জ্যারেড লেটো

মার্কিন অভিনেতা

জ্যারেড জোসেফ লেটো (ইংরেজি: Jared Joseph Leto; জন্ম: ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭১) হলেন একজন মার্কিন অভিনেতা, গায়ক, গীতিকার ও পরিচালক। ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকে টেলিভিশনে কাজের মাধ্যমে তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং টেলিভিশন ধারাবাহিক মাই সো-কলড লাইফ (১৯৯৪)-এ জর্ডান ক্যাটালানো চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি অর্জন করেন। ১৯৯৫ সালে হাউ টু মেক অ্যান আমেরিকান কুইল্ট (১৯৯৫) দিয়ে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় এবং ১৯৯৭ সালে প্রেফোন্টাইন-এ অভিনয় করে সমাদৃত হন। লেটো দ্য থিন রেড লাইন (১৯৯৮), ফাইট ক্লাব (১৯৯৯) ও আমেরিকান সাইকো (২০০০) ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন এবং ভৌতিক আরবান লেজেন্ড (১৯৯৮) ছবিতে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। ২০০০ সালে রিকোয়েম ফর আ ড্রিম (২০০০) ছবিত হেরোইন আসক্ত হ্যারি গোল্ডফার্ব চরিত্রে তার অভিনয় সমাদৃত হয়। তিনি পরবর্তীকালে সঙ্গীত চর্চায় বেশি মনোযোগ দেন এবং ২০০২ সালে প্যানিক রুম দিয়ে পুনরায় অভিনয়ে ফিরে আসেন। এই পর্যায়ে তিনি আলেকজান্ডার (২০০৪), লর্ড অব ওয়ার (২০০৫), লোনলি হার্টস (২০০৬), চ্যাপ্টার' টোয়েন্টি সেভেন (২০০৭) ও মিস্টার নোবডি (২০০৯) ছবিতে অভিনয় করেন। ২০১২ সালে তিনি প্রামাণ্যচিত্র আর্টিফ্যাক্ট নির্মাণ করেন।

জ্যারেড লেটো
Jared Leto
২০১৬ সালে সান দিয়েগো কমিক কনে লেটো
জন্ম
জ্যারেড জোসেফ লেটো

(1971-12-26) ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ (বয়স ৫২)
অন্যান্য নামবার্থোলোমিউ কাবিন্স
অ্যাঙ্গাকক পানিপাক
মাতৃশিক্ষায়তনস্কুল অব ভিজ্যুয়াল আর্টস
পেশাঅভিনেতা, গায়ক, গীতিকার, পরিচালক
কর্মজীবন১৯৯৪-বর্তমান

ডালাস বায়ার্স ক্লাব (২০১৩) ছবিতে লিঙ্গ পরিবর্তনকারী নারী চরিত্রে লেটোর অভিনয় প্রশংসিত হয় এবং তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার, গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারস্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার অর্জন করেন।[১][২] তিনি পরবর্তীকালে সুপারহিরো চলচ্চিত্র সুইসাইড স্কোয়াড (২০১৬)-এ জোকার চরিত্রে[৩] ও বিজ্ঞান কল্পকাহিনীমূলক ব্লেড রানার টোয়েন্টি ফোর্টি নাইন (২০১৭)-এ অভিনয় করেন।

প্রারম্ভিক জীবন

জ্যারেড জোসেফ লেটো ১৯৭১ সালের ২৬শে ডিসেম্বর লুইজিয়ানার বসিয়ার সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা অ্যান্টনি এল. "টনি" ব্রায়ান্ট[৪] এবং মাতা কনস্ট্যান্স লেটো (জন্মনাম মেট্রেয়ন)।[৫][৬] তার মাতা পূর্বপুরুষগণ কাজিউন জাতির ছিলেন।[৭] লেটো তার সৎ বাবার নামের শেষাংশ। জ্যারেডের শৈশবে তার পিতামাতার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তিনি ও তার বড় ভাই শ্যানন লেটো তার মাতার সাথে তার মাতামহ উইলিয়াম লি মেট্রেয়ন ও মাতামহী রুবি রাসেলের সাথে বসবাস করতেন। তার পিতা পুনরায় বিয়ে করেন এবং জ্যারেডের যখন আট বছর বয়স তখন তিনি আত্মহত্যা করেন। লেটো তার পরিবারের সাথে প্রায়ই বিভিন্ন শহরে বেড়াতে যেতেন।[৮] লেটোর ভাষ্যমতে, আমার মা এয়ারফোর্সে ছিলেন, তাই ঘুরে বেড়ানো স্বাভাবিক জীবনের অংশ হয়ে গিয়েছিল। তার বাবার দ্বিতীয় বিবাহের পক্ষ থেকে তার দুই সৎ ভাই রয়েছে।[৯]

কর্মজীবন

১৯৯২-১৯৯৮: প্রারম্ভিক কর্মজীবন ও প্রেফোন্টাইন

লেটো ১৯৯২ সালে পরিচালক হিসেবে কর্মজীবন শুরুর পাশাপাশি অভিনয় করার লক্ষ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে যান। সেখানে তিনি টেলিভিশনে কয়েকটি অপ্রধান চরিত্রে কাজ শুরু করেন। টেলিভিশনে তার প্রথম কাজ ছিল ১৯৯৪ সালে এবিসির কিশোর নাট্যধর্মী ধারাবাহিক মাই সো-কলড লাইফ (১৯৯৪)। এতে তিনি ক্লেয়ার ডেইন্সের বিপরীতে জর্ডান ক্যাটালানো চরিত্রে অভিনয় করেন। ধারাবাহিকটিতে কৈশোরের চিত্রায়নের জন্য প্রশংসিত হয় এবং এটি ইতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করে, তবুও মাত্র একটি মৌসুমের পর ধারাবাহিকটি বাতিল হয়ে যায়। একই বছর তিনি অ্যালিশিয়া সিলভারস্টোনের বিপরীতে কুল অ্যান্ড দ্য ক্রেজি টেলিভিশন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৫ সালে হাউ টু মেক অ্যান আমেরিকান কুইল্ট (১৯৯৫) দিয়ে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। পরের বছর তিনি ক্রিস্টিনা রিচির সাথে দ্য লাস্ট অব দ্য হাই কিংস (১৯৯৬)-এ অভিনয় করেন।

১৯৯৭ সালে লেটো অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী স্টিভ প্রেফোন্টাইনের জীবনীমূলক প্রেফোন্টাইন (১৯৯৭)-এ অভিনয় করে সমাদৃত হন। এই চরিত্রে প্রস্তুতি হিসেবে লেটো এই দৌড়বিদের জীবন নিয়ে গবেষণা করেন এবং ছয় সপ্তাহ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

১৯৯৮-২০০১: থার্টি সেকেন্ডস টু মার্স, রিকোয়েম ফর আ ড্রিম ও অন্যান্য

লেটো ১৯৯৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে তার ভাই শ্যাননকে নিয়ে রক সঙ্গীতদল থার্টি সেকেন্ডস টু মার্স গঠন করেন। দলটির শুরুর দিকে লেটো হলিউড অভিনেতা হিসেবে তার অবস্থান এই দলের প্রচারণার জন্য কাজে লাগাতে বারণ করেন।[১০] তাদের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় দুই বছর পর এবং এর বেশিরভাগ গান লিখেন লেটো নিজে।[১১] বেশ কয়েকটি রেকর্ড লেবেল তাদের কাজে আগ্রহী হয়, এবং পরিশেষে ইমোর্টাল রেকর্ডস থেকে তাদের গান প্রকাশিত হয়।[১২]

১৯৯৮ সালে লেটো দ্য থিন রেড লাইন (১৯৯৮)-এ পার্শ্ব চরিত্রে এবং ভৌতিক আরবান লেজেন্ড (১৯৯৮)-এ শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট চলচ্চিত্রে একজন সমকামী হাই স্কুল শিক্ষক চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের চরিত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একই বছর তিনি সুজানা কেসেনের স্মৃতিকথা অবলম্বনে নাট্যধর্মী গার্ল, ইন্টারাপ্টেড চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি চাক পালানিউকের উপন্যাস অবলম্বনে ডেভিড ফিঞ্চার নির্মিত ফাইট ক্লাব (১৯৯৯) ছবিতে অ্যাঞ্জেল ফেস চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি অভিনেত্রী ক্যামেরন ডিয়াজের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান এবং ২০০০ সালে তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়।[১৩]

লেটো মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলারধর্মী আমেরিকান সাইকো (২০০০) চলচ্চিত্রে পল অ্যালেন চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটিতে লেটোর অভিনয় দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। একই বছর তিনি হুবার্ট সেলবি জুনিয়রের উপন্যাস অবলম্বনে ড্যারেন আরোনোফস্কির রিকোয়েম ফর আ ড্রিম (২০০০) ছবিত হেরোইন আসক্ত হ্যারি গোল্ডফার্ব চরিত্রে অভিনয় করেন। এই চরিত্রের প্রস্তুতি হিসেবে লেটো নিউ ইয়র্ক সিটির রাস্তায় দিনযাপন করেন এবং শুটিংয়ের দুই মাস পূর্ব থেকে যৌনমিলন থেকে বিরত থাকেন।[১৪][১৫] তিনি হেরোইন আসক্ত চরিত্র বাস্তবভাবে ফুটিয়ে তুলতে মাস খানেক স্বল্পাহার করে ২৮ পাউন্ড ওজন কমান।[১৬] চলচ্চিত্রটির শুটিং শেষ করে ওজন বাড়ানোর জন্য কয়েক মাসের জন্য তিনি পর্তুগালে এক উপাসনালয়ে চলে যান।[১৪][১৫]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী