পাকিয়ং বিমানবন্দর
পাকইয়ং বিমানবন্দর' [৫] হল ভারতের রাজ্য সিকিমের একটি গ্রীনফিল্ড বিমান বন্দর। ২০১৭ সালের মাঝা মাঝি সময়ে বিমানবন্দরটির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়। এটিই হবে সিকিমের প্রথম বিমানবন্দর।[৬] বিমানবন্দরটি নির্মাণের জন্য প্রথমে খরচ ধরা হয়ে ছিল ₹ ৩০৯ কোটি (ইউএস$ ৩৭.৭৭ মিলিয়ন) ।কিন্তু নির্মাণের সময় প্রকল্পে বাধা ও নানা সমস্যার জন্য খরচ বেড়ে হয় ₹ ৬০৫ কোটি (ইউএস$ ৭৩.৯৫ মিলিয়ন)।[৭] সিকিমের এই বিমানবন্দরের রানওয়ে ছোট, তাই ৭০ আসনের ছোট এটিআর চলবে কলকাতা-পাকইয়ং বা বাগডোগরা-পাকইয়ং রুটে।সিকিম পর্যটকদের স্বর্গ। পাকইয়ং বিমানবন্দর চালু হলে পর্যটক ছাড়া অন্য কাজেও যাতায়াতে সুবিধে হবে। বর্তমানে সিকিমের নিকটতম বিমানবন্দর হল বাগডোগরা বিমানবন্দর, যা ১২৪ কিলোমিটার (৭৭ মাইল) দূরে প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত এবং আপর নিকটতম বিমানবন্দর হল ভুটানের পারো বিমানবন্দর।
পাকইয়ং বিমানবন্দর | |||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |||||||||||
বিমানবন্দরের ধরন | জনসাধারণ | ||||||||||
পরিচালক | ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ | ||||||||||
পরিষেবাপ্রাপ্ত এলাকা | গ্যাংটক | ||||||||||
অবস্থান | পাকইয়ং, সিকিম, ভারত | ||||||||||
চালু | ২০১৭ | ||||||||||
এএমএসএল উচ্চতা | ১,৩৯৯ মিটার / ৪,৫৯০ ফু | ||||||||||
মানচিত্র | |||||||||||
ভারতে পাকইয়ং বিমানবন্দরের অবস্থান | |||||||||||
রানওয়ে | |||||||||||
| |||||||||||
পরিসংখ্যান (জানুয়ারী ২০১৮ - মার্চ ২০১৯) | |||||||||||
ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ | |||||||||||
| |||||||||||
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দর উদ্বোধন করেন।[৮] স্পাইসজেট কলকাতা থেকে পাকইয়ংয়ের মধ্যে ৪ অক্টোবর ২০১৮ সালে প্রথম বাণিজ্যিক উড়ান শুরু করে,[৯][১০][১১] ১ জানুয়ারী ২০১৯ সালে পাকিয়ং এবং পারোর মধ্যে উড়ান চালু করার পরিকল্পনা করছে ড্রুক এয়ার।[১২]
ইতিহাস
প্রকল্পটি অক্টোবর ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক বিষয় মন্ত্রিসভা কমিটি দ্বারা অনুমোদন করা হয়েছিল। জানুয়ারী ২০০৯ সালে গ্রীনফিল্ড এয়ারপোর্টের জন্য রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে, অ্যাপ্রন ড্রেনেজ সিস্টেম এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ নির্মাণের জন্য পুজ লয়েড গ্রুপকে ₹২,৬৪০ মিলিয়ন টাকার ($৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) চুক্তি প্রদান করা হয়। গ্রীনফিল্ড বিমানবন্দরের জন্য ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী, প্রফুল্ল প্যাটেল।[১৩]
আনুমান করা হয়েছিল প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে ২০১২ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের প্রতি যথাযথ পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ দাবির প্রতিবাদে জানুয়ারি ২০১৪ সালে কাজ স্থগিত করা হয়েছিল। এএআই হস্তক্ষেপ করে বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং অক্টোবর ২০১৪ সালে নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করার জন্য ক্ষতিপূরণ গ্রামবাসীদের প্রদান করে।[১৪] তবে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে গ্রামবাসীরা পুনরায় প্রতিবাদে অংশ নেয়। জুলাই ২০১৫ সালে, এএআই এবং রাজ্য সরকার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে এবং ১৫ অক্টোবর প্রকল্প এলাকায় আবস্থিত বাড়িগুলি স্থানান্তর করার প্রতিশ্রুতি দেয় যাতে এএআই অক্টোবর ২০১৫ থেকে কাজ পুনরায় শুরু করতে পারে।[৭]
ভূমি-ধ্বসের ফলে বিমানবন্দরের নির্মাণ আরও বিলম্বিত হয়েছে। সর্বাধিক পরিবেশগত ঢাল-স্থিতিশীল কৌশল এই সমস্যার সমাধানের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।[১৫]
বিমানবন্দরের নির্মাণ সম্পন্ন হলে, বিমানবন্দরটি ভারতের পাঁচটি সর্বোচ্চ বিমানবন্দরগুলির মধ্যে একটি হবে।[১৬]
গঠন
এএআই কর্তৃক আনুমানিক ৬০৫ কোটি টাকা [৭] খরচে বিমানবন্দরটি নির্মিত হয়েছে। বিমানবন্দরের ১,৭০০ মি × ৩০ মিটার (৫,৫৭৭ ফুট × ৯৮ ফুট) রানওয়ে একটি ১১৬ মিটার (৩৮১ ফুট) দীর্ঘ ট্যাক্সিওয়ার দ্বারা ১০৬×৭৬ মিটার (৩৪৮ ফুট × ২৪৯ ফুট) অ্যাপ্রনের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। অ্যাপ্রনটিতে একই সময়ে দুটি এটিআর ৭২ উড়োজাহাজ অবস্থান করতে পারে।
এছাড়াও মিসেস পিএবিএসসিওএন দ্বারা নির্মাণা করা হয়েছে ১০০ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা সম্পরন ২৩৮০ বর্গ মিটারের (২৫,৬০০বর্গ ফুট) একটি টার্মিনাল বিল্ডিং, ৮০ টি গাড়ি ধারণ ক্ষমতার পাকিং জোন এবং একটি ফায়ার স্টেশন সহ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার। বিমানবন্দরে এনডিবি, ডিভিওর, উচ্চ তীব্রতা রানওয়ে আলো (হাই ইন্টেন্সিভ রানওয়ে প্রজেক্ট বা এইচআইআরএল), এয়ারপোর্ট বীকন এবং পিএপিআই এর মতো ন্যাভিগেশন সুবিধা রয়েছে।[১৭]
সামরিক উড়ান পরিচালনা
ভারত-চীন সীমান্ত থেকে পাকিয়ং বিমানবন্দর প্রায় ৬০ কিলোমিটার (৩৭.২৮ মাইল) দূরে অবস্থিত, এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এটা জানা গেছে যে, ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএএফ) যদি প্রয়োজন হয় তবে নির্দিষ্ট সামরিক বিমানের অবতরণ করার ক্ষমতা পাবে।[১৮] ফলস্বরূপ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান সংস্থার মন্ত্রণালয় বিতর্ক তৈরি হয় বিমানবন্দর সুরক্ষিত করার দায়িত্বে থাকার বিষয়ে। বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয় (এমওসিএ) স্থানীয় পুলিশ ব্যবহারের পক্ষে সমর্থন করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমএইচএ) সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) কে সমর্থন করে, যা সারা দেশে ৫৯ টি বিমানবন্দরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পরিচালনা করে।[১৯]
কয়েক দশক ধরে এই হিমালয় অঞ্চলে ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। ২০১২ সালের জুন এবং আগস্টের মধ্যে, চীন ও ভারতের মধ্যে সর্বশেষ বিরোধ হয় ডকলামে। চীন, ভারত ও ভুটানের মধ্যে এই স্থানটি, এটি পাকিয়ং বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার (৩৩.৫৫ মাইল) পশ্চিমে অবস্থিত;[২০] ২০১৭ ডোকলাম বিবাদ দেখুন।
অবস্থান
বিমানবন্দরটি সিকিমের রাজধানী শহর গ্যাংটক থেকে ৩৫ কিলোমিটার (২২ মা) দূরে পাকইয়ং গ্রামে অবস্থিত।এই বিমান বন্দর ২৭.১৩ ডিগ্রি উত্তর ও ৮৮.৩৫ ডিগ্রি পূর্বে অবস্থিত।
বিমানসংস্থা এবং গন্তব্যস্থল
বিমান সংস্থা | গন্তব্যস্থল |
---|---|
স্পাইসজেট | দিল্লি, কলকাতা[২১][২২][২৩] |