জ্ঞান

তথ্য সম্পর্কে সচেতনতা বা যোগ্য হওয়া

জ্ঞান এক কথায় হল, পরিচিতি থাকা। কোন কিছু সম্পর্কে বা কারো বিষয়ে জেনে থাকা বা বুঝে থাকা। হতে পারে কোন কিছুর প্রকৃত অবস্থা, তথ্য, বিবরণ, বা গুনাবলী সম্পর্কে ধারণা থাকা, যেটি অর্জিত হয়েছে উপলব্ধির মাধ্যমে, অনুসন্ধানের মাধ্যমে বা শিক্ষা গ্রহণের ফলে অভিজ্ঞ হওয়ায় বা পড়াশুনা করে।

আথিনার প্যাঁচা, পশ্চিমা বিশ্বে জ্ঞানের প্রতীক।

জ্ঞান বলতে কোন বিষয় সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা থাকাকে বুঝায়। এটা বহিঃপ্রকাশ ধরনের হতে পারে (যেমন ব্যবহারিক গুনাবালী সম্পন্ন বা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন) অথবা বহিঃপ্রকাশ ধরনের নাও হতে পারে (যেমন কোনো বিষয়ে শুধু তাত্ত্বিক দিকটি বোঝা); এটা কম বা বেশি ফর্মাল বা নিয়মার্বতিতা সম্পন্ন হতে পারে।[১] দর্শনশাস্ত্রের, জ্ঞান নিয়ে যে অংশটি আলোচনা করে তাকে জ্ঞানতত্ত্ব বলে; দার্শনিক প্লেটো জ্ঞানকে প্রতিষ্ঠানিক ভাবে সংজ্ঞায়িত করেন "প্রমাণিত সত্য বিশ্বাস" বলে। যদিওবা এই সংজ্ঞা নিয়ে অনেক বিশ্লেষক দার্শনিক একমত হন যে সংজ্ঞাটির মধ্যে কিছু সমস্যা রয়েছে, এর কারণ হল গেটিয়ের সমস্যা। যদিওবা প্রচুর সংজ্ঞা রয়েছে জ্ঞানের উপর এবং প্রচুর তত্ত্ব রয়েছে এটির অস্তিত্ব নিয়ে।

জ্ঞান অর্জনের সাথে জটিল মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়া জড়িত: উপলব্ধি, সংযোগ এবং যুক্তি;[২] যেখানে জ্ঞানকে মানব মস্তিষ্কের কোনো কিছু বুঝতে পারার ক্ষমতার সাথেও তুলনা করা হয়।[৩]

জ্ঞানের বিষয়ে তত্ত্বসমূহ

রবার্ট রেইড, জ্ঞান (১৮৯৬)। থোমাস জেফের্সোন বিল্ডিং, ওয়াশিংটন, ডি.সি.

বিজ্ঞান থেকে দর্শনের পার্থক্য করা পরিশেষে সম্ভব হয়েছিল এই ধারণা থেকে যে দর্শনের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল "জ্ঞানের তত্ত্ব," এই তত্ত্ব বিজ্ঞান থেকে স্বতন্ত্র কারণ এটা বিজ্ঞানের ভিত্তি ... এই "জ্ঞানের তত্ত্বের" ধারণা না থাকলে আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে "দর্শনের" অবস্থান কল্পনা করা কঠিন হত। - রিচার্ড রোর্টি, ফিলোসফি এন্ড দা মিরোর অফ নেচার

জ্ঞানের সংজ্ঞা কি হবে তা জ্ঞানতত্ত্ব নিয়ে কাজ করা দার্শনিকদের মধ্যে চলমান একটি বিতর্কের বিষয়। ক্লাসিকাল সংজ্ঞাটি, প্লেটো কর্তৃক বিবৃত কিন্তু পরিশেষে এটি সকলের কাছে সমর্থিত নয়,[৪] এটিতে বিবৃত আছে, একটি বিবৃতি জ্ঞান বলে বিবেচিত হবে যদি এর তিনটি গুন থাকে: এটা সমর্থনযোগ্য, সত্য এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়। অনেকের মতে এই গুণাবলী থাকাটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, যেমন গাটিয়ের ঘটনার ক্ষেত্রে অভিযোগ উদাহরণসহ প্রদর্শন করতে হবে। এই সংজ্ঞার অনেকগুলো বিকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে, যার মধ্যে জ্ঞান সম্পর্কে রবার্ট নোজিকের প্রস্তাবিত যুক্তিটি হল, "জ্ঞান, যা সত্য খুঁজে বের করে" এবং সাইমন ব্ল্যাকবার্ন তাতে আরও যুক্ত করতে চান, আমরা এটা বলতে চাইনা যে, যারা এই শর্তগুলোর যে কোন একটি পূরণ করবে খুঁতযুক্ত ভাবে, ত্রূটির মাধ্যমে, বা ব্যর্থতার মাধ্যমে তাদের জ্ঞান রয়েছে। রিচার্ড কিরখাম প্রস্তাব করেন আমাদের জ্ঞানের সংজ্ঞায় থাকা প্রয়োজন, সত্য প্রকাশে বিশ্বাসের পক্ষে প্রমাণ থাকা দরকার।[৫]

এই পদ্ধতির বিপরীতে, লুডউইগ উইটজেন্টেইন লক্ষ্য করেন, এটা মোরস্‌ প্যারাডক্স অনুসারে কাজ করছে, যেমন যে কেউ বলতে পারেন "তিনি এটা বিশ্বাস করেন, কিন্তু এটা যাতে না হয়," কিন্তু না "তিনি তা জানেন, কিন্তু এটা যাতে না হয়।"[৬] তিনি যুক্তি দেন যে এগুলো স্পষ্টত ভাবে সরাসরি মানসিক অবস্থার সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং এটি প্রকৃতপক্ষে দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে কথা বলার একটা ধরন। এই ভিন্নতা বক্তার মানসিক অবস্থার সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং তারা যে কার্যকলাপের সাথে যুক্ত তার সাথে সম্পর্কিত। এই বিষয়ের উদাহরণস্বরূপ, যদি জানতে হয় কেটলিতে কি ফুটনো হচ্ছে তা মনের কোন একটি বিশেষ অবস্থার সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং একটি বিবৃতির মাধ্যমে বলে হবে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় কেটলিতে কিছু ফুটানো হচ্ছে। উইটজেন্টেইন কষ্ট করে "জ্ঞানের" একটি সংজ্ঞা প্রদান না করে সাধারণ ভাষায় এটি বলতে চেয়েছেন। তিনি জ্ঞানকে একটি পরিবারের প্রতিচ্ছায়া রূপে দেখেছেন। তার এই ধারণা থেকে, "জ্ঞানের" ধারণার গাঠনিক পরিবর্তন করে একটি গুচ্ছমূলক ধারণায় পরিণত করা হয়েছে, যা প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে চিন্নিত করে কিন্তু এটি পরিপূর্ণরূপে কোন সংজ্ঞা দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়।[৭]

জ্ঞানের আদান-প্রদান

লোস পোরটাদোরাস্‌ দা লে এনট্রোছা (দা টোর্চ-বিয়ারার) – স্থপতি এনা হ্যাট হুন্টিংটোন - যা বংশ পরম্পরায় জ্ঞান বিতরণকে প্রতিকী ভাবে প্রকাশ করে (সিউদাদ ইউনিভার্সিটারিয়া, মাদ্রিদ, স্পেন)

প্রতীকী উপস্থাপনা ব্যবহার করে অর্থ প্রকাশ করা যায় এবং এটিকে প্রগতিশীল প্রক্রিয়া হিসাবে চিন্তা করা হয়। যাইহোক না কেন প্রতীকী উপস্থাপনা কে দেখা হয় হস্তান্তরের এক অধ্যাস প্রক্রিয়া হিসাবে যেখানে জ্ঞান স্থানান্তরিত হয়। জ্ঞান আদান-প্রদানের অন্যান্য রূপ হতে পারে পর্যবেক্ষণ এবং অনুকরণ, মৌখিক বিনিময় এবং অডিও এবং ভিডিও রেকর্ডিং। ভাষাবিদ্যা এবং সাইন ল্যাংগুয়েজের দার্শনিকরা জ্ঞান স্থানান্তর বা আদান-প্রদানের তত্ত্ব নির্মাণ এবং বিশ্লেষণ করেন।

অনেকে সম্মত হবে যে, জ্ঞান হস্তান্তরের জন্য সবচেয়ে সার্বজনীন এবং উল্লেখযোগ্য সরঞ্জাম হল লেখা ও পড়া (বিভিন্ন ধরনের), তবুও লিখিত শব্দের উপযোগিতার উপর যুক্তি রয়েছে, কিছু পণ্ডিতগণ সমাজে এটির প্রভাব নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন। টেকনোপলিতে, নীল পোষ্টম্যানের প্রবন্ধ সংগ্রহে, লেখা ব্যবহারের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর যুক্তি প্রমাণ প্লেটোর কাজ ফেইদ্রাস (পোষ্টম্যান, নীল (১৯৯২) টেকনোপলি, ভিন্টেজ, নিউ ইয়র্ক, পৃষ্ঠা ৭৩) থেকে নেয়া একটি উদ্ধৃতাংশের মাধ্যমে তুলে ধরেন। এই উদ্ধৃতাংশে, পণ্ডিত সক্রেটিসের "থমাস" গল্পের বর্ণনা রয়েছে, যেখানে মিশরের রাজা ও থেউথ যারা লিখিত শব্দের উদ্ভাবক তাদের বিষয়ে বলা হয়েছে। এই গল্পে, থেউথ রাজা থমাসকে তার নতুন আবিষ্কার "লেখা" উপস্থাপন করে বলেন যে, এটি তার নতুন আবিষ্কার যা "বিজ্ঞতা সৃষ্টি এবং মিশরীয়দের স্মৃতি শক্তি উভয়কে বৃদ্ধি করবে" (পোষ্টম্যান, নীল (১৯৯২) টেকনোপলি, ভিন্টেজ, নিউ ইয়র্ক, পৃষ্ঠা ৭৪)। রাজা থমাস এই নতুন আবিষ্কারের উপর সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং এটি বর্জন করেন, কারণ তার মতে এটি ছিল জ্ঞান অর্জনের চেয়ে জ্ঞান সংগ্রহের উপায় মাত্র। তিনি আরও যুক্তি দিয়ে বলেন যে, লিখিত শব্দের মিথ্যা জ্ঞান অর্জন মিশরের লোকদের উপর প্রভাব ফেলবে কারণ তারা বাইরের উৎস থেকে গল্প ও তথ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে এবং এর ফলে আর তারা কখনই মানসিকভাবে বৃহৎ পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে বাধ্য হবে না (পোষ্টম্যান, নীল (১৯৯২) টেকনোপলি, ভিন্টেজ, নিউ ইয়র্ক, পৃষ্ঠা ৭৪)।

ক্লাসিকাল প্রাক-আধুনিক জ্ঞানের তত্ত্ব অনুসারে, বিশেষত যারা দার্শনিক "জন লকের" প্রভাবশালী অভিজ্ঞতাবাদ নিয়ে কাজ আগাচ্ছিলেন, তাদের কাজের ভিত্তি ছিল পরোক্ষভাবে বা প্রত্যক্ষভাবে মনের একটি বিশেষ অবস্থা যা একটি ধারণা কে শব্দে পরিণত করে।[৮] ভাষা এবং চিন্তার মধ্যে এই সমতা জ্ঞানের একটি সুস্পষ্ট ধারণার ভিত্তি স্থাপন করে, যা কোন ঘটনা কে সীমাবদ্ধ করে অক্ষর, সংখ্যা বা প্রতীকের মাধ্যমে। এটি একটি অবস্থার সৃষ্টি করে যেখানে পাতায় সুবিন্যস্ত ভাবে সাজানো শব্দগুলি গভীর জ্ঞানীয় ভার তৈরি করে, যা এতটাই বেশি যে পাতা এবং টীকা ধরনের পুস্তকের তথ্যের বাহ্যিক কাঠামোর উপর শিক্ষাবিদরা প্রখর মনোযোগ দিতে বাধ্য হন।[৯]

মিডিয়া তত্ত্ববিদ, যেমন অ্যান্ড্রু রবিনসন জোর দেন চাক্ষুষ জ্ঞান বিবরনের উপর, আধুনিক বিশ্বে যা মৌখিক জ্ঞানের চেয়ে প্রায়শই 'অধিক সত্য' হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি পশ্চিমা বুদ্ধিজীবীদের ঐতিহ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিশ্লেষণমূলক জ্ঞান ধারণায় আঘাত করে, যেখানে মৌখিক জ্ঞান প্রচার সাধারণ ভাবে হারিয়ে যাচ্ছিল লিখিত জ্ঞান প্রচারের মিথ্যা বিস্তারে। কী বলা হয়েছে তার প্রমাণ বা কে প্রকৃতপক্ষে বলেছে তা সংরক্ষণ করা কঠিন - সাধারণত এসব তথ্যের উৎস কিংবা বিষয়বস্তু যে কোনটাই যাচাই করা সম্ভব হয় না। উদাহারণস্বরূপ পরচর্চা এবং গুজব উভয়ই মিডিয়াতে প্রচারিত হয়। জ্ঞানের ব্যপ্তিতে লেখার মূল্যমান এখন মানুষের কাছে অনেক বেশি এবং সময় ও স্থান থেকে আলাদা এক টুকরা লেখায় থাকা জ্ঞান অর্জনে তাই মানুষ আজও আগ্রহী, তাই জ্ঞান সংগ্রহ ও সম্প্রসারনের কেন্দ্র হিসাবে কাজ করছে এই লেখা।

বৃহৎ লাইব্রেরিগুলোতে আজ জ্ঞানের লক্ষ লক্ষ বই থাকতে পারে (কাল্পনিক উপন্যাস ছাড়াও)। শুধু সাম্প্রতিক সময়ে অডিও এবং ভিডিও প্রযুক্তি পাওয়া যাচ্ছে জ্ঞান সংরক্ষণের জন্য এবং এগুলো ব্যবহারে রিপ্লে করার সরঞ্জাম ও বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। মৌখিক জ্ঞান শিক্ষা ও জ্ঞানের সরাসরি হস্তান্তরের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, কারণ যারা শুধুমাত্র জ্ঞান প্রচারকের কাছে যাবে বা যে লিখিত জ্ঞানের কাজটি পাঠোদ্ধার করতে পারবে, সেই একমাত্র এই জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। লিখা বা লিপিবদ্ধ করা এখনও সবচেয়ে সহজলভ্য এবং সবচেয়ে সার্বজনীন উপায় জ্ঞান সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্য। এটা অনেক বছর ধরে চলে আসা মানবজাতির বংশ পরম্পরায় জ্ঞান স্থানান্তরের প্রাথমিক প্রযুক্তি ও বিশ্বের সকল সংস্কৃতির এবং ভাষাভাষীদের কাছে অবিসংবাদিত ভাবে স্বীকৃত।

পরিস্থিতি গত জ্ঞান

পরিস্থিতি গত জ্ঞান হল সেই জ্ঞান যা একটি বিশেষ পরিস্থিতির জন্য প্রযোজ্য। এটা একটি শব্দ যা সুপ্রতিষ্ঠিত করেন ডোনা হারাওয়ে নারীবাদী পন্থার অতিরিক্ত অংশ "উত্তরাধিকারী বিজ্ঞান" হিসাবে যার পরামর্শ দিয়েছিলেন সান্ড্রা হার্ডিং, এটি একটি "আরও পর্যাপ্ত, পরিপূর্ণ, আরও ভাল জগৎ তৈরি করতে সহায়তা করে, যেখানে "বসবাসের উন্নত পরিস্থিতি রয়েছে এবং নিজেদের ও অন্যান্যদের মধ্যের সম্পর্ক আত্মবাচক" আধিপত্যের চর্চার মাধ্যমে এবং সুযোগ-সুবিধার অসম বিষয়গুলো ও উৎপীড়নের ঘটনা গুলোকে কেন্দ্র করে সকল পদ তৈরি হয়।"[১০] এই পরিস্থিতি আংশিকভাবে বিজ্ঞানকে একটি গল্পে পরিণত করে, যা আর্তুরো এস্কোবার ব্যাখ্যা করেন এভাবে," না এটি কল্পকাহিনী নয় বরং সম্ভব্য ঘটনা।" পরিস্থিতির এই বর্ণনা ঐতিহাসিক ঘটনা ও কল্পকাহিনী নিয়ে গঠিত, এবং এস্কোবার এ বিষয়ে আরও ব্যাখ্যা করেন, "এমনকি সবচেয়ে নিরপেক্ষ বৈজ্ঞানিক গঠনপ্রণালী এক অর্থে গল্প", তিনি আরও জোর দেন যে, প্রকৃতপক্ষে কোন একটি উদ্দেশ্য সাধনের বিজ্ঞান আসলে নগণ্য বিষয়ের বিকল্প ব্যবস্থা, "আসলে সবাই কে (এই গল্পগুলোকে) আরও গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে, এই নতিস্বীকার ছাড়া যে এগুলো সন্তুষ্টিজনক ভাবে 'সত্য' নয় বা পরিহাসমূলক সংশয়বাদ, অনেক সমালোচকের কাছে সাধারণভাবে।"[১১]

হারাওয়ে যুক্তিটি বিকাশ লাভ করে মানুষের উপলব্ধির সীমাবদ্ধতা থেকে, সেইসাথে বিজ্ঞানের চাক্ষুষ জ্ঞানের উপর মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব প্রদানের ফলে, হারাওয়ের মতে বিজ্ঞানের চাক্ষুষ জ্ঞানের উদ্দেশ্য সব সময়ই হল, "একটি চিহ্নিত অংশ থেকে গুরু দ্বায়িক্ত নিয়ে বের হওয়া এবং নতুন কোথাও এই দৃষ্টিভঙ্গিকে জয়ী করা।" এটা সেই "দৃষ্টিভঙ্গি যে পৌরাণিক সব চিহ্নিত অংশকে ছিন্ন করে দিয়ে নতুন অংশ চিহ্নিত করার দাবী করে শক্তি প্রদান করে যা চোখে দেখা যায় এবং যা চোখে দেখা যায় না তাতে, প্রতিনিধিত্ব করে প্রতিনিধিত্বকারীকে বাদ দিয়ে।" এই ঘটনা দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি সীমাবদ্ধতা ঘটায় যার ফলে জ্ঞান সৃষ্টিতে বিজ্ঞানের অবস্থান একটি সম্ভাবনাময় অংশ হয়ে দাঁড়ায়, ফলশ্রুতিতে অবস্থানটি হয়ে দাঁড়ায় "বিনয়ী সাক্ষী" হিসাবে। এটাকে হারাওয়ে ব্যাখ্যা করেন "ঈশ্বরের কৌতুক" হিসাবে, বা আগে উল্লেখিত প্রতিনিধিত্বকারীকে হারিয়ে দিয়ে নিজে প্রতিনিধিত্ব করে।[১২] এই ধরনের সমস্যা এড়ানোর জন্য, "হারাওয়ে চিরস্থায়ী চিন্তার একটা ঐতিহ্য তৈরি করেন যা উভয় নৈতিক এবং রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার নিরিখে বিষয়সমূহের গুরুত্ব উপর জোর দেয়।"[১৩]

জ্ঞান অর্জনের কিছু পদ্ধতি, যেমন ট্রায়াল এন্ড ইরোর, বা অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা উচ্চ ধরনের পরিস্থিতি গত জ্ঞান তৈরি করতে সহায়ক। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিগুলোর প্রধান গুণের একটি হল এটি থেকে যে তত্ত্ব উৎপন্ন হয় তা পরিস্থিতি গত জ্ঞান তৈরিতে অনেক কম সহায়ক অন্যান্য পদ্ধতির দ্বারা অর্জিত জ্ঞানের চেয়ে। পরিস্থিতি গত জ্ঞান প্রায়শই ভাষা, সংস্কৃতি, অথবা ঐতিহ্যের মধ্যে অন্তর্নিহিত থাকে। পরিস্থিতি গত জ্ঞানের এই সংযুক্তি সমাজের একটি প্রতিচ্ছবি মাত্র এবং একটি প্রতিমূর্তি রূপে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান সংগ্রহের প্রচেষ্টা করে" কিছু কিছু জায়গার মতামত অনুসারে।"

অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সংগ্রহীত জ্ঞানকে বলে হয়, জ্ঞান "যা আহরিত" ঘটনার ফলশ্রুতিতে। "আহরিত" শব্দটির সত্যিকারের অস্তিত্ব তখনি হয় যখন এর একটি বাস্তব প্রতিরূপ থাকে। এই সকল ক্ষেত্রে, যে জ্ঞানের অর্থ দাঁড়ায় "অবরোহী", যার মানে হল পূর্বে। কোন অভিজ্ঞতা অর্জনের ক্ষেত্রে পূর্বের জ্ঞানের মানে হল নির্দিষ্ট "অনুমান" রয়েছে যাতে অন্যরা সম্মত পোষণ করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনাকে একটি চেয়ার সম্পর্কে বলা হয়, তা আপনার কাছে স্পষ্ট যে, চেয়ারটি একটি স্থানে রয়েছে, এটি ত্রিমাত্রিক। এই জ্ঞান সেই জ্ঞান নয় যে একজন "ভুলে যাবে", এমনকি স্মৃতিভ্রংশতায় ভুগছেন এমন যে কাছেও বিশ্বের জগতটি একটি ত্রিমাত্রিক অভিজ্ঞতা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

যদিও হারাওয়ের যুক্তিগুলো মূলত নারীবাদী পড়াশুনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা, বিভিন্ন জগতের এই ধারণাগুলো, সেই সাথে পরিস্থিতি গত জ্ঞানের সংশয়বাদী ভঙ্গিমায় প্রাক-গঠনতন্ত্রের প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল। মৌলিকভাবে, উভয়ই যুক্তি প্রদান করে জ্ঞানের বিকল্প ব্যবস্থার জন্য ইতিহাস; ক্ষমতা, এবং ভূগোলের উপস্থিতিতে, সেইসাথে সার্বজনীন নিয়ম বা আইন বা প্রাথমিক কাঠামো প্রত্যাখ্যানে যুক্তি প্রদান করে; এবং উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ক্ষমতার ধারণাকে আপত্তি জানায়।[১৪]

আংশিক জ্ঞান

জ্ঞানতত্ত্বের একটি অনুষদ আংশিক জ্ঞানের উপর আলোচনা করে। অধিকাংশ ঘটনার ক্ষেত্রে, বিস্তারিত ভাবে একটি তথ্যের পরিধি সহজে বোঝা সম্ভব হয় নয়; আমাদের জ্ঞান সবসময় অসম্পূর্ণ বা আংশিক থাকে। অধিকাংশ বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে হয় সমস্যাটির প্রসঙ্গ বিষয়ে আমাদের আংশিক জ্ঞান থেকে এবং সমস্যাটির তথ্য উপাত্ত থেকে, এটা আমাদেরকে শিখানো স্কুলের সাধারণ গাণিতিক সমস্যা নয় যে এখানে সকল তথ্য-উপাত্ত দেয়া থাকবে এবং তার এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল নিয়ম কানুন জানা থাকবে।

বিচারশক্তি দ্বারা বাধাঁ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এই ধারণাটি আরও বেশি প্রযোজ্য যেখানে ধারণা করা হয় যে বাস্তব জীবনে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানুষকে প্রায়ই একটি সীমিত পরিমাণ তথ্য নিয়ে কাজ করতে হয় এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

সম্ভাব্য অনুমান হল সেই ক্ষমতা যার মাধ্যমে কোন বাধা ছাড়াই বা যুক্তির ব্যবহার ছাড়াই আংশিক জ্ঞান অর্জন করার সম্ভব।[১৫] একজন একক ব্যক্তি হয়তবা একটা ঘটনা সম্পর্কে "জানতে পারে" কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় তার এই সম্পর্কে তার জ্ঞানটি হল তা ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয় না।

বৈজ্ঞানিক জ্ঞান

স্যার ফ্রান্সিস বেকন "জ্ঞানই শক্তি"

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উন্নয়ন কীভাবে জড়জগৎ ও তার বৈশিষ্ট্যগুলো কাজ করে তার উপর জ্ঞান অর্জনের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে।[১৬] বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হিসাবে আখ্যায়িত করতে হলে, তদন্তপদ্ধতিটি হতে হবে পর্যবেক্ষণযোগ্য ও পরিমাপযোগ্য প্রমাণসহ বিষয়ভিত্তিক সুস্পষ্ট কারণ দর্শণ করে ও পরীক্ষণের মূলনীতির উপর ভিত্তি করে।[১৭] বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিটি গঠিত পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ নিয়ে এবং অনুমান প্রণয়ন ও এর উপর পরীক্ষণ করে।[১৮] বিজ্ঞান এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের ধরন উভয়ই দর্শনের বিষয়। যেহেতু বিজ্ঞান নিজেই বিকশিত হচ্ছে, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এখন তাই একটি বৃহত্তর পরিসরে ব্যবহৃত হচ্ছে,[১৯] এবং নরম জিনিস সমূহের বিজ্ঞান যেমন জীববিদ্যা, সামাজিক বিজ্ঞান এটির অন্তর্ভুক্ত - মেটা-জ্ঞানতত্ত্ব, বা জেনেটিক জ্ঞানতত্ত্ব হিসেবে কোথাও কোথাও এটির আলোচনা করা হয় এবং কোন কোন ক্ষেত্রে এটিকে "জ্ঞানীয় উন্নয়ন তত্ত্ব" বলা হয়। উল্লেখ্য যে,"জ্ঞানতত্ত্ব" হল জ্ঞানের অধ্যয়ন এবং সেটা কীভাবে অর্জিত হয় তার জ্ঞান। বিজ্ঞান হল "সেই প্রক্রিয়া যেটিতে দৈনন্দিন জীবনের চিন্তা-চেতনাকে যুক্তি সহকারে ব্যবহার করা হয় হিসাবকৃত পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্বারা।" স্যার ফ্রান্সিস বেকন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ঐতিহাসিক বিকাশে একজন মহত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন; তিনি একই সাথে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের উদ্ভাবন প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠিত করেন এবং সেটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। তাঁর বিখ্যাত বাণী, "জ্ঞানই শক্তি", যা খুঁজে পাওয়া যায় মেডিটেশন সাক্রায় (১৫৯৭) বইয়ে।[২০]

সাম্প্রতিক সময়ের আগ পর্যন্ত, অন্তত পশ্চিমা ঐতিহ্যে, এটা সাধারণভাবে ধরে নেয়া হত যে জ্ঞান একমাত্র মানুষই ধারণ করতে পারে - এবং শুধুমাত্র পূর্ণ বয়স্ক মানুষ দ্বারাই এটি সম্ভব। কখনও কখনও এই ধারণাও প্রচলিত ছিল যে (ii) কিছু সোসাইটিতে যেমন, (উদা:) যেখানে "জ্ঞান শুধুমাত্র কাপটিক সংস্কৃতির মানুষই ধারণ করতে পারে" (যা তার প্রতিটি সদস্যের ক্ষেত্রে বিপরীতমুখী), কিন্তু এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। আবার অবচেতন জ্ঞানকে নিয়ম মাফিক ব্যবস্থা হিসাবে ধরে নেয়াটাও স্বাভাবিক ছিল না, যতক্ষণ না পর্যন্ত ফ্রয়েড এই পদ্ধতিটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন।[২১]

অন্যান্য জৈবিক ডোমেইনে, যেখানে "জ্ঞান" প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলা হয়ে থাকে, এর মধ্যে রয়েছে: (iii) ইম্মউনে সিস্টেম, এবং (iv) জেনেটিক কোডের ডিএনএ। চারটি "এপিস্টেমোলজিকাল ডোমেইনের" তালিকা হল: পপার, (১৯৭৫),[২২] এবং ট্রেইল (২০০৮:[২৩] টেবিল এস, পৃষ্ঠা ৩১)- এ দুটোর উভয়ই নিল্স জারনা কর্তৃক সমর্থিত।

এই সকল বিষয় বিবেচনা করে "জ্ঞানের" একটি আলাদা সংজ্ঞা তৈরি করার প্রয়োজন অনুভূত হয় যেখানে জৈবিক ব্যবস্থাগুলো সংযুক্ত করা যাবে। জীববিজ্ঞানীদের জন্য, জ্ঞানের প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে উপস্থিত থাকা অতাবশ্যক, যদিও সেই ব্যবস্থাটি নিজে আত্ম সচেতক হওয়ার প্রয়োজন নেই। সুতরাং মানদণ্ডটি হতে হবে:

  • পুরো প্রক্রিয়াটি হওয়া উচিত দৃশ্যৎ গতিশীল এবং স্ব-সংগঠিত (তা নিজে একটি নিছক বইয়ের মত হলে হবে না)
  • জ্ঞান গঠন করতে হবে এমন কিছু বিষয় সাজানোর মাধ্যমে যাতে "বাইরে বিশ্বের" বিষয়বস্তু উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রকাশ পায়,[২৪] বা সেটা (প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে) এর সাথে কাজ করার উপায় হয়।
  • কিছু ব্যবস্থা উপস্থিত থাকা আবশ্যক যাতে এই তথ্য ব্যবহার করে কাজে লাগানোর যায় যথেষ্ট দ্রুততার সাথে ।

বৈজ্ঞানিক জ্ঞান নিশ্চয়তা প্রদানের দাবীর সাথে জড়িত হতে পারবে না, সংশয়বাদ বজায় রেখে অর্থাৎ একজন বিজ্ঞানী সুনির্দিষ্ট আকারে কখনই বলতে পারবে না কোন পরিস্থিতিতে সে সঠিক ও কখন সঠিক নয়। এটি একইসাথে সঠিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রতি একটি পরিহাস, যেখানে একজনকে অবিশ্বাস করা হবে যদিওবা সে সঠিক, এটা করা হয় এই আশায় যে এই অনুশীলনের ফলে সাধারণভাবে সত্য অন্বেষণের পথ আরও বৃহত্তর অভিসারে অগ্রসর হবে।[২৫]

ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে জ্ঞান

খ্রিস্ট ধর্মের বিভিন্ন অভিব্যক্তিতে, যেমন ক্যাথলিকিজমে এবং অ্যাংলিক্যানিজমমে, জ্ঞান হল ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত সাতটি উপহারের একটি।[২৬]

ওল্ড টেস্টাম্যান্ট পবিত্র গ্রন্থে ভাল ও মন্দ জ্ঞানের বৃক্ষের বিবরণ রয়েছে যেটি জ্ঞান ধারণ করা হত ঈশ্বর থেকে মানুষকে পৃথক করতে।" এবং প্রভু ঈশ্বর বললেন, 'দেখ, আজ মানুষ আমাদের মত একজন হয়েছে, যে ভালো এবং মন্দের পার্থক্য বুঝে..." (টেমপ্লেট:বাইবেল উদ্ধৃতি)

নাস্তিসিজমে, জ্ঞান ঐশ্বরিক ভাবে বা আধ্যাত্মিক ভাবে অর্জন করতে হবে বলে আশা করা হয়।

विद्या दान (বিদ্যা দান) অর্থাৎ জ্ঞান ভাগ করে দেওয়া দানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এটি প্রকৃতপক্ষে অত্যাবশকীয় নিয়ম, সকল ধর্ম মতবাদে[২৭] হিন্দু ধর্মগ্রন্থে দুই ধরনের জ্ঞানের কথা প্রকাশ পায়, পরোক্ষ জ্ঞানপ্রত্যোক্ষ জ্ঞান । পারোক্ষ জ্ঞান (এছাড়াও এর বানানপারোখশা-গ্যানা) এর মানে হল পরোক্ষ জ্ঞান: যে জ্ঞান প্রাপ্তি হয় বই, জনশ্রুতি, ইত্যাদি থেকে। 'প্রাটাখশ্‌' জ্ঞান (এছাড়াও এর বানান প্রাটাখশা-গ্যানা) হল যে জ্ঞান প্রাপ্তি হয় সরাসরি অভিজ্ঞতার আলোকে অর্থাৎ যে জ্ঞান ব্যক্তি নিজে আবিষ্কার করে।[২৮] গ্যানা-ইয়োগা ("জ্ঞানের পথ") হল কৃষ্ণ কর্তৃক উদ্ভাবিত যোগব্যায়ামের তিনটি প্রধান ধরনের একটি, যার বিবরণ ভগবত গীতায় রয়েছে। (এটার তুলনা ও পার্থক্য করা হয় ভক্তি যোগব্যায়াম এবং কর্ম যোগব্যায়ামের সাথে)।

ইসলামে জ্ঞানকে (আরবি: علم, ইলম) বিবেচনা করা হয় অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হিসাবে। "মহাজ্ঞানী" (আল-ʿআলিম) হল কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত আল্লাহর ৯৯টি নামের একটি। কুরআন অনুসারে ধর্মীয় জ্ঞান প্রাপ্তি সম্ভব হয় আল্লাহর বাণী থেকে (২:২৩৯) এবং বিভিন্ন হাদিসে জ্ঞান অর্জনের জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। জানা যায় যে মুহাম্মদ বলেছিলেন "দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণ কর "https://www.youtube.com/watch?v=FBbuwYBvrls&ab_channel=EaminBinEmdad[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এবং তিনি আরও বলেছিলেন "জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরয"।[২৯] ইসলামিক পণ্ডিতগণ, ইসলামিক বিশ্লেষক এবং কাজীগণকে প্রায়শই ডাকা হয় আলিম বলে, যার অর্থ "জ্ঞানী"।

ইহুদি ধর্মের ঐতিহ্যে, জ্ঞানকে (হিব্রুতে: דעת দা বাথ)  বিবেচনা করা হয় সবচেয়ে মূল্যবান বৈশিষ্ট্য হিসাবে যা একজন ব্যক্তি অর্জন করতে পারে। আচারনিষ্ঠ ইহুদীরা দিনে তিনবার আবৃত্তি করেন আমিদাহ, যার অর্থ "নিরপক্ষভাবে আমাদের জ্ঞান, বুদ্ধি-বিবেচনা ও পথ প্রদর্শন করুন যা আপনার কাছ থেকে আসে। হে মর্যাদাপূর্ণ, অধিষ্ঠিত - প্রভু, পরম করুণাময় জ্ঞান দাতা ।" টানাক্সে বিবৃত রয়েছে, "একজন বিজ্ঞ মানুষ ক্ষমতা লাভ করে এবং একজন বিজ্ঞ মানুষ ক্ষমতা রাখে" এবং "জ্ঞানকে নির্বাচন করা হয় স্বর্ণের চেয়েও উপরে"।

পরিমাপক হিসাবে ধার্মিকতা (ধর্মের সামাজিকতা)

সমাজবিজ্ঞানী মারভিন ভারবিটের বক্তব্য অনুসারে, জ্ঞানকে ধার্মিকতার একটি মূল উপাদান হিসাবে দেখা যেতে পারে। যেখানে ধর্মীয় জ্ঞান নিজেই চারটি ভাগে বিভক্ত হতে পারে, যেগুলো হল :

  • বিষয়বস্তু
  • ফ্রিকোয়েন্সি
  • তীব্রতা
  • কেন্দ্রীয়তা

ধর্মীয় জ্ঞানের বিষয়বস্তু ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে তারতম্য হতে পারে, একই সাথে যেমনটি ভিন্ন হতে পারে ব্যক্তির মনে (ফ্রিকোয়েন্সি) এর ব্যাপ্তির মাত্রার ক্ষেত্রে, জ্ঞানের তীব্রতার ক্ষেত্রে এবং তথ্যের কেন্দ্রীয়তার ক্ষেত্রে (ঐ ধর্মীয় ঐতিহ্য অথবা ঐ ব্যক্তির জন্য)।[৩০][৩১][৩২]

আরও দেখুন

  • জ্ঞানের বিষয়বস্তুসমূহ- জ্ঞানের সকল বিষয়গুলোকে উপস্থাপন করা হয়েছে ট্রি-স্ট্রাকচারের মাধ্যমে সাবট্রপিকের লিষ্ট সহ।
  • জ্ঞানের বিউপনিবেশায়ন
  • জ্ঞানের ইহজাগতিকীকরণ
  •  এনালাইটিক-সিনথেটিকের পার্থক্য
  •  এপিস্টেমিক মোডেল লজিক
  •  ইন্ডাক্টিভ ইন্টারফারেন্স
  •  ইন্ডাক্টিভ প্রোবাবিলিটি
  •  বুদ্ধিমত্তা
  •  মেটানলেজ
  •  দর্শনতত্ত্বের সংশয়বাদ
  •  সোসাইটি ফর দা ডিফিউশন অফ ইউজফুল নলেজ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

  • জ্ঞান সম্পর্কে দেখুন ইন্টারনেট এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি, আইএসএসএন ২১৬১-০০০২, ৯ মার্চ ২০১৭।
  • "জ্ঞানের মূল্য" - স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি
  • "জ্ঞানের বিশ্লেষন" - স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি
  • "অভিজ্ঞতা বনাম বর্ণনা থেকে জ্ঞান অর্জন" - স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি
  • জ্ঞান দেখুন - ইন্ডিয়ানা ফিলোসফি অন্টোলোজি প্রজেক্টের আওতায়
🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী