বিশেষ বিবাহ আইন, ১৯৫৪

বিশেষ বিবাহ আইন, ১৯৫৪ হল ভারতীয় সংসদের একটি আইন। ভারতের জনগণের জন্য এবং বিদেশে বসবাসকারী সব ভারতীয় নাগরিকের জন্য, বিবাহের বিশেষ রূপ প্রদান করতে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। উভয় পক্ষের ধর্ম বা বিশ্বাস যাই হোক না কেন, এই আইনের দ্বারা বিবাহ করলে, সেগুলি কোন বাধা হয় না। [১] ঊনবিংশ শতকের শেষের দিকে একটি আইন প্রস্তাবিত হয়েছিল। তারই একটি অংশ থেকে এই আইনটি উদ্ভূত হয়েছে। বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে, বৈধ বিবাহ, ব্যক্তিগত আইন দ্বারা শাসিত হয় না।[২]

বিশেষ বিবাহ আইন, ১৯৫৪
ভারতীয় সংসদ
দীর্ঘ শিরোনাম
  • কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহের বিশেষ প্রকারের জন্য, নির্দিষ্ট অন্যান্য বিবাহ নিবন্ধনের জন্য এবং বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আইন।
সূত্র১৯৫৪এর ৪৩ নং ধারা
প্রণয়নকারীভারতীয় সংসদ
সম্মতির তারিখ৯ই অক্টোবর, ১৯৫৪
প্রবর্তনের তারিখ১লা জানুয়ারি, ১৯৫৫
অবস্থা: বলবৎ

১৮৭২ সালে, ১৮৭২ এর আইন নং ৩, প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু পরে দেখা যায়, কিছু কিছু নির্দিষ্ট সংস্কার করতে গেলে, এই আইনটি যথেষ্ট হচ্ছে না, এবং তখন সংসদ একটি নতুন আইন প্রণয়ন করে। হেনরি সুমার মাইন, প্রথম, ১৮৭২ সালে, আইন নং৩ চালু করেন। এই আইন, নতুন নাগরিক বিবাহ আইন অনুসারে, যে কোনও মানুষকে বিবাহ করার অনুমতি দেয়। চূড়ান্ত পর্বে, যারা একত্রে তাদের ধর্মবিশ্বাসকে অস্বীকার করে বিবাহ করতে ইচ্ছুক, আইন তাদের বিবাহের বৈধতা দেয় ("আমি হিন্দু, খ্রিস্টান, ইহুদি, জৈন, শিখ, পারসি ইত্যাদি ধর্ম বিশ্বাস করি না")। এটি আন্তঃ বর্ণ এবং আন্তঃ ধর্ম দুই ধরনের বিবাহের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয়।[৩] সামগ্রিকভাবে, স্থানীয় সরকার ও প্রশাসকেরা সর্বসম্মতভাবে মাইন এর বিলের বিরোধিতা করেছিলেন এবং বিশ্বাস করতেন যে এই আইনটি কামনার উপর ভিত্তি করে বিবাহে উৎসাহিত করবে, যা অনিবার্যভাবে অনৈতিকতার দিকে যাবে।[৪]

বিশেষ বিবাহ আইন, ১৯৫৪, পুরানো ১৮৭২ এর আইন নং ৩ আইনটি প্রতিস্থাপিত করে, তৈরী হয়েছে। নতুন আইনটির ৩টি প্রধান উদ্দেশ্য আছে:

  1. নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিবাহের একটি বিশেষ রূপ প্রদান করা,
  2. নির্দিষ্ট কিছু বিবাহ নিবন্ধন করা এবং,
  3. বিবাহ বিচ্ছেদ করা।[৫]

প্রযোজ্যতা

  1. ধর্ম নির্বিশেষে যে কোন ব্যক্তি এই আইনের বলে বৈধ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।[৬]
  2. বিশেষ বিবাহ আইন, ১৯৫৪ এর অধীনে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, খ্রিস্টান, পারসী বা ইহুদীরাও বিবাহ করতে পারেন।[৬]
  3. আন্তঃ-ধর্ম বিবাহ এই আইনের অধীনে সম্পাদিত হয়।[৬]
  4. এই আইনটি ভারতের সমগ্র অঞ্চলে প্রযোজ্য (জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ছাড়া) এবং বিদেশী বসবাসকারী উভয় ভারতীয় নাগরিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।।[৬]
  5. বিদেশে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিক।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আবশ্যকতা

  1. বিশেষ বিবাহ আইন, ১৯৫৪ এর অধীনে বিবাহ একটি নাগরিক চুক্তি, এবং সেই অনুযায়ী, এই প্রকারের বিবাহে কোন রীতিনীতি বা অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা নেই।[৭]
  2. উভয় পক্ষকে একটি নির্দিষ্ট নির্দেশ পত্রে, জেলার বিবাহ নিবন্ধককে, বিবাহের বিজ্ঞপ্তি দাখিল করতে হবে, যার মধ্যে বিবাহেচ্ছুক অন্ততঃ এক পক্ষকে বিবাহের বিজ্ঞপ্তি দাখিলের তারিখের ঠিক আগে কম করে তিরিশ দিন সেখানে বসবাস করতে হবে।[৮]
  3. একটি নির্ধারিত বিবাহের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার তারিখ থেকে ত্রিশ দিনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর, বিবাহের বৈধতা দেওয়া যেতে পারে, যদি না এটিতে কোন ব্যক্তি আপত্তি জানায়।
  4. কোন বিবাহ অফিসে এই বিবাহ হতে পারে।[৮]
  5. যতক্ষণ না প্রতিটি পক্ষ, বিবাহের অফিসার ও তিনজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বলবেন, "আমি, (ক), তোমাকে (খ), আমার বৈধ স্ত্রী (বা স্বামী) হিসাবে মেনে নিচ্ছি," ততক্ষণ পর্যন্ত উভয় পক্ষ বিবাহ বন্ধনে বাঁধা পড়বেননা। [৮]

বিয়ের জন্য শর্তাবলী

  1. জড়িত প্রতিটি পক্ষের অন্য কোন বৈধ বিবাহ থাকতে চলবেনা। অন্য কথায়, বিবাহটি উভয় পক্ষের জন্য একগামী হতে হবে।[৮]
  2. পাত্রের অন্ততঃ ২১ বছর বয়স হতে হবে; নববধূকে অন্ততঃ ১৮ বছর বয়সী হতে হবে।[৮]
  3. উভয় পক্ষকে তাদের মানসিক ক্ষমতা সাপেক্ষে উপযুক্ত হতে হবে, যাতে তারা বিবাহের জন্য বৈধ সম্মতি দিতে পারেন।[৮]
  4. উভয় পক্ষের মধ্যে কোন নিষিদ্ধ সম্পর্ক থাকলে চলবেনা।[৯]

আদালতে বিবাহ হল দুই আত্মার মিলন, যেখানে বিশেষ বিবাহ আইন -১৯৫৪ অনুযায়ী বিবাহের অফিসার ও তিনজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। তারপরে আদালত, ভারত সরকার কর্তৃক নিযুক্ত বিবাহ নিবন্ধক দ্বারা, সরাসরি জারি করা বিবাহের সার্টিফিকেট দেন। [১০]

সম্পত্তির উত্তরাধিকার

এই আইনের অধীনে নিবন্ধিত ব্যক্তির সম্পত্তি, বা এই আইনের অধীনে নিবন্ধিত প্রথাগত বিয়ে এবং তাদের সন্তানদের সম্পত্তি, উত্তরাধিকারসূত্রে ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন দ্বারা নির্দেশিত হয়।[১১][১২] তবে, বিবাহের পক্ষদুটি যদি হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ বা জৈন ধর্মের হন, তাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার নির্দেশিত হয় হিন্দু উত্তরাধিকার আইন দ্বারা।[১৩]

আরও দেখুন

  • ভারতে যৌতুক আইন

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী