বাংলাদেশের সংবিধান
সরঞ্জাম
সাধারণ
মুদ্রণ/রপ্তানি
অন্যান্য প্রকল্পে
বাংলাদেশের সংবিধান | |
---|---|
সাধারণ | |
এখতিয়ার | বাংলাদেশ |
অনুমোদন | ৪ নভেম্বর ১৯৭২; ৫১ বছর আগে (1972-11-04) |
কার্যকরের তারিখ | ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২; ৫১ বছর আগে (1972-12-16) |
পদ্ধতি | একক সংসদীয় সাংবিধানিক গণতন্ত্র |
সরকারি কাঠামো | |
শাখা | তিন (শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ) |
কক্ষ | এক |
নির্বাহী | বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যের নিকট প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ দায়বদ্ধ। |
বিচারব্যবস্থা | সুপ্রিম কোর্ট |
মৈত্রীতন্ত্র | না |
নির্বাচনী কলেজ | না |
ইতিহাস | |
সংশোধনী | ১৭ |
সর্বশেষ সংশোধনী | ৮ জুলাই ২০১৮ |
উদ্ধৃতি | গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান, ২০২১-০৬-১৩ উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link) |
অবস্থান | বাংলাদেশ |
লেখক | কামাল হোসেন সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যানএবং গণপরিষদের অন্যান্য সদস্যগণ |
স্বাক্ষরকারী | গণপরিষদের ৪০৩ এর মধ্যে ৩৯৯ জন সদস্য |
স্থানান্তর | বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র |
সম্পূর্ণ পাঠ্য | |
উইকিসংকলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান |
নির্বাচন
|
বৈদেশিক সম্পর্ক |
বাংলাদেশ প্রবেশদ্বার
|
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। এটি একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা নভেম্বর তারিখে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সংবিধান গৃহীত হয় এবং একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ বাংলাদেশের বিজয় দিবসের প্রথম বার্ষিকী হতে এটি কার্যকর হয়। এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।[১]
১০ই এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনী সহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে। এই সংবিধান সংশোধনের জন্য সংবিধানের ১৪২নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের মোট সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের প্রয়োজন হয়। তবে পঞ্চম সংশোধনী , সপ্তম সংশোধনী , ত্রয়োদশ সংশোধনী ও ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আদেশে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের মূল কাঠামো পরিবর্তন হয়ে যায় এরূপ কোনো সংশোধনী এতে আনা যাবে না; আনা হলে তা হবে এখতিয়ার বহির্ভূত।[২]
বাংলাদেশের সংবিধান কেবল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়;- সংবিধানে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মূল চরিত্র বর্ণিত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখা বিধৃত আছে। দেশটি হবে প্রজাতান্ত্রিক, গণতন্ত্র হবে এদেশের প্রশাসনিক ভিত্তি, জনগণ হবে সকল ক্ষমতার উৎস এবং বিচার বিভাগ হবে স্বাধীন। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস হলেও দেশ আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা -কে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ই এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তারা হলেন ড. কামাল হোসেন (ঢাকা-৯, জাতীয় পরিষদ), মো. লুৎফর রহমান (রংপুর-৪, জাতীয় পরিষদ),অধ্যাপক আবু সাইয়িদ(সর্বকনিষ্ঠ সদস্য)(পাবনা-৫, জাতীয় পরিষদ), এম আবদুর রহিম (দিনাজপুর-৭, প্রাদেশিক পরিষদ), এম আমীর-উল ইসলাম (কুষ্টিয়া-১, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মনজুর (বাকেরগঞ্জ-৩, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মুনতাকীম চৌধুরী (সিলেট-৫, জাতীয় পরিষদ), ডা. ক্ষিতীশ চন্দ্র (বাকেরগঞ্জ-১৫, প্রাদেশিক পরিষদ), সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত (সিলেট-২, প্রাদেশিক পরিষদ), সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ময়মনসিংহ-১৭, জাতীয় পরিষদ), তাজউদ্দীন আহমদ (ঢাকা-৫, জাতীয় পরিষদ), খন্দকার মোশতাক আহমেদ (কুমিল্লা-৮, জাতীয় পরিষদ), এ এইচ এম কামারুজ্জামান (রাজশাহী-৬, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মমিন তালুকদার (পাবনা-৩, জাতীয় পরিষদ), আবদুর রউফ (রংপুর-১, ডোমার, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ বায়তুল্লাহ (রাজশাহী-৩, জাতীয় পরিষদ), বাদল রশীদ, বার অ্যাট ল, খন্দকার আবদুল হাফিজ (যশোর-৭, জাতীয় পরিষদ), শওকত আলী খান (টাঙ্গাইল-২, জাতীয় পরিষদ), মো. হুমায়ুন খালিদ, আছাদুজ্জামান খান (যশোর-১০, প্রাদেশিক পরিষদ), এ কে মোশাররফ হোসেন আখন্দ (ময়মনসিংহ-৬, জাতীয় পরিষদ), আবদুল মমিন, শামসুদ্দিন মোল্লা (ফরিদপুর-৪, জাতীয় পরিষদ), শেখ আবদুর রহমান (খুলনা-২, প্রাদেশিক পরিষদ), ফকির সাহাব উদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক খোরশেদ আলম (কুমিল্লা-৫, জাতীয় পরিষদ), এম. মোজাফ্ফর আলী (জাতীয় পরিষদ হোমনা - দাউদকান্দি), অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক (কুমিল্লা-৪, জাতীয় পরিষদ), দেওয়ান আবু আব্বাছ (কুমিল্লা-৫, জাতীয় পরিষদ), হাফেজ হাবিবুর রহমান (কুমিল্লা-১২, জাতীয় পরিষদ), আবদুর রশিদ (নোয়াখালী-১, জাতীয় পরিষদ) , নুরুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৬, জাতীয় পরিষদ), মোহাম্মদ খালেদ (চট্টগ্রাম-৫, জাতীয় পরিষদ) ও বেগম রাজিয়া বানু (নারী আসন, জাতীয় পরিষদ)। [৩]
একই বছরের ১৭ই এপ্রিল থেকে ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহবান করা হয়। সংগৃহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করেন। ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বর গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়। সংবিধান দিবস পালন করা হয় ৪ঠা নভেম্বর। গণপরিষদে সংবিধানের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন,
এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।[৪]
সংবিধান লেখার পর এর বাংলা ভাষারূপ পর্যালোচনার জন্য ড. আনিসুজ্জামানকে আহবায়ক, সৈয়দ আলী আহসান এবং মযহারুল ইসলামকে ভাষা বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি কমিটি গঠন করে পর্যালোচনার ভার দেয়া হয়।
গণপরিষদ ভবন, যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, সেখানে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির বৈঠকে সহযোগিতা করেন ব্রিটিশ আইনসভার খসড়া আইন-প্রণেতা আই গাথরি।
সংবিধান ছাপাতে ১৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিলো। সংবিধান অলংকরণের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছিল যার প্রধান ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। এই কমিটির সদস্য ছিলেন শিল্পী জনাবুল ইসলাম, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, আবুল বারক আলভী ও হাশেম খান। শিল্পী হাশেম খান অলংকরণ করেছিলেন। ১৯৪৮ সালে তৈরি ক্র্যাবটি ব্রান্ডের দুটি অফসেট মেশিনে সংবিধানটি ছাপা হয়। একটি মেশিন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বহিরাঙ্গনে ২০১৫ সালে সংস্থাপন করা হয়েছে।
প্রস্তাবনার মতো মূল সংবিধানও সাধু ভাষায় লিখিত এবং এতে এগারো ভাগে মোট ১৫৩ টি অনুচ্ছেদ ও সাতটি তফসিল রয়েছে। মূল সংবিধানের কপিটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।[৫]
বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনা সাধু ভাষায় লিখিত। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর পর থেকে সংবিধানের প্রস্তাবনা ইসলামি বাক্যাংশ বিসমিল্লাহির-রাহমানির রাহীম দিয়ে শুরু হয়, যার অর্থ "পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে"। এরপর শপথ আকারে (আমরা, বাংলাদেশের জনগণ,...) স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর পুনরায় শপথ আকারে (আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে,...) সংবিধানের মূলনীতি উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর শপথ আকারে (আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে,...) রাষ্ট্রের "অন্যতম মূল লক্ষ্য" হিসেবে গণতান্ত্রিক উপায়ে "শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা"-র ঘোষণা করা হয়েছে এবং এই সমাজের স্বরূপ উল্লেখ করা হয়েছে। পরের অংশে শপথ আকারে (আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে,...) জাতীয় সমৃদ্ধি এবং প্রগতিশীলতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার স্বার্থে সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা, সংরক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধানকে "পবিত্র কর্তব্য" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শেষাংশে বাংলা ও ইংরেজি তারিখে গণপরিষদ কর্তৃক সংবিধান গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।[৬]
প্রস্তাবনায় বিবৃত হয়েছে:[৭]
[৮][বিস্মিল্লাহির-রহ্মানির রহিম
(দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহের নামে)/
পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে।]
প্রস্তাবনা
আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া [৯][জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের] মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি;
[১০][আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল -জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে ;]
আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে;
আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তায় সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রগতিশীল আশা-আকাঙ্খার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেইজন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য;
এতদ্বারা আমাদের এই গণপরিষদে, অদ্য তের শত ঊনআশী বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের আঠারো তারিখ, মোতাবেক ঊনিশ শত বাহাত্তর খ্রীষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের চার তারিখে, আমরা এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করিয়া সমবেতভাবে গ্রহণ করিলাম।
এই অংশে সংবিধানের ১-৭নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:
বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যাহা “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ” নামে পরিচিত হইবে৷
প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত হইবে
(ক) ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা-ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল এলাকা লইয়া পূর্ব পাকিস্তান গঠিত ছিল [১১][এবং সংবিধান (তৃতীয় সংশোধন) আইন, ১৯৭৪-এ অন্তর্ভুক্ত এলাকা বলিয়া উল্লিখিত এলাকা, কিন্তু উক্ত আইনে বহির্ভূত এলাকা বলিয়া উল্লিখিত এলাকা তদ্বহির্ভূত; এবং]
(খ) যে সকল এলাকা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত হইতে পারে৷
[১২][প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন]
প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা৷
(১) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা”র প্রথম দশ চরণ৷
(২) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা হইতেছে সবুজ ক্ষেত্রের উপর স্থাপিত রক্তবর্ণের একটি ভরাট বৃত্ত৷
(৩) প্রজাতন্ত্রের জাতীয় প্রতীক হইতেছে উভয় পার্শ্বে ধান্যশীর্ষবেষ্টিত, পানিতে ভাসমান জাতীয় পুষ্প শাপলা, তাহার শীর্ষদেশে পাটগাছের তিনটি পরস্পরসংযুক্ত পত্র, তাহার উভয় পার্শ্বে দুইটি করিয়া তারকা৷
(৪) উপরি-উক্ত দফাসমূহ-সাপেক্ষে জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা ও প্রতীক সম্পর্কিত বিধানাবলী আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷
[১৩][জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সকল সরকারী ও আধা-সরকারী অফিস, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনসমূহে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করিতে হইবে।]
(১) প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ঢাকা৷
(২) রাজধানীর সীমানা আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷
[১৪][(১) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে।
(২) বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবেন।]
(১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে৷
(২) জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসমঞ্জস হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে৷
[১৫][৭ক। (১) কোন ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোন অসাংবিধানিক পন্থায় -
(ক) এই সংবিধান বা ইহার কোন অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে ; কিংবা
(খ) এই সংবিধান বা ইহার কোন বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করিলে কিংবা উহা করিবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করিলে-
তাহার এই কার্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা হইবে এবং ঐ ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হইবে।
(২) কোন ব্যক্তি (১) দফায় বর্ণিত-
(ক) কোন কার্য করিতে সহযোগিতা বা উস্কানি প্রদান করিলে; কিংবা
(খ) কার্য অনুমোদন, মার্জনা, সমর্থন বা অনুসমর্থন করিলে-
তাহার এইরূপ কার্যও একই অপরাধ হইবে।
(৩) এই অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধে দোষী ব্যক্তি প্রচলিত আইনে অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ, নবম-ক ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদসমুহের বিধানাবলী সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোন পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হইবে।]
এই অংশে সংবিধানের ৮-২৫ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:
[১৬][(১) জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা- এই নীতিসমূহ এবং তৎসহ এই নীতিসমূহ হইতে উদ্ভূত এই ভাগে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বলিয়া পরিগণিত হইবে।]
(২) এই ভাগে বর্ণিত নীতিসমূহ বাংলাদেশ-পরিচালনার মূলসূত্র হইবে, আইন-প্রণয়নকালে রাষ্ট্র তাহা প্রয়োগ করিবেন, এই সংবিধান ও বাংলাদেশের অন্যান্য আইনের ব্যাখ্যাদানের ক্ষেত্রে তাহা নির্দেশক হইবে এবং তাহা রাষ্ট্র ও নাগরিকদের কার্যের ভিত্তি হইবে, তবে এই সকল নীতি আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য হইবে না৷
[১৭][ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালী জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।]
[১৮][মানুষের উপর মানুষের শোষণ হইতে মুক্ত ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজলাভ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে।]
প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে [১৯][* * *] [২০][এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে]৷
[২১][১২। ধর্ম নিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য
(ক) সর্ব প্রকার সাম্প্রদায়িকতা,
(খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান,
(গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার,
(ঘ) কোন বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন,
বিলোপ করা হইবে।]
উৎপাদনযন্ত্র, উৎপাদনব্যবস্থা ও বন্টনপ্রণালীসমূহের মালিক বা নিয়ন্ত্রক হইবেন জনগণ এবং এই উদ্দেশ্যে মালিকানা-ব্যবস্থা নিম্নরূপ হইবে:
(ক) রাষ্ট্রীয় মালিকানা, অর্থাৎ অর্থনৈতিক জীবনের প্রধান প্রধান ক্ষেত্র লইয়া সুষ্ঠু ও গতিশীল রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারী খাত সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের পক্ষে রাষ্ট্রের মালিকানা;
(খ) সমবায়ী মালিকানা, অর্থাৎ আইনের দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে সমবায়সমূহের সদস্যদের পক্ষে সমবায়সমূহের মালিকানা; এবং
(গ) ব্যক্তিগত মালিকানা, অর্থাৎ আইনের দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে ব্যক্তির মালিকানা৷
রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে মেহনতী মানুষকে-কৃষক ও শ্রমিককে-এবং জনগণের অনগ্রসর অংশসমূহকে সকল প্রকার শোষণ হইতে মুক্তি দান করা৷
রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদনশক্তির ক্রমবৃদ্ধিসাধন এবং জনগণের জীবনযাত্রার বস্তুগত ও সংস্কৃতিগত মানের দৃঢ় উন্নতিসাধন, যাহাতে নাগরিকদের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অর্জন নিশ্চিত করা যায়:
(ক) অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা;
(খ) কর্মের অধিকার, অর্থাৎ কর্মের গুণ ও পরিমাণ বিবেচনা করিয়া যুক্তিসঙ্গত মজুরীর বিনিময়ে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার অধিকার;
(গ) যুক্তিসঙ্গত বিশ্রাম, বিনোদন ও অবকাশের অধিকার; এবং
(ঘ) সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতাপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত আয়ত্তাতীত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারী সাহায্যলাভের অধিকার৷
নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবন যাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দেশ্যে কৃষিবিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতীকরণের ব্যবস্থা, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ-ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তরসাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
রাষ্ট্র
(ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য;
(খ) সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সঙ্গতিপূর্ণ করিবার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছাপ্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য;
(গ) আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করিবার জন্য
কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
(১) জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবেন এবং বিশেষতঃ আরোগ্যের প্রয়োজন কিংবা আইনের দ্বারা নির্দিষ্ট অন্যবিধ প্রয়োজন ব্যতীত মদ্য ও অন্যান্য মাদক পানীয় এবং স্বাস্থ্যহানিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
(২) গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
[২২][রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।]
(১) সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন৷
(২) মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ করিবার জন্য, নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করিবার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধাদান নিশ্চিত করিবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
[২৩][(৩) জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন।]
(১) কর্ম হইতেছে কর্মক্ষম প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে অধিকার, কর্তব্য ও সম্মানের বিষয়, এবং “প্রত্যেকের নিকট হইতে যোগ্যতানুসারে ও প্রত্যেককে কর্মানুযায়ী”-এই নীতির ভিত্তিতে প্রত্যেকে স্বীয় কর্মের জন্য পারিশ্রমিক লাভ করিবেন৷
(২) রাষ্ট্র এমন অবস্থাসৃষ্টির চেষ্টা করিবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোন ব্যক্তি অনুপার্জিত আয় ভোগ করিতে সমর্থ হইবেন না এবং যেখানে বুদ্ধিবৃত্তিমূলক ও কায়িক-সকল প্রকার শ্র্রম সৃষ্টিধর্মী প্রয়াসের ও মানবিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণতর অভিব্যক্তিতে পরিণত হইবে৷
(১) সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিকদায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য৷
(২) সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য৷
রাষ্ট্রের নির্বাহী অঙ্গসমূহ হইতে বিচারবিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন৷
রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার রক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলাসমূহের এমন পরিপোষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন, যাহাতে সর্বস্তরের জনগণ জাতীয় সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে অবদান রাখিবার ও অংশগ্রহণ করিবার সুযোগ লাভ করিতে পারেন৷
[২৪][রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।]
বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বা তাৎপর্যমন্ডিত স্মৃতিনিদর্শন, বস্তু বা স্থান-সমূহকে বিকৃতি, বিনাশ বা অপসারণ হইতে রক্ষা করিবার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
[২৫][***] জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইনের ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা-এই সকল নীতি হইবে রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং এই সকল নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র
(ক) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ পরিহার এবং সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য চেষ্টা করিবেন;
(খ) প্রত্যেক জাতির স্বাধীন অভিপ্রায় অনুযায়ী পথ ও পন্থার মাধ্যমে অবাধে নিজস্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ ও গঠনের অধিকার সমর্থন করিবেন; এবং
(গ) সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন করিবেন৷
[২৫][***]
এই অংশে সংবিধানের ২৬-৪৭ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:২৬। মৌলিক অধিকারের সহিত অসমঞ্জস আইন বাতিল২৭। আইনের দৃষ্টিতে সমতা২৮। ধর্ম, প্রভৃতি কারণে বৈষম্য২৯। সরকারী নিয়োগ-লাভে সুযোগের সমতা৩০। বিদেশী, খেতাব, প্রভৃতি গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ৩১। আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার৩২। জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকাররক্ষণ৩৩। গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ৩৪। জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধকরণ৩৫। বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণ৩৬। চলাফেরার স্বাধীনতা৩৭। সমাবেশের স্বাধীনতা৩৮। সংগঠনের স্বাধীনতা৩৯। চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্-স্বাধীনতা৪০। পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা৪১। ধর্মীয় স্বাধীনতা৪২। সম্পত্তির অধিকার৪৩। গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ৪৪। মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ৪৫। শৃঙ্খলামূলক আইনের ক্ষেত্রে অধিকারের পরিবর্তন৪৬। দায়মুক্তি-বিধানের ক্ষমতা৪৭। কতিপয় আইনের হেফাজত৪৭ক। সংবিধানের কতিপয় বিধানের অপ্রযোজ্যতা
এই অংশে সংবিধানের ৪৮-৬৪ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:
৪৮। রাষ্ট্রপতি৪৯। ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার৫০। রাষ্ট্রপতি-পদের মেয়াদ৫১। রাষ্ট্রপতির দায়মুক্তি৫২। রাষ্ট্রপতির অভিশংসন৫৩। অসামর্থ্যের কারণে রাষ্ট্রপতির অপসারণ৫৪। অনুপস্থিতি প্রভৃতির-কালে রাষ্ট্রপতি-পদে স্পীকার
৫৫। মন্ত্রিসভা৫৬। মন্ত্রিগণ৫৭। প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ৫৮। অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ৫৮ক [বিলুপ্ত]২ক পরিচ্ছেদনির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার [সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ২১ ধারাবলে পরিচ্ছেদটি বিলুপ্ত।][বিলুপ্ত]
৫৯। স্থানীয় শাসন৬০। স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা
৬১। সর্বাধিনায়কতা৬২। প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগে ভর্তি প্রভৃতি৬৩। যুদ্ধ
৬৪। অ্যাটর্নি-জেনারেল
এই অংশে সংবিধানের ৬৫-৯৩ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:
৬৫। সংসদ-প্রতিষ্ঠা৬৬। সংসদে নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা৬৭। সদস্যদের আসন শূন্য হওয়া৬৮। সংসদ-সদস্যদের [পারিশ্রমিক] প্রভৃতি৬৯। শপথ গ্রহণের পূর্বে আসন গ্রহণ বা ভোট দান করিলে সদস্যের অর্থদন্ড৭০। রাজনৈতিক দল হইতে পদত্যাগ বা দলের বিপক্ষে ভোটদানের কারণে আসন শূন্য হওয়া৭১। দ্বৈত-সদস্যতায় বাধা৭২। সংসদের অধিবেশন৭৩। সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাণী৭৩ক। সংসদ সম্পর্কে মন্ত্রীগণের অধিকার৭৪। স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার৭৫। কার্যপ্রণালী-বিধি, কোরাম প্রভৃতি৭৬। সংসদের স্থায়ী কমিটিসমূহ৭৭। ন্যায়পাল৭৮। সংসদ ও সদস্যদের বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি৭৯। সংসদ-সচিবালয়
৮০। আইন প্রণয়ন পদ্ধতি৮১। অর্থবিল৮২। আর্থিক ব্যবস্থাবলীর সুপারিশ৮৩। সংসদের আইন ব্যতীত করারোপে বাধা৮৪। সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাব৮৫। সরকারী অর্থের নিয়ন্ত্রণ৮৬। প্রজাতন্ত্রের সরকারী হিসাবে প্রদেয় অর্থ৮৭। বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি৮৮। সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়৮৯। বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি সম্পর্কিত পদ্ধতি৯০। নির্দিষ্টকরণ আইন৯১। সম্পূরক ও অতিরিক্ত মঞ্জুরী৯২। হিসাব, ঋণ প্রভৃতির উপর ভোট৯২ক। [বিলুপ্ত]
৯৩। অধ্যাদেশপ্রণয়ন-ক্ষমতা
এই অংশে সংবিধানের ৯৪-১১৭ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:
৯৪। সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠা৯৫। বিচারক-নিয়োগ৯৬। বিচারকের পদের মেয়াদ৯৭। অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ৯৮। সুপ্রীম কোর্টের অতিরিক্ত বিচারকগণ৯৯। অবসর গ্রহণের পর বিচারগণের অক্ষমতা১০০। সুপ্রীম কোর্টের আসন১০১। হাইকোর্ট বিভাগের এখতিয়ার১০২। কতিপয় আদেশ ও নির্দেশ প্রভৃতি দানের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা১০৩। আপীল বিভাগের এখতিয়ার১০৪। আপীল বিভাগের পরোয়ানা জারী ও নির্বাহ১০৫। আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় বা আদেশ পুনর্বিবেচনা১০৬। সুপ্রীম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার১০৭। সুপ্রীম কোর্টের বিধি-প্রণয়ন-ক্ষমতা১০৮। "কোর্ট অব রেকর্ড" রূপে সুপ্রীম কোর্ট১০৯। আদালতসমূহের উপর তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ১১০। অধস্তন আদালত হইতে হাইকোর্ট বিভাগে মামলা স্থানান্তর১১১। সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকরতা১১২। সুপ্রীম কোর্টের সহায়তা১১৩। সুপ্রীম কোর্টের কর্মচারীগণ
১১৪। অধস্তন আদালত-সমূহ প্রতিষ্ঠা১১৫। অধস্তন আদালতে নিয়োগ১১৬। অধস্তন আদালতসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা১১৬ক। বিচারবিভাগীয় কর্মচারীগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন
১১৭। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসমূহষষ্ঠ ক ভাগ-জাতীয়দল[সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ৪১ ধারাবলে বিলুপ্ত।][বিলুপ্ত]
এই অংশে সংবিধানের ১১৮-১২৬ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:১১৮। নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা১১৯। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব১২০। নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীগণ১২১। প্রতি এলাকার জন্য একটিমাত্র ভোটার তালিকা১২২। ভোটার-তালিকায় নামভুক্তির যোগ্যতা১২৩। নির্বাচন-অনুষ্ঠানের সময়১২৪। নির্বাচন সম্পর্কে সংসদের বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা১২৫। নির্বাচনী আইন ও নির্বাচনের বৈধতা১২৬। নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তাদান
এই অংশে সংবিধানের ১২৭-১৩২- নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:১২৭। মহা হিসাব-নিরীক্ষক পদের প্রতিষ্ঠা১২৮। মহা-হিসাব নিরীক্ষকের দায়িত্ব১২৯। মহা হিসাব-নিরীক্ষকের কর্মের মেয়াদ১৩০। অস্থায়ী মহা হিসাব-নিরীক্ষক১৩১। প্রজাতন্ত্রের হিসাব-রক্ষার আকার ও পদ্ধতি১৩২। সংসদে মহা হিসাব-নিরীক্ষকের রিপোর্ট উপস্থাপন
এই অংশে সংবিধানের ১৩৩-১৪১ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:
১৩৩। নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলী১৩৪। কর্মের মেয়াদ১৩৫। অসামরিক সরকারী কর্মচারীদের বরখাস্ত প্রভৃতি১৩৬। কর্মবিভাগ-পুনর্গঠন
১৩৭। কমিশন-প্রতিষ্ঠা১৩৮। সদস্য-নিয়োগ১৩৯। পদের মেয়াদ১৪০। কমিশনের দায়িত্ব১৪১। বার্ষিক রিপোর্ট৫ নবম-ক ভাগজরুরী বিধানাবলী(১৪১ক-১৪১গ)১৪১ক। জরুরী-অবস্থা ঘোষণা১৪১খ। জরুরী-অবস্থার সময় সংবিধানের কতিপয় অনুচ্ছেদের বিধান স্থগিতকরণ১৪১গ। জরুরী-অবস্থার সময় মৌলিক অধিকারসমূহ স্থগিতকরণ
এই অংশে সংবিধানের কেবল ১৪২ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:১৪২। সংবিধানের বিধান সংশোধনের ক্ষমতা
এই অংশে সংবিধানের ১৪৩-১৫৩ নং অনুচ্ছেদ বর্ণিত রয়েছে। অনুচ্ছেদগুলো হলো:১৪৩। প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি১৪৪। সম্পত্তি ও কারবার প্রভৃতি-প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্তৃত্ব১৪৫। চুক্তি ও দলিল১৪৫ক। আন্তর্জাতিক চুক্তি১৪৬। বাংলাদেশের নামে মামলা১৪৭। কতিপয় পদাধিকারীর পারিশ্রমিক প্রভৃতি১৪৮। পদের শপথ১৪৯। প্রচলিত আইনের হেফাজত১৫০। ক্রান্তিকালীন ও অস্থায়ী বিধানাবলী১৫১। রহিতকরণ১৫২। ব্যাখ্যা১৫৩। প্রবর্তন, উল্লেখ ও নির্ভরযোগ্য পাঠ