জিমটিভি
জিমটিভি (আরবি: تلفزيون جيم), পূর্বে আল জাজিরা চিল্ড্রেন'স চ্যানেল (জেসিসি তে সংক্ষিপ্ত) (আরবি: قناة الجزيرة للأطفال), ৭ থেকে ১২ বছরের শিশুদের লক্ষ্য করা একটি কাতারভিত্তিক পে টেলিভিশন চ্যানেল, যা ২০১৬ সালের আগে ফ্রি-টু-এয়ার ছিল। উদ্বোধন থেকে এটি পূর্বে আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক এবং কাতার ফাউন্ডেশন দ্বারা সহ-মালিকানাধীন ছিল ২০১৩ সালের জুনে, যখন আল জাজিরা চ্যানেলটির সম্পূর্ণ অধিকার অর্জিত করে।[১] পরে এটিকে বিইন মিডিয়া গ্রুপ ক্রয় করে ২০১৬ সালের ১ এপ্রিলে।
জিমটিভি تلفزيون جيم | |
---|---|
উদ্বোধন |
|
বন্ধ |
|
মালিকানা | আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক (২০০৫–২০১৬) কাতার ফাউন্ডেশন (২০০৫–২০১৩) বিইন মিডিয়া গ্রুপ (২০১৬–বর্তমান) |
চিত্রের বিন্যাস | ৪২০পি (২০০৫–২০১১) ৭২০পি (২০১১–২০১৬) ১০৮০পি (এসডিটিভি ফিডের জন্য ৫৭৬আইতে ডাউনস্কেল করা; ২০১৬–বর্তমান) |
ভাষা | আরবি |
প্রধান কার্যালয় | দোহা, কাতার |
পূর্বতন নাম | আলজাজিরা চিল্ড্রেন'স চ্যানেল (২০০৫–২০১৩) |
ভ্রাতৃপ্রতিম চ্যানেল(সমূহ) | |
ওয়েবসাইট | www.jeemtv.net jcctv.net (আর্কাইভ করা) |
ইতিহাস
২০০৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে কাতার ফাউন্ডেশন (চ্যানেলটির ৯০% মালিকানা নেয়) এবং আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্কের (বাকি ১০% মালিকানা পায়) মধ্যে একটি যৌগ উদ্যোগ হিসেবে চ্যানেলটি জেসিসি নামে সম্প্রচার শুরু করে। চ্যানেলের রূপটি গেদেওন পরিকল্পনা করে।
জেসিসির জন্য প্রথম পরিবর্তন ঘটে ২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারিতে, ভ্রাতৃপ্রতিম বারা'ইমের উদ্বোধনের সাথে। এই সময়, রেডিয়েন্ট স্টুডিও উভয় চ্যানেলের রূপের দায়িত্বে ছিল, এবং উভয়ই ইতিবাচক পর্যালোচনার সাথে দেখা হয়েছিল।[২] লন্ডন-ভিত্তিক ফাউন্ড্রি ফন্টস্মিথ সম্প্রচারে ব্যবহৃত ফন্টটি সংশোধন করেছে, যা নতুন ২.৫ডি লোগোতে চিত্রিত। বারা'ইমের উদ্বোধনের কারণে এটির বয়স যোগ্যত ৩ থেকে ১৫ থেকে ৭ থেকে ১৫ তে পরিবর্তন হয়। ২০১২ সালের ১ নভেম্বরে হটবার্ডে একটি ইউরোপীয় ফিড চালু হয়।
২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারিতে সোশাল মিডিয়ায় জেসিসির একটি নতুন রূপের ঘোষণা করা হয়, সাথে নতুন রূপটি বিস্তারিত করার একটি নতুন ওয়েবসাইট চালু হয় (whatisthedot.net, বর্তমানে jeemtv.net এ পুনঃনির্দেশ হয়),[৩] যা ১ মার্চে চালু হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা বিলম্বিত হয়েছে। অবশেষে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চের দোহা সময়ে বিকাল ৫টায় জেসিসি জিমটিভিতে রূপান্তর হয়।[৪][৫][৬] এটির নাম, "জিম", আরবি বর্ণমালার ج অক্ষরটি উল্লেখ করে, যা লোগোতে চিত্রিত। লোগোটি পরিকল্পনা করেন তারেক আত্রিসি, সাথে সম্প্রচারের রূপটি তৈরি করে জাম্প ডিজাইন। এটির বয়স যোগ্যতাও ৭ থেকে ১৫ থেকে ৭ থেকে ১২ তে পরিবর্তন হয়।
২০১৩ সালের ১৫ জুনে, জিমটিভিতে রূপান্তরের তিন মাস পর, আল জাজিরা চ্যানেলের কাতার ফাউন্ডেশন সম্পদ ক্রায় করার ঘোষণা দেয়, এবং তখন থেকেই চ্যানেলের পুরো মালিকানা নেয়।[৭]
২০১৬ সালের ১ এপ্রিলে শুধু বিইন চ্যানেলস নেটওয়ার্ক সার্ভিসে উপলব্ধ এইচডি ফিডের পক্ষে আরবস্যাট এবং নাইলস্যাটে জিমটিভি এবং বারা'ইম চ্যানেলগুলিকে এনক্রিপ্ট করা হয়।
হটবার্ডে চ্যানেলটির ইউরোপীয় ফিডটি ২০১৮ সালের ১ জুনে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানসমূহ
শিশুদের বৈশিষ্ট্যযুক্ত বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে বিতর্ক অনুষ্ঠান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং খেলাধুলা, কুইজ এবং গেম-শো, এবং কার্টুন এবং অ্যানিমেশন অনুষ্ঠানের মতো থিম কভার করা শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান। চ্যানেলটি এটির কিছু নিজস্ব কার্টুন অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য অ্যানিমেশনও তৈরি করে, যেমন ২০০৭ সালে প্রচারিত মাই আরাবিয়ান হাউজ, যা লাইভ-অ্যাকশন এবং পুতুল দেখিয়েছে।[৮] জিমটিভি সারা বিশ্বের অন্যান্য সরকারি চিলড্রেন চ্যানেলের সাথে সহ-প্রযোজনায় অংশগ্রহণ করে। বাকি বিষয়বস্তুতে রয়েছে আন্তর্জাতিক মার্কেট থেকে বিদেশি অনুষ্ঠান। ভয়েসওভার, ডাবিং, অথবা সাবটাইটেলের মাধ্যমে বিদেশি ভাষার অনুষ্ঠান আরবিতে অনুবাদ করা হয়।
জিমটিভি একটি ইন্টারেক্টিভ ওয়েবসাইট সহ শেখার এবং সৃজনশীলতার জন্য এটির মাল্টিমিডিয়া প্রোগ্রাম তৈরি করেছে। ওয়েবসাইটটি আরবি এবং ইংরেজিতে এবং ২০০ ঘণ্টার বেশির শিক্ষামূলক এবং বিনোদন বিষয়বস্তু প্রদান করে। সদস্যরা উনাদের ছবি এবং ভিডিও আপলোড করতে পারবে এবং বিশ্বজুড়ের অন্যান্য শিশুদের সাথে শেয়ার করতে পারবে।
২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারির থেকে ৩ থেকে ৬ বছরের শিশুদের জন্য অনুষ্ঠানসমূহ বারা'ইমে প্রচারিত হয়।
উপস্থাপক এবং মাসকট
মানুষ উপস্থাপক
এটির অনুষ্ঠানসমূহ হোস্ট করার জন্য চ্যানেলটির কাছে অনেক গুলো উপস্থাপক আছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় উপস্থাপকের মধ্যে কিছু হচ্ছে আশরাফ আল-আওয়াদি (আরবি: اشرف العوضي; ২০০৫-বর্তমান), সাহলা মেলকি (আরবি: سهلة المالكي, ২০০৫-প্রায় ২০১৫), জিহানে আর্সানিওস (আরবি: جيهان ارسانيوس, ২০০৫-বর্তমান), মারওয়া খামিস (আরবি: مروة خميس, প্রায় ২০০৭-বর্তমান), মোহাম্মদ আলী বুগমা (আরবি: محمد علي بوغمة, ২০০৫-২০১৩) এবং অন্যান্যরা।
মাসকট এবং পুতুল
উদ্বোধন থেকে চ্যানেলটির মাসকট ছিল নাদ (আরবি: ناد) নামের একটি সিজিআই রোবট, যিনি নির্বাচিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতো, এবং আশরাফ আল-আওয়াদি দ্বারা উনাকে কণ্ঠ দেওয়া হয়। উনি ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবসর করে।
২০০৭ সালে আল্লো মারহাবার প্রথম প্রচারের সাথে একটি নতুন মাসকটের প্রবর্তন হয়। উনি ছিলেন কালো চুলের একটি হলুদ রঙের পুতুল, এবং নাম ছিল আনবার (আরবি: عنبر), নাদের অসদৃশ আজকেও চ্যানেলে আনবার উপস্থিত হতে থাকে।
২০১০ সালের কোথাও আর একটি মাসকটের প্রবর্তন হয়, লাহুহ (আরবি: لحوح) নামের বেগুনি চুলের সাথে একটি লাল পুতুল। উনি আনবারের সঙ্গে অথবা নিজেই উপস্থিত হয়।
সম্প্রচার
উদ্বোধন থেকে ২০০৭ সালের গ্রীষ্মকালের পর্যন্ত জেসিসি সপ্তাহের দিনে ১৮ ঘণ্টার জন্য (দোহা সময়ে সকাল ৬টার থেকে মধ্যরাত ১২টার পর্যন্ত) এবং সপ্তাহান্তের দিনে ১৯ ঘণ্টার জন্য (সকাল ৬টার থেকে মধ্যরাত ১টার পর্যন্ত) সম্প্রচার করেছে। ২০০৭ সালের জুনের শেষে জেসিসি এটির সম্প্রচারের সময় সপ্তাহের দিনে ২০ ঘণ্টা (সকাল ৬টার থেকে মধ্যরাত ২টার পর্যন্ত) এবং সপ্তাহান্তের দিনে ২১ ঘণ্টায় (সকাল ৬টার থেকে মধ্যরাত ৩টার পর্যন্ত) বাড়ানো হয়। ২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারিতে পরিবর্তনের সাথে সম্প্রচারের সময় আবারও পরিবর্তন হয়, এই সময় উভয় সপ্তাহের এবং সপ্তাহান্তের দিনে ২০ ঘণ্টার জন্য।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে উভয় জেসিসি এবং বারা'ইম ৭২০পি রেজোলিউশনে ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিওতে সম্প্রচার করা শুরু করে, কাকতালীয়ভাবে জেসিসির ষষ্ঠ বার্ষিকীর সাথে।
২০১২ সালের অক্টোবর থেকে চ্যানেলটি ২৪ ঘণ্টার জন্য সম্প্রচার করে।
জিমটিভি বাদর, আরাবস্যাট, হটবার্ড, এবং ইউরোবার্ডে ফ্রি-টু-এয়ার ছিল, এবং ইউরোপ জুড়ে অনেকগুলো অন্যান্য অপারেটর চ্যানেলটি বিতরণ করেছে। যদিও ২০১৬ সালের ১ এপ্রিলে এটি শুধু বিইন চ্যানেলস নেটওয়ার্ক সার্ভিসে উপলব্ধি করা হয়, ২০১৮ সালের ১ জুনে হটবার্ড ফিডটি ফ্রি-টু-এয়ার রয়ে গেলো।
আরও দেখুন
- আল জাজিরা
- বিইন