বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত
(বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টকে বলা হয় সংবিধানের রক্ষক এবং ব্যাখ্যাকারী। বাংলাদেশের সংবিধানের ষষ্ঠ অধ্যায়ে সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে আইনি বিধান রয়েছে। সংবিধানের ধারা ১০০-এর বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের রমনায় সুপ্রীম কোর্ট অবস্থিত।[৩] সুপ্রীম কোর্টের দুইটি বিভাগ রয়েছে- ১. আপিল বিভাগ ২. হাইকোর্ট বিভাগ। তবে এটা সচরাচর হাইকোর্ট নামে পরিচিত; কারণ ১৯৭১ সালের পূর্বে এই ভবনে পূর্ব পাকিস্তানের উচ্চ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হতো।

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়
অধিক্ষেত্রগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ
অবস্থানরমনা, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৩°৪৩′৫১″ উত্তর ৯০°২৪′০৯″ পূর্ব / ২৩.৭৩০৭৭৭° উত্তর ৯০.৪০২৪৫৮° পূর্ব / 23.730777; 90.402458
অনুমোদনকর্তাবাংলাদেশের সংবিধান
তথ্যক্ষেত্রসুপ্রিম কোর্ট
প্রধান বিচারপতি
সম্প্রতিবিচারপতি ওবায়দুল হাসান[১]
হইতে২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩[২]

কাঠামো

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের মিনার

বাংলাদেশের সংবিধানের ষষ্ঠ অধ্যায়ের ৯৪ ধারায় সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে আইনি বিধান ব্যক্ত করা হয়েছে। এই ধারার (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, "বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট" নামে বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ আদালত থাকিবে এবং আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ লইয়া তাহা গঠিত হইবে। এই ধারার (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, "প্রধান বিচারপতি এবং প্রত্যেক বিভাগে আসন গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতি যেরূপ সংখ্যক বিচারক নিয়োগের প্রয়োজন বোধ করিবেন, সেইরূপ সংখ্যক অন্যান্য বিচারক লইয়া সুপ্রিম কোর্ট গঠিত হইবে"; আরো বলা হয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি "বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি" নামে অভিহিত হইবেন। পরবর্তী অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগে নিযুক্ত বিচারকগণ কেবল উক্ত বিভাগে এবং অন্যান্য বিচারক কেবল হাইকোর্ট বিভাগে আসন গ্রহণ করিবেন।” এবং চতুর্থ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, “সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।”[৪]
সংবিধানের ধারা-১০০-এর বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন অবস্থিত হবে। তবে বিধান আছে যে, রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ক্রমে প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করবেন, সেই স্থান বা স্থানসমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে পারবে।

এখতিয়ার

সংবিধানের বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-এর দুটি বিভাগ আছেঃ আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগ
সংবিধানের ১০১ ধারায় হাইকোর্টের এখতিয়ার বর্ণিত আছে। ১০৩ ধারায় আপিল বিভাগের এখতিয়ার বর্ণিত আছে।
হাইকোর্ট বিভাগ নিম্ন আদালত এবং ট্রাইবুনাল থেকে আপিল শুনানি করে থাকে। এছাড়াও, বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা ১০২-এর অধীনে রিট আবেদন , এবং কোম্পানি এবং সেনাবিভাগ বিষয় হিসেবে নির্দিষ্ট সীমিত ক্ষেত্রে মূল এখতিয়ার আছে। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে আপিল শুনানির এখতিয়ার রয়েছে আপিল বিভাগের।[৫][৬] ২০০৭ সালে ১লা তারিখে নির্বাহী বিভাহ থেকে সুপ্রীম কোর্টকে পৃথক করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট নির্বাহী শাখা হতে স্বাধীন এবং রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত ক্ষেত্রে সরকারের বিরুদ্ধে আদেশ দিতে পারে।[৭]

বেঞ্চ গঠন

এক বা একাধিক বিচারক সমন্বয়ে প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের বেঞ্চ গঠন করতে পারবেন।

বিচারপতি নিয়োগ

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ সম্পর্কে বাংলাদেশ সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদে আলোচনা করা হয়েছে। ৯৫(১) অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শ করে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করবেন। সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বলা হয়েছে, ‘এই সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাঁহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন।’ অর্থাৎ প্রধান বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রির পরামর্শ গ্রহণে বাধ্য নন।

হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসাবে প্রথমে দুই বছর প্রাথমিক ভাবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নিবন্ধিত হয়ে উকিলতি করা এবং সংবিধানের ৯৮ বিধানের অধীনে জুডিশিয়াল সার্ভিসে নিযুক্ত অতিরিক্ত বিচারক । বর্তমানে এই অনুপাত হচ্ছে ০০.০০% -০০.০০%। এই সময়ের সফল সমাপ্তির পরে এবং প্রধান বিচারপতি কর্তৃক সুপারিশের উপর একজন অতিরিক্ত জজকে সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি স্থায়ী নিয়োগ দেন। আপিল বিভাগের বিচারক একই বিধান অধীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত করা হয়। সব ধরনের নিয়োগ সংবিধানের ১৪৮ এর বিধান অনুযায়ী শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হয়। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক ৬৭ বছর পর্যন্ত সংবিধানের বিধান (তের) দ্বারা বর্ধিত হিসাবে সে / তিনি বিচারপতি থাকবেন সংশোধনী আইন ২০০৪ (২০০৪ এর ১৪)।

সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিবৃন্দ

২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে ৯০ জন বিচারপতি কর্মরত আছেন। তাদের মধ্যে ০৭ জন আপিল বিভাগে এবং ৮৩ জন হাইকোর্ট বিভাগে রয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত ৭২ জন স্থায়ী বিচারপতি এবং ১১ জন অস্থায়ী বিচারপতি। তার মধ্যে ০৩ জন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে কর্মরত আছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারপতিবৃন্দ

সমালোচনা

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও এবং বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭ লঙ্ঘন করে সুপ্রিম কোর্টের রায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের মতো এখনও ইংরেজিতে দেওয়া হয় বলে সমালোচনা রয়েছে।[৮] বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপ্রিম কোর্টের রায় বাংলায় লেখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “যে ভাষা আমরা সবাই বুঝতে পারি, সেই ভাষায় [রায়] লেখা উচিত। আর বাংলায় রায় লিখে সেটা ইংরেজিতে ট্রান্সলেশন করেও দিতে পারেন।”[৯] বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান লিখেছেন, 'যদি ন্যায়বিচার সদগুণ হয় এবং জনগণের কল্যাণের জন্যই যদি এর কাজ হয় তবে তা জনগণের ভাষাতেই হওয়া উচিত।'[১০] তবে "আমি খোলাখুলি করে বলি 'দেশের জনগণ যদি চান তাঁদের দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সব কাজ তাঁদের ভাষায় হবে, তাঁদের প্রতিনিধিরা সংসদের যতদিন না আইন পাস করছেন ততদিন বিচারকবৃন্দ স্বেচ্ছায় বাংলায় হাতেখড়ি দিতে চাইবেন না।"[১০]

বিতর্কিত ঘটনাবলী

বিচারপতি হিসাবে নিয়োগের পূর্বে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সদস্য (রুকন) ছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে বিচারপতি মো. মিজানুর রহমান ভূইয়ার পক্ষে তার জমাদার সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার হাইকোর্টের বিচারপতিদের কক্ষে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের খামে করে ব্লগার রাজীব হায়দারকে মুরতাদ (ইসলাম ধর্ম ত্যাগকারী) আখ্যায়িত করে লেখা একটি প্রতিবেদন দিয়ে আসেন। ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে নিয়ে অপপ্রচার চালানোর কারণে বিচারপতি মিজানুর রহমান ভূইয়ার পদত্যাগের দাবি উঠে।[১১]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী