প্রথম ফুয়াদ

মিশর ও সুদানের রাষ্ট্রপ্রধান

প্রথম ফুয়াদ (আরবি: فؤاد الأول Fu’ād al-Awwal; ২৬ মার্চ ১৮৬৮ - ২৮ এপ্রিল ১৯৩৬) ছিলেন মিশর ও সুদানের সুলতান ও পরবর্তীকালে বাদশাহ। তিনি মিশর ও সুদানের মুহাম্মদ আলি রাজবংশীয় শাসকদের মধ্যে নবম। তাঁর বড় ভাই সুলতান হুসাইন কামেলের উত্তরসূরি হিসেবে ১৯১৭ সালে তিনি মিশরের সুলতান হন। ১৯২২ সালে যুক্তরাজ্য মিশরের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়ার পর তিনি সুলতানের বদলে বাদশাহ উপাধি গ্রহণ করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

প্রথম ফুয়াদ
মিশরের ও সুদানের বাদশাহ[১]
রাজত্ব১৫ মার্চ ১৯২২ – ২৮ এপ্রিল ১৯৩৬
পূর্বসূরিমিশরের সুলতান হিসেবে নিজে
উত্তরসূরিপ্রথম ফারুক
প্রধানমন্ত্রী
তালিকা দেখুন
  • আবদেল খালিক পাশা
    মুহাম্মদ তাওফিক নাসিম পাশা
    ইয়াহিয়া ইবরাহিম পাশা
    সাদ জগলুল পাশা
    আহমাদ জিওয়ার পাশা
    আদলি ইয়াকান পাশা
    মুস্তাফা এল-নাহাস পাশা
    মুহাম্মদ মাহমুদ পাশা
    ইসমাইল সিদকি পাশা
    আবদেল ফাত্তাহ ইয়াহিয়া পাশা
    আলি মাহির পাশা
মিশরের সুলতান
রাজত্ব৯ অক্টোবর ১৯১৭ – ১৫ মার্চ ১৯২২
পূর্বসূরিহুসাইন কামেল
উত্তরসূরিমিশরের বাদশাহ হিসেবে নিজে
প্রধানমন্ত্রী
তালিকা দেখুন
  • হুসাইন রুশদি পাশা
    মুহাম্মদ সাইদ পাশা
    ইউসুফ ওয়াহবা পাশা
    মুহাম্মদ তাওফিক পাশা নাইম পাশা
    আদলি ইয়াকান পাশা
    আবদেল খালিক সারওয়াত পাশা
জন্ম(১৮৬৮-০৩-২৬)২৬ মার্চ ১৮৬৮
গিজা প্রাসাদ, কায়র, মিশর খেদিভাত
মৃত্যু২৮ এপ্রিল ১৯৩৬(1936-04-28) (বয়স ৬৮)
কুব্বেহ প্রাসাদ, কায়রো, মিশর রাজতন্ত্র
সমাধি
আল-রিফাই মসজিদ, কায়রো, মিশর
স্ত্রীগণশিভাকিয়ার খানুম এফেন্দি
(দাম্পত্যকাল ১৮৯৫ - ১৮৯৮)
নাজলি সাবরি
(দাম্পত্যকাল ১৯১৯ - ১৯৩৬)
বংশধরপ্রিন্স ইসমাইল
প্রিন্সেস ফাওকিয়া
প্রথম ফারুক
প্রিন্সেস ফাওজিয়া
প্রিন্সেস ফাইজা
প্রিন্সেস ফাইকা
প্রিন্সেস ফাতহিয়া
পূর্ণ নাম
আহমাদ ফুয়াদ
আরবি: أحمد فؤاد
রাজবংশমুহাম্মদ আলি রাজবংশ
পিতাইসমাইল পাশা
মাতাফেরিয়াল হানিম
ধর্মইসলাম (সুন্নি)

প্রারম্ভিক জীবন

ফুয়াদ কায়রোর গিজা প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি ছিলেন ইসমাইল পাশার সপ্তম পুত্র।[২] তাঁর মা ছিলেন ফেরিয়াল কাদিন।[৩]

সুলতান হওয়ার পূর্বে ফুয়াদ কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ১৯০৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম রেক্টর হন। ১৯১৩ সালে পদত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেছেন। তৎকালীন বিচারমন্ত্রী হুসাইন রুশদি পাশা এসময় তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯১৩ সালে ফুয়াদ তাঁর নিজের জন্য আলবেনিয়ার সিংহাসন অধিকারের ব্যর্থ চেষ্টা চালান। এর এক বছর পূর্বে আলবেনিয়া উসমানীয় সাম্রাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিল। সে সময় তাঁর ভাইপো দ্বিতীয় আব্বাস হিলমি পাশা মিশর শাসন করছিলেন এবং নিজ দেশে ফুয়াদের শাসক হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল। এ সকল কারণে এবং মুহাম্মদ আলি রাজবংশ আলবেনীয় বংশোদ্ভূত হওয়ার কারণে ফুয়াদ আলবেনিয়ার সিংহাসন লাভের প্রচেষ্টা চালান।[৪] ১৯১৫ থেকে ১৯১৮ সাল নাগাদ ফুয়াদ ইজিপশিয়ান জিওগ্রাফিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।[৫]

শাসনকাল

১৯১৭ সালে ভাই হুসাইন কামেল মারা যাওয়ার পর ফুয়াদ মিশরের সুলতান হন। ১৯১৯ সালে মিশরের বিপ্লবের পর যুক্তরাজ্য মিশরের উপর থেকে তাদের কর্তৃত্ব তুলে নেয় এবং ১৯২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয়। ১৯২২ সালের ১৫ মার্চ ফুয়াদ সুলতান উপাধির পরিবর্তে বাদশাহ উপাধি ধারণের আদেশ জারি করেন। ১৯৩০ সালে তিনি ১৯২৩ সালের সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন। এই নতুন সংবিধানে সংসদের ক্ষমতা উপদেষ্টা মূলক ক্ষেত্রে সীমিত করা হয়। তবে ব্যাপক অসন্তোষের ফলে তিনি ১৯৩৫ সালে পূর্বের সংবিধান পুনর্বহাল করতে বাধ্য হন।

১৯২৩ সালের সংবিধানে ফুয়াদকে অনেক ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল। তাঁকে প্রদত্ত সংসদ বিলুপ্ত করার ক্ষমতা তিনি কয়েকবার ব্যবহার করেছিলেন। তাঁর শাসনামলে রাজকীয় ইচ্ছার কারণে মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হয় এবং কোনো সংসদই চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।[৬]

ব্যক্তিগত জীবন

ফুয়াদ তাঁর প্রথম স্ত্রী শিভাকিয়ার খানুম এফেন্দিকে ১৮৯৫ সালের ৩০ মে কায়রোর আব্বাসিয়া প্রাসাদে বিয়ে করেন। তাঁদের দুই সন্তান ছিল। তন্মধ্যে ইসমাইল ফুয়াদ শৈশবে মারা যান। অন্যজন ছিলেন কন্যা ফাওকিয়া। ১৮৯৮ সালে তাঁদের তালাক হয়।

১৯১৯ সালের ২৪ মে ফুয়াদ তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী নাজলি সাবরিএ কায়রোর বুস্তান প্রাসাদে বিয়ে করেন। এই দম্পতির পাঁচ সন্তান ছিল। পরবর্তী বাদশাহ প্রথম ফারুক তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

চিন ও ফুয়াদ

চিনে ফুয়াদ মুসলিম লাইব্রেরি চিনা মুসলিম মা সংতিং কর্তৃক তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে।[৭][৮]

বিয়ে

১. শিভাকিয়ার খানুম এফেন্দি (১৮৭৬-১৯৪৭)

সন্তান

  • ইসমাইল ফুয়াদ (১৮৯৬-১৮৯৬)
  • ফাওকিয়া (১৮৯৭-১৯৭৪)

২. নাজলি সাবরি (১৮৯৪-১৯৭৮)

সন্তান

  • প্রথম ফারুক (১৯২০–১৯৬৫)
  • ফাওজিয়া (১৯২১-২০১৩) (ইরানের রাণী)
  • ফাইজা (১৯২৩–১৯৯৪)
  • ফাইকা (১৯২৬-১৯৮৩)
  • ফাতহিয়া (১৯৩০–১৯৭৬)

উপাধি

  • ১৮৬৮ - ১৯১৭: মহামান্য আহমেদ ফুয়াদ পাশা
  • ১৯১৭ - ১৯২২: মহামান্য মিশর ও সুদানের সুলতান, নুবিয়া, কুরদুফান ও দারফুরের সার্বভৌম
  • ১৯২২ - ১৯৩৬: মহামান্য মিশর ও সুদানের বাদশাহ, নুবিয়া, কুরদুফান ও দারফুরের সার্বভৌম

সম্মাননা

বেলজিয়ামে বাদশাহ প্রথম ফুয়াদ
  • অর্ডার অফ নোবেলিটি, প্রথম শ্রেণি, ১৮৯৩
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ সেইন্টস মরিস অ্যান্ড লাজারাস, ১৯১১
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য রিডিমার, ১৯১২
  • নাইট গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য বাথ (জিসিবি), ১৯১৭
  • ইম্পেরিয়াল অর্ডার অফ পার্শিয়া, ১৯১৯
  • কমান্ডার গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ ভাসা, ১৯২১
  • গ্র্যান্ড ক্রস ডব্লিউ/কলার অফ দ্য অর্ডার অফ ক্যারল ১, ১৯২১
  • কলার অফ দ্য অর্ডার অফ ক্রিসান্থেয়াম, ১৯২১
  • নাইট অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য মোস্ট হলি এনানসিয়েশন, ১৯২২
  • গ্র্যান্ড কর্ড‌ন অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য রেনেসাঁ অফ দ্য হেজাজ, ১৯২২
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ আভিজ (জিসিএ), ১৯২৩
  • নাইট গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য নেদারল্যান্ডস লায়ন, ১৯২৫
  • গ্র্যান্ড কলার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য সুপ্রিম সান, ১৯২৭
  • গ্র্যান্ড কলার অফ দ্য কিংডম অফ আলবেনিয়া, ১৯২৭
  • রয়েল ভিক্টোরিয়ান চেইন (আরভিসি), ১৯২৭
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ লেজিওঁ দনর, ১৯২৭
  • গ্র্যান্ড কর্ড‌ন অফ দ্য অর্ডার অফ লিওপল্ড, ১৯২৭
  • গ্র্যান্ড কর্ড‌ন অফ দ্য অর্ডার অফ উমাইয়াদ অফ সিরিয়া, ১৯২৭
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য হোয়াইট ঈগল, ১৯৩২
  • নাইট অফ দ্য রয়েল অর্ডার অফ দ্য সেরাফিম, ১৯৩৩
  • নাইট অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য রয়েল হাউস অফ চাকরি, ১৯৩৪
  • নাইট অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য এলিফেন্ট, ১৯৩৫
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার দ্য হোয়াইট রোজ অফ ফিনল্যান্ড, ১৯৩৫
  • গ্র্যান্ড কলার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ক্রাউন, ১৯৩৫

আরও দেখুন

  • মিশর রাজতন্ত্র

তথ্যসূত্র

General
  • الملك أحمد فؤاد الأول [King Ahmad Fuad I] (Arabic ভাষায়)। Bibliotheca Alexandrina: Memory of Modern Egypt Digital Archive। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
Specific
প্রথম ফুয়াদ
মুহাম্মদ আলি রাজবংশ
জন্ম: ২৬ মার্চ ১৮৬৮ মৃত্যু: ২৮ এপ্রিল ১৯৩৬
রাজত্বকাল শিরোনাম
পূর্বসূরী
হুসাইন কামেল
মিশরের সুলতান
১৯১৭–১৯২২
স্বাধীনতাপ্রাপ্তি
নতুন পদবী
মিশর রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত
মিশরের বাদশাহ
১৯২২–১৯৩৬
উত্তরসূরী
প্রথম ফারুক
অ্যাকাডেমিক অফিস
নতুন সংস্থাকায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর
১৯০৮–১৯১৩
উত্তরসূরী
হুসাইন রুশদি পাশা
পেশাগত ও একাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন
পূর্বসূরী
অনোফ্রিও আবাটে পাশা
ইজিপশিয়ান জিওগ্রাফিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট
১৯১৫–১৯১৮
উত্তরসূরী
ইসমাইল সিদকি পাশা
🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী