ফুকুই (福井市 (Fukui-shi)) পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্র জাপানের মধ্যভাগের হোনশু দ্বীপের উত্তর-মধ্য অংশে অবস্থিত ফুকুই প্রশাসনিক অঞ্চলের প্রধান শহর। এটি জাপান সাগরের ওয়াকাসা উপসাগরের উপকূল থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১ মার্চ ২০২৪ (2024-03-01)-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ] শহরটির প্রাক্কলিত জনসংখ্যা ছিল ২,৫৫,৩৩২ ও পরিবারের সংখ্যা ছিল ১,০৭,৫৫৩।[১] শহরের মোট আয়তন ৫৩৬.৪১ বর্গকিলোমিটার (২০৭.১১ মা২)[২]। এর জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৭৬ জন। শহরের সিংহভাগ অধিবাসী একটি ক্ষুদ্র কেন্দ্রীয় এলাকায় বাস করে। শহরের আনুষ্ঠানিক পরিসীমার মধ্যে গ্রামীণ সমভূমি, পার্বত্য এলাকা ও ৮নং বাইপাস সড়ক ধরে বিক্ষিপ্ত উপশহরীয় এলাকা অবস্থিত। ফুকুই শহরটি ফুকুই সমভূমি অঞ্চলের মূল শহর, যে সমভূমিটির উপকূলীয় ভাগটি বালিয়াড়ি দিয়ে পূর্ণ ও যার অভ্যন্তরভাগে ধান চাষ হয়।
আনুমানিক ১০ম শতকে ফুকুই শহরে বস্ত্রবয়ন কুটিরশিল্পের বিকাশ ঘটে। তখন থেকেই এটি জাপানের একটি বস্ত্রবয়ন কেন্দ্র। বর্তমানে শহরটি রেশম ও কৃত্রিম তন্তু যেমন রেয়ন উৎপাদনের একটি প্রধান কেন্দ্র। এছাড়া এখানে যন্ত্রপাতি শিল্পোৎপাদন ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়।
ফুকুই শহরটি একটি প্রধান রেলকেন্দ্র। এটি মহাসড়কের মাধ্যমে হোনশু দ্বীপের অন্যন্য প্রধান নগরকেন্দ্রগুলির সাথে সংযুক্ত। এখানে একটি প্রাচীন প্রাসাদ ও দুর্গের ধ্বংসাবশেষ আছে, যেগুলি পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় স্থান।
১৫শ শতকের শেষভাগে প্রাদেশিক সামরিক নেতা (শুগো দাইমিয়ো) আসাকুরা তোশিকাগে তৎকালীন এচিজেন প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ কুক্ষিগত করে ইচিজৌদানি লোকালয়ে একটি দুর্গ নির্মাণ করান, যেটি বর্তমানে ফুকুই শহরের অংশ। ১৫৭৩ সালে তোশিকাগে-র দুর্গটি সামন্ত শাসক (দাইমিয়ো) ওদা নোবুনাগা বিজয় করে নেন এবং এর দুই বছর পরে নোবুনাগার যোদ্ধা কাপ্তান শিবাতা কাতসুইয়ে প্রদেশটির ক্ষমতা দখল করে ঐ দুর্গপ্রাসাদটিকে তার সদর দপ্তর বানান ও তার নাম দের ফুকুই। এখান থেকেই ফুকুই শহরের উদ্ভব।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ও এরপরে ১৯৪৮ সালে একটি ভূমিকম্পে শহরটি ব্যাপকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু তারপরে এটিকে সফলভাবে পুনর্নির্মাণ করা হয়। তাই এটি "ফিনিক্স পাখির শহর" নামেও ডাকা হয়।