জ্যোতিপ্রকাশ বসু
জ্যোতিপ্রকাশ বসু (১৮৯৪ - ১৯৬৮) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি চিকিৎসক, যিনি ভারতে বহুমূত্ররোগের আধুনিক চিকিৎসার জনক।[১] তিনি কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্ররোগ নিয়ে গবেষণা করেন এবং ভারতে প্রথম ইনসুলিন প্রয়োগ করেন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ভারতের প্রথম ডায়াবেটিক ক্লিনিক চালু করেন।[২] তিনি লন্ডনের কেমিক্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন।
জ্যোতিপ্রকাশ বসু | |
---|---|
![]() ডাঃ জ্যোতিপ্রকাশ বসু | |
জন্ম | ১৮৯৪ |
মৃত্যু | ১৯৬৮ | (বয়স ৭৩–৭৪)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ |
|
সন্তান | অজিতকুমার বসু (পুত্র) |
পিতা-মাতা | চুনীলাল বসু (পিতা) |
পুরস্কার | মিনটো স্বর্ণ পদক (১৯৩৫) ফেলো অফ কেমিক্যাল সোসাইটি (লন্ডন) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | ডায়াবেটিস |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন |
গবেষণা
ডাঃ বসু ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে গ্লাইকোসুরিয়া নিয়ে গবেষণা করার সময় দেখান যে গর্ভাবস্থায় গ্লাইকোসুরিয়া রোগের ক্ষেত্রে পিটুইটারি গ্রন্থি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[৩][৪] ডাঃ জে পি বসু খরগোশের উপর ইনসুলিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে একটি আকর্ষণীয় পর্যবেক্ষণ লক্ষ্য করেছিলেন। তিনি দেখেন যে ইনসুলিনের প্রভাব প্রাণীর রঙের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। ইনসুলিন আবিষ্কারের মাত্র দুই বছর পর, ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের শুরুর দিকে ডাঃ বসু ভারতে প্রথম ইনসুলিনের প্রয়োগ করেন।[৫] তিনি কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে গবেষণা করাকালীন কুমুদিনী নামক ১২ বছরের এক বালিকার উপর ইনসুলিনের প্রথম সফল প্রয়োগ করেন।[৬] সেই বছরেরই ডিসেম্বরে একটি জার্নালে তিনি ইনসুলিনের উৎপাদন, সংরক্ষণ পদ্ধতি, ক্রিয়া-পদ্ধতি, ইনসুলিন ব্যবহারের লক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে একটি নিবন্ধ লেখেন। তিনি সেই প্রবন্ধে তাঁর নিজের উপর করা একটি পরীক্ষার ফলাফল সহ ডায়াবেটিসবিহীন ব্যক্তিদের উপর ইনসুলিনের প্রভাব ব্যাখ্যা করেছিলেন।[৭] ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা হিসাবে ইনসুলিন প্রয়োগের পরেই রক্তে শর্করার পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ ভাবে বৃদ্ধি পায়। তিনি ভারতীয়দের মৌলিক বিপাক, ধমনী এবং শিরার রক্তে শর্করার পার্থক্য, ইনসুলিন অ্যানাফিল্যাক্সিস, প্রোটামাইন জিঙ্ক ইনসুলিন, ডায়াবেটিস এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসায় ভিটামিন-বি-এর ভূমিকা সহ ডায়াবেটিস সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করেছিলেন। তিনি ডায়াবেটিস টাইপ-১ এ আক্রান্ত শিশুদের শারীরিক পরিবর্তন সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন।[৫] তিনি হ্যান্ডবুক অন ডায়াবেটিস মেলিটাস এন্ড ইটস মডার্ন ট্রিটমেন্ট নামক একটি বই লেখেন।[৪]