গ্রাহাম ম্যাকেঞ্জি

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

গ্রাহাম ডগলাস ম্যাকেঞ্জি (ইংরেজি: Graham McKenzie; জন্ম: ২৪ জুন, ১৯৪১) পার্থের কটস্লো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ও বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ বোলার ছিলেন।

গ্রাহাম ম্যাকেঞ্জি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
গ্রাহাম ডগলাস ম্যাকেঞ্জি
জন্ম (1941-06-24) ২৪ জুন ১৯৪১ (বয়স ৮৩)
কটস্লো, পার্থ, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কএরিক ম্যাকেঞ্জি (বাবা)
ডগলাস ম্যাকেঞ্জি (কাকা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২২০)
২২ জুন ১৯৬১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৯ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম ইংল্যান্ড
একমাত্র ওডিআই
(ক্যাপ )
৫ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৭৯-১৯৮০ট্রান্সভাল
১৯৬৯-১৯৭৫লিচেস্টারশায়ার
১৯৬০-১৯৭৪পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টওডিআইএফসিএলএ
ম্যাচ সংখ্যা৬০৩৮৩৭৫১৫
রানের সংখ্যা৯৪৫৫৬৬২৫১৯
ব্যাটিং গড়১২.২৭১৫.৬৪১১.২৮
১০০/৫০০/২০/১৮০/০
সর্বোচ্চ রান৭৬৭৬৪১*
বল করেছে১৭৬৮১৬০৭৬৭৮০৭৫১৫
উইকেট২৪৬১২১৯২১৭
বোলিং গড়২৯.৭৮১১.০০২৬.৯৬১৯.৫৫
ইনিংসে ৫ উইকেট১৬৪৯
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং৮/৭১২/২২৮/৭১৫/১৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং৩৪/০১/০২০১/০৩৮/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ জানুয়ারি ২০১৬

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া, ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার ও দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। ১৯৬৫ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে মনোনীত হন গ্রাহাম ম্যাকেঞ্জি। অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলারদের পথিকৃৎ অ্যালান ডেভিডসনের স্থলাভিষিক্ত হন ও পরবর্তীকালে ডেনিস লিলি তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। ম্যাকেঞ্জি মূলতঃ তার পেশীবহুল গড়ন ও চমৎকার ব্যাটিং উপযোগী পীচে উইকেট লাভের দক্ষতার জন্য পরিচিত হয়ে আছেন।

প্রারম্ভিক জীবন

ক্রীড়াপ্রেমী পরিবারে তার জন্ম। বাবা এরিক ম্যাকেঞ্জি ও কাকা ডগলাস ম্যাকেঞ্জি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলেছেন। কমিক স্ট্রিপের নায়ক ‘গার্থ’ ম্যাকেঞ্জি অনুসরণে তাকে ডাক নামে ডাকা হয়।

কিশোর অবস্থায় ম্যাকেঞ্জি অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফ স্পিনে দক্ষ ছিলেন। ১২ বছর বয়সে ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অনূর্ধ্ব-১৪ দলের আন্তঃরাজ্য প্রতিযোগিতায় খেলার সুযোগ পান। কিন্তু পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় পোলিও মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় দল প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। পরের মৌসুমে পার্থে অনুষ্ঠিত ঐ প্রতিযোগিতায় রাজ্য দলের অধিনায়কত্ব করেন ও দলকে চ্যাম্পিয়নশীপ করতে সহায়তা করেন।[১]

জন কার্টিন হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন। সেখানে বিদ্যালয়ের প্রথম একাদশে ব্যাট ও বল উভয় বিভাগে ভাল করেন। ষোল বছর বয়সে ক্লেয়ারমন্ট-কটস্লো দলের পক্ষে ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম স্তরভিত্তিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। কিন্তু, ক্রীড়াশৈলীতে ধারাবাহিকতা না থাকায় তাকে দ্বিতীয় একাদশে অবনমন করা হয়। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে দ্বিতীয় স্তরভিত্তিক ক্রিকেট খেলতে থাকেন ও পেস বোলারের অভাব থাকায় বোলিং করে ১৪.৫০ গড়ে ৫০ উইকেট পান।

১৯৫৯-৬০ মৌসুমে পুনরায় দলের প্রথম একাদশে অন্তর্ভুক্ত হন। ঐ মৌসুমে ৩৯.৪৬ গড়ে ৫১৫ রান ও ১১.২১ গড়ে ৪৯ উইকেট পান। এরফলে রাজ্য দলনির্বাচকমণ্ডলী মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় ভিক্টোরিয়া বিপক্ষে অংশগ্রহণের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানায়। খেলায় তিনি কোন উইকেট পাননি এবং ২২ ও ৪১ রান তোলেন। পার্থে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত খেলায় তিনি তার প্রথম উইকেট লাভ করেন। মৌসুম শেষে দলীয় অধিনায়ক কেন মিউলম্যান তাকে ফাস্ট বোলিংয়ে মনোনিবেশ ঘটানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।[১]

খেলোয়াড়ী জীবন

শেফিল্ড শিল্ডে চমকপ্রদ ক্রীড়াশৈলীর প্রেক্ষিতে ১৯ বছর বয়সে তাকে ১৯৬১ সালের অ্যাশেজ সফরে রিচি বেনো’র নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম সদস্য মনোনীত হন। লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তার অভিষেক ঘটে। খেলায় তিনি ৫/৩৭ লাভ করেন। তন্মধ্যে, শেষ তিন উইকেট দখল করেন মাত্র ১২ বলে। ঐ খেলায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার দল ৫ উইকেটে জয় পায়।

১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেন। এরপর ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে ভারত সফরে যান। কিন্তু, ভারতের বিপক্ষে একমাত্র দশ উইকেট প্রাপ্তির পর শেষ দুই খেলায় তাকে নেয়া হয়নি। ধারণা করা হয় যে, ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উপর তার আধিপত্য বিস্তারের ফলে এ সিরিজে দর্শকদের অংশগ্রহণ কমে যাবে।[২]

১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৫.২৬ গড় ৩০ উইকেট পান। ২৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ টেস্ট উইকেট পান যা একসময় রেকর্ড হিসেবে পরিগণিত হয়েছিল।[২] একই মৌসুমে ভারত সফরে ২১.০০ গড়ে ২১ উইকেট পান। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪ টেস্টে অংশ নিয়ে ১/৩৩৩ পেয়েছিলেন ও তার দল হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল।

১৯৭০-৭১ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম চার টেস্টে অংশ নেন। ওয়াকা গ্রাউন্ডে প্রথম টেস্টে খেলার পর মেলবোর্নে একদিনের আন্তর্জাতিকের ইতিহাসের প্রথম ওডিআইয়ে ২/২২ পান। পার্থে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে ৪/৬৬ লাভ করেন। সিডনিতে অনুষ্ঠিত ৪র্থ টেস্টে ইংরেজ ফাস্ট বোলার জন স্নো’র বাউন্সারে মুখে আঘাত পেলে রিটায়ার্ড হার্ট হন। স্নো’র ৭/৪০-এর ফলে ইংল্যান্ড দল ২৯৯ রানে ব্যবধানে জয়ী হয়।[৩] আরোগ্যলাভের পর সিরিজ নির্ধারণী সপ্তম টেস্ট শুরুর পূর্বে প্রস্তুতিকালীন খেলায় জিওফ্রে বয়কটের হাত ভেঙ্গে ফেলেন।[৪] কিন্তু ঐ টেস্টে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এরফলে তার উইকেট সংখ্যা ২৪৬ রয়ে যায় যা রিচি বেনো’র অস্ট্রেলীয় রেকর্ডের চেয়ে মাত্র দুইটি কম ছিল।

অবসর

১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলা চালিয়ে যান। ১৯৭৭ সালে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর ভেঙ্গে ক্যারি প্যাকারের বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে অংশ নেন। এরপর তার পরিবার দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে যায় ও সেখানে তিনি ঘরোয়া সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অংশ নেন। এরপর পুনরায় পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন।[২]

প্রথম পশ্চিম অস্ট্রেলীয় হিসেবে ১৯৬৫ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।[১] ২০১০ সালে ম্যাকেঞ্জিকে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৫]

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী