প্রতিজ্ঞাত দেশ

প্রতিজ্ঞাত দেশ (হিব্রু ভাষায়: הארץ המובטחת‎, ha'aretz hamuvtakhat; আরবি: أرض الميعاد, প্রতিবর্ণীকৃত: ard al-mi'ad), যা দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ[১] নামেও পরিচিত, হল তানাখ (হিব্রু বাইবেল বা পুরাতন নিয়ম) অনুসারে সেই দেশ যেটির ব্যাপারে ঈশ্বর অব্রাহাম ও তাঁর বংশধরদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে তা প্রদান করেছিলেন। আধুনিক পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিজ্ঞাত দেশ কথাটি একটি চিত্র বা ধারণা প্রকাশ করে যা ইহুদি জাতির আবাসভূমি এবং পরিত্রাণ ও মুক্তির সাথে সম্পর্কিত। এছাড়াও এই ভূমিরকথা কুরআনেও উল্লেখ রয়েছে এবং মুসলিমদের কাছেও এটি তাদের প্রতিশ্রুত ভূমিবা পবিত্র ভূমি।

বাইবেলের ভিত্তিতে প্রদর্শিত প্রতিজ্ঞাত দেশের সীমান্ত (গণনা পুস্তক, যিহিষ্কেল)।
অব্রাহামের নিকট সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞার ভিত্তিতে মানচিত্রে প্রদর্শিত প্রতিজ্ঞাত দেশের সীমান্তের একটি ব্যাখ্যা (আদিপুস্তক)।

ঈশ্বর সর্বপ্রথম অব্রাহামের নিকট দিব্য করেন (আদিপুস্তক):

সেই দিন সদাপ্রভু অব্রামের সহিত নিয়ম স্থির করিয়া কহিলেন, “আমি মিসরের নদী অবধি মহানদী, ফরাৎ নদী পর্যন্ত এই দেশ তোমার বংশকে দিলাম; কেনীয়, কনিষীয়, কদমোনীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, রফায়ীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, গির্গাশীয় ও যিবূষীয় লোকদের দেশ দিলাম।”

তিনি পরবর্তীতে অব্রাহামের পুত্র ইস্‌হাক (আদিপুস্তক) এবং এরপর ইস্‌হাকের পুত্র যাকোবের (আদিপুস্তক) নিকট তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। যাত্রাপুস্তকের বর্ণনা অনুযায়ী প্রতিজ্ঞাত দেশের সীমা সূফসাগর অবধি পলেষ্টীয়দের সমুদ্র পর্যন্ত, এবং প্রান্তর অবধি ফরাৎ নদী পর্যন্ত নিরূপিত হয় (যাত্রাপুস্তক)। মোশির নেতৃত্বে মিসর দেশ থেকে যাত্রার পর ইস্রায়েলীয়রা কনান দেশের ক্ষুদ্র অংশ এবং যর্দন নদীর পূর্বাংশ বিজয় ও দখল করেছিল (গণনা পুস্তক)। দ্বিতীয় বিবরণ এই দখলকে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি পূরণ হিসাবে উপস্থাপন করে (দ্বিতীয় বিবরণ)। মোশি ঈশ্বরের প্রকৃত প্রতিজ্ঞার সীমানার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করে পূর্বানুমান করেছিলেন যে ঈশ্বর পরবর্তীকালে ইস্রায়েলীয়দের দেশ প্রদান করতে পারেন – যদি তারা নিয়মের প্রতি অনুগত থাকে (দ্বিতীয় বিবরণ)।

প্রতিজ্ঞাত দেশের ধারণাটি সিয়োনবাদের মূল ভিত্তি, যার বক্তব্য অনুসারে আধুনিক ইহুদিরা হল ইস্রায়েলীয় ও মকাবীয়দের উত্তরসূরী, ফলে এর মাধ্যমে তারা তাদের “জাতীয় জন্মভূমি” পুনঃপ্রতিষ্ঠার অধিকার লাভ করে।[২] ফিলিস্তিনিরাও নিজেদের ইস্রায়েলীয় ও মকাবীয়সহ ফিলিস্তিন অঞ্চলে বসবাসকারী অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বংশধর বলে দাবি করে।[৩]

আফ্রিকান-আমেরিকান আধ্যাত্মিকরা দাসত্ব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য “প্রতিজ্ঞাত দেশের” চিত্রকে স্বর্গ হিসাবে কল্পনা করত[৪]যেখানে প্রায়শই মৃত্যুর মাধ্যমে পৌঁছানো যায়। এই চিত্র ও ধারণাটি বিভিন্ন জনপ্রিয় সংস্কৃতি, বক্তৃতা ও ভাষণেও আবির্ভূত হয়, যেমন, মার্টিন লুথার কিংয়ের ১৯৬৮ সালের “আমি পর্বতচূড়ায় গিয়েছি” ভাষণে:

“আমি কেবল ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে চাই এবং তিনি আমাকে পর্বতে ওঠার অনুমতি দিয়েছেন। আমি সন্ধান করেছি এবং আমি প্রতিজ্ঞাত দেশটি দেখেছি। আমি সম্ভবত আপনাদের সাথে সেখানে যেতে পারব না৷ তবে আজ রাতে আমি আপনাদের জানতে চাই যে, আমরা জনগণ হিসাবে প্রতিজ্ঞাত দেশে পৌঁছে যাব। সুতরাং আমি আজ খুশি, আজ আমি কোন কিছুর জন্য উদ্বিগ্ন নই। আমি কোনও মানুষকে ভয় করি না। আমার দুচোখ প্রভুর পুনরাগমনের গৌরব দেখেছে।”[৫]

ঐশী প্রতিজ্ঞা

অব্রাহামের বংশধরগণ

খ্রিস্টান ব্যাখ্যা

গণনা পুস্তক অনুযায়ী সীমানা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী