেলের সাথে অন্য একটি অংশ সংযুক্ত করা হয় যাতে আরো তিনজন ভ্রমণ করতে পারেন। দূরত্ব, ব্যবহার, আর্থিক ক্রয়ক্ষমতা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে মোটর সাইকেল নির্মাণ করা হয়।
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/9/98/Year2000.honda.cb600f.hornet.arp.jpg/250px-Year2000.honda.cb600f.hornet.arp.jpg)
ব্যবহার
যন্ত্রচালিত যানবাহন ও স্বাচ্ছন্দ্যকর পরিবহন হিসেবে জাপান, ব্রাজিলসহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই এর ব্যবহার রয়েছে।[৩][৪][৫] বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোয় বিশেষ করে চীন, ভারতে মোটর সাইকেল একপ্রকার সাধারণ পরিবহনরূপে স্বীকৃত। মোটর স্কুটার, দুই বা তিন চাকার মোটরচালিত সাইকেলসহ বিশ্বে আনুমানিক ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি মোটর সাইকেল রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।[৬] প্রতি এক হাজার ব্যক্তির জন্যে গড়ে ৩৩টি মোটর সাইকেল বরাদ্দ আছে। সেই তুলনায় গাড়ীর সংখ্যা আছে ৫৯ কোটি যা প্রতি এক হাজার ব্যক্তির জন্যে রয়েছে গড়ে ৯১টি গাড়ী।
ইতিহাস
প্রথম অভ্যন্তরীণ ইঞ্জিনে পেট্রোলিয়াম জ্বালানী ব্যবহার করে নির্মিত মোটর সাইকেলটি ছিল ডেইমলার রিতওয়াগন বা চলমান ওয়াগন। ১৮৮৫ সালে জার্মানির ব্যাড ক্যাস্তাতে এ মোটর সাইকেলটি নির্মাণ করেছিলেন জার্মান আবিষ্কারদ্বয় - গতলিয়েব ডেইমলার এবং উইলহেম মেব্যাচ।[৭] মোটর সাইকেলটি বিশ্বের প্রথম যন্ত্রচালিত সাইকেলরূপে স্বীকৃত।[৮][৯][১০] এ আবিষ্কারের জন্যে ডেইমলারকে মোটর সাইকেলের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।[১১][১২][১৩]তবে, এটি নিরাপদ বাইসাইকেল হিসেবে বিবেচিত হয়নি এবং এটি সোজাভাবে চলতে পারত।
বিপণন ব্যবস্থা
অত্যন্ত জনপ্রিয় যানবাহন হিসেবে তরুণ জনগোষ্ঠীর কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তন্মধ্যে, প্রস্তুতকৃত মোটর সাইকেলের ৫৮%-ই এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশসমূহে ব্যবহার করা হয়। জাপান বাদে দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোই এর প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ও ভোক্তা।[১৪][১৫] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানে ৩৩% গাড়ী রয়েছে, যার সংখ্যা প্রায় ১৯৫ মিলিয়ন। ২০০৬ সালে চীনে ৫৪ মিলিয়ন মোটর সাইকেল ব্যবহৃত হয়। দেশটির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২২ মিলিয়ন একক। ২০০২ সালের তথ্য মোতাবেক ভারতে ৩৭ মিলিয়ন মোটর সাইকেল/মোপেড ছিল। এ সংখ্যাটি যান্ত্রিক পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশ্বে সর্বোচ্চ। ৩৪ মিলিয়ন মোটর সাইকেল/মোপেড নিয়ে চীন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।[১৬][১৭] বাংলাদেশে ২০২২ সালের ৩১ মে পর্যন্ত নিবন্ধিত মোটর সাইকেলের সংখ্যা ৩৭ লাখের উপরে।[১৮]