ফিল কার্লসন

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

ফিলিপ হেনরি কার্লসন (ইংরেজি: Phil Carlson; জন্ম: ৮ আগস্ট, ১৯৫১) কুইন্সল্যান্ডের নান্দাহ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ফিল কার্লসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ফিলিপ হেনরি কার্লসন
জন্ম৮ আগস্ট, ১৯৫১
নান্দাহ, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
সম্পর্কস্টিন কার্লটন (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩০০)
২৭ জানুয়ারি ১৯৭৯ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৫০)
১৩ জানুয়ারি ১৯৭৯ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ ওডিআই৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৯/৭০–১৯৮০/৮১কুইন্সল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টওডিআইএফসিএলএ
ম্যাচ সংখ্যা৯১২৫
রানের সংখ্যা২৩১১৪১৬৭৩৭১
ব্যাটিং গড়৫.৭৫৫.৫০২৮.৩৪২০.৬১
১০০/৫০-/--/-৫/১৯-/৩
সর্বোচ্চ রান২১১১১১০*৮৯
বল করেছে৩৬৮১৬৮৭৫১২১০৮৪
উইকেট১২৪২৫
বোলিং গড়৪৯.৫০৩৫.০০২৪.৯৬২৩.৬০
ইনিংসে ৫ উইকেট--
ম্যাচে ১০ উইকেট---
সেরা বোলিং২/৪১১/২১৭/৪২৫/৩৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং২/--/-৫৯/–৪/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৭ এপ্রিল ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ফিল কার্লসন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৯৬৯-৭০ মৌসুম থেকে মৌসুম ১৯৮০-৮১ মৌসুম পর্যন্ত ফিল কার্লসনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৮ বছর বয়সে কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে সেঞ্চুরি করে সংবাদের শিরোনামে চলে আসেন। পরবর্তী সময়গুলোয়ও এ ধারা অব্যাহত রাখেন। কিন্তু, শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া দলে নিজেকে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। দীর্ঘদেহের অধিকারী, ব্যাটিংয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন ড্রাইভের মাধ্যমে। এছাড়াও, স্লিপ ফিল্ডার হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছেন। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে ৪৫.৯৬ গড়ে ৫৯১ ও ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে ৪০.৩৩ গড়ে ৪৪৮ রান তুলেছেন।

মাত্র ১৮ বছর বয়সে ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে ওলুনগাব্বার ব্রিসবেন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ব্যাটসম্যান হিসেবে কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় ফিল কার্লসনের।[১] নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় ৮৫ রান তুলেন।[২] বিকল্প বোলার হিসেবেও বোলিং করতে শুরু করেন। ১৯৭১-৭২ মৌসুমে প্রথম সেঞ্চুরির সন্ধান পান।[৩] একই মৌসুমে প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান তিনি।[৪]

ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে অংশগ্রহণ

১৯৭৩ সালে ব্যাকআপ দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে খেলেন।[৫] ৬৮৬ রান সংগ্রহের পাশাপাশি ৬৪ উইকেট পান তিনি।[৬][৭]

১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০৩ রান তুলেন।[৮] এরপর, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০৭ রান সংগ্রহ করেন।[৯]

এপ্রিল, ১৯৭৮ সালে তিনি ও ইয়ান ব্রেশ ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইনডোর ডাবল উইকেট প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন।[১০]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্ট ও চারটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন ফিল কার্লসন। তবে, ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৭৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরে তাকে দলে রাখা হয়নি।[১১] অংশগ্রহণকৃত সবগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রিকেটই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছেন। ২৭ জানুয়ারি, ১৯৭৯ তারিখে অ্যাডিলেডে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯ তারিখে সিডনিতে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৭৮-৭৯ মৌসুমের শুরুতে বেশ কয়েকটি দূর্দান্ত খেলা উপহার দেন। ফলশ্রুতিতে, সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলার জন্যে তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে ঠাঁই দেয়া হয়।[১২] ঐ টেস্টসহ দ্বিতীয় টেস্টেও তাকে দ্বাদশ খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়েছিল তাকে। তৃতীয় টেস্টে অ্যালান বর্ডারকে প্রাধান্য দেয়ায় তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। তবে, একদিনের আন্তর্জাতিকে তাকে খেলানো হয়েছিল।[১৩] এরপর, নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে সেঞ্চুরিসহ খেলায় দশ উইকেট পান। পরের খেলায় সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৮ রান তুলেন।[১৪] পঞ্চম টেস্ট খেলার জন্যে পুনরায় তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। জিওফ ডাইমকের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।[১৫]

১৯৭৮-৭৯ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজ খেলার উদ্দেশ্য নিয়ে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়া গমন করে। এ সময়ে দলের নিয়মিত ও প্রথম পছন্দের খেলোয়াড়গণ বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত ছিল। কার্লসন টেস্টে দুইটি ও ওডিআইয়ে দুইটি উইকেট লাভ করেছিলেন। গ্রাহাম গুচ তার প্রিয় শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। টেস্টে একবার ও ওডিআইয়ে দুইবার আউট করেছিলেন গ্রাহাম গুচকে।

অংশগ্রহণকৃত দুই টেস্টে বেশ দূর্বলমানের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। ব্যাট হাতে মাঠে নেমে দ্রুত গতিসম্পন্ন বোলিংয়ের বিপক্ষে হিমশিম খান। চার ইনিংসে মাত্র ২৩ রান তুলেছিলেন। চারটি একদিনের আন্তর্জাতিকে মাত্র ১১ রান তুলেন।

সাবেক অস্ট্রেলীয় দল নির্বাচক জন বেনো, ফিল কার্লসনের টেস্টে অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে সমালোচনায় মুখরিত হন। তার মতে, মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেললেও ধীরগতিসম্পন্ন আদর্শমানের মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে তাকে নামানোর বিষয়ে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক গ্রাহাম ইয়ালপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ নেতিবাচক ছিল।[১৬]

অবসর

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পর আরও দুই মৌসুম খেলেন। তবে, কোন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে না পারায় অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য হন।

কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পাঁচবার পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন। তন্মধ্যে, একবার দশবার উইকেট পান। এছাড়াও, একদিনের খেলায় পাঁচ-উইকেট পান।[১৭] একমাত্র কুইন্সল্যান্ডীয় হিসেবে খেলায় সেঞ্চুরি ও দশ উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন।[১৮] ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে এ কৃতিত্ব দেখান।[১৯] এ মৌসুমেই কার্লসনের স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত হয়। ৫৪৫ রানের পাশাপাশি ৩১ উইকেট দখল করেন তিনি।[২০][২১]

ব্যক্তিগত জীবন

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর স্থানীয় কৃষকদেরকে খামারজাত পণ্যসামগ্রী বিক্রয়ে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে ব্রিসবেনে ফিরে যান। তার সন্তান স্টিন কার্লটন অস্ট্রেলীয় গ্রেড ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

পনেরো বছরের অধিক সময় কুইন্সল্যান্ড ক্রিকেটার্স ক্লাবের পরিচালনা পরিষদে যুক্ত আছে। ৪৭ বছর বয়সে টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।[২২][২৩]

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী