ড্যারেন স্যামি

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার

ড্যারেন জুলিয়াস গার্ভে স্যামি (ইংরেজি: Darren Julius Garvey Sammy; জন্ম: ২০ ডিসেম্বর, ১৯৮৩) সেন্ট লুসিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষ হয়ে নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করছেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে তার দলে অবস্থান। ২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক ঘটে। এর মাধ্যমেই তিনি সেন্ট লুসিয়া দ্বীপপুঞ্জ থেকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করার গৌরব অর্জন করেছেন। অক্টোবর, ২০১০ সাল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট, একদিনের আন্তর্জাতিক ও টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে নেতৃত্ব দিলেও পরবর্তীতে তিনি টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকের অধিনায়কত্ব করেছিলেন।

ড্যারেন স্যামি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ড্যারেন জুলিয়াস গার্ভে স্যামি
উচ্চতা৬ ফুট ৫.৫ ইঞ্চি (১.৯৭ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি ব্যাটসম্যান
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৬৬)
৭ জুন ২০০৭ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৯-২৩ নভেম্বর ২০১৩ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১২৪)
৮ জুলাই ২০০৪ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ ওডিআই২১ মার্চ ২০১৫ বনাম নিউজিল্যান্ড
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ১৪)
২৮ জুন ২০০৮ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টি২০আই০৪ এপ্রিল ২০১৬ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৩উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডস
২০১৩–২০১৪সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ
২০১৪/১৫হোবার্ট হারিকেন্স
২০১৫–২০১৬রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
২০১৩-২০২০সেন্ট লুসিয়া জোউকস
২০১৬-২০২০পেশাওয়ার জালমি
২০১৬–২০১৮রাজশাহী কিংস
২০১৬হ্যাম্পশায়ার
২০১৭কিংস এলেভেন পাঞ্জাব
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টওডিআইটি২০আইএফসি
ম্যাচ সংখ্যা৩৮১২৬৫৮৯৬
রানের সংখ্যা১,৩২৩১,৮৭১৫১১৩,৫৪৯
ব্যাটিং গড়২১.৬৮২১.৬৮১৭.০৩২৩.৮১
১০০/৫০১/৫০/৯০/০২/২২
সর্বোচ্চ রান১০৬৮৯৪২*১২১
বল করেছে৬,২১৫৪,৯৫৬৮৩৮১৩,৭৪৪
উইকেট৮৪৮১৪৩২১৭
বোলিং গড়৩৫.৭৯৪৭.৫৪২৩.১১২৯.০৮
ইনিংসে ৫ উইকেট১০
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং৭/৬৬৪/২৬৫/২৬৭/৬৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং৬৫/–৬৬/–২৭/–১৩৭/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ৭ ডিসেম্বর ২০১৫

খেলোয়াড়ী জীবন

উইন্ডওয়ার্ড আইল্যান্ডস দলের পক্ষ হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে সফলতম মৌসুম কাটান তিনি। আঞ্চলিকভাবে অনুষ্ঠিত চারদিনের প্রতিযোগিতায় ২২ উইকেটসহ ২৬১ রান করেছিলেন তিনি। এ সাফল্যের প্রেক্ষাপটে অভিষেকবিহীন একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ১৫ সদস্যের ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের হয়ে ন্যাটওয়েস্ট ত্রি-দেশীয় একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেয়ার লক্ষ্যে জুন, ২০০৪ সালে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন। তাকে দলে নির্বাচনের জন্যে ইংরেজ পরিবেশের অভিজ্ঞতাকে গণ্য করা হয়েছিল। ২০০৩ সালে তিনি বার্নেস ক্রিকেট দলের পক্ষ হয়ে মিডলসেক্স প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগে খেলেছিলেন।[১]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

বিব্রতকর অবস্থায় একদিনের ক্রিকেটে তার প্রথম অভিষেক ঘটে। রোজ বোলে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি বল পড়ার আগেই মুষলধারে বৃষ্টিপাত হওয়ায় খেলাটি পরিত্যক্ত হয়। কিন্তু অধিনায়ক কর্তৃক পূর্বেই টস হয়ে যাওয়ায় আইসিসি'র রেকর্ডে স্যামির অভিষেকের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়।[২]

২২ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার জার্মেইন লসন শারীরিক আঘাতজনিত কারণে ২০০৪ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে নিজ নাম প্রত্যাহার করলে স্যামি পুনরায় দলে ডাক পান।[২] ২০ বছরের স্যামির একদিবসীয় ক্রিকেটে প্রকৃত অভিষেক ঘটে। বাংলাদেশের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় তিনি ৬ ওভারে ১৯ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট নেন ও তিনটি ক্যাচ ধরেন। এরফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশকে ১৩৮ রানে পরাজিত করে। প্রতিযোগিতায় এটিই ছিল তার একমাত্র খেলায় অংশগ্রহণ।[৩][৪] এছাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাইনালে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে ট্রফি জয় করেছিল।[৫]

একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষিক্ত হবার তিন বছর পর ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডে বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৫০ সালে আল্ফ ভ্যালেন্টাইনের পর তিনি হচ্ছেন প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান, যিনি ৭/৬৬ করে সেরা বোলিং নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন। মে, ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি তার প্রথম সেঞ্চুরি করেন।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃপক্ষ ১১ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে ২০১৫ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ১৫-সদস্যের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। তিনিও দলের অন্যতম সদস্য মনোনীত হন। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল গ্রুপ-পর্বে আয়ারল্যান্ড দলের বিপক্ষে প্রথম খেলায় অংশগ্রহণ করে। ৫ উইকেটে ৮৭ করার পর ৬ষ্ঠ উইকেটে লেন্ডল সিমন্সকে (১০২) সাথে নিয়ে ২১.১ ওভারে ১৫৪ রান তোলে দলকে ৩০৪/৭-এ নিয়ে যেতে সহায়তা করেন।[৬] খেলায় তিনি নিজস্ব সর্বোচ্চ ৮৯ রান সংগ্রহ করেন। তার অসামান্য ক্রীড়ানৈপুণ্য থাকা স্বত্ত্বেও দল ৪ উইকেটে পরাজয়বরণ করে যা ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে টেস্টখেলুড়ে দলের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের চতুর্থ জয়লাভ।[৭]

সাফল্যগাঁথা

স্যামি ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়করূপে অক্টোবর, ২০১০ সালে নিযুক্ত হন। অধিনায়ক হিসেবে তার প্রধান সাফল্য হচ্ছে ২০১২ সালের আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দলকে পরাভূত চ্যাম্পিয়ন করা। এ বৃহৎ সাফল্য অর্জনের জন্য দলটিকে দীর্ঘ ৮ বছর প্রতীক্ষা করতে হয়েছে। এর পূর্বে তারা ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় করেছিল।[৮]

২০০তম টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণকারী ও বিশ্বের একমাত্র খেলোয়াড় শচীন তেন্ডুলকরের পূর্বঘোষিত সর্বশেষ টেস্টে ক্যাচ ধরে স্যামি স্মরণীয় হয়ে আছেন। শচীনের ৭৪ রানের ইনিংসে বোলার নরসিং দেওনারাইনের বলে তিনি এ ক্যাচ ধরেন। পাশাপাশি মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামতে অনুষ্ঠিত এ টেস্টে তিনি পাঁচটি ক্যাচ ধরে তিনি ভিওয়াই রিচার্ডসন, যজুর্বিন্দ্র সিং, মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন, কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত, স্টিফেন ফ্লেমিং এবং গ্রেইম স্মিথের সাথে বিশ্বরেকর্ডের অংশীদার হন।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী