গনসালো ইগুয়াইন

আর্জেন্টিনীয় ফুটবলার
(গঞ্জালো ইগুয়াইন থেকে পুনর্নির্দেশিত)

গনসালো হেরার্দো হিগুয়াইন (ইংরেজি: Gonzalo Gerardo Higuaín, উচ্চারিত: [ɡonˈsalo iɰwaˈjin]; জন্ম ১০ ডিসেম্বর ১৯৮৭) একজন প্রাক্তন আর্জেন্টিনীয় পেশাদার ফুটবলার।

গনসালো হিগুয়াইন
২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপ-এ আর্জেন্টিনা দল এর সাথে ইগুয়াইন।
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগনসালো হেরার্দো হিগুয়াইন
জন্ম (1987-12-10) ১০ ডিসেম্বর ১৯৮৭ (বয়স ৩৬)
জন্ম স্থানব্রেস্ত, ফ্রান্স
উচ্চতা১.৮৪ মিটার (৬ ফুট  ইঞ্চি)[১]
ক্লাবের তথ্য
বর্তমান দল
ইন্টার মিয়ামি
জার্সি নম্বর
যুব পর্যায়
১৯৯৭–২০০৫রিভারপ্লেট
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছরদলম্যাচ(গোল)
২০০৫–২০০৬রিভারপ্লেট৩৫(১৩)
২০০৭–২০১৩রিয়াল মাদ্রিদ১৯০(১০৭)
২০১৩–২০১৬নেপোলি১০৪(৭১)
২০১৬–জুভেন্টাস৭৩(৪০)
২০১৮–২০১৯মিলান (ধারে)১৫(৬)
২০১৯চেলসি (ধারে)(২)
২০২০-২০২২ইন্টার মিয়ামি৬৭(২৯)
জাতীয় দল
২০০৮আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব ২৩(২)
২০০৯-২০১৮আর্জেন্টিনা৭৫(৩১)
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১ জানুয়ারী ২০২৪ তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক।
‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১ জানুয়ারী ২০২৪ তারিখ অনুযায়ী সঠিক।

হিগুয়াইন ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে তিনি আর্জেন্টিনার নাগরিকত্ব পান, এবং বর্তমানে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে আছেন।

প্রারম্ভিক জীবন

ইগুয়াইন ফ্রান্সের ব্রেস্তে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হোর্হে ইগুয়াইন ছিলেন প্রাক্তন আর্জেন্টাইন ফুটবলার, যিনি স্তেদ ব্রেস্তোইস ২৯ ক্লাবের হয়ে খেলতেন। তিনি ছিলেন নির্বাসিত। মাত্র ১০ মাস বয়সে দেশ ছাড়ার পর থেকে ১৯৯৮ ফিফা বিশ্বকাপ পর্যন্ত তিনি আর ফ্রান্সে ফেরেননি। তিনি ঠিকমত ফরাসি ভাষা বলতে না পারলেও তাকে ফরাসি পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে। ইগুয়াইনের ছেলে সন্তানের নাম হগার আলি। তার দুইটি বড় ভাই রয়েছে, নিকোলাস ও ফেদেরিকো এবং তার ছোট ভাই লাউতারো।[২]

ক্লাব ক্যারিয়ার

রিভার প্লেট

ইগুয়াইন যুব দলে খেলতে শুরু করেন এবং ২০০৫ সালের ২৯ মে রিভার প্লেটে তার অভিষেক হয়। জিমনাসিও লা প্লাতার বিপক্ষে খেলায় রিভার প্লেট ২–১ ব্যবধানে পরাজিত হয়।[৩]

২০০৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি, ইগুয়াইন তার প্রথম লিগ গোল করেন। বেনফিল্দের বিপক্ষে খেলায় রিভার প্লেট ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪] ১২ খেলায় ৫ গোল করে ২০০৫–০৬ মৌসুম শেষ করেন ইগুয়াইন।[৫] ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর, বোকা জুনিয়র্সের বিপক্ষে ডার্বিতে তিনি জোড়া গোল করেন। ২০০৬–০৭ মৌসুম তিনি শেষ করেন ১৭ খেলায় ১০ গোল নিয়ে।[৫]

রিয়াল মাদ্রিদ

২০০৬–০৭ মৌসুম

২০০৬ সালের ডিসেম্বরে, স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ১৩ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ইগুয়াইনের সাথে চুক্তি করে।[৬] ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি, রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে কোপা দেল রে’র দ্বিতীয় পর্বের খেলায় তার অভিষেক হয়। ১৪ জানুয়ারি রিয়াল জারাগোজার বিপক্ষে লিগে তার অভিষেক হয়। তিনি অনেকগুলো গোলের সুযোগ তৈরি করেন এবং রিয়াল মাদ্রিদের একমাত্র গোলে সহায়তা করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ২৪ ফেব্রুয়ারি, মাদ্রিদ ডার্বিতে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে তিনি প্রথম গোল করেন। ইস্পানিয়োলের বিপক্ষে খেলার শেষ মিনিটে গোল করে ইগুয়াইন তার দূর্দান্ত নৈপূন্যের পরিচয় দেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৪–৩ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৭] যদিও রিয়াল মাদ্রিদে নিজের প্রথম মৌসুমে, কম সংখ্যক গোলের কারণে, ইগুয়াইন নিজেকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে দেন।

২০০৭–০৮ মৌসুম

২০০৭–০৮ মৌসুমে ইগুয়াইন সবিরাম কর্মক্ষমতার সম্মুখীন হন। যদিও মৌসুমের শেষ দিকে তিনি হৃদয়গ্রাহী নৈপূন্য প্রদর্শন করান। ওসাসুনার বিপক্ষে তিনি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জয়সূচক গোল করেন এবং দলেক ২–১ ব্যবধানের জয় এনে দেন।[৮] চার দিন পর, এল ক্ল্যাসিকোতে বার্সেলোনার বিপক্ষে তিনি গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। বদলি হিসেবে মাঠে নেমে মাত্র ৫৭ সেকেন্ডের মধ্যে তিনি এই গোল করেন।[৯]

২০০৮–০৯ মৌসুম

২০০৮–০৯ মৌসুমে ডাচ স্ট্রাইকার রুড ভান নিস্টেলরুই এর ইনজুরির কারণে প্রথম দলে খুব ভালোভাবেই সুযোগ পান ইগুয়াইন।[১০] ২০০৯ সালের ২১ এপ্রিল, খেতাফের বিপক্ষে তার শেষ মিনিটের গোলে ৩–২ ব্যবধানে জয় পায় রিয়াল মাদ্রিদ[১১] ২০০৮ সালের আগস্টে, স্পেনীয় সূপার কাপের খেলায় ভালেনসিয়ার বিপক্ষে তিনি জয়সূচক গোল করেন।[১২] এর কিছুদিন পর, মালাগার বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদ ৪–৩ ব্যবধানে জয় লাভ করে। খেলায় চারটি গোলই করেন ইগুয়াইন। এর ফলে তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত হয়ে উঠতে শুরু করেন। ইগুয়াইন লিগে ২২ গোল[১৩] এবং সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ২৪ গোল নিয়ে মৌসুম শেষ করেন।

২০০৯–১০ মৌসুম

২০০৯–১০ মৌসুমে লিগে ২৭ এবং সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ২৯ গোল নিয়ে ইগুয়াইন রিয়াল মাদ্রিদের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন। লা লিগায় মৌসুমে তিনি লিওনেল মেসির পেছনে থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন, কিন্তু তিনি জ্লাতান ইব্রাহীমোভিচ এবং সতীর্থ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকে ছাড়িয়ে যান। এই মৌসুমে তিনি চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম দুই গোল করেন এবং রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তার দ্বিতীয় হ্যাট্রিক করেন। তিনি ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপেও অংশগ্রহণ করেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রতিযোগিতার একমাত্র হ্যাট্রিক করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[১৪]

২০১০–১১ মৌসুম

লা লিগায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলছেন ইগুয়াইন।

২০১০ সালের জুনে, ইগুয়াইন রিয়াল মাদ্রিদের সাথে তার চুক্তির মেয়াদ ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে নেন।[১৫] ২০১০ সালের ২৩ অক্টোবর, রেসিং সান্তানদারের বিপক্ষে ইগুয়াইন লিগে রিয়াল মাদ্রিদের ৫২০০তম গোল করেন। খেলায় তারা ৬–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ঐ বছরের ৪ নভেম্বর, তিনি রিয়াল মাদ্রিদের ৭০০তম চ্যাম্পিয়নস লিগ গোল করেন।[১৬]

২০১০ সালের ডিসেম্বরে, তার কটিদেশের চাকতি বৃদ্ধি ধরা পড়ে এবং রিয়াল মাদ্রিদের মেডিকেল কর্মকর্তারা তাকে অস্ত্রোপচার করার জন্য সম্মোহিত করেন।[১৭] ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি, রিয়াল মাদ্রিদ ঘোষণা করে যে শিকাগোর ফেইনবার্গ স্কুল অফ মেডিসিনে ড. রিচার্ড জি. ফেসলার এমডি এর নেতৃত্বে ইগুয়াইনের অস্ত্রোপচার করা হবে।[১৮] অস্ত্রোপচার করা হয় ১১ জানুয়ারি এবং একটি সফল অস্ত্রোপচারের পর, পরের দিনই তাকে হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।[১৯] অস্ত্রোপচারের পর আশা করা হয় যে তার সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে কমপক্ষে চার মাস সময় লাগবে, যদিও তিনি একটু তাড়াতাড়িই ফিরে আসেন। ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল, ভালেনসিয়ার বিপক্ষে তিনি হ্যাট্রিক করেন এবং দলকে ৩–৬ ব্যবধানের জয় এনে দেন। ঐ খেলায় তিনি করিম বেনজেমা এবং কাকার গোলে সহায়তাও করেছিলেন।[২০][২১]

২০১১–১২ মৌসুম

খেতাফের বিপক্ষে খেলার মাধ্যমে এই মৌসুম শুরু করেন ইগুয়াইন। খেলায় তিনি একটি গোল করেন।[২২] ২০১১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর, রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে মৌসুতে ইগুয়াইন তার দ্বিতীয় গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৬–২ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ২০১১ সালের ২ অক্টোবর, ইস্পানিয়োলের বিপক্ষে তিনি মৌসুমে তার প্রথম হ্যাট্রিক করেন এবং দলকে ৪–০ ব্যবধানের জয় এনে দেন।[২৩] ১৫ অক্টোবর, রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে তিনি আবারও হ্যাট্রিক করেন এবং দলকে ৪–১ ব্যবধানের জয় এনে দেন।[২৪] ২৯ অক্টোবর, রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে খেলার একমাত্র গোল করে দলকে জয় এনে দেন ইগুয়াইন। ৬ নভেম্বর, ওসাসুনার বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের ৭–১ ব্যবধানে জয়ের খেলায় তিনি একটি গোল করেন। ২২ নভেম্বর, ডায়নামো জাগ্রেবের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের ৬–২ ব্যবধানে জয়ের খেলায়ও তিনি একটি গোল করেন।

২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে একটি গোল করেন এবং দলকে ৪–১ ব্যবধানের জয় এনে দেন।[২৫] ৭ ডিসেম্বর, চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের শেষ খেলায় আয়াক্সের বিপক্ষে এক গোল করে দলকে ৩–০ ব্যাবধানের জয় এনে দেন ইগুয়াইন।[২৬] ২০১২ সালের ৩১ মার্চ, ওসাসুনার বিপক্ষে জোড়া গোল করেন ইগুয়াইন। যার প্রথমটি ছিল রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তার ১০০তম গোল।[২৭] এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ লিগ শিরোপা জেতে। ইগুয়াইন লিগে ২২ গোল করেন এবং নিজেকে দলের একজন অপরিহার্য খেলোয়াড় হিসেবে প্রমাণ করেন।

২০১২–১৩ মৌসুম

মৌসুমের প্রথম তিন খেলায় ভালেনসিয়া, খেতাফে এবং গ্রানাদার বিপক্ষে একটি করে গোল করেন ইগুয়াইন। ২০১২ সালের ২৯ আগস্ট, স্পেনীয় সুপার কাপের দ্বিতীয় লেগের খেলায় বার্সেলোনার বিপক্ষে রিয়ালের হয়ে প্রথম গোলটি করেন ইগুয়াইন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ২–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[২৮] ২ সেপ্টেম্বর, গ্রানাদার বিপক্ষে ইগুয়াইন একটি গোল করেন এবং দলকে ৩–০ ব্যবধানের জয় এনে দেন। এটি ছিল মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম লিগ ম্যাচ জয়।[২৯] ২০১২ সালের ২৮ অক্টোবর, মায়োর্কার বিপক্ষে তিনি জোড়া গোল করেন এবং দুইটি গোলে সহায়তা করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৫–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৩০] ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, দেপর্তিভো লা করুনার বিপক্ষে খেলার ৮৮তম মিনিটে জয়সূচক গোল করেন ইগুয়াইন। লা লিগায় এটি ছিল তার ১০০তম গোল।[৩১]

২০১৩ সালের ১ জুন, ইগুয়াইন ওসাসুনার বিপক্ষে রিয়ালের হয়ে নিজের ১২১তম গোলটি করেন। খেলা শেষে তিনি ঘোষণা করেন যে গ্রীষ্মকালীন স্থানান্তর মৌসুমে তিনি রিয়াল মাদ্রিদ ত্যাগ করবেন।[৩২]

নাপোলি

২০১৩ সালের ২৪ জুলাই, নাপোলি প্রেসিডেন্ট অওরেলিয়ো দি লওরেন্তিস ঘোষণা করেন যে ইগুয়াইন এবং লিভারপুলের গোলরক্ষক পেপে রেইনা তাদের মেডিকাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং নাপোলির সাথে ইগুয়াইন পাঁচ বছরের চুক্তি সাক্ষর করেছেন।[৩৩] ২৭ জুলাই, নাপোলির পক্ষ থেকে ইগুয়াইনের স্থানান্তর নিশ্চিত করা হয় (£৩৪.৫ মিলিয়ন)।[৩৪] ১০ আগস্ট, বেনফিকার বিপক্ষে নাপোলির হয়ে প্রথম মাঠে নামেন এবং একটি গোল করে দলকে ২–১ গোলের ব্যবধানে জয় এনে দেন ইগুয়াইন।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার

২০১০ ফিফা বিশ্বকাপে জোহানেসবার্গের সকার সিটি স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার খেলায় হ্যাট্রিক করার পর সতীর্থদের সাথে তা উদ্‌যাপন করছেন ইগুয়াইন।

ইগুয়াইন সেই সব তিন জন খেলোয়াড়দের একজন যারা বিদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করে আর্জেন্টিনার হয়ে ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি প্রথমে আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্স উভয় জাতীয় দলের আমন্ত্রন প্রত্যাখ্যান করেন এবং দাবি করেন যে তিনি কোন দলে খেলবেন সেই সিদ্ধান্ত নেননি। পরে তিনি আর্জেন্টিনাকেই বেছে নেন। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে, গুয়েতেমালার বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য ইগুয়াইন আর্জেন্টিনার অলিম্পিক দলে ডাক পান,[৩৫] এবং অভিষেক খেলাতেই জোড়া গোল করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৫–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে, যদিও তা ফিফা দ্বারা স্বীকৃত কোন আন্তর্জাতিক খেলা ছিল না।

২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ

২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে পেরু এবং উরুগুয়ের বিপক্ষে শেষ দুই খেলায় দিয়েগো মেরাডোদোনার দলে জায়গা পান ইগুয়াইন। ২০০৯ সালের ১০ অক্টোবর, পেরুর বিপক্ষে তার পূর্ণ অভিষেকের খেলায় ৪৯তম মিনিটে তিনি একটি গোল করেন এবং দলকে ২–১ ব্যবধানের জয় এনে দেন।[৩৬] আর্জেন্টিনার হয়ে তিনি দ্বিতীয় গোল করেন ২০১০ সালের ৩ মার্চ জার্মানির বিপক্ষে। খেলায় আর্জেন্টিনা ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৩৭] বাছাইপর্বের পর আর্জেন্টিনার ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পান ইগুয়াইন। গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় খেলায় দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেন তিনি।[৩৮] এর আগে আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে হ্যাট্রিক করেছিলেন জুইলের্মো স্তাবিল (১৯৩০) এবং গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা (১৯৯৪ ও ১৯৯৮)।[৩৯] দ্বিতীয় পর্বে মেক্সিকোর বিপক্ষেও তিনি গোল করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪০] প্রতিযোগিতায় তিনি সব মিলিয়ে মোট চারটি গোল করেন।

২০১৪ বিশ্বকাপ চক্র

হতাশাজনক বিশ্বকাপের পর ২০১০-এর ৭ সেপ্টেম্বর, নব বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেনের বিপক্ষে প্রীতি খেলায় ইগুয়াইন একটি গোল করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪১]

তিনি ২০১১ কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে সমতাসূচক গোল করেন এবং পেনাল্টি শুটআউটেও গোল করেন, যদিও আর্জেন্টিনা পেনাল্টি শুটআউটে ৫–৪ ব্যবধানে পরাজিত হয়ে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নেয়।

২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, ঢাকায় নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি খেলায় আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম গোলটি করেন এবং তৃতীয় গোলে অবদান রাখেন ইগুয়াইন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪২] ৮ অক্টোবর, চিলির বিপক্ষে তিনি হ্যাট্রিক করেন এবং একটি গোলে সহায়তা করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪৩] ২০১২ সালের ২ জুন, ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলায় ইকুয়েডরের বিপক্ষে তিনি একটি গোল করেন এবং একটি গোলে সহায়তা করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪৪] ৯ জুন, ব্রাজিলের বিপক্ষে লিওনেল মেসির প্রথম গোলে তিনি সহায়তা করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–৩ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪৫] ১৫ আগস্ট জার্মানির বিপক্ষে খেলায় তিনি লিওনেল মেসির গোলে সহায়তা করেন।

২০১২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ইগুয়াইন একটি গোল করেন এবং একটি গোলে সহায়তা করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪৬] ১১ সেপ্টেম্বর, পেরুর বিপক্ষে সমতাসূচক গোল করে দলকে পরাজয়ের হাত থেকে বাচান ইগুয়াইন। ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলায় চিলির বিপক্ষে একটি গোল করে দলকে ২–১ ব্যবধানের জয় এনে দেন তিনি।[৪৭] ২০১৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি, সুইডেনের বিপক্ষে প্রীতি খেলায় তিনি একটি গোল করেন এবং আর্জেন্টিনা ৩–২ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪৮] ২০১৪ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি বেলজিয়ামের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করেন এবং আর্জেন্টিনা ১-০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৪৯]

পরিসংখ্যান

ক্লাব

১৩ এপ্রিল ২০১৪ অনুসারে।[৫০]

ক্লাবমৌসুমলিগকাপমহাদেশীয়অন্যান্যমোট
উপস্থিতিগোলসহায়তাউপস্থিতিগোলসহায়তাউপস্থিতিগোলসহায়তাউপস্থিতিগোলসহায়তাউপস্থিতিগোলসহায়তা
রিভার প্লেট২০০৪–০৫
২০০৫–০৬১৪১৮
২০০৬–০৭১৭১১১৯১১
মোট৩৫১৩১৬৪১১৫১৬
রিয়াল মাদ্রিদ২০০৬–০৭১৯২৩
২০০৭–০৮২৫৩৪
২০০৮–০৯৩৪২২৪৪২৪
২০০৯–১০৩২২৭৪০২৯
২০১০–১১১৭১০২৫১৩
২০১১–১২৩৫২২১২৫৪২৬১০
২০১২–১৩২৮১৬৪৪১৮
মোট১৯০১০৭৩৯২১৪৮২৬৪১২১৪৬
নাপোলি২০১৩-১৪৩১১৭৪৪২৪১১
মোট৩১১৭৪৪২৪১১
ক্যারিয়ারে সর্বমোট২৫৬১৩৭৬৮২৫৬৩১৫১০৩৪৯১৬১৮৩

অন্যান্য এর মধ্যে রয়েছে স্পেনীয় সুপার কাপ

জাতীয় দল

জাতীয় দলক্লাবমৌসুমউপস্থিতিগোলসহায়তা
আর্জেন্টিনারিয়াল মাদ্রিদ২০০৯
২০১০১০
২০১১
২০১২
২০১৩
নাপোলি২০১৩
মোট৩৫২০!১১

আন্তর্জাতিক গোল

#তারিখভেন্যুপ্রতিপক্ষস্কোরফলাফলপ্রতিযোগিতা
১০ অক্টোবর ২০০৯ইস্তাদিও মনুমেন্তাল, বুয়েনোস আইরেস, আর্জেন্টিনা  পেরু – ০২–১২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
৩ মার্চ ২০১০অ্যালিয়েঞ্জ এরিনা, মিউনিখ, জার্মানি  জার্মানি – ০১–০প্রীতি খেলা
১৭ জুন ২০১০সকার সিটি, জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা  দক্ষিণ কোরিয়া – ০৪–১২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ
– ১
– ১
২৭ জুন ২০১০  মেক্সিকো – ০৩–১
৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ইস্তাদিও মনুমেন্তাল, বুয়েনোস আইরেস, আর্জেন্টিনা  স্পেন – ০৪–১প্রীতি খেলা
১৬ জুলাই ২০১১ইস্তাদিও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইস্তানিসলাও লোপেজ, সান্তা ফে, আর্জেন্টিনা  উরুগুয়ে – ১১–১কোপা আমেরিকা ২০১১
৬ সেপ্টেম্বর ২০১১বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা, বাংলাদেশ  নাইজেরিয়া – ০৩–১প্রীতি খেলা
১০৭ অক্টোবর ২০১১ইস্তাদিও মনুমেন্তাল, বুয়েনোস আইরেস, আর্জেন্টিনা  চিলি – ০৪–১২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
১১ – ০
১২ – ১
১৩৩ জুন ২০১২  ইকুয়েডর – ০৪–০
১৪৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ইস্তাদিও মারিও অ্যালবার্তো কেম্পেস, কর্দোবা, আর্জেন্টিনা  প্যারাগুয়ে – ১৩–১
১৫১১ সেপ্টেম্বর ২০১২ইস্তাদিও ন্যাসিয়োনাল, লিমা, পেরু  পেরু – ১১–১
১৬১৭ অক্টোবর ২০১২ইস্তাদিও ন্যাসিয়োনাল, স্যান্তিয়াগো, চিলি  চিলি – ০২–১
১৭৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ফ্রেন্ডস এরিনা, সলনা,সুইডেন  সুইডেন – ০৩–২প্রীতি খেলা
১৮ – ২
১৯২২ মার্চ ২০১৩ইস্তাদিও মনুমেন্তাল, বুয়েনোস আইরেস, আর্জেন্টিনা  ভেনেজুয়েলা – ০৩–০২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
২০ – ০

অলিম্পিক গোল

সম্মাননা

ক্লাব

রিয়াল মাদ্রিদ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী