ভেঙ্কটালক্ষাম্মা
কে.ভেঙ্কটালক্ষাম্মা (২৯শে মে ১৯০৬ -১লা জুলাই ২০০২) ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভারতীয় ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী। তিনি ছিলেন ভরতনাট্যম এর মাইসোর ঘরানার একজন মহীরুহ এবং মাইসোর রাজসভার নৃত্যশৈলীর সর্বশেষ প্রতিনিধি। ১৯৬৪ সালে তিনি সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার এবং ১৯৯২ সালে তিনি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ পুরস্কার লাভ করেছিলেন[১]।
কে ভেঙ্কটালক্ষাম্মা | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | কে ভেঙ্কটালক্ষাম্মা ২৯ মে ১৯০৬ |
মৃত্যু | ১ জুলাই ২০০২ | (বয়স ৯৮)
কর্মজীবন | ১৯১৮-২০০০ |
পুরস্কার | পদ্মভূষণ: ১৯৯২ সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার: ১৯৬৪ |
জীবনী
প্রাথমিক জীবন
ভেঙ্কটালক্ষাম্মা ১৯০০ সালের ২৯ শে মে ব্রিটিশ ভারতের মাইসোর রাজ্যের কাদুরের টাঙ্গালি টান্ডায় (বর্তমানে ভি.এল.নগর) লাম্বানি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আট বছর বয়সে তাঁর পিতামহ-পিতামহী তাঁকে সুপরিচিত নৃত্যশিল্পী 'নাট্য সরস্বতী' জাট্টি থায়াম্মার অধীনে ভরতনাট্যম শিখতে মাইসোর রাজদরবারে নিয়ে যান।
ভেঙ্কটালক্ষাম্মা গুরুকুল পদ্ধতিতে নৃত্যের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছিলেন এবং বারো বছর বয়সে তাঁর ‘রঙ্গ প্রবেশ’ ঘটে। তিনি আস্থানা বিদ্বান দেবোত্তম জোইস, শান্তা শাস্ত্রী এবং গিরি ভট্টের কাছ থেকে সংস্কৃত শিখেছিলেন এবং ডক্টর বি. দেবেন্দ্রপ্পা এবং সি. রামা রাওর কাছ থেকে কর্ণাটকী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন[২] এবং প্রায় ৩০ বছর ধরে তাঁর গুরু থায়াম্মার সাথে নিয়মিত নৃত্য পরিবেশন করতেন।
ভেঙ্কটালক্ষাম্মা ভোর বেলা তাঁর গুরু থায়াম্মার বাড়িতে গিয়ে কঠোর অনুশীলন করতেন। কঠোর অনুশীলনের একটি অংশ ছিল চোখের পাতার মাধ্যমে মুদ্রা (কয়েন) এবং সূচ তুলতে পারা যাতে চোখের পেশিগুলি পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পায় এবং নৃত্যাভিনয়ের সময় উপযুক্ত অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে। তখনকার দিনে রঙ্গপ্রবেশ এখনকার মতো সামাজিক অনুষ্ঠান ছিল না এবং নৃত্যাভিনয়ের সময় এত আভরণ এবং মেক-আপের ব্যবহার ছিল না।
কর্মজীবন
ভেঙ্কটালক্ষাম্মা ১৯৩৯ সালে মাইসোর সাম্রাজ্যের মহান রাজা চতুর্থ কৃষ্ণরাজেন্দ্র ওয়াদেয়ার দ্বারা "আস্থানা বিদূষী" বা রাজদরবারের নৃত্যশিল্পী হিসাবে নিযুক্ত হন এবং শীঘ্রই ভরতনাট্যম জগতে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। ভরতনাট্যম এর মাইসোর ঘরানাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব তাঁরই। তিনি চতুর্থ কৃষ্ণরাজ ওয়াদেয়ার এবং মাইসোর রাজ্যের শেষ মহারাজা জয়চমরাজেন্দ্র ওয়াদেয়ার আমলে প্রায় ৪০ বছর ধরে 'আস্থানা বিদূষী' র ভূমিকা পালন করেছিলেন।
মাইসোর রাজসভায় ৪০ বছর চাকরির পরে, তিনি তাঁর নিজস্ব সংস্থা ভারতীয় নৃত্য নিকেতন শুরু করেছিলেন।
১৯৬৫ সালে মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্য অনুষদ প্রতিষ্ঠিত হলে ভেঙ্কটালক্ষাম্মা তার প্রথম অধ্যাপক নিয়োজিত হন এবং ১৯৭৪ সালে নয় বছর অধ্যাপনা করার পরে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের পরে তাঁর নাতনি শকুন্তলাম্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হয়েছিলেন। ভেঙ্কটালক্ষাম্মা ভারত এবং বিদেশের একাধিক নৃত্যশিল্পীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বেঙ্গালুরুতে নুপূর স্কুল অফ ভারতনাট্যমের নৃত্যশিক্ষক এবং অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
- সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার (১৯৬৪)। তিনি ছিলেন কর্ণাটকের প্রথম বিজেতা।
- সংগীত নৃত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৭৬)
- মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে সাম্মানিক ডি. লিট উপাধি (১৯৭৭)
- কন্নড রাজ্যোৎসব পুরস্কার (১৯৮৮)
- বেঙ্গালুরু গায়ন সমাজ দ্বারা সংগীত কলারত্ন পুরস্কার (১৯৮৯)
- পদ্মভূষণ (১৯৯২)
- নাট্যরাণী শান্তালা রাজ্য পুরস্কার (১১৯৫)
- হাম্পি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাদোজা পুরস্কার (২০০১)[৩]
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
- লিন হানা জুডিথ (১৯৮৮) , ড্যান্স, সেক্স, আন্ড জেন্ডারঃ সাইনস অফ আইডেন্টিটি, ডমিন্যান্স, ডিফায়ান্স আন্ড ডিসায়ার, শিকাগো: ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো প্রেস, আইএসবিএন ৯৭৮০২২৬৩১৫৫১৫
- ওয়াটারহাউস, ডেভিড এড. (১৯৮৮), ড্যান্স অফ ইন্ডিয়া: দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজ জার্নাল, টরন্টো: টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ, আইএসবিএন ৯৭৮১৮৯৫২১৪১৫৪
- সম্পত, বিক্রম (২০০৮) স্প্লেন্ডার্স অফ রয়াল মিউসিক; দ্য আনটোল্ড স্টোরি অফ দ্য ওয়াদেয়ার্স, দিল্লি: রূপা, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-২৯১-১৩৬০-৩