টিকা গ্রহণে অনীহা
টিকা গ্রহণে অনীহা (ইংরেজি: vaccine hesitancy) বা টিকাবিমুখতা (ইংরেজি anti-vaccination বা anti-vax) বলতে কোনও রোগ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে টিকাদান সেবা সুলভ হওয়া সত্ত্বেও নিজে বা নিজের সন্তানের জন্য সেই টিকা গ্রহণে অনিচ্ছা, অনীহা, সংকোচ, দ্বিধাগ্রস্ততা বা অসম্মতি প্রকাশ করাকে বোঝায়। ২০১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই বিষয়টিকে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যগত সবচেয়ে বড় ১০টি হুমকির মধ্যে একটি হিসেবে চিহ্নিত করে।[১][২] টিকা গ্রহণকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করা, দেরি করা, টিকাগ্রহণে সম্মতি দেবার পরেও তার ব্যবহার সম্পর্কে অনিশ্চয়তায় ভোগা, কিংবা কিছু টিকা গ্রহণ করলেও অন্য কিছু টিকা প্রত্যাখ্যান করা, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়গুলিকে একত্রে "টিকা গ্রহণে অনীহা" নামক পরিভাষাটি দিয়ে সামগ্রিকভাবে নির্দেশ করা হয়।[৩][৪] টিকা গ্রহণের বিরুদ্ধে যে যুক্তিগুলি প্রদান করা হয়, সেগুলির বিপরীতে টিকাসমূহের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার স্বপক্ষে আন্তর্জতিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ে প্রায় সার্বজনীন ঐকমত্য বিদ্যমান।[৫][৬][৭][৮]
টিকা গ্রহণে অনীহা মূলত টিকাকে ঘিরে বিরাজমান চিকিৎসাবিষয়ক, নৈতিক ও আইনগত কিছু উন্মুক্ত বিতর্ক থেকে উদ্ভূত হয়। যদি কোনও ব্যক্তি টিকা বা টিকাপ্রদানকারী স্বাস্থ্য সেবা সংস্থার উপর আস্থা না রাখেন (অনাস্থা), যদি তিনি টিকার প্রয়োজনীয়তা বা মূল্য অনুধাবন না করেন (আত্মতুষ্টি) কিংবা টিকা যদি সুলভ না হয় (দুর্লভ্যতা), তাহলে এই কারণগুলি টিকা গ্রহণে অনীহার পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে।[৪] টিকার উদ্ভাবনের শুরু থেকেই টিকা গ্রহণে অনেক মানুষের অনীহা ছিল।[৯] টিকা গ্রহণে অনীহার ফলে টিকার দ্বারা প্রতিরোধযোগ্য রোগসমূহের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায় এবং মৃত্যুও হয়।[১০][১১][১২][১৩][১৪][১৫]
কোনও কোনও দেশে আইন করে টিকা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারটি আলোচনা করা হয়েছে, তবে টিকাবিরোধী সংগঠনগুলি এগুলির জোর বিরোধিতা করেছে।[১৬][১৭][১৮] আবশ্যকীয় টিকাগ্রহণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পেছনে টিকাবিরোধী মনোভাব, নাগরিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবার উদ্বেগ, কিংবা ঔষধ ও টিকা নির্মাতা প্রতিষ্ঠানসমূহের মুনাফা বৃদ্ধির ব্যাপারে সন্দেহ, ইত্যাদি ব্যাপারগুলি কাজ করে।[১২][১৯][২০][২১][২২]