ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদসমূহ

উইকিমিডিয়ার তালিকা নিবন্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৩টি অনুষদে ৮৪টি বিভাগ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও এর অন্তর্গত বিভাগগুলি নিচে দেওয়া হল।

মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ, নীলক্ষেত সড়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশের একটি তোরণ

কলা অনুষদ

কলা অনুষদ
লেকচার থিয়েটার ভবন
অপরাজেয় বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অবস্থিত একটি ভাস্কর্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা অনুষদ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২১ সালে। এ অনুষদের অন্তর্গত বিভাগসমূহ হলো:

বাংলা বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলা বিভাগ এর কার্যক্রম শুরু করে। এ বিভাগের প্রথম অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ছিলেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীমুহম্মদ শহীদুল্লাহও (পরে ডক্টর) তখন থেকেই এই বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় এই বিভাগের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যাপক মুহম্মদ আবদুল হাইয়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত (১৯৫৮ থেকে) "সাহিত্য পত্রিকা" বিভাগের গবেষণার ঐতিহ্য এখন পর্যন্ত ধরে রেখেছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে এই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী ও আনোয়ার পাশা এবং কয়েকজন ছাত্র শহীদ হন। অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী আবিষ্কৃত মুনীর অপটিমা নামক টাইপরাইটার বাংলা বিভাগের আরেকটি অবদান।[১]

ইংরেজি বিভাগ

ইংরেজি বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগ। বর্তমানে এই বিভাগে ৩৬ জন পূর্ণকালীন শিক্ষক, ১ জন অনারারি অধ্যাপক, ১ জন খণ্ডকালীন অধ্যাপক এবং ১ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন। ইংরেজি বিভাগের ইতিহাসকে তিনটি সুনির্দিষ্ট পর্যায়ে ভাগ করা যায়। ব্রিটিশ পর্যায়ে প্রথম বিভাগীয় প্রধান নিযুক্ত হয়েছিলেন সি. এল. রেন। ১৯৪৭-এর দেশ বিভাগের পর পুরোনো শিক্ষকদের অনেকে ইংরেজি বিভাগ ত্যাগ করেন। তবে পরবর্তীতে অধ্যাপক এ. জি. স্টক এর মত পণ্ডিত ব্যক্তি এই বিভাগে যোগ দেন। সাহিত্যের এবং ভাষার অন্যবিধ উন্নয়নে বড় অবদান রাখার মতো ছাত্র তৈরি করার ঐতিহ্যবাহী ভূমিকাও এ-বিভাগ সব সময় পালন করেছে। ইংরেজি বিভাগের অনেক শিক্ষক ও ছাত্র ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। দু'জন শিক্ষক ডঃ জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা এবং জনাব রাশিদুল হাসান এবং ৭ জন ছাত্র ১৯৭১-এ শহীদ হন।[২]

আরবি বিভাগ

১৯২১ সালে আরবি ও ইসলামী স্টাডিজ বিভাগ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি শিক্ষা শুরু হয়। শামসুল ওলামা আবু নসর ওহীদ ছিলেন আরবি বিভাগের প্রথম বিভাগীয় প্রধান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রদের মধ্য থেকে প্রথম উপাচার্য এই বিভাগেরই ছাত্র ও শিক্ষক ডঃ এস.এম.হুসাইন। ১৯৮০ সালে আরবি বিভাগ স্বতন্ত্র বিভাগে পরিণত হয়। প্রতিষ্ঠাকালে বিভাগের শিক্ষক ছিলেন মাত্র চার জন। বর্তমানে (২০০৬) 21 একুশ জন শিক্ষক আছেন এবং ছাত্র/ছাত্রী সংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাধিক। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।[৩]

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে কয়টি বিভাগ নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য ও উর্দু তার অন্যতম। তখন ফার্সিতে স্নাতকোত্তর এবং উর্দু সাবসিডিয়ারি হিসেবে শিক্ষাদান করা হত। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর উর্দুতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স শুরু হয়। এই বিভাগের প্রথম বিভাগীয় প্রধান খান বাহাদুর ফিদা আলী খান। বিভাগের উল্লেখযোগ্য শিক্ষকের মধ্যে ছিলেন ড: আন্দালিব শাদানী, ডঃ শওকত সবজওয়ারী, ড. হানিফ আফতাব আহমেদ সিদ্দিকী। বাংলাদেশে ফার্সি ও উর্দু চর্চা এবং এর বিশাল ও বৈচিত্র্যময় সাহিত্য ভাণ্ডার থেকে রস আস্বাদনের ক্ষেত্রে এ বিভাগটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০০৭ সাল থেকে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ আলাদা বিভাগ নামে কার্যক্রম শুরু করে। [৪]

উর্দু বিভাগ

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে কয়টি বিভাগ নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য ও উর্দু তার অন্যতম। তখন ফার্সিতে স্নাতকোত্তর এবং উর্দু সাবসিডিয়ারি হিসেবে শিক্ষাদান করা হত। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর উর্দুতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স শুরু হয়। এই বিভাগের প্রথম বিভাগীয় প্রধান খান বাহাদুর ফিদা আলী খান। বিভাগের উল্লেখযোগ্য শিক্ষকের মধ্যে ছিলেন ড: আন্দালিব শাদানী, ডঃ শওকত সবজওয়ারী, ড. হানিফ আফতাব আহমেদ সিদ্দিকী। বাংলাদেশে ফার্সি ও উর্দু চর্চা এবং এর বিশাল ও বৈচিত্র্যময় সাহিত্য ভাণ্ডার থেকে রস আস্বাদনের ক্ষেত্রে এ বিভাগটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

সংস্কৃত বিভাগ

সংস্কৃত বিভাগ, মূলত সংস্কৃত স্টাডিজ এবং সংস্কৃত ও বাংলা নামে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ছিলেন বিভাগের প্রথম প্রধান। ১৯৩১ সালে বিভাগের নাম সংস্কৃত ও বাংলা হয়। ১৯৩৭ সালে এটি সংস্কৃত বিভাগে পরিণত হয় এবং ১৯৫০ সালে এটি বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে পরিণত হয়। ১৯৭০ সালে সংস্কৃত ও বাংলা আলাদা হয়ে যায় এবং বিভাগের নাম পরিবর্তন করে সংস্কৃত ও পালি বিভাগ রাখা হয়। ২০০৭ সালে সংস্কৃত বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা পরিচয় পায়। এই বিভাগটিতে চার বছরের বিএ (সম্মান) কোর্স এবং এক বছরের এমএ কোর্স চালু আছে। বিভাগটিতে এম ফিল এবং পিএইচডি প্রোগ্রামও চালু আছে। এ বিভাগ হতে প্রাচ্যবিদ্যা পত্রিকা নামে একটি বার্ষিক জার্নাল প্রকাশিত হয়।

পালি ও বৌদ্ধ শিক্ষা বিভাগ ​

পালি ভাষা-সাহিত্য এ উপমহাদেশের প্রাচীন শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, দর্শন ও ইতিহাসের প্রধান বাহন। এ অঞ্চলের অতীত ঐতিহ্যময় সঙ্গে সংস্কৃত ও পালির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। ১৯২১ সাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত ও পালি বিষয়ক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। তারপর বিভিন্ন নামে বিভিন্ন সময়ে এ বিভাগ পরিচিতি লাভ করে। ১৯৫০ সালে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগ এবং ১৯৭০ সালে সংস্কৃত ও পালি বিভাগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সংস্কৃত নামে একটি বিভাগ এবং পালি ও বৌদ্ধ শিক্ষা বিভাগ নামে আলাদা আলাদা দুটি বিভাগ চালু রয়েছে। এ উপমহাদেশের প্রথিতযশা পণ্ডিতদের অনেকেই এই বিভাগের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের মধ্যে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ড. সুশিলকুমার দে, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। এই বিভাগের স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সাথে সাথে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রির কার্যক্রম চালু আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদালয় ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ধর্মের বা গোত্রের ছাত্র-ছাত্রীরা পালি ও বৌদ্ধ শিক্ষা বিভাগে ৪ বছর মেয়াদি স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারে। "পালি ও বৌদ্ধ শিক্ষা" বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মান ডিগ্রী লাভের জন্য ৪ বছরে মোট ৮ টি সেমিস্টারে উত্তীর্ণ হতে হয়। পালি ভাষা ও বৌদ্ধ ধর্ম ছাড়া এই ৮ টি সেমিস্টারে ছাত্র-ছাত্রীদের ইংরেজি, পরিসংখ্যান, কম্পিউটার, অর্থনীতি, বাংলাদেশ স্টাডিজ, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, রিসার্চ মেথোডলজি সহ আরো বিভিন্ন বিষয়ে সমান নম্বরের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। সংস্কৃত বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম চালু রয়েছে।

ইতিহাস বিভাগ

১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথেই ইতিহাস বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে মাত্র ৭ জন স্নাতক সম্মান শ্রেণীর শিক্ষার্থী থাকলেও ১৯২৩ সালে স্নাতকোত্তর শেষ পর্বে ১৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। শুরুতে বিভাগে শিক্ষক ছিলেন মাত্র ৫ জন। বর্তমানে ২৯ জন নিয়মিত শিক্ষক ও ২ জন সংখ্যাতিরিক্ত শিক্ষক, ১ জন অনারারি শিক্ষক এবং ৫ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬০০ জন। শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ও খেলাধুলায় এ বিভাগের উজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। ত্রিশের দশক থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এই বিভাগের ভূমিকা অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধে এই বিভাগের ৩ জন শিক্ষক ও ৩ জন ছাত্র শহীদ হন।[৫]

দর্শন বিভাগ

দর্শন বিভাগের শুরু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে। ১৯৫২-৫৩ শিক্ষাবর্ষে দর্শন বিভাগ "দর্শন ও মনোবিজ্ঞান" বিভাগ নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৬৫ সালের আগস্ট মাসে মনোবিজ্ঞান বিভাগ দর্শন বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে যায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে শহীদ হন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব। প্রতিষ্ঠা লগ্নে এর বিভাগীয় প্রধান ছিলেন জর্জ হ্যারি ল্যাংলি। শহীদ ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব তার মৃত্যুর পূর্বে দর্শন গবেষণা, বিশেষ করে মানবকল্যাণ, সামাজিক প্রগতি, বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও বিশ্বশান্তির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অনুকূলে তার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির ৫০% উইল করে দিয়ে যান। তার উইলকৃত অর্থে ১৯৮০ সালের ডিসেম্বর মাসে দর্শন বিভাগে প্রতিষ্ঠিত হয় "দেব সেন্টার ফর ফিলসফিক্যাল স্টাডিজ"। এই কেন্দ্রের উদ্যোগে নিয়মিত ভাবে "দর্শন ও প্রগতি" নামে একটি বাংলা এবং Phylosophy and Progress নামে একটি ইংরেজি জার্নাল প্রকাশিত হয়। কেন্দ্রের উদ্যোগে মাসিক সেমিনার এবং প্রতিবছর দেব স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়।[৬]

ইসলামী শিক্ষা বিভাগ

১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ১৯৮০ সালে বিভক্ত হয়ে স্বতন্ত্র "ইসলামিক স্টাডিজ" বিভাগ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে এই বিভাগে প্রায় ১৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। বিভাগটি কলাভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত হলেও বিভাগীয় সেমিনার লাইব্রেরি চতুর্থ তলায় অবস্থিত। সেমিনার লাইব্রেরির পাশেই রয়েছে বিভাগীয় শিক্ষকদের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি ছাত্রছাত্রীদের জন্য কম্পিউটার ল্যাব। বর্তমানে বিভাগটিতে সেমিস্টার পদ্ধতির শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তিত আছে।বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর ডঃ. শামসুল আলম।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ

মাত্র তিনজন শিক্ষক নিয়ে ১৯৪৮ সালে ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আব্দুল হালিম শুরুতে এই বিভাগের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৫০ সালে অধ্যাপক আবু মাহমেদ হাবিবুল্লাহ বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নিলে পূর্ণাঙ্গ বিভাগ হিসেবে যাত্রা শুরু হয় এই বিভাগের। আবু মাহমেদ হাবিবুল্লাহ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এই বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন অধ্যাপক মমতাজুর রহমান তরফদার, অধ্যাপক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক এস এম ইমামুদ্দিন, অধ্যাপক আগা মাহদি হুসায়ন, অধ্যাপক এস এ কিউ হুসায়নী প্রমুখ বিখ্যাত পণ্ডিতবর্গ।[৭]

তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগ

তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সূচনা ১৯৫৯ সালে, যদিও তখন এর নাম ছিল 'গ্রন্থাগার বিজ্ঞান বিভাগ'। সে সময় এটি শুধু ডিপ্লোমা কোর্সে শিক্ষাদান করত। পরবর্তীকালে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানে স্লাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান শুরু হয়। ১৯৮৭ সালে বিভাগের নাম পরিবর্তন করে 'গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ' রাখা হয় এবং এটি তিন বছরের স্নাতক ডিগ্রি প্রদান শুরু করে। পরবর্তী সময়ে বিভাগের নাম আবার পরিবর্তন করে রাখা হয় 'তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগ'। ২০০৪ সালের জুলাই থেকে বিভাগে এমএ (ইভনিং) ডিগ্রি প্রদান শুরু হয়।

থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ

১৯৮৯ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের তত্ত্বাবধানে থিয়েটারের উপর একটি সহায়ক কোর্স চালু করা হয়। ২০০৯ সালে নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগ ভেঙ্গে দুটি আলাদা বিভাগ গঠিত হলে এ বিভাগের নাম হয় থিয়েটার বিভাগ। এরপর ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল বিভাগের নাম পরিবর্তন করে থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ রাখা হয়।

ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ

১৯৯২ সালে ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়, যদিও ১৯৮০ সাল থেকে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করত। ভাষাবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তির কার্যক্রম ১৯৯৬-১৯৯৭ শিক্ষাবর্ষে শুরু হয়। ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ শুরু করার পর থেকেই এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি চালু আছে।

সঙ্গীত বিভাগ

১লা সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ সালে নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের অধীনে নাট্যকলা বিষয় ১৯৮৯ সালে, সঙ্গীত বিষয় ১৯৯৩ শিক্ষাবর্ষে সাবসিডিয়ারি কোর্স এবং ১৯৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষ হতে নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিষয়ে এমএ (প্রিলিমিনারি) কোর্স চালু হয়। ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষ হতে সঙ্গীত বিষয়ে এবং ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ হতে নাট্যকলা বিষয়ে এমফিল কোর্স চালু হয়। বর্তমানে সঙ্গীত বিষয়ে পিএইচডি কোর্স চালু আছে। ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ হতে ৪ বছর মেয়াদী বিএ অনার্স কোর্স চালু হয়। ১৯৯৮ সালে নাট-মন্ডল নামে বিভাগের একটি মিলনায়তন প্রতিষ্ঠিত হয়।

বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ

বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের পরস্পরকে জানা ও উপলব্ধি করা এবং পারস্পরিক সৌহার্দের পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৯ সালে তুলনামূলক ধর্ম বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এক বছরের মধ্যেই এর নাম পরিবর্তন করে বিশ্ব ধর্মতত্ত্ব রাখা হয়। ১৯৯৮-৯৯ শিক্ষাবর্ষ হতে এমএ এবং ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষ হতে বিএ অনার্স কোর্স চালু হয়।

নৃত্যকলা বিভাগ

কলা অনুষদের অধীনে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে নৃত্যকলা বিভাগ চালু হয়। এ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

বিজ্ঞান অনুষদ

কার্জন হল - মূল ভবন

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিজ্ঞান অনুষদ এর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিত এই তিনটি বিভাগ নিয়ে এই অনুষদ যাত্রা শুরু করে। বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে কয়েকটি কেন্দ্র আছে। এগুলো হলঃ বোস সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ, সেমিকন্ডাক্টর টেকনোলজি রিসার্চ সেন্টার, রিনিউয়েবল এনার্জি রিসার্চ সেন্টার, ব-দ্বীপ গবেষণা কেন্দ্র, দু্র্যোগ গবেষণা প্রশিক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র।[৮]

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ

কার্জনহলের মূল ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ

১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত বারটি বিভাগের একটি হল পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ। প্রায় জন্মলগ্নেই এই বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক ও প্রতিভাবান বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু। দেশ বিভাগের সময় অধিকাংশ কৃতী শিক্ষক এই বিভাগ ত্যাগ করে ভারতে চলে যান। তারপরও পরবর্তীকালে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান, নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞান, কঠিনাবস্থার পদার্থবিজ্ঞান, জৈব ও চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান, সৌরশক্তি, ভূ-পদার্থবিজ্ঞান, আবহাওয়া বিজ্ঞান ও লেজার পদার্থবিজ্ঞানে ক্রমে সক্রিয় গবেষকের কর্মকাণ্ডে এই বিভাগ বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তম বিজ্ঞান বিভাগে পরিণত হয়েছে এবং এর অবদান ও সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে।[৯]

গণিত বিভাগ

১৯২১ সালে প্রখ্যাত গণিতবিদ অধ্যাপক ভূপতিমোহন সেন ও ডঃ নলিনীমোহন বসুর নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে পূর্ব বাংলা সরকারের সচিবালয় ভবনের কক্ষে এবং কিছু কাল কার্জন হলের পশ্চিম দোতলায় গণিত বিভাগ অবস্থিত ছিল। তারপর বর্তমান প্রাণিবিদ্যা বিভাগের নীচতলার পূর্বদিকের অর্ধাংশে বিভাগটি সাময়িক অবস্থিত ছিল। এরপর একই ভবনের তিনতলার পশ্চিম দিকের অর্ধেক অংশ গণিত বিভাগকে দেওয়া হয়। সর্বশেষ, ১৯৬৫ সালে সায়েন্স অ্যানেক্স ভবনের তিনতলা গণিত বিভাগের জন্য ঠিক করা হয়। ১৯৭৪-৭৫ শিক্ষাবর্ষে এমফিল কোর্স এবং ১৯৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষে চারবছর মেয়াদী সমন্বিত সম্মান কোর্স চালু হয়। বর্তমানে এ বিভাগের শিক্ষকের সংখ্যা ৩৬ জন এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৫৯৩ জন।[৯] বর্তমানে এই বিভাগের সকল কর্মকাণ্ড মুজিবর রহমান গণিত বিভাগে চালু আছে।

রসায়ন বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ বাংলাদেশের একটি অন্যতম ঐতিহ্যবাহী বিভাগ। ১৯২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাথেই এই বিভাগের শুরু। সম্মান, স্নাতক, এম.ফিল. ও পি.এইচ.ডি সহ বর্তমানে এই বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৪৫০ জন ও শিক্ষক ৫১ জন। এই বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোকাররম হোসেন খোন্দকারের নামানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোকাররম হোসেন খোন্দকার বিজ্ঞান ভবন নির্মিত হয়েছে। বিজ্ঞানী মোকাররম হোসেনের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্চ ১২, ১৯৮১ থেকে বিজ্ঞান ভিত্তিক স্মারক বক্তৃতা চালু হয়, যা আজও অব্যাহত রয়েছে। এই বিভাগে প্রাক্তন ছাত্র কর্তৃক বিভাগের ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য দুইটি অভ্যন্তরীণ বৃত্তি প্রচলিত রয়েছে। এগুলো হল যথাক্রমে ফাতেমা-তামিজউদ্দিন স্কলারশিপ এবং আব্দুল আজিজ পাটোয়ারী মেমোরিয়াল আন্ডারগ্রাজুয়েট স্কলারশিপ[১০]

পরিসংখ্যান বিভাগ

বাংলাদেশের প্রথম একাডেমিক ভাবে স্বীকৃত পরিসংখ্যানবিদ ও সাহিত্যিক অধ্যাপক ডঃ কাজী মোতাহার হোসেন বাংলাদেশে পরিসংখ্যান শিক্ষা ও গবেষণা বিস্তারে সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা করে মাত্র একজন সুদক্ষ পরিসংখ্যানবিদ শহীদ অধ্যাপক এ.এন.এম. মুনিরুজ্জামানকে নিয়ে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের গোড়াপত্তন করেন। কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন এর প্রথম বিভাগীয় প্রধান। এই বিভাগের কয়েকজন পরিসংখ্যানবিদ আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। এই বিভাগে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর, এম.ফিল ও পি.এইচ.ডি পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সুবিধা রয়েছে।[১০]

জৈবরাসায়নিক পদার্থবিদ্যা এবং প্রযুক্তি বিভাগ

কার্জন হল ভবনের পূর্ব পার্শ্বের নিচতলায় দুইটি এবং দোতলায় একটি কক্ষে মোট ১৫০০ বর্গফুট জায়গায় এ বিভাগের কার্যক্রম চলছে। অধ্যাপক খন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী এর প্রথম চেয়ারপার্সন হিসাবে যোগদানের মধ্যদিয়ে বিভাগটির কার্যক্রম ৩ নভেম্বর ২০০৮ সালে শুরু হয়। নিজস্ব প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদান তৃতীয় বিশ্ব তথা সমগ্র বিশ্বের বঞ্চিত সাধারণ জনগণের কাছে সহজলভ্য করে দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে এ বিভাগ তার গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিভাগ মূলত প্রায়োগিক এবং উদ্দেশ্যমূলক গবেষণার উপর জোর দিচ্ছে। বর্তমানে পিএইচডি ও এম ফিল কার্যক্রম চলছে। বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের যে কোন শাখা থেকে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী এ বিভাগে ভর্তি হবার যোগ্য। অবশ্য তা নির্ভর করবে বিভাগের গবেষণার বিষয়বস্তুর অগ্রাধিকার, তত্ত্বাবধায়ক এবং ছাত্রের পারস্পরিক পছন্দের সম্মিলনের উপর।

তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ

তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নামফলক, কার্জনহল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় অনুষদ ও অবকাঠামোর অভাবে তিন বছর পরই বিভাগটি বন্ধ হয়ে যায়। অধ্যাপক এ এম হারুন-অর-রশিদ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ২০০৭ সালে এটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।[১১]

ফলিত গণিত বিভাগ

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর গণিত বিভাগ থেকেই ফলিত গণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী দেওয়া হত। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে মুজিবর রহমান গণিত ভবনে ফলিত গণিত বিভাগটি স্বতন্ত্রভাবে চালু হয়। বর্তমানে এই বিভাগে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে।

আইন অনুষদ

আইন বিভাগ

১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে তিনটি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে আইন অনুষদ তাদের অন্যতম। ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত আইন অনুষদের অধীনে দু'বছর মেয়াদী স্নাতক কোর্স এল এল বি (সান্ধ্যকালীন) চালু ছিল। ১৯৭৩-৭৪ শিক্ষাবর্ষ হতে এল এল বি কোর্স এর পরিবর্তে তিন বছর মেয়াদী এল এল বি অনার্স কোর্স চালু করা হয়। ১৯৭৬-৭৭ শিক্ষাবর্ষ হতে এল এল বি (অনার্স) কোর্সের মেয়াদ চার বছরে বর্ধিত করা হয়। এ অনুষদ থেকে Journal of the Faculty of Law (The Dhaka University Studies Part-F) নামে একটি বার্ষিক পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।[১২]

২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষে এলএল.বি. অনার্স-এর পাঠ্যক্রম নতুনভাবে প্রণয়ন করা হয়, যাতে মোট ১৭০০ নম্বরের স্থলে ২৩০০ নম্বরের মোট ২৪টি কোর্স অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতি বছর কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের অধীনে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা এই বিভাগে ভর্তি হবার সুযোগ পায়। আইন বিভাগে ১৯৭৬-৭৭ শিক্ষাবর্ষে এলএল.এম. কোর্স খোলা হয়। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে সাধারণ এলএল.এম.-এর পাশাপাশি বিশেষায়িত এলএল.এম. ডিগ্রিও প্রদান করা হচ্ছে। ১৯৯১-৯২ শিক্ষাবর্ষে আইন বিভাগে সর্বপ্রথম এম.ফিল. কোর্স প্রবর্তিত হয়। বর্তমানে এই বিভাগ থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রিও প্রদান করা হচ্ছে।
বর্তমানে আইন বিভাগে যে সব ডিগ্রি দেয়া হয়ː

  • এলএল.বি. (অনার্স)
  • এলএল.এম. (সাধারণ)
  • এলএল.এম. (বিশেষায়িত)
  • এম.ফিল.
  • পিএইচ.ডি.

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ

১৯৭৩ সালে এই অনুষদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে সেমিস্টার পদ্ধতি এবং জিপিএ-ভিত্তিক গ্রেডিং ব্যবস্থা চালু করা হয়।

অর্থনীতি বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের যাত্রা ১৯২১ সাল থেকেই শুরু। শিক্ষা ও গবেষণার প্রসারে এ বিভাগের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। প্রথম থেকেই উন্নত শিক্ষা ও আধুনিক জ্ঞান চর্চার একটি কেন্দ্রে পরিণত হয় অর্থনীতি বিভাগ। এ বিভাগ দেশের মূলধারার অর্থনীতি চর্চার ক্ষেত্রে দিকনির্দেশকের ভূমিকা পালন করে এবং দেশের অর্থনীতি বিষয়ক ইস্যু গুলো নিয়ে আলোচনা করে। এ বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্রদের গবেষণা পত্র পৃথিবীর বিখ্যাত জার্নাল সমূহে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে ৩০ জন শিক্ষক এ বিভাগে কর্মরত আছেন। বিভিন্ন বর্ষ মিলিয়ে প্রায় ৭৫০(এর মধ্যে ১ম বর্ষের জন্য ৫০ টি আসন নির্ধারিত) জন ছাত্র ছাত্রী এই বিভাগে শিক্ষা গ্রহণ করছে।[১৩]

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

১৯৩৮ সালে অর্থনীতি বিভাগ থেকে পৃথক হয়ে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের যাত্রা শুরু। দেবেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি ছিলেন এই বিভাগের প্রতিষ্ঠা চেয়ারম্যান। সেই থেকে শুরু করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বৃহত্তম বিভাগ। বর্তমানে এই বিভাগে ছাত্র সংখ্যা প্রায় ১,২০০। এর মধ্যে ৯২৫ জন সম্মান শ্রেণীর। ১৯৮৬ সাল থেকে এই বিভাগ পি.এইচ.ডি ডিগ্রি প্রদান শুরু করে। বর্তমানে (২০০৬) এই বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা ৩২ জন। এখানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রায় সকল শাখায় শিক্ষা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রচিন্তা, বাংলাদেশের রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মধ্যপ্রাচ্য ও পূর্ব এশিয়ার রাজনীতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই বিভাগের শিক্ষকগণ বেশ কয়েকটি গবেষণা কেন্দ্র পরিচালনা করেছেন। এগুলো হচ্ছে Center for East Asian Studies, Center for Human Society এবং Center for Japan Studies.[১৪]

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ

১৯৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিদ্যার পাঠদান এই বিভাগটিই প্রথম শুরু করেছিল। কেবল এম.এস.এস. প্রোগ্রাম দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও ১৯৬৮ সাল থেকে বি.এস.এস. প্রোগ্রাম শুরু হয়। এই বিভাগে একটি সার্টিফিকেট কোর্সও চালু আছে। ২০০৬-২০০৭ সেশন থেকে সেমিষ্টার পদ্ধতি চালু হয়।পোষ্ট প্রাজুয়েট ইন আইআর বা পিজিডি ইন আইআর চালু রয়েছে। বর্তমানে এটি সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগ অনুষদের একটি উল্লেখযোগ্য বিভাগ।

বর্তমানে এই বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা ৩০ জন। বিভাগের প্রধান হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক আশেকা ইরশাদ । অধ্যাপকদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শাহিদুজ্জামান, সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো রমজুল হক, আন্তর্জাতিক সর্ম্পকের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, অধ্যাপক ড. আকমল হোসাইন, অধ্যাপক মো আব্দুল হালিম, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসাইন, অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন এবং মানবাধিকার, অভিবাসন ও শরণার্থী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সি আর আবরার।

Journal of IR (JIR) নামে বিভাগ থেকে একটি নিয়মিত জার্নাল প্রকাশিত হয়। প্রফেসর ইমতিয়াজ আহমেদ সম্পাদক হিসেবে জার্নালের দায়িত্বে রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের ৬ষ্ঠ তালায় এই বিভাগটি অবস্থিত। বিভাগের একটি ওয়েব আছে। বিভাগের একটি কম্পিউটার ল্যাব ও আধুনিক সেমিনার লাইব্রেরি আছে।[১৪]

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

প্রয়াত অধ্যাপক এ.কে.নাজমুল করিমের উদ্যোগে ও ইউনিসেফের আর্থিক সহযোগিতায় ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা অনুষদের অধীনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ সনে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ চালু হবার পর বিভাগটি এই অনুষদের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই বিভাগে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের সাথে সাথে পি.এইচ.ডি ও এম.ফিল. প্রোগ্রাম চালু আছে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক নাজমুল করিম প্রতিষ্ঠিত একটি জাদুঘর আছে যা বাংলাদেশের সার্বিক সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে।[১৫]

লোক প্রশাসন বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগ

স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগ চালু হয়। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই এই বিভাগে মাস্টার্স কোর্স চালু হয়। এরপর আশির দশকের প্রথম দিকে এম.ফিল. ও পিএইচ.ডি কোর্স চালু হয়। এই বিভাগ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা-উত্তর প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী এবং লোক প্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক নুর মুহাম্মদ মিঞার ভূমিকা গুরুত্বের সাথে স্মরণীয়। শুরুতে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাঁচজন শিক্ষক লোক প্রশাসন বিভাগে যোগদান করে। স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রির সাথে সাথে এই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ও এম.ফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়।[১৬]

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ চালু হয় ১৯৬২ সালে। প্রথমে এর নাম ছিল সাংবাদিকতা বিভাগ এবং তখন কেবল এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্স ছিল। ১৯৬৮ সালে ডিপ্লোমা কোর্সের সাথে দুই বছর মেয়াদী মাস্টার্স কোর্স চালু হয়। ১৯৭৮ সালে তিন বছর মেয়াদী স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। বর্তমানে চার বছর মেয়াদী সম্মান কোর্স চালু আছে। বৈশ্বিক পর্যায়ে এবং বাংলাদেশেও মুদ্রণ ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রসারের সাথে সাথে এই বিভাগের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। প্রতিবছর এই বিভাগে ৭০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। তত্ত্বীয় অনেক কোর্সের পাশাপাশি ভিডিও, ফটোগ্রাফি ও ডিটিপির মত কারিগরী অনেক কোর্সও চালু আছে।[১৫]

নৃবিজ্ঞান বিভাগ

৫ ডিসেম্বর ১৯৯২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক বিজ্ঞানের একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসেবে নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও নৃবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডঃ আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী। স্বল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়ে ঐ সময় এই বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৯৯৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম ব্যাচের ক্লাস শুরু হয়। ইতিমধ্যে বিভাগটি দুই যুগ অতিক্রম করেছে। বিভাগের চলমান প্রধান হলেন হাসান আল শাফি। প্রফেসর আরেফিন, প্রফেসর শাহীন আহমেদ, প্রফেসর জাহিদসহ বিশিষ্ট নৃবিজ্ঞানীগণ যারা বিগত কয়েক দশক সুনামের সাথে নৃবিজ্ঞান অনুশীলন করে যাচ্ছেন।

জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ

১৯৯৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পপুলেশন সাইন্স বিভাগ তার যাত্রা শুরু করে। দেশের জনসংখ্যা সম্পর্কিত বিষয়গুলো যথাযথভাবে অনুধাবন করে কার্যকর ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য UNFPA- বাংলাদেশ এই বিভাগকে অর্থায়ন করছে। এই বিভাগ থেকে দুইবছর মেয়াদী সান্ধ্যকালীন "Master of Population Science" (MPS) Professional Degree Programme প্রদান করা হয়। এই বিভাগে প্রতি বছর ২৫ জন করে ছাত্রছাত্রী নেওয়া হয়, যার মধ্যে ১০টি আসন মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত।[১৭]

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ

৮ জুন ১৯৯৯-এ "শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন" বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উপমহাদেশে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]এই বিভাগে বছরে দুইটি দিনে দুটি "লেকচার সেশন" অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমত; ৮ জুন Foundation Day Lecture এবং দ্বিতীয়তঃ; ২১ সেপ্টেম্বর Gan-Sohagi International Peace Day Lecture.[১৭]

নারী শিক্ষা বিভাগ

উইমেন্স স্টাডিজ বিভাগ ২০০০ সনের এপ্রিল মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। অধ্যাপক নাজমা চৌধুরীর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে বিভাগীয় কার্যক্রম শুরু হয়। এই বিভাগের সাথে Royal Netherland Embassy-এর ৫ বছর মেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আর্থিক সহায়তায় কলা ভবনের পঞ্চম তলায় বিভাগের জন্য বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে।[১৮]

উন্নয়ন শিক্ষা বিভাগ

বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়ন নীতি বিশ্লেষণে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানের সমন্বয়ে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে দুই বছর মেয়াদী (চার সেমিস্টার) মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম স্টাডিজ প্রোগ্রামে ভর্তি চালু হয়। ডেনিশ সরকার মার্চ ২০০৫ এক বছরের জন্য বিভাগের উন্নয়নকল্পে "DDS-DANIDA" শীর্ষক একটি প্রকল্প সহায়তা প্রদান করে। প্রকল্পের আওতায় বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষকদের গবেষণা ও আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।[১৮]

টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র বিভাগ

টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ২০১২ সালের ২৩শে জানুয়ারী।[১৯] প্রথমে বিভাগটিতে শুধু মাস্টার্স কোর্স চালু ছিল। ২০১৪ সাল থেকে চার বছর মেয়াদী অনার্স কোর্স চালু হয়েছে। দেশের মানসম্পন্ন চলচ্চিত্রকারকের সঙ্কট নিরসনে টেলিভিশন এন্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগ কাজ করছে। বিভাগটিতে চলচ্চিত্র, ডকুমেন্টারিসহ নানা ধরনের প্রোডাকশনের প্রায়োগিক দিক বিশেষভাবে প্রাধান্য পায়।[২০]

অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ

৩০ এপ্রিল ২০১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের অনুমোদনে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসেবে বিভাগটির যাত্রা শুরু হয়। অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান ২৪ নভেম্বর ২০১৩ সালে বিভাগটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন। বিভাগটি ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির কার্যক্রম শুরু করেছে এবং বর্তমানে বি.এস.এস. (সম্মান) ও এম.এস.এস. ইন ক্রিমিনলজি এ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস (স্নাতকোত্তর) প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা অধ্যয়ন করছেন।

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ

১৯৭০ সালে বাণিজ্য অনুষদ ম্যানেজমেন্ট ও একাউন্টিং নামে ২ টি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। ১৯৭৪ সালে মার্কেটিং ও ফিন্যান্স নামে আরও দুটি নতুন বিভাগের সূচনা হয়। ১৬ জুলাই ১৯৯৫ তারিখ থেকে নাম পরিবর্তন করে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ করা হয়। এ অনুষদে এমবিএ ও বিবিএ প্রোগ্রামে প্রায় ৬,০০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এছাড়াও সান্ধ্যকালিন এমবিএ কোর্স চালু রয়েছে।

ব্যবস্থাপনা বিভাগ

১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগ স্থাপিত হয়। জুন ২ ২০০১ পর্যন্ত এই বিভাগের নাম ছিল ব্যবস্থাপনা বিভাগ। জুন ৩, ২০০১ সালে এই বিভাগের নামকরণ করা হয় ব্যবস্থাপনা অধ্যয়ন বিভাগ। স্থাপিত হবার পর থেকেই ব্যবস্থাপনা অধ্যয়ন বিভাগ দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন করে বিশেষায়িত শিক্ষা প্রবর্তন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আসছে। এই বিভাগে বিবিএ, এমবিএ, ডিবিএ, এম. ফিল, পিএইচ.ডি প্রোগ্রাম চালু আছে। মাস্টার্স অফ প্রফেশনাল হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (এমপিএইচআরএম) নামে বিশেষ কোর্স চালু আছে।

একাউন্টিং ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগ

একাউন্টিং ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগ ১৯৭০ সালে ১৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং ৮ জন শিক্ষক নিয়ে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ নামে যাত্রা শুরু করে। এর উদ্দেশ্য বাস্তব ক্ষেত্রে হিসাব বিজ্ঞান পেশা গ্রহণ ও প্রয়োগের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট জ্ঞান ও কৌশল শিক্ষাদানের জন্য বিভাগ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু করা। দেশের হিসাববিজ্ঞান পেশা, শিক্ষা ও গবেষণায় বিভাগের অবদান এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।বর্তমানে আসন সংখ্যা ১৮০ জন।

বিপণন বিভাগ

বিপণন বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের অন্তর্গত একটি বিভাগ যা বাংলাদেশের ব্যবসায় শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃত। ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই এই বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রথম বিভাগীয় প্রধান ছিলেন প্রয়াত অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ ফারুক। ১৯৭৪-৭৫ শিক্ষাবর্ষে মাত্র চার জন শিক্ষক ও ৪৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এই বিভাগ যাত্রা শুরু করে। এই বিভাগ থেকে প্রতিবছর নিয়মিত ভাগে প্রকাশিত হয় "জার্নাল অফ মার্কেটিং" নামক একটি স্বীকৃত জার্নাল। ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষে মার্কেটিং বিভাগে EMBA (সান্ধ্যকালীন MBA) প্রোগ্রাম চালু হয়। এই বিভাগ থেকে বিবিএ, এমবিএ, ইএমবিএ, এমফিল, ও পিএইচ.ডি প্রদান করা হয়।

ফাইন্যান্স বিভাগ

অর্থসংস্থান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় ১ জুলাই ১৯৭৪ সালে। এই বিভাগ থেকে বিবিএ, এমবিএ, এমফিল, ও পিএইচ.ডি প্রদান করা হয়। সম্প্রতি সান্ধ্যকালীন এমবিএ চালু করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই অর্থসংস্থান বিভাগ দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন করে বিশেষায়িত শিক্ষা প্রবর্তন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আসছে।

ব্যাংকিং ও ইনস্যুরেন্স বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই সর্বপ্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে বাণিজ্য অনুষদের অধীনে ব্যাংকিং বিভাগ চালু হয়। মুক্ত বাজার অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার কারণে ব্যাংকিং বিষয়ের শিক্ষা কার্যক্রম যখন চাহিদার সাথে সংগতি রেখে বাস্তবমুখী ও জটিল হচ্ছে, তখন ব্যাংকিং বিভাগ সময়ের প্রয়োজনে দেশের ব্যাংক তথা ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় সুযোগ ও দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালের আগস্ট মাসে এই বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়।

ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ

অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরীকে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নিয়োগের মাধ্যমে ২০০৫ সালের ১২ এপ্রিল এই বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এমবিএ প্রোগ্রামের সাথে সাথে এই বিভাগে সান্ধ্যকালীন এমবিএ প্রোগ্রাম চালু হয়েছে। বিভাগটি বিবিএ ১৩ টি ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম নিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগ

আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগ ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিভাগ ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত। এটি আন্তর্জাতিক ব্যবসায় স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষা প্রদান করে। আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগ আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির দায়িত্ব পালন করছে।[২১]

পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ

২০০৭ সালে পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে যোগ্য এবং প্রশিক্ষিত কর্মীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ এই বিষয়ে ডিগ্রি প্রদানের জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করে।[২২]

সংগঠন কৌশল এবং নেতৃত্ব বিভাগ

প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মঈন এর হাত ধরে ২০১৬ সালের ৩০ জুন এই বিভাগটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ব্যবসা অধ্যয়ন অনুষদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বকনিষ্ঠ বিভাগ এটি।[২৩] সফল উদ্যোক্তা তৈরিতে দেশের একমাত্র বিভাগ হিসেবে নিরন্তর গবেষণা কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বিভাগটি। শুরু থেকেই বৈচিত্র্যময় পাঠ কার্যক্রম, প্রয়োগমুখি শিক্ষা এবং ধারাবাহিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্পোরেট লিডার গড়ে তোলার এই উদ্যোগ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অন্যতম মাইলফলক। বর্তমানে এই বিভাগে BBA , DBA, MBA, EMBA, M-Phil এবং PhD কোর্স করার সুযোগ রয়েছে।

জীববিজ্ঞান অনুষদ

১৯৭৪ সালে উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ, ফার্মেসি, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদ গঠিত হয়। ১৯৭৯ সালে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগ নামে একটি বিভাগ, ১৯৯৭ সালে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান ও মৎসবিজ্ঞান নামে দুটি নতুন বিভাগ এবং ২০০০ সালে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি নামে আরও একটি নতুন বিভাগ এ অনুষদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বর্তমানে অনুষদে বিভাগ সংখ্যা ৯ টি। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে অনুষদের বিভাগ সমূহ জীববিজ্ঞান বিষয়ক জাতীয় সমস্যা সম্পর্কিত গবেষণায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে এবং ইতিমধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রশংসা লাভ করেছে। এ অনুষদের সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ১২৫ জন। অনুষদের বিভাগ সমূহ দেশী বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণাগারের সাথে একাধিক যৌথ গবেষণা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছে। অনুষদের অধীনে Biotechnology Research Center ও Advanced Center for Biological Research, center of excellence নামে তিনটি উচ্চতর গবেষণা কেন্দ্র আছে। এছাড়াও অনুষদের অধীনে The Dhaka University Journal of Biological Sciences নামে একটি নিয়মিত জার্নাল প্রকাশিত হয়ে আসছে। অনুষদের বতর্মান ডীন অধ্যাপক ডঃ আনোয়ার হোসেন।[২৪]

মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ

১৯৪৯ সালে বর্তমান বিভাগটি মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠিত হবার পর ১৯৬২ সন পর্যন্ত এই বিভাগ থেকে এম এস সি ডিগ্রি প্রদান করা হত। ১৯৬৩ সন হতে বি এস সি অনার্স ও এম এস সি উভয় ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। ২৩ শে জুলাই ২০০০ সালে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির এক সভায় মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের নাম পরিবর্তন করে মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ করা হয়। তখন থেকেই এই বিভাগ বি এস সি অনার্স এবং এম.এস ডিগ্রি চালু করেছে। বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থার সাথে বিভাগ যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছে। এম.এস.সি ডিগ্রি ছাড়াও পোস্টগ্রাজুয়েট পর্যায়ে এম.ফিল ও পিএইচ. ডি কার্যক্রম ও গবেষণা সম্পাদিত হচ্ছে।[২৫]

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রাচীনতম বিভাগ এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ক দেশের প্রথম বিভাগ। প্রয়াত প্রফেসর পি. মহেশ্বরী কর্তৃক ১৯৩৯ সালে জীববিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এই বিভাগেই উদ্ভিদবিজ্ঞানের পাঠদান শুরু হয়। ঐ সময় বি.এস.সি পাস কোর্সে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয় পড়ানো হত। ১৯৪৮ সালে উদ্ভিদবিজ্ঞানে প্রথম এম.এস.সি ক্লাস শুরু হয় এবং ১৯৫০ সালে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে এম.এস.সি এর প্রথম ব্যাচ ডিগ্রি প্রাপ্ত হয়। ডঃ মজিদ আহমেদ বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ১৯৪৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সালে স্বতন্ত্র উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ আত্মপ্রকাশ করে এবং বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হন প্রফেসর জি. পি. মজুমদার। বর্তমানে এই বিভাগে মোট ৬৫০ জন ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করেছেন। সংখ্যাতিরিক্ত ও অনারারি শিক্ষকসহ বিভাগের মোট ৩৫ জন শিক্ষক পাঠদান ও গবেষণা কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত আছেন।[২৫]

প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ

১৯৫৪ সালে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ চালু হয়। প্রয়াত প্রফেসর ডঃ হাবিবুল্লাহ খান ইউসুফজাই ছিলেন প্রথম বিভাগীয় প্রধান, এর পূর্বে বিভাগটি ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জীববিজ্ঞান বিভাগের অধীনে ছিল। প্রতিষ্ঠাকালে প্রাণিবিদ্যা বিভাগটি ছিল মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগীয় ভবনে এবং ১৯৫৫ সালে তা বর্তমান জায়গায় স্থানান্তরিত হয়। মৎসবিজ্ঞান, কীটতত্ত্ব, বন্যপ্রাণিতত্ত্ব, পরজীবিতত্ত্ব ও বংশগতি বিদ্যার গবেষণা ও শিক্ষার জন্য এখানে প্রচুর সুবিধা আছে। এ বিভাগ থেকে প্রাণিবিদ্যার বিভিন্ন শাখায় বি.এস.সি, এম.এস, এম.ফিল এবং পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়।[২৬]

প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ

১৯৫৭ সালে কার্জন হলের শেষ প্রান্তে অবস্থিত চারতলা বিল্ডিংটিতে বিভাগটির পথচলা শুরু হয়। প্রফেসর কামালউদ্দিন আহমেদ এর প্রতিষ্ঠাতা। পূর্বে এটি শুধু প্রাণরসায়ন বিভাগ থাকলেও সম্প্রতি এর নামকরণ করা হয় প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ এবং সেই অনুযায়ী পাঠতালিকাতেও বিশেষ পরিবর্তন আনা হয়। এই বিভাগে অধ্যাপনায় নিয়োজিত রয়েছেন একরাশ খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও গবেষক। বিভাগে চার বছর মেয়াদী অনার্স , এক বছর মেয়াদী মাস্টার্স, এম ফিল ও পিএইচডির সুবিধা রয়েছে। বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর ইশতিয়াক আহমেদ।

মনোবিজ্ঞান বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৬৯ সালের স্নাতকোত্তর মনোবিজ্ঞানের ছাত্রীদের একটি ছবি

মনোবিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত। এই বিভাগ ১৯৬৫ সালে প্রফেসর ডঃ মীর ফখরুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তিনিই ছিলেন প্রথম বিভাগীয় প্রধান। প্রথমে এই বিভাগ থেকে এম.এ ডিগ্রি প্রদান করা হত। ১৯৬৭ সালে মনোবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক কোর্স চালু হয়।[২৭]

অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ

১৯৭৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় অবস্থিত প্রাণিবিদ্যা ভবনের প্রথম তলার একটি অংশে অণুজীববিজ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হয়। এ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মরহুম অধ্যাপক ডঃ আনোয়ারুল আজিম চৌধুরীর নিরলস প্রচেষ্টায় এবং দেশের খ্যাতনামা অণুজীব বিজ্ঞানীদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় মাত্র ১০-১২ জন এম.এস.সি গবেষণা গ্রুপের ছাত্র নিয়ে বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে এই বিভাগের শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন হয় এবং এর খ্যাতি দেশে ও বিদেশে বিস্তৃত হয়। এ দেশের কৃষি খাদ্য-পানীয় ও ঔষধ শিল্প, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ইত্যাদি ক্ষেত্রের উন্নয়নে অণুজীব বিজ্ঞানীদের বিশেষ অবদানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাপকভাবে অনুভূত হওয়ায় ১৯৮৮-১৯৮৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ বিভাগে বি.এস.সি অনার্স কোর্স শুরু করা হয়।

ড. মোকাররম হোসেন বিজ্ঞান ভবন

বর্তমানে বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইন্স কমপ্লেক্স ভবনের ১ম ও ২য় তলায় বি.এস.সি অনার্স, এম. এস, এম.ফিল ও পি.এইচ.ডি কোর্সে প্রায় ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ বিভাগের ২৪ জন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছর প্রায় ৪০ জন ছাত্রছাত্রী সফলতার সাথে তাদের অধ্যয়ন শেষে দেশের ও বিদেশের খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানে যোগদান করছে। এপ্রিল ২০০৪ পর্যন্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই বিভাগের ২৮৫ জন এম.এস.সি ডিগ্রীধারী প্রায় ৪৫% ছাত্রছাত্রী বিদেশে পি.এইচ.ডি করবার জন্য বৃত্তি পেয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুদানে বিভাগটিতে বিভিন্নক্ষেত্রে যেমন ভাইরাসোলজি, মাইক্রোবিয়াল জৈবপ্রযুক্তি, পরিবেশগত মাইক্রোবায়োলজি এবং আণবিক বাস্তুশাস্ত্র, পরিবেশ বায়োটেকনোলজি, ফার্মেন্টেশন এবং এনজাইম প্রযুক্তি, খাদ্য ও শিল্প মাইক্রোবায়োলজি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ, জৈব উৎস প্রযুক্তি, ইমিউনোলজি এবং ক্লিনিকাল মাইক্রোবায়োলজি, খাদ্য ও শিল্প মাইক্রোবায়োলজি ইত্যাদি ক্ষেত্রে গবেষণা হচ্ছে। বিভাগের সদস্যবৃন্দ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হল আইসিডিডিআরবি, বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা কমিশন, বিসিএসআইআর (BCSIR), বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (BJRI), গণস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (IPH), আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) ইত্যাদি। বর্তমানে অধ্যাপক ডঃ মাহমুদা ইয়াসমিন এই বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োজিত আছেন।[২৮][২৯]

মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগ

অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি মৎস বিজ্ঞান ভবন

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মৎস খাতের গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকুয়াকালচার ও ফিশারিজ বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। ২৯ মার্চ ২০০৪ তারিখের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট-এর সভায় এ বিভাগের নাম পরিবর্তন করে মৎসবিজ্ঞান বিভাগ করা হয়। বাংলাদেশের মৎস সম্পদ সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য দেশের সমগ্র মৎস খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত মৎস্যবিজ্ঞানী তৈরি করা মৎসবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান লক্ষ্য।[৩০]

চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন-এর সঙ্গে লিংক প্রোগ্রামের অধীনে ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ (ডিএফআইডি) এর অর্থানাকুল্যে এবং ১২ জন ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞের সহায়তায় ১৯৯৬ সনে (১৯৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধীনে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি কোর্সটি চালু হয়। ১৯৯৭ সালে এটি একটি স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভাগে বর্তমানে ৫ জন পূর্ণকালীন ও ২ জন খন্ডকালীন শিক্ষক আছেন।[৩০]

শিক্ষা মনোবিজ্ঞান বিভাগ

২০০৬ সালে মনোবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে একটি স্বাধীন বিভাগ হিসেবে ২০১১ সালে শিক্ষা ও কাউন্সেলিং মনোবৈজ্ঞানিক প্রস্তুতির লক্ষ্যে জীববিজ্ঞান অনুষদের অধীনে এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মনোবিজ্ঞানে স্নাতকদের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করে।[৩১][৩২][৩৩]

ফার্মেসি অনুষদ

ফার্মেসি অনুষদ ভবন, কার্জনহল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রতিষ্ঠা কাল: ১৯৯৫। পূর্বে এটি রসায়ন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ অনুষদের বর্তমান ডীন হলেন অধ্যাপক ডঃ আব্দুর রহমান। ফার্মেসি অনুষদ চারটি বিভাগ নিয়ে গঠিত।

ফার্মাসিউটিকাল রসায়ন বিভাগ

ফার্মেসি অনুষদের অধীনে একটি বিভাগ।এর বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডঃ মেহেদী মাসুদ।

ক্লিনিকাল ফার্মেসি এন্ড ফার্মাকোলজি বিভাগ

ফার্মেসি অনুষদ ভবনে ক্লিনিকাল ফার্মেসি এন্ড ফার্মাকোলজি ও অন্যান্য বিভাগের নামফলক

২০০৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি অনুষদের অধীনে ক্লিনিকাল ফার্মেসি এন্ড ফার্মাকোলজি বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিভাগের লক্ষ্য হচ্ছে দক্ষ ও প্রতিভাবান পেশাদারদের শিক্ষিত করা, যারা দেশ-বিদেশে স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখবে। এখানে চার বছরের স্নাতক (ফার্মেসি) ডিগ্রি অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের এক বছরের এম ফার্ম ( মাস্টার অফ ফার্মেসি) ডিগ্রী দেওয়া হয়। ফার্মেসি মেডিকেল স্নাতকদের এম ফিল ( মাস্টার অফ ফিলোসফি) এবং পি এইচ ডি ডিগ্রি দেওয়া হয়।[৩৪]

ফার্মাসিউটিক্যাল প্রযুক্তি বিভাগ

ফার্মেসি অনুষদের অন্তর্ভুক্ত এই বিভাগ খোলা হয় ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে। এই বিভাগ এম. ফার্ম. (ফার্ম. টেক.), এম. ফিল. (ফার্ম. টেক.) ও পিএইচ.ডি. (ফার্ম. টেক.) ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।[৩৫]বর্তমান চেয়ারম্যান ডঃ সেলিম রেজা।

ফার্মেসি বিভাগ

এই বিভাগটি সর্বপ্রথম ১৯৬৪ সালে যাত্রা শুরু করে।বিভাগটির হাত ধরেই এদেশে ফার্মেসি শিক্ষার প্রচলন শুরু হয়।পরবর্তিতে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগ খোলা হয়। বর্তমানে এতে পাঁচ বছর মেয়াদি অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। বিভাগের চেয়ারম্যান ডঃ সীতেশ চন্দ্র বাছার।

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ

ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেকনোলজী বিষয়ের তিনটি বিভাগ নিয়ে ০১ জুলাই ২০০৮ তারিখে এই অনুষদ প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এই অনুষদের ডীন ড. শাহিদা রফিক। কার্জন হল প্রাঙ্গণের সায়েন্স ক্যাফেটেরিয়ার দ্বিতীয় তলায় এ অনুষদের কার্যালয় অবস্থিত। এই অনুষদের অন্তর্ভুক্ত বিভাগগুলো হচ্ছে:

তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ

তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের নামফলক, কার্জনহল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক এর বিপ্লবের যুগে ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মাত্র ২৫ জন ছাত্র নিয়ে ফলিত পদার্থবিদ্যা বিভাগের সূচনা হয়। অধ্যাপক শাহ মোঃ ফজলুর রহমান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর দেশে ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন শিক্ষার দ্রুত উন্নয়নের জন্য বিভাগে ধীরে ধীরে বিভিন্ন আধুনিক কোর্স চালু হয়। ১৯৭৪ সালে এই বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক্স রাখা হয় এবং ২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেক্ট্রনিক্স ও যোগাযোগ প্রকৌশল রাখা হয়। এরপর ২০১৪ সালে বিভাগের নতুন নামকরণ করা হয় তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল (Electrical and Electronic Engineering)। ১৯৭৪ সালে এই বিভাগে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। বর্তমানে এই বিভাগে স্নাতকোত্তর, এম. ফিল ও পি.এইচ.ডি কোর্সও চালু আছে।[৩৬]

ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগ

ফলিত রসায়ন ও কেমি কৌশল বিভাগের জন্ম হয় ১৯৭২ সালে। রসায়ন, রাসায়নিক প্রযুক্তি ও রসায়ন প্রকৌশল সমন্বয়ে কোর্স কারিকুলাম এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন এখান থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীরা শিল্প-কারখানায় তাদের জ্ঞান দক্ষতার সাথে প্রয়োগ করতে পারে।[৩৭]

কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ

১৯৯২ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে শুধু পোস্ট-গ্রাজুয়েশন কোর্স চালু হলেও পরে গ্রাজুয়েশন কোর্সও চালু করা হয়। ২০০৪ সালের ২৭ মার্চ বিভাগের নাম পরিবর্তন করে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল করা হয়। বিভাগটি মোকাররম ভবনরাজিতে অবস্থিত মনোরম সায়েন্স কমপ্লেক্স ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় অবস্থিত। এই বিভাগ গড়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডঃ লুৎফর রহমানের[৩৮][৩৯] অবদান উল্লেখযোগ্য। এই বিভাগের ১১টি আধুনিক ল্যাবরেটরী রয়েছে। এই বিভাগের অধ্যাপকগণ বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে এসেছেন। ২০১০ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদে প্রথম এই বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু করা হয়। ২০১০ সালের এসিএম আইসিপিসিতে এই বিভাগের ডিইউ ডার্ক নাইট দল অংশগ্রহণ করে।[৪০] এই বিভাগের একটি সক্রিয় অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশন আছে। ২০১২ সালে বিভাগটি তার প্রতিষ্ঠার ২০ বছর উদ্‌যাপন করে। বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের একটি বিশেষ অংশ জুড়ে রয়েছে এ বিভাগের কৃতী শিক্ষার্থীরা। বিশ্বের নামকরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান যেমন গুগল, মাইক্রোসফট, মটরোলা, নোকিয়া, সিমেন্স ইত্যাদিতে এই বিভাগের বহু প্রাক্তন শিক্ষার্থী কর্মরত আছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অটোমেটেড সিস্টেম সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি সহায়তায় এই বিভাগের অবদান রয়েছে।

কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের গৌরব উজ্জ্বল ২০ বছর পূর্তি

এই বিভাগের ল্যাবরেটরিগুলো হলো-

  1. সফটওয়্যার ল্যাব-১
  2. সফটওয়্যার ল্যাব-২
  3. হার্ডওয়্যার ল্যাব
  4. মাইক্রোপ্রসেসর ও ইন্টারফেসিং ল্যাব
  5. অপারেটিং সিস্টেম ল্যাব
  6. নেটওয়ার্কিং ল্যাব
  7. গ্রাফিক্স ও মাল্টিমিডিয়া ল্যাব
  8. হাই পারফরম্যান্স কম্পিউটার ল্যাব (সহযোগিতায়: খুলনা পাওয়ার গ্রিড)
  9. এম. এস. রিসার্চ ল্যাব
  10. স্যামসাং ইনোভেশন ল্যাব (সহযোগিতায়: স্যামসাং আর এন্ড ডি বাংলাদেশ)
  11. ডেটাবেইজ ল্যাব

এছাড়াও এ বিভাগের একটি নিজস্ব সার্ভার রুম রয়েছে। আছে একটি গ্রন্থাগার ও সেমিনার রুম, শিক্ষার্থীদের অবসর কাটানোর জন্য ইনডোর গেম (টেবিল টেনিস, ক্যারম, ডার্টস) রুম।

বাংলাদেশের প্রথম নিজস্ব অনলাইন জাজ ওয়েব সাইট এই বিভাগ তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য রয়েছে বিভাগের প্রোগ্রামিং কন্টেস্ট ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, ক্রিকেট ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব, কম্পিউটার ক্লাব। এছাড়াও আই.সি.টি. সর্ট কোর্সের মাধ্যমে বিভাগ বহির্ভুত শিক্ষার্থীদের জন্য কারিগরী ও প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট কোর্স প্রোগ্রামও সফলভাবে এই বিভাগ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য এ বিভাগ পুরোটা ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট সুবিধা সম্পন্ন। এছাড়া প্রতিটি ল্যাবে রয়েছে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ। বিভাগের একটি ল্যাব শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য প্রতিদিন রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়।

পারমাণবিক প্রকৌশল বিভাগ

পারমাণবিক প্রকৌশল বিভাগ ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক ড. খোরশেদ আহমদ কবির। এটি শিক্ষার্থীদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।[৪১]

রোবোটিক্স ও মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

রোবোটিক্স ও মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগটি ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে চালু হয়, যার প্রতিষ্ঠাতা চেয়রাপার্সন ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু। বর্তমানে বিভাগটিতে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু রয়েছে, যা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ১৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তার যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ড. লাফিফা জামাল এই বিভাগটির চেয়ারপার্সন হিসেবে রয়েছেন।[৪২]

বিশ্ব ও পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদ

ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ

১৯৪৭-৪৮ সালে অধ্যাপক নাফিস আহমেদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ভূগোল বিভাগ। প্রথমে এখানে শুধুমাত্র পোস্ট-গ্রাজুয়েট কোর্স চালু ছিল। ১৯৫৪ সালে ভূগোলে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। সম্মান ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রথমে প্রাকৃতিক ও মানবিক ভূগোলের বিভিন্ন শাখা চালু হয়। শ্রেণীকক্ষের বাইরে হাতে-কলমে শেখার জন্য ফিল্ড-ট্রিপ, ফিল্ড-স্টাডিজ ও ফিল্ড-ক্যাম্প সহ মাঠ জরিপ এবং ভূমি ব্যবহার জরিপের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হত। ১৯৯৬ সাল থেকে নাম পরিবর্তন করে "ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ" করা হয়। এই বিভাগে স্নাতকোত্তর শ্রেণীর কোর্সভিত্তিক ডিগ্রির পাশাপাশি মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের থিসিসের মাধ্যমে ডিগ্রি প্রোগ্রামও চালু আছে।[৪৩]

ভূতত্ত্ব বিভাগ

ভূতত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কার্জন হল প্রাঙ্গণ

১৯৪৯ সালে ভূতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হবার পর প্রথমে সনাতন পাস কোর্স পদ্ধতিতে বি.এস.সি. ডিগ্রি প্রবর্তন করা হয়। ১৯৫৭ সনে এম.এস.সি., ১৯৬৭ সনে তিন বছর মেয়াদী স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৯৮ সনে চার বছরের সমন্বিত সম্মান কোর্স চালু হয়। এই বিভাগে বর্তমানে ২৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। এই বিভাগে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের যৌথভাবে গবেষণা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের Columbia University অন্যতম। এই বিভাগের পঠিত বিষয়ের মধ্যে Hydrology, Petroleum Geology, Environmental Geology, Fieldwork এবং Geological Mapping জাতীয় উন্নয়নে যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে।[৪৩]

সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ

বিশ্ব ও পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত এই বিভাগটি প্রতিষ্ঠার পরই ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে এম এস ডিগ্রি প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। পরে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে চার বছরের বি. এস সম্মান কোর্স চালু করে। বি এস সম্মান শেষ করে এক বছর মেয়াদি এম এস কোর্সে অধ্যয়ন করা যায় । এমফিল এবং পিএইচডি প্রোগ্রামেও শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।[৪৪]

দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপন বিভাগ

২০১২ সালে দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ যাত্রা শুরু করে। এ বিভাগ দুর্যোগ ঝুঁকির বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা প্রদান করে ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।[৪৫]

আবহাওয়া বিজ্ঞান

বিশ্ব ও পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ খোলা হয়। এ বিভাগে ৪ বছর মেয়াদি বি.এস. এবং ১ বছর মেয়াদি এম.এসসি. অধ্যয়নের সুযোগ আছে।[৪৬]

চারুকলা অনুষদ

চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রতিষ্ঠাকালে চারুকলা ইন্সটিটিউটের নাম ছিল গভর্নমেন্ট আর্ট ইনস্টিটিউট। ১৯৬৩ সালে এটিকে প্রথম শ্রেণীর কলেজে উন্নীত করে নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়। ১৯৮৩ সালে এই প্রতিষ্ঠানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোর অধীনে এনে চারুকলা ইন্সটিটিউট নামকরণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে এটি অনুষদের মর্যাদা লাভ করে, চারুকলা অনুষদ নাম ধারণ করে। বর্তমানে এই অনুষদে আটটি বিভাগ রয়েছে।

  • অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগ
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন বিভাগ
  • প্রিন্ট মেকিং বিভাগ
  • প্রাচ্যকলা বিভাগ
  • ভাস্কর্য বিভাগ
  • কারুশিল্প বিভাগ
  • মৃৎশিল্প বিভাগ
  • শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগ

অন্যান্য অনুষদ

  • চিকিৎসা অনুষদ
  • স্নাতকোত্তর চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদ
  • শিক্ষা অনুষদ

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী