কৌষীতকি উপনিষদ

কৌষীতকি উপনিষদ্ (কৌষীতক্যুপনিষদ্, সংস্কৃত : कौषीतकि उपनिषद्) ঋগ্বেদে ওতপ্রোত একটি প্রাচীন হিন্দু ধর্মপুস্তক।[১] এই উপনিষদটি কৌষীতকি শাখার সাথে জড়িত, যদিও এটি একটি সামান্য উপনিষদ্, অর্থাৎ বেদান্ত দর্শনের সবক'টা সাধনা-তেই প্রচলিত। এটি রবার্ট হিউমের প্রণীত ১৩টি প্রধান উপনিষদের তালিকাভুক্ত,[২] আর প্রাচীন হিন্দুধর্মের ১০৮টি উপনিষদের সমূহ মুক্তিকাতে এটি ২৫তম স্থান গ্রহণ করে।

উপনিষদ্‌

হিন্দু ধর্মগ্রন্থ-সংক্রান্ত একটি ধারাবাহিকের অংশ

ওঁ
ঋগ্বেদ
ঐতরেয়
যজুর্বেদ
বৃহদারণ্যক · ঈশ · তৈত্তিরীয় · কঠ
সামবেদ
ছান্দোগ্য · কেন
অথর্ববেদ
মুণ্ডক · মাণ্ডুক্য · প্রশ্ন
অন্যান্য প্রধান উপনিষদ্‌
শ্বেতাশ্বেতর · কৌষীতকী · মৈত্রায়ণীয়

কৌষীতকি ব্রাহ্মণ উপনিষদ্[৩] নামেও পরিচিত এই উপনিষদটি কৌষীতকি আরণ্যক বা শঙ্খায়ন আরণ্যক-এর অংশ। এই আরণ্যকটির পনেরোটি অধ্যায় রয়েছে, যার মধ্যে চারটি মিলে কৌষীতকি উপনিষদ্ গঠন করে।

কালক্রম

অন্যান্য উপনিষদগুলোর মত কৌষীতকি উপনিষদের কালানুক্রমও এখনও পর্যন্ত অস্পষ্ট। সমস্ত পণ্ডিতদের অভিমতই মূলতঃ ভাষারূপের প্রাচীনত্ব, ভাষাশৈলী ও অন্য কোনও গ্রন্থের সাথে ভাব বা বাক্যের পুনরাবৃত্তির বিশ্লেষণ এবং কোন দর্শনের প্রভাব অন্য কোন দর্শনের উপর পড়ে এটার একটা অনিশ্চিত অনুমান লাগানোর উপর ভিত্তি করে প্রদত্ত।[৪][৫]

কৌষীতকি উপনিষদ্ সম্ভবতঃ খ্রীস্টপূর্ব ১ম সহস্রকের মধ্যভাগে রচিত। রানাডে[৬] কৌষীতকি উপনিষদ্-কে প্রাচীন উপনিষদসমূহের কালক্রমানুসারে বিভক্ত তৃতীয় বর্গে স্থান দেন, ঐতরেয় ও তৈত্তিরীয় উপনিষদের সাথে। হুয়ান মাস্কারো মনে করেন যে কৌষীতকি উপনিষদ্ বৃহদারণ্যক, ছান্দোগ্য ও তৈত্তিরীয় উপনিষদগুলোর পরে, তবে অন্যান্য সকল প্রধান উপনিষদগুলোর আগে, রচিত।[৭] পল ডয়সন ও উইণ্টার্নিটজ্ উভয়েই মনে করেন যে কৌষীতকি উপনিষদ্ বৌদ্ধ ও জৈন সুত্রগুলোর পূর্বে রচিত প্রাচীনতম গদ্যরূপ উপনিষদগুলির অন্যতম।[৮][৯]

ইয়ান উইচার কৌষীতকি উপনিষদকে খ্রীস্টপূর্ব ৮০০ সনের আশেপাশে রচিত বলে স্থির করেন।[১০] ১৯৯৮ সালে প্যাট্রিক অলিভেল ও অন্যান্য বিদ্বানদের দ্বারা সম্পাদিত একটি পর্যালোচনা অনুসারে, কৌষীতকি উপনিষদ্ রচিত হয় বৌদ্ধকালের পূর্বে কিন্তু প্রাচীনতর বৃহদারণ্যক ও ছান্দোগ্য উপনিষদগুলোর পরে, যার দ্বারা স্থির হয় যে খ্রীস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৫ম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়কালটিতে এর রচনা হয়।[১১][১২]

গঠন

কৌষীতকি উপনিষদ্ ঋগ্বেদের অঙ্গ, কিন্তু ভারতবর্ষের নানান প্রান্তরে খুঁজে পাওয়া প্রাচীন বৈদিক পাণ্ডুলিপিগুলোতে এটি ঋগ্বেদের ভিন্ন ভিন্ন অধ্যায়সংখ্যা অধিকার করে। তিনটি বিন্যাসক্রম সর্বাধিক লক্ষণীয়: - প্রথমে কৌষীতকি আরণ্যকের ১ম থেকে ৪র্থ অধ্যায়, দ্বিতীয়ে এই আরণ্যকেরই ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম অধ্যায়, এবং শেষে এই আরণ্যকের ১ম,৭ম,৮ম ও ৯ম অধ্যায়।[১][৩] পল ডয়সন ধারণা করেন, অধ্যায়সংখ্যার এই আঞ্চলিক পার্থক্য এটিই প্রমাণ করে যে বৈদিক সাহিত্যের উপনিষদ্ স্তর বৈদিক শাস্ত্রে প্রাক্-বিদ্যমান আরণ্যক স্তরের সাথে হিন্দু আধ্যাত্মিক জ্ঞান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়, এবং যখন ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি করা হচ্ছিল, তখন ক্রমসম্বন্ধীয় তথ্য সকল স্থানে এককভাবে সম্পন্ন হয়নি।[১]

এই উপনিষদটি চারটি খণ্ডে বিভক্ত একটি গদ্য পাঠ্য। চারটি খণ্ডে যথাক্রমে ছয়টি,[১৩] পনেরোটি, নয়টি ও কুড়িটি ছত্র রয়েছে।

কিছুটা প্রমাণ পাওয়া যায় যে, কয়েকটি পাণ্ডুলিপিতে কৌষীতকি উপনিষদ্ নয়টি খণ্ডে বিভক্ত ছিল, তবে বর্তমানে সেই পাণ্ডুলিপিগুলো হারিয়ে গেছে অথবা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।[৩]

বিষয়বস্তু

প্রথম অধ্যায়

কৌষীতকি উপনিষদের প্রথম অধ্যায়ে মূলতঃ মৃত্যুর পর আত্মন্-এর পুনর্জন্ম ও দৈহিক স্থানান্তরকে সত্য বলে দর্শানো হয়েছে, এবং বলা হয়েছে যে মানবজীবন মানুষটির কর্ম-এর দ্বারা প্রভাবিত হয়। এরপর, এই প্রশ্নটি উত্তোলন করা হয় যে, সংসার-এর এই জন্মমৃত্যুর চক্র থেকে কী কোনও মুক্তির উপায় আছে। প্রথম খণ্ডের (সংক্ষেপিত) দ্বিতীয় ছত্রে লেখা রয়েছে[১৪][১৫][১৬] -

আমি জন্মগ্রহণ করি, পুনর্জন্মগ্রহণ করি
দ্বাদশ বা ত্রয়োদশ চান্দ্রমাস হয়ে
আমার দ্বাদশাঙ্গিক বা ত্রয়োদশাঙ্গিক (চান্দ্রবৎসর) পিতা থেকে।
এই জ্ঞানে ও এর বিপরীত জ্ঞানে - দু'টোতেই আছি আমি।
তাই, ঋতুগণ, আমাকে অমরত্ব দাও, সত্যের দ্বারা, তপের দ্বারা।
আমিই ঋতুসমূহ, আমিই ঋতুপুত্র।

তুমি কে?

আমিই তুমি।

— কৌষীতকি উপনিষদ্, ১ম অধ্যায়, ২য় ছত্র

কৌষীতক্যুপনিষদের প্রথম অধ্যায়ের ষষ্ঠ ছত্রে বলা হয়েছে যে, মানুষই হল ঋতু (প্রকৃতি)। তার জন্মও এই প্রকৃতি থেকেই; সে দোলনা থেকে ওঠে, সে অর্ধাঙ্গিনীর দ্বারা পুনর্জন্মপ্রাপ্ত হয়। এরপর, উপনিষদে মানব ও ব্রহ্মের মধ্যে কৃত একটি সংলাপ উল্লিখিত হয়েছে।[১৭]

সে ঘোষণা করল, "মনুষ্য প্রকৃতপক্ষে সকল জীবে বিরাজমান আত্মন্। তুমিও সেই সর্বত্রবিদ্যমান আত্মন্। তুমি যা, আমিই সেটা।"

মনুষ্য জিজ্ঞেস করল, "তাহলে আমি কে?"

ব্রহ্ম উত্তর দিল, "সত্য।"

— কৌষীতকি উপনিষদ্, ১ম অধ্যায়, ৬ষ্ঠ ছত্র, পল ডয়সনের ইংরেজি অনুবাদের ভাষান্তর

এডওয়ার্ড কাওয়েল উপরের 'আত্ম ও ব্রহ্মের এককত্ব' সম্বন্ধীয় এই ছত্রটির অনুবাদ করেছেন নিম্নোল্লিখিত ধারায়-

ব্রহ্ম যখন আত্মকে প্রশ্ন করল, "তুমি কে?", তখন আত্ম প্রত্যুত্তরে বলল :
"আমি সময়, সময়ের অন্দরে যা আছে সেটাও আমি;
আমি মহাশূন্যের গর্ভে জাত
ব্রহ্মন্-এর আত্মোদভাসিত আলোক থেকে;
আমি বৎসরের বীজ;
আমি কারণ এবং অতীতের দ্যুতি; আমি সকল সচেতন ও অচেতন বস্তু ও পঞ্চ ধাতুর সবক'টার সত্তা;
তুমি হলে সত্তা। তুমি যা, সেটিই আমি।"

ব্রহ্ম জিজ্ঞেস করল, "তাহলে আমি কে?"

সে উত্তর দিল, "তুমি সত্য।"

— কৌষীতকি উপনিষদ্, ১ম অধ্যায়, এডওয়ার্ড কাওয়েলের ইংরেজি অনুবাদের ভাষান্তর[১৮]

দ্বিতীয় অধ্যায়

কৌষীতকি উপনিষদের দ্বিতীয় অধ্যায়ে ঘোষণা করা হয়েছে যে প্রত্যেকটি জীব ও সবক'টি জীব ব্রহ্মেরই স্বরূপ। একজন মানুষ যতদূর অনুভব করতে পারবে যে সে আর ব্রহ্ম একই সত্তা, ততই সে ব্রহ্মের সাথে একক হয়ে যাবে। কৌষীতক্যুপনিষদে বলা হয়েছে, যে মানুষ অনুভব করতে পারে যে তার প্রকৃত সত্তায় আর মহাবিশ্বে, অর্থাৎ ব্রহ্মে, কোনও বিভেদ নেই, তাকে কোনও রকমের বাহ্যিক পূজার্চনা করতে হয় না। যারা আত্ম-কে চিনতে পারে না, তারা কেবল তাদের অনুভূতি আর কামনা-বাসনাগুলোকেই পরিচর্যা করে, তারা বাহ্যিক উপাসনার দ্বারা বাহির-কে পূজা করে। আর অন্য দিকে যারা আত্মকে বুঝতে পারে, তাদের জ্ঞানেন্দ্রিয় সেই আত্মকেই পরিচর্যা করে, তারাই পূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে।[১৯]

দ্বিতীয় অধ্যায়ের পঞ্চম ছত্রে লেখা আছে, "সকালসন্ধ্যায় প্রদত্ত অগ্নিহোত্রের মত বাহ্যিক ক্রিয়াকে প্রতিস্থাপিত করতে হবে অন্তর্দর্শনের জন্যে কৃত আত্মিক অগ্নিহোত্রের দ্বারা"। পল ডয়সন মনে করেন যে এই অধ্যায়টি ধর্ম-এর প্রচলিত সংজ্ঞা পালটে দেয়, এটি উল্লেখ করে - "ধর্ম বাহ্যিক ধর্মানুষ্ঠান পালন করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় না; ধর্ম সেটির দ্বারা প্রকাশিত যা সারা জীবনটিকে প্রত্যেকটি শ্বাসের সাথে তার সেবায় নিযুক্ত করে"। জ্ঞানই একমাত্র পারে একজনকে সবচেয়ে সুন্দর, সবচেয়ে ঐশ্বর্যপূর্ণ ও সর্বাধিক শক্তিধর বানাতে। শাস্ত্রীয় আচার পালন নয়, জ্ঞানই হওয়া উচিত একজনের পরম সাধনা।[১৯]

তৃতীয় অধ্যায়

প্রথম দু'টি অধ্যায়ে আত্মকে পরমেশ্বরের স্বরূপ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পর উপনিষদের তৃতীয় অধ্যায়ে আত্মের দার্শনিক তত্ত্বকে উন্মোচন করা হয়েছে।[২০] এটি পার্থিব বস্তুর অনুভূতিকে ইন্দ্রিয়নির্ভর হিসেবে শনাক্ত করে, যেটি পুনর্বার নির্ভর করে অনুভূতিজনিত মানসিক শক্তির উপরে। এরপর এটিতে দর্শানো হয় যে, মোক্ষ এই পার্থিব বস্তু, এই ইন্দ্রিয়সমূহ, এই অনুভূতিজনিত মানসিক শক্তির দ্বারা প্রাপ্ত হয় না; মোক্ষ প্রাপ্ত হয় কেবলই জ্ঞান ও কর্মের দ্বারা। যে আত্মকে বোঝে ও আত্মের সাথে তাল মিলিয়ে কর্ম করে যায়, সে আত্মের দ্বারা পরিস্ফুট পরম ঈশ্বর হয়েই বিদ্যমান থাকে।[২০] এই অধ্যায়টি ইন্দ্রদেবকে আবাহন করে, তাকে আত্মের স্বরূপ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং প্রকাশ করে যে তিনিই প্রাণবায়ু ও আত্ম আর সকলই এক

এই অধ্যায়টি মনুষ্যকে আধ্যাত্মিকভাবে সংজ্ঞায়িত করে চৈতন্য হিসেবে, আত্ম হিসেবে। এর তৃতীয় ছত্রে অধ্যায়টি এই সংজ্ঞার ভিত স্থাপন করে এই উল্লেখ করে যে – বাক্শক্তি মনুষ্যত্বকে সংজ্ঞায়িত করে না, কারণ আমাদের মধ্যে আমরা বোবা মানুষও খুঁজে পাই; দৃষ্টিশক্তিও মনুষ্যত্বের সংজ্ঞা হতে পারে না, কারণ অন্ধ মানুষও আমাদের মাঝে রয়েছে; শ্রবণশক্তিও মনুষ্যত্বের সংজ্ঞা নয়, কারণ বধির মানুষও রয়েছে; হাত-পা মনুষ্যত্বের সংজ্ঞা দেয় না, কারণ পঙ্গুও রয়েছে; এমনকি বুদ্ধিও মনুষ্যত্বের সঠিক সংজ্ঞা দিতে পারে না, কারণ নির্বোধও রয়েছে আমাদেরই মাঝে।[২০] মানুষের একমাত্র সংজ্ঞা দেয় প্রাণশক্তি, যেটিই প্রজ্ঞা, অর্থাৎ চেতনা। এবং, যা কিছুই সচেতন, তারই মধ্যে রয়েছে প্রাণ।[২০][২১]

তৃতীয় অধ্যায়ের একাধিক ছত্রে কৌষীতকি উপনিষদ্ পুনরায় বোঝায় যে, "প্রাণই প্রজ্ঞা, আর প্রজ্ঞাই প্রাণ" (वै प्राणः सा प्रज्ञा या वा प्रज्ञा स प्राणः, যা প্রাণ তাই প্রজ্ঞা, যা প্রজ্ঞা তাই প্রাণ)।[২০]

কৌষীতকি উপনিষদের তৃতীয় অধ্যায়ের অন্তিম ছত্রগুলিতে দেখানো হয়েছে যে, একজনকে জানতে হলে, তার আত্মকে জানতে হয়। বিষয়ের আত্মকে চিনতে হবে, জড় বস্তুটিকে নয়। এই যুক্তিটিকে নিম্নোক্ত (সংক্ষেপিত) উপায়ে বর্ণনা করা হয়েছে,[২২][২৩]

বাক্যকে নয়, বাক্যের বক্তাকে বুঝতে চাওয়া উচিত;
গন্ধকে নয়, গন্ধের ঘ্রাতাকে বুঝতে চাওয়া উচিত;
রূপকে নয়, রূপের দ্রষ্টাকে বুঝতে চাওয়া উচিত;
শব্দকে নয়, শব্দের শ্রোতাকে বুঝতে চাওয়া উচিত;
স্বাদকে নয়; স্বাদের ভোক্তাকে বুঝতে চাওয়া উচিত;
কর্মকে নয়, কর্মের কর্তাকে বুঝতে চাওয়া উচিত;
সুখদুঃখকে নয়, সুখদুঃখের বিজ্ঞাতাকে বুঝতে চাওয়া উচিত;
মনের ভাবকে নয়, ভাবের ভাবুককে বুঝতে চাওয়া উচিত।
যদি বস্তুগত উপাদান না থেকে, তবে প্রজ্ঞাগত উপাদানও নেই;
যদি প্রজ্ঞাগত উপাদান না থাকে, তবে বস্তুগত উপাদানও নেই।
কারণ, একটিকে ছেড়ে অন্যটিকে অর্জন করা যায় না।
প্রাণই অবিনশ্বর অমর পরমানন্দ প্রজ্ঞাত্মন্।
এ-ই আমার আত্ম, জেনে রাখো।
ওগো, এ-ই আমার আত্ম, জেনে রাখো।

— কৌষীতকি উপনিষদ্, ৩য় অধ্যায়

এডওয়ার্ড কাওয়েল এই শেষ পংক্তিগুলোকে অনুবাদ করেন - "প্রাণই হল চিরনবীন শাশ্বত প্রজ্ঞা। এ-ই জগতের অভিভাবক; এ-ই জগতের রাজা; এ-ই জগতের প্রভু; এ-ই আমার আত্ম। এটাই জানা থাকুক, এটাই জানা থাকুক।"[২৪] রবার্ট হিউম কৌষীতকি উপনিষদের তৃতীয় অধ্যায়ের অন্তিম ছত্রের ব্যাখ্যা দেন যে, "মনুষ্যের নৈতিক দায়িত্ব, তার আত্ম আর ব্রহ্ম একই।"[২৫]

চতুর্থ অধ্যায়

কৌষীতকি উপনিষদের চতুর্থ অধ্যায়ের মূলাভাব অনেকটা তৃতীয় অধ্যায়েরই মত। অদ্ভুতভাবে, ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া ঋগ্বেদের পাণ্ডুলিপিগুলোতে এটির নানা প্রকারভেদ উল্লেখ করা যায়। এটি ইঙ্গিত করে যে এই অধ্যায়টি হয়তো বা অধিকতর সাম্প্রতিক কালে রচিত। আঞ্চলিক ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও অধ্যায়টির মূলভাব প্রায় একই। অধ্যায়টিতে মুখ্যতঃ ব্রহ্মের (অর্থাৎ, আত্মের) ব্যাখ্যা দিতে ১৬টি অনুচ্ছেদ তুলে ধরা হয়েছে, যেগুলি বৃহদারণ্যকের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ১২টি অনুচ্ছেদের অনুরূপ ধারণা পালন করে।[২৬] কৌষীতকির এই শেষ অধ্যায়টি উল্লেখ করে যে, আত্ম ও ব্রহ্ম একই; আত্মেরই মধ্যে রয়েছে পরম ঐক্য; সৃষ্টিশীল, ব্যাপ্তিশীল, শ্রেষ্ঠ এবং সকল জীবে বিদ্যমান এই আত্ম।[২৭]

ভাষান্তর

কৌষীতকি উপনিষদকে পণ্ডিতেরা বহুবার অনুবাদ করেছেন, যদিও এই ভাষান্তরগুলো ভিন্ন হতে পারে পাণ্ডুলিপি পৃথক হওয়াতে। মধ্যযুগে এটি ফারসীতে ভাষান্তরিত হয় কোখেঙ্ক নামে,[৩] যদিও এই অনুবাদে ব্যবহৃত পাণ্ডুলিপিটি এখন নিখোঁজ। সর্বাধিক উল্লিখিত ইংরেজি ভাষান্তরগুলো এডওয়ার্ড কাওয়েল,[৩] পল ডয়সন, রবার্ট হিউম ও ম্যাক্স মুলারের দ্বারা অনুদিত।[১][২৮]

পাদটীকা

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী