দো বিঘা জমিন
দো বিঘা জমিন (হিন্দি: दो बीघा ज़मीन; বাংলা অনুবাদ: দুই বিঘা জমি) ১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র। ছবিটি প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন বিমল রায়। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন বলরাজ সাহনি, নিরূপা রায়, নাজির হুসেন, ও রতন কুমার। মিনা কুমারী "আজা রি আ নিন্দিয়া" ঘুমপাড়ানি গানে বিশেষ চরিত্রে আবির্ভূত হন।[১]
দো বিঘা জমিন | |
---|---|
![]() পোস্টার | |
दो बीघा ज़मीन | |
পরিচালক | বিমল রায় |
প্রযোজক | বিমল রায় |
রচয়িতা | পল মহেন্দ্র (সংলাপ) |
চিত্রনাট্যকার | হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় |
উৎস | সলিল চৌধুরী কর্তৃক রিকশাওয়ালা |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | সলিল চৌধুরী |
চিত্রগ্রাহক | কমল বসু |
সম্পাদক | হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় |
পরিবেশক | শিমারু ভিডিও প্রাইভেট লিমিটেড |
মুক্তি | ১৯৫৩ |
স্থিতিকাল | ১৪২ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
চলচ্চিত্রটি ইতালীয় পরিচালক ভিত্তোরিও দে সিকার নব্য-বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র বাইসাইকেল থিবস (১৯৪৮) থেকে অনুপ্রাণিত। বিমল রায়ের অন্যান্য চলচ্চিত্রের মত এতেও শিল্প ও বাণিজ্যিকতার যোগসূত্র ঘটিয়েছিলেন, যা ভারতীয় চলচ্চিত্রে বেঞ্চমার্ক হিসেবে দেখা হয়। তা পরবর্তীতে ১৯৫০ এর দশকে ভারতীয় নব্য-বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র আন্দোলন এবং ভারতীয় নতুন চলচ্চিত্রের সম্ভারের সূত্রপাত ঘটায়।[২]
দো বিঘা জমিন বাণিজ্যিকভাবে মাঝারি রকমের সফলতা লাভ করে। ছবিটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য সমগ্র ভারতের মেধার পুরস্কার লাভ করে, ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে প্রথম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে, এবং প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিঁ ইন্টারন্যাশনাল লাভ করে ও নীচা নগর (১৯৪৬) এর পর পাল্ম দর পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করে। ছবিটি কারলভি ভ্যারি এ সামাজিক উন্নয়ন পুরস্কার লাভ করে।[৩] ২০০৫ সালে ইন্ডিয়া টাইমস মুভিজ ছবিটিকে সেরা ২৫ অবশ্য দৃশ্য বলিউড চলচ্চিত্র হিসেবে উল্লেখ করে।
কুশীলব
- বলরাজ সাহনি - শম্ভু মহেতো
- নিরূপা রায় - পার্বতী "পারু" মহেতো
- রতন কুমার - কানাইয়া মহেতো
- মুরাদ - ঠাকুর হরনম সিং, জমিদার
- রাজ্যলক্ষ্মী - নবাবজি
- নানা পালসিকর - ধাঙ্গু মহেতো, শম্ভুর পিতা
- নাজির হুসেন - রিকশাওয়ালা
- নূর জেহান
- রেখা মল্লিক
- জগদিপ - লালু ওস্তাদ, মুচি
- মিনা কুমারী - ঠাকুরাইন (বিশেষ উপস্থিতি)
নির্মাণ
কাহিনী উন্নয়ন
১৯৫২ সালে মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পরিচালক বিমল রায় ইতালীয় পরিচালক ভিত্তোরিও দে সিকার বাইসাইকেল থিবস (১৯৪৮) দেখে এই ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুপ্রাণিত হন এবং নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি উৎসব থেকে বাড়ি ফিরে তার ইউনিটকে নতুন গল্প নিয়ে আসার আহ্বান জানান। পরে সলিল চৌধুরী রচিত রিকশাওয়ালা গল্পটি গৃহীত হয়। চলচ্চিত্রের নামটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কবিতা দুই বিঘা জমি থেকে নেওয়া।[৪]
অভিনয়শিল্পী নির্বাচন
বিমল রায় রিকশাওয়ালা শম্ভু চরিত্রের জন্য প্রথমে জয়রাজ ও ত্রিলোক কাপুরের কথা ভাবেন, কিন্তু তার সহকারী পরিচালক নাজির হুসেনকে নেওয়ার কথা বলেন। পরে বিমল রায় হাম লোগ (১৯৫১) দেখার পর বলরাজ সাহনিকে নির্বাচন করেন। তখন ইউনিটের সবাই বলাবলি করে যে সাহনির মত ইংরেজ বাবু কীভাবে রিকশাওয়ালার চরিত্রে অভিনয় করবে। সাহনি পরে তার ওজন কমায় এবং এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য রিকশা চালানো শিখেন।[৪]
পারু চরিত্রে নিরূপা রায়কে নির্বাচন করার সময়ও বিভিন্ন সমালোচনা দেখা যায়, কারণ নিরূপা এর পূর্বে বেশিরভাগ চলচ্চিত্রে পৌরাণিক দেবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এই চলচ্চিত্র নির্মাণের সময় বিমল রায় পরিণীতা চলচ্চিত্রেরও শুটিং করছিলেন। পরিণীতায় ললিতা চরিত্রে অভিনয় করা মিনা কুমারী এই চলচ্চিত্রের কিছু ছবি থেকে এতে অভিনয়ের আগ্রহ দেখান। তখন চিত্রনাট্যকার ও সম্পাদক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় তাকে "আজা রি আ নিন্দিয়া" ঘুমপাড়ানি গানে বিশেষ চরিত্রে কাজ করার সুযোগ দেন।[৪]
সঙ্গীত
দো বিঘা জমিন চলচ্চিত্রের গানের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সলিল চৌধুরী।
গানের তালিকা
নং. | শিরোনাম | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|
১. | "আজা রি আ নিন্দিয়া" | লতা মুঙ্গেশকর | ৩:২১ |
২. | "আজব তোরি দুনিয়া হো মেরি রাজা" | মোহাম্মদ রফি | ২:৩৯ |
৩. | "ধর্তী কাহে পুকার কে" | মান্না দে, লতা মুঙ্গেশকর ও কোরাস | ৬:০৩ |
৪. | "হারিয়ালা সাওয়ান ধোল বাজাকে আয়া" | মান্না দে, লতা মুঙ্গেশকর ও কোরাস | ৩:১৪ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ১৫:১৭ |
পুরস্কার ও মনোনয়ন
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য সমগ্র ভারতের মেধার পুরস্কার
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র - বিমল রায়
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পরিচালক - বিমল রায়
- বিজয়ী: প্রিঁ ইন্টারন্যাশনাল (আন্তর্জাতিক পুরস্কার)
- মনোনীত: পাল্ম দর (সেরা পরিচালক)
- কারলভি ভ্যারি
- বিজয়ী: সামাজিক উন্নয়ন পুরস্কার
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে দো বিঘা জমিন (ইংরেজি)
- রটেন টম্যাটোসে দো বিঘা জমিন (ইংরেজি)