ফুঁশালপর্তুগালের স্বায়ত্তশাসিত মাদেইরা অঞ্চলের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। আটলান্টিক মহাসাগর দ্বারা শহরটি পরিবেষ্টিত। ফুঁশালের জনসংখ্যা ১,১১,৮৯২।[১] ফুঁশাল পর্তুগালের ষষ্ঠ বৃহত্তম শহর। পাঁচশ বছর ধরেই এটি মাদেইরার রাজধানী। উচ্চ সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মূল্যের কারণে ফুঁশাল পর্তুগালের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান। নববর্ষ উদযাপনেরও অন্যতম কেন্দ্রস্থল মাদেইরা শহরটি।
ইতিহাস
Cathedral of Funchal (Sé Cathedral), constructed under the orders of D. Manuel, Duke of Beja, dating back to the 15th century
ফুঁশালে ১৪২৪ সালে বসতি স্থাপন শুরু হয়। দ্বীপটিকে দুইটি অধিনায়ক-শাসিত অঞ্চল বা ক্যাপ্টেনসিতে বিভক্ত করা হয়। জোয়াও গঞ্জালভেস জারকো তার পরিবারের সাথে এখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তিনিই ফুঁশালের নগর এলাকা প্রতিষ্ঠা করেন। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ফুঁশাল গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দরে পরিণত হয়। এর উর্বর ভূমি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ ছিল। উপকূলীয় অবস্থান ও উর্বর ভূমিরূপের কারণে ফুঁশালের জনসংখ্যা এর নিকটবর্তী বসতিগুলোর জনসংখ্যার চেয়ে দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায়।
পঞ্চদশ শতাব্দীতে আলভারো ফার্নান্দেজ ফুঁশালের সেনাধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৪৫২ থেকে ১৪৫৪ সালের ভিতরে ফুঁশালের প্রথম বাতিঘর নির্মিত হয়। ফুঁশাল ইউরোপীয় বাণিজ্যিক কার্যক্রমের এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন বিন্দু ছিল। ক্রিস্টোফার কলম্বাস ফুঁশালের প্রথম বসতি স্থাপনকারীদের একজন ছিলেন। পিকার্দি অঞ্চলের জোয়াও ডি এসমেনো, জেনোয়ার লোমেনিলো, বিসকে-র মন্দ্রাগাও, ফ্লোরেন্স-এর আচ্চোলি, ফ্রান্স-এর বেটেনকোর্ট, ভ্যালেন্সিয়া-র লেমিনহানা বেরেনগুয়ারের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এখানে আবাস প্রতিষ্ঠা করেন।
পঞ্চদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় অর্ধাংশে মাচিকো থেকে শুরু করে ফাহা দা ওভেলহা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে চিনিশিল্পের দ্রুত প্রসার ঘটে। ফুঁশাল এই শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। বেহার ডিউক ডি মানুয়েল স্থানীয় সম্প্রদায়ের সমর্থন নিয়ে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেন।১৪৯১ সালে তিনি পাকোস দি কনসেলহো ও পাকোস দস তাবিয়ালেস প্রতিষ্ঠা করেন। চার্চ (যার নির্মাণকাজ ১৪৯৩ সালে শুরু হয় এবং ১৫১৪ সালে ক্যাথেড্রালে রূপান্তরিত করা হয়), হাসপাতাল ও শুল্ক ভবনও ফুঁশালে নির্মিত হয়। ১৫০৮ সালে পর্তুগালের রাজা প্রথম মানুয়েল ফুঁশালকে নগর মর্যাদায় রূপায়িত করেন।
ফুঁশাল জলদস্যুদের আক্রমণের হুমকির সম্মুখীন ছিল। ১৫৬৬ সালের সেপ্টেম্বরে বার্তাদঁ দ্যু মোঁতে ১২০০ জনকে নিয়ে বোর্দো শহর থেকে যাত্রা শুরু করেন। তারা পোর্তো সান্তোয় ব্যাপক লুটপাট চালান। মাচিকো ও সান্তা ক্রুজের নাগরিকরা সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুললেও ফুঁশালের গভর্নর ফ্রান্সিসকো দি সালেস গঞ্জালভেস জার্কো দ্য কামারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এর ফলে ফুঁশালে পনেরো দিন ধরে লুণ্ঠনযজ্ঞ চলে।