কোয়েম্বাটুর জেলা

তামিলনাডুর জেলা

কোয়েম্বাটুর জেলা, ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের ৩৮টি জেলার মধ্যে একটি। কোয়েম্বাটুর শহর এই জেলার প্রশাসনিক সদর দফতর। [২] জেলাটি তামিলনাড়ুর অন্যতম শিল্পসমৃদ্ধ জেলা এবং টেক্সটাইল, কমার্শিয়াল, শিক্ষা সংক্রান্ত, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য বিষয়ক এবং প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থার মতো বহু শিল্পের পীঠস্থান। [৩] এই জেলার পূর্ব দিকে তিরুপুর জেলা, উত্তর দিকে নীলগিরি জেলা, উত্তর-পূর্ব দিকে ইরোড়ু জেলা, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে পার্শ্ববর্তী কেরালা রাজ্যের পালঘাট জেলা, ইদুক্কি জেলা এবং ত্রিশূরএর্নাকুলাম জেলার সামান্য অংশ রয়েছে। ২০১১ জনগণনা অনুসারে কোয়েম্বাটুর জেলার জনসংখ্যা সাড়ে চৌত্রিশ হাজিরের অধিক।[৪]

কোয়েম্বাটুর জেলা
கோயம்புத்தூர் மாவட்டம்
কোবাই জেলা
তামিলনাড়ুর জেলা
বালপারাইয়ের নিকট অবস্থিত পর্বত
বালপারাইয়ের নিকট অবস্থিত পর্বত
তামিলনাড়ু তথা ভারতে কোয়েম্বাটুর জেলার অবস্থান
তামিলনাড়ু তথা ভারতে কোয়েম্বাটুর জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ১১°০০′৪৫″ উত্তর ৭৬°৫৮′১৭″ পূর্ব / ১১.০১২৫° উত্তর ৭৬.৯৭১৪° পূর্ব / 11.0125; 76.9714
রাষ্ট্র ভারত
রাজ্য তামিলনাড়ু
জেলা সদরকোয়েম্বাটুর
তালুকআন্নূর, আনাইমালাই, কোয়েম্বাটুর উত্তর, কোয়েম্বাটুর দক্ষিণ, কিনতুকড়াবু, মাদুক্করাই, মেট্টুপালয়ম, পেরূর, পোল্লাচি, সুলুর, বালপারাই
সরকার
 • শাসককোয়েম্বাটুর স্থানীয় পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ
 • জেলা সমাহর্তাএস. নাগরাজন, আইএএস
 • পুলিশ আধিকারিকসেল্বনাগরতিনাম, আইপিএস
আয়তন
 • মোট৪,৭২৩ বর্গকিমি (১,৮২৪ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট৩৪,৫৮,০৪৫
 • জনঘনত্ব৭৩০/বর্গকিমি (১,৯০০/বর্গমাইল)
ভাষা
 • দাপ্তরিকতামিল
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন৬৪১xxx, ৬৪২xxx
টেলিফোন কোড+৯১-০৪২২
আইএসও ৩১৬৬ কোডআইএসও ৩১৬৬-২
যানবাহন নিবন্ধনটিএন-৩৭, ৩৭জেড, ৩৮, ৪০, ৪১, ৪১ জেড, ৬৬, ৯৯
বৃহত্তম শহরকোয়েম্বাটুর
লিঙ্গানুপাতপ্রতি হাজার পুরুষে ১,০০০ জন নারী
সাক্ষরতার হার৮৩.৯৮%
বিধানসভা সংখ্যা১০
বৃষ্টিপাত৭০০ মিলিমিটার (২৮ ইঞ্চি)
গড় গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা৩৫ °সে (৯৫ °ফা)
গড় শীতকালীন উষ্ণতা১৮ °সে (৬৪ °ফা)
ওয়েবসাইটcoimbatore.nic.in

ঊনবিংশ শতাব্দীতে মুম্বই শহরের বস্ত্র শিল্পে অবনতি হওয়ার সাথে সাথে এই জেলাজুড়ে বয়ন শিল্পের প্রভূত উন্নতি সাধন হয়।[৫] ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর একাধিক শিল্প স্থাপনের কারণে এই জেলার অর্থনীতির দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়। ২০১১ খ্রিস্টাব্দের পরিসংখ্যান অনুসারে শতাংশ অনুপাতের ভিত্তিতে কোয়েম্বাটুর তামিলনাড়ুর দ্বিতীয় নগরায়িত জেলা, যার ৭১.৩৭ শতাংশ মানুষ কোন না কোন শহরে বাস করেন। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে মহাত্মা গান্ধী এখানে শ্রী রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

ইতিহাস

কোয়েম্বাটুর ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলঐতিহাসিকভাবে চের রাজাদের দ্বারা শাসিত কোঙ্গুনাড়ু ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং এটি ছিল সাম্রাজ্যের পশ্চিম উপকূল এবং তামিলনাড়ুর মধ্যে পরিবহন ও বিপণন সংযোগ রক্ষাকারী পালঘাট গিরিপথের পূর্ব দিকের প্রবেশপথ।[৬] দ্বিতীয় শতাব্দীতে রচিত তামিল মহাকাব্য শিলপ্পতিকারমে ও বিভিন্ন সঙ্গম সাহিত্য ও কাব্যে যে কোসর জাতির উল্লেখ রয়েছে তাদের বসতি ছিল মূলত বর্তমান কোয়েম্বাটুর জেলা ও তার আশেপাশের অঞ্চলে।[৭] এটি ছিল দক্ষিণ ভারতের মুজিরিস (বর্তমানে কোদুঙ্গালুর) থেকে আরিকমেড়ু পর্যন্ত বিস্তৃত রোমান বাণিজ্য পথের মাঝামাঝি অবস্থিত অঞ্চল।[৮][৯] মধ্যযুগীয় চোল খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীর দিকে কোঙ্গুনাড়ুতে নিজেদের জয় ও রাজ সিংহাসন নিশ্চিত করেন।[১০][১১] পঞ্চদশ শতাব্দীতে এই অঞ্চল শাসন করতেন বিজয়নগরের রাজারা তাদের পর আসেন মাদুরাই নায়ক রাজারা। তারাই প্রথম জমিদারিত্ব দিয়ে পলিগার প্রথা শুরু করেন ও কোঙ্গুনাড়ুকে ২৪ টি খণ্ড বা পালয়মে বিভক্ত করেন।[১২] ওই সময়ে, অষ্টাদশ শতাব্দীতে কোয়েম্বাটুর অঞ্চল‌ তৎকালীন মহীশূর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। আবার ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ‌ নাগাদ কোম্পানিটিপু সুলতানের মধ্যে সংঘটিত ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধে টিপু সুলতানের পরাজয় হলে এই অঞ্চল ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি অন্তর্ভুক্ত হয়। এই ঘটনা কোয়েম্বাটুর অবরোধ নামে পরিচিত। ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে ধীরন চিন্নামালাইয়ের নেতৃত্বে কোয়েম্বাটুরের দ্বিতীয় পলিগার বিদ্রোহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[১৩]

জেলা গঠন

১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে কোয়েম্বাটুর শহর নবগঠিত কোয়েম্বাটুর জেলার সদর হিসেবে চিহ্নিত হয়। জেলা আদালতটি পূর্বে ধারাপুরম অঞ্চলের ছিল, যা পরবর্তীকালে কোয়েম্বাটুর শহরে পুনঃস্থাপিত করা হয়।[১৪][১৫][১৬] তৎকালীন জেলাটির অন্তর্গত ছিল বর্তমান তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর, ইরোড়ু, তিরুপুর, নীলগিরি জেলা, কারূর জেলার কিছু অংশ, কেরালার পালঘাট জেলা ও কর্নাটকের চামরাজনগর জেলা। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে এই জেলা থেকে নীলগিরি জেলাকে পৃথক করা হয়। ১৮৭৬-৭৮ এর সময়কার দাক্ষিণাত্যের মন্বন্তরের সময়ে কোয়েম্বাটুরে যথেষ্ট পরিমাণ জীবনহানি হয়, যার সরকারি পরিসংখ্যান দুই লক্ষ। ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের ৮ই ফেব্রুয়ারি শহরে রিখটার স্কেলে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।[১৭] বিংশ শতাব্দীর প্রথম তিন দশকের মধ্যে প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ প্লেগ এবং জল সংকটের কারণে মৃত্যু মুখে পতিত হন।[১৮][১৯]

মুম্বাই শহরে বস্ত্র শিল্পের অবনতির কারণে বিংশ শতাব্দীর কুড়ি এবং ত্রিশের দশকে কোয়েম্বাটুরে বস্ত্র শিল্পের উন্নতি শুরু হয়।[৫] ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধেও এই অঞ্চলের যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।[২০] স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই জেলায় দ্রুতহারে শিল্পায়ন শুরু হয়।[২১]

১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে এই জেলা থেকে কারূর তালুককে পৃথক করে তিরুচিরাপল্লী জেলার সাথে যুক্ত করা হয়। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে কোল্লেগাল তালুক মহীশূর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে ৩১শে আগস্ট জেলার ভবানী, গোপীশেঠিপালয়ম, ধারাপুরম, পেরুন্দুরাই, কাঙ্গেয়ম, ইরোড়ু ও সত্যমঙ্গলম তালুকগুলি নিয়ে নতুন ইরোড়ু জেলা (তখনকার পেরিয়ার জেলা) গঠন করা হয়। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে কোয়েম্বাটুর জেলার যথাক্রমে তিরুপুর, উদুমালাইপেট্টাই, পল্লড়ম তালুক ও অবিনাশী তালুকের অংশবিশেষ এবং ইরোড়ু জেলা থেকে যথাক্রমে ধারাপুরম, কাঙ্গেয়ম এবং পেরুন্দুরাই তালুকগুলি একত্রিত করে নতুন তিরুপুর জেলা গঠন করা হয়৷ [২২]

দক্ষিণ ভারতে ভৌগোলিকভাবে কৌশলগত অবস্থানের কারণে কোয়েম্বাটুরে রয়েছে সৈন্যবল, সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী বিমান বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী ও কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত পুলিশ বল এবং সীমান্তরক্ষী সামরিক বাহিনীর দপ্তর।

ভূগোল ও আবহাওয়া

কোয়েম্বাটুর-পালঘাট জাতীয় সড়কের থেকে দৃশ্যমান পশ্চিমঘাট পর্বতমালা
জেলার পশ্চিমাংশের কোবাইপুদুরের নিকট চারণভূমি

কোয়েম্বাটুর জেলা তামিলনাড়ুর পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত কেরালার সঙ্গে সীমান্ত রক্ষাকারী জেলাগুলির একটি। এর পশ্চিম এবং উত্তর দিকে রয়েছে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা এছাড়া উত্তর দিকে রয়েছে নীলগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চল।[২৩] নোইয়াল নদী (পুরাতন নাম কাঞ্চী নদী) কোয়েম্বাটুর শহরের উপর দিয়ে প্রবাহিত এবং এটি পুরান কোয়েম্বাটুর শহরের দক্ষিণ সীমানা নির্দেশ করে।[২৪][২৫] সদর শহর নোইয়াল নদী উপত্যকায় অবস্থিত। বৃষ্টির জলে পুষ্ট একাধিক হ্রদ সমগ্র অঞ্চলের জলের মূল উৎস।[২৬] নয়টি বৃহত্তর ও জলাশয় হলো; সিঙ্গানলুর, কল্লীমাড়াই, বালাঙ্কুলাম-উক্কড়ম, পেরিয়াকুলাম, সেল্বমপতি, নরসমপতি, কৃষ্ণমপতি, সেল্বচিন্তামণি এবং কুমারস্বামী হ্রদ।[২৭] শহরে অবস্থিত কিছু নালা বা খাল হল সঙ্গনূর পল্লম, কোয়িলমেড়ু পল্লম, বিলানকুরিচি-সিঙ্গানলুর পল্লম, কর্পেরায়নকোয়িল পল্লম, রেলওয়ে ফিডার রোড সাইড নালা, তিরুচিরাপল্লী-সিঙ্গানলুর চেক নালা এবং গণপতি পল্লম।[২৪][২৮]

কোয়েম্বাটুর শহর সহ জেলার পূর্ব দিক সাধারণত শুষ্ক প্রকৃতির। জেলার পশ্চিম এবং উত্তর দিক বরাবর রয়েছে নীলগিরি এবং পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সীমান্ত, এছাড়াও করেছি নীলগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চল আনাইমালাই এবং মুন্নার পাহাড়। পশ্চিম দিকে কেরালার সাথে সংযোগ রক্ষাকারী পালঘাট গিরিবর্ত্ম উভয় রাজ্য তথা জেলাটির সীমানা নির্দেশ করেছে। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার রিপোর্টের কারণে এই জেলা প্রাণীজ সম্পদে পরিপূর্ণ। কোয়েম্বাটুর শহর সংলগ্ন জলাভূমিতে দেখতে পাওয়া যায় প্রায় ১১৬ প্রজাতির পাখি, যার মধ্যে ৬৬ টি স্থায়ী, ১৭ টি পরিযায়ী এবং ৩৩ টি স্থানীয় অভিবাসী।[২৯] জলাভূমিতে সহজেই দেখা পাওয়া যায় এমন কিছু প্রজাতির পাখি হলো; চিতিঠুঁটি গগণবেড়, রাঙা মানিকজোড়, এশীয় শামুকখোল, কালা কাস্তেচরা, দেশি মেটেহাঁস, পাতি তিলিহাঁস, লালঠেঙ্গি এবং আরো কিছু প্রজাতি।[২৩]

সমভূমির বেশকিছু সহজে দৃশ্যমান প্রজাতি ছাড়াও এই জেলায় দেখতে পাওয়া যাবে বন্যহাতি, বুনো শুয়োর, চিতা, বাঘ, মহিষ, বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, নীলগিরি বনছাগল, শ্লথ ভাল্লুক।[৩০] পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ওপর ১,৪০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত আনাইমালাই ব্যাঘ্র প্রকল্পটি ৯৫৮ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। জেলার ২০ শতাংশের অধিক ক্ষেত্রফল জুড়ে রয়েছে বনভূমি, যা মূলত উত্তর ও পশ্চিমে অবস্থিত। বনাঞ্চল থেকে একাধিক অর্থকরী কাঠ যথা সেগুন, চন্দন কাঠ, গোলাপ কাঠ এবং বাঁশ পাওয়া যায়। নীলগিরি পর্বতের মেট্টুপালয়ম ঢালে প্রচুর পরিমাণে চন্দন কাঠ এবং বাঁশ পাওয়া যায়। উত্তর থেকে দক্ষিণে চিরহরিৎ ক্রান্তীয় বনাঞ্চল ও গুল্ম জাতীয় বনাঞ্চল দেখতে পাওয়া যায়।

জেলাটির আয়তন ৭,৬৪৯ বর্গ কিলোমিটার। দক্ষিণ পশ্চিম অংশে এবং উত্তরাংশ অধিক পর্বতময়, যা মূলত পশ্চিমঘাট পর্বতমালার অংশ। এই পার্বত্য অঞ্চলে সারাবছর মনোরম আবহাওয়া থাকে। পালঘাট গিরিপথ পালঘাট শহরের সাথে কোয়েম্বাটুর শহরকে যুক্ত করে। এই পথে আন্তঃরাজ্য ব্যবসা-বাণিজ্য হয়ে থাকে। জেলার বাকি অংশ পশ্চিমঘাট পর্বতমালার বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। সেই সকল অঞ্চলের বৃষ্টিপাত তুলনামূলক অনেক কম এবং আবহাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়। শীতকালে কোয়েম্বাটুর শহরের উষ্ণতা সাধারণত ১৮ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে।[৩১] ওর বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৭০০ মিলিমিটার, উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ বৃষ্টিপাতের যথাক্রমে ৪৭ ও ২৮ শতাংশ।[৩১]

জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত বৃহত্তর নদী গুলি হল; ভবানী, নোইয়াল, অমরাবতী, কৌশিকা এবং আলিয়ার নদী। শহরে সবচেয়ে পরিচিত স্বাদু জলের আধার হল সিরুবাণী বাঁধ। কোয়েম্বাটুর জেলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ জলপ্রপাত হল, চিন্নাকল্লার, কুরঙ্গু, শৃঙ্গপতি, সিরুবাণী এবং বৈদেকী জলপ্রপাত।

জনসংখ্যার উপাত্ত

ঐতিহাসিক জনসংখ্যা
বছরজন.ব.প্র. ±%
১৯০১৬,৯৭,৮৯৪—    
১৯১১৭,৫৪,৪৮৩+০.৭৮%
১৯২১৭,৮৭,০০২+০.৪২%
১৯৩১৯,১৪,৫১৫+১.৫১%
১৯৪১১০,৫০,৬৭৬+১.৪%
১৯৫১১২,৫৯,১৩৫+১.৮৩%
১৯৬১১৫,০১,০৮৪+১.৭৭%
১৯৭১১৮,৮৬,১৪৬+২.৩১%
১৯৮১২২,১৬,৫৬২+১.৬৩%
১৯৯১২৪,৯৩,৭১৫+১.১৯%
২০০১২৯,১৬,৬২০+১.৫৮%
২০১১৩৪,৫৮,০৪৫+১.৭২%
উৎস:[৩২]
ধর্মভিত্তিক জনগণনা-২০১১[৩৩]
ধর্মশতাংশ(%)
হিন্দু
  
৮৮.০৩%
মুসলিম
  
৬.১০%
খ্রিষ্টান
  
৫.৫০%
শিখ
  
০.০৩%
বৌদ্ধ
  
০.০১%
জৈন
  
০.০৯%
অন্যান্য
  
০.০১%
অবিবৃত
  
০.২২%

২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা অনুসারে কোয়েম্বাটুর জেলার জনসংখ্যা ছিল ৩৪,৫৮,০৪৫ জন, যেখানে প্রতি হাজার পুরুষে হাজার জন নারীর বাস, এই অনুপাত জাতীয় গড়ের তুলনায় অধিক।[৩৪] মোট ছয় বছর অনূর্ধ্ব শিশু সংখ্যা ৩,১৯,৩৩২, যেখানে শিশুপুত্র ১,৬৩,২৩০ এবং শিশু কন্যা ১,৫৬,১০২। জনসংখ্যার অনুপাতে তপশিলি জাতি এবং তপশিলি উপজাতি শতাংশ যথাক্রমে ১৫.৫০% এবং ০.৮২%। গড় সাক্ষরতার হার ৮৩.৯৮ শতাংশ যা জাতীয় সাক্ষরতার হারের তুলনায় বেশি।[৩৪] জেলাটিতে মোট পরিবার সংখ্যা ৯,৫৮,০৩৫ টি। মোট শ্রমজীবীর সংখ্যা ১৫,৬৭,৯৫০ জন, যার মধ্যে কৃষক ৭৫,৪১১ জন, মূল কৃষিজীবী ২,০১,৩৫১ জন গৃহস্থলী সংক্রান্ত শ্রমজীবী ৪৪,৫৮২ জন, অন্যান্য শ্রমজীবী ১১,২১,৯০৮ জন। মোট প্রান্তিক শ্রমজীবী সংখ্যা ১,২৪,৬৯৮ জন, যার মধ্যে প্রান্তিক কৃষক ৪,৮০৬ জন, প্রান্তিক কৃষিজীবী ২৮,৬৭৫ জন, প্রান্তিক গৃহস্থলী সংক্রান্ত শ্রমজীবী ৫,৫০৩ জন, অন্যান্য প্রান্তিক শ্রমজীবী ৮৫,৭১৪ জন।[৩৫] তামিল এই জেলার সর্বাধিক ব্যবহৃত ও সরকারি ভাষা এবং কোঙ্গু তামিল উপভাষাটি মূল প্রচলিত। জেলার ৬৯.১৩ শতাংশ লোক তামিলভাষী, ১৬.৩২ শতাংশ লোক তেলুগুভাষী, ৬.৯৭ শতাংশ লোক কন্নড়ভাষী, ৪.৯০ শতাংশ লোক মালয়ালমভাষী।

প্রশাসনিক বিভাগ

কোয়েম্বাটুর জেলা তিনটি ব্লক তথা কোয়েম্বাটুর উত্তর, কোয়েম্বাটুর দক্ষিণ ও পোল্লাচি এবং এগারটি তালুক তথা[৩৬] আনাইমালাই, আন্নূর, কোয়েম্বাটুর উত্তর, কোয়েম্বাটুর দক্ষিণ, কিনতুকড়াবু, মাদুক্করাই, মেট্টুপালয়ম, পেরূর, পোল্লাচি, সুলুর, বালপারাই ব্লকে বিভক্ত।

জায়গাটির প্রশাসনিক প্রধান একজন জেলা সমাহর্তা। কোয়েম্বাটুর গ্রামীণ জেলা পুলিশ রয়েছে কোয়েম্বাটুর শহরে এবং এর প্রধান একজন ভারতীয় পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ আধিকারিক। কোয়েম্বাটুর শহর পুলিশ বিভাগের প্রধান একজন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, যিনি জেলা পুলিশের থেকে স্বতন্ত্র। জেলার কেন্দ্রীয় কারাগারটি কোয়েম্বাটুর শহরে অবস্থিত। কোয়েম্বাটুর জেলায় রয়েছে তিনটি লোকসভা কেন্দ্র যথা, কোয়েম্বাটুর, পোল্লাচি এবং নীলগিরি লোকসভা কেন্দ্র। জেলায় অবস্থিত বিধানসভা কেন্দ্র গুলি হল, কোয়েম্বাটুর উত্তর, কোয়েম্বাটুর দক্ষিণ, কৌণ্ডমপালয়ম, সিংহনলুর, সুলুর, তোণ্ডামুতুর, কিনতুকড়াবু, পোল্লাচি, বালপারাই এবং মেট্টুপালয়ম।

পরিবহন ব্যবস্থা

কোয়েম্বাটুর জংশন রেলওয়ে স্টেশন

বিমানপথ

কোয়েম্বাটুর শহরে রয়েছে কোয়েম্বাটুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর থেকে যেসকল ভারতীয় শহরের বিমান পরিষেবা চালু রয়েছে তা হলো; চেন্নাই, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা, আমেদাবাদ এছাড়া আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা রয়েছে শারজাহ, শ্রীলংকা এবং সিঙ্গাপুর-এর সাথে।[৩৭] এর রানওয়ে দৈর্ঘ্যে ৯,৭৬০ ফুট (২,৯৭০ মি) এবং আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবার ব্যবহৃত দীর্ঘদেহী ও চওড়াকটি বিমান পরিচালনা করতেও সক্ষম।[৩৮] কোয়েম্বাটুর শহরের পরিধিস্থ ‌‌কাঙ্গেয়মপালয়মে রয়েছে সুলুর বায়ুসেনা ঘাঁটি, যা ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিমান ঘাঁটি।

রেলপথ

কেরালাকে পশ্চিম উপকূল এবং দেশের অন্যান্য অংশের সাথে রেলপথে যুক্ত করতে ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজ থেকে কেরালা অবধি রেলপথ নির্মাণ করা হয়। এই পথেরই অংশ ছিল মাদ্রাজ-পোদানূর রেলখণ্ড, যার ফলে কোয়েম্বাটুর জেলায় প্রথম রেল পরিষেবা চালু হয়।[২৪] ব্রডগেজ ট্রেন কোয়েম্বাটুর তামিলনাড়ু এবং দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত করেছে। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে পোদানূর থেকে দিন্দিগুল পর্যন্ত বিস্তৃত একমাত্র মিটার-গেজ রেলপথ বন্ধ করে তার উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। কোয়েম্বাটুর জংশন রেলওয়ে স্টেশন ভারতের একাধিক বড় শহর এবং সালেম রেলবিভাগের অন্তর্গত সমস্ত জেলার সাথে সুসংবদ্ধ পরিবহনযোগ্য। জেলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন হলো; কোয়েম্বাটুর উত্তর, পোদানূর, পোল্লাচি এবং মেট্টুপালয়ম।

সড়ক পথ

সালেম-কোচি মহাসড়কের জাতীয় সড়ক বাইপাস

কোয়েম্বাটুর জেলা সড়ক এবং মহাসড়ক পথে ভারতের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে সুসংবদ্ধ। এখানে রয়েছি সাতটি আঞ্চলিক পরিবহন অফিস যথা: কোয়েম্বাটুর দক্ষিণ (পীলমেড়ু), কোয়েম্বাটুর মধ্য (গান্ধীপুরম), কোয়েম্বাটুর উত্তর (তুদিয়ালুর), কোয়েম্বাটুর পশ্চিম (কোবাইপুদুর), মেট্টুপালয়ম, পোল্লাচি এবং সুলুর। সমগ্র জেলার পাঁচটি জাতীয় সড়ক দীর্ঘায়িত।

জাতীয় সড়ক নংউৎসগন্তব্যমধ্যপথ
৫৪৪সালেমকোচিকোয়েম্বাটুর, পালঘাট, ত্রিশূর
৯৪৮কোয়েম্বাটুরবেঙ্গালুরুকোল্লেগাল, চামরাজনগর
৮১কোয়েম্বাটুরচিদম্বরমকারূর, তিরুচিরাপল্লী
১৮১কোয়েম্বাটুরগুণ্ডলুপেটমেট্টুপালয়ম, উদগমণ্ডলম
৮৩কোয়েম্বাটুরনাগপত্তনমপোল্লাচি, দিন্দিগুল, তিরুচিরাপল্লী, তাঞ্জাবুর

টাউন বাস জেলার ভিতরে ছোট বড় শহর এবং গ্রামের মধ্যে এবং জেলার বাইরে আন্তঃনগর পরিষেবা দান করে থাকে। তামিলনাড়ু, কেরালা, কর্ণাটক, পুদুচেরি এবং অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক শহরের সাথে কোয়েম্বাটুর বাস পরিষেবা রয়েছে। কোয়েম্বাটুর বিভাগ থেকে পরিচালিত আন্তঃনগর বাসেরুটের সংখ্যা ১১৯ টি ও বাস ৫০০-এর অধিক।[৩৯] অন্যান্য বিভাগের মোট ২৫৭ টি রুটের বাস কোয়েম্বাটুর অতিক্রম করে।[৪০]

প্রাণী ও উদ্ভিদ জগৎ

সিঙ্গানলুর হ্রদ থেকে দৃশ্যমান চিতিঠুঁটি গগণবেড়

কোয়েম্বাটুর জেলায় রয়েছে আনাইমালাই ব্যাঘ্র সংরক্ষণ। ইউনেস্কো দ্বারা বিবেচিত পশ্চিমঘাট পর্বতমালার বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মধ্যে একটি হলো নীলগিরি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ, যার কোর অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে এই ব্যাঘ্র সংরক্ষণ।[৪১] এই জাতীয় উদ্যানের রয়েছে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দক্ষিণ দিকের স্থানীয় প্রাণী ও উদ্ভিদকূলের বিস্তৃত ভাণ্ডার। ৪০০ প্রজাতির ভেষজ গাছ সহ ২০০০ প্রজাতির গাছের উপস্থিতি রয়েছে এখানে। উদ্যানের সকল প্রাণীর আধিক্য দেখা যায় তা হল বাঘ, চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, হাতি, ভারতীয় উড়ন্ত কাঠবিড়ালি। এছাড়াও পশ্চিমঘাট পর্বতমালার স্থানীয় কিছু পাখির প্রজাতির মধ্যে রয়েছে নীলগিরি বনকপোত, নীলগিরি তুলিকা, নীলগিরি চুটকি, মালাবার ধূসর ধনেশ, চিতিঠুঁটি গগণবেড় ইত্যাদি। অমরাবতী জলাধার এবং অমরাবতী নদী স্বাদুজলের কুমির-এর প্রজনন স্থল।[৪২]

অর্থনীতি

লক্ষী মিলস কোয়েম্বাটুর এর অন্যতম পুরাতন টেক্সটাইল কারখানা
টাইডেল পার্ক, রাজ্য তথা জেলার বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক
কোডিসিয়া বাণিজ্য কেন্দ্র, কোয়েম্বাটুর
কোয়েম্বাটুর জেলায় অবস্থিত বায়ু বিদ্যুৎ তৈরির বায়ুকল

কোয়েম্বাটুর জেলায় ২৫,০০০ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার প্রাথমিক সিংহভাগই ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেক্সটাইল সংক্রান্ত। কার্পাস উৎপাদন এবং বয়ন ক্ষেত্রে টেক্সটাইল শিল্পের প্রভূত উন্নতি এবং ব্যবসা বাণিজ্যের কারণে কোয়েম্বাটুর কে "দক্ষিণ ভারতের ম্যানচেস্টার" আখ্যায়িত করা হয়।[৪৩][৪৪] সদর শহরের রয়েছে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন (SEZ), একটি সরবনমপট্টিতে অবস্থিত কোয়েম্বাটুর হাই-টেক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (CHIL) এসইজেড এবং অপরটি পীলমেড়ুতে অবস্থিত কোয়েম্বাটুর টাইডেল পার্ক, এছাড়াও রয়েছে আরও অন্তত পাঁচটি এসইজেড।[৪৫][৪৬] ২০০৬-০৭ খ্রিস্টাব্দে তিরুপুর নতুন জেলা গঠিত হওয়ার পূর্বে পূর্বতন কোয়েম্বাটুর ছিল তামিলনাড়ুর সর্বাধিক রাজস্ব দায়ী জেলা।[৪৭] ২০১০ খ্রিস্টাব্দে ব্যবসায়িক পরিবেশ প্রতিযোগী মুলক ভারতীয় শহর গুলির মধ্যে কোয়েম্বাটুরের অবস্থান ছিল ১৫ তম।[৪৮]

১৯২০ ও ১৯৩০-এর দশকে কোয়েম্বাটুরে টেক্সটাইল শিল্পের আকস্মিক বৃদ্ধি শুরু হয়।[৫] যদিও রবার্ট স্টেনস ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে কোয়েম্বাটুরে প্রথম টেক্সটাইল কারখানা তৈরি করেন। এরপর থেকে শহরে দৃষ্টান্তমূলক অর্থনৈতিক কেন্দ্র তৈরি শুরু হয়। কোয়েম্বাটুর শহরের প্রতিনিধিরূপে একাধিক ট্রেড প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমন, কোডিসিয়া, কোইন্ডিয়া, সিটরা এবং কোজেওয়েল। এছাড়াও কোয়েম্বাটুরে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হয় ১,৬০,০০০ বর্গফুট (১৫,০০০ মি) বিস্তৃত বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ। ইনটেকের মতো শিল্প প্রদর্শনী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে থাকার কারণে এর নাম দেওয়া হয় কোইনটেক। এই বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণটি ছয় মাসের প্রকল্পে তৈরি ছিল দেশের মধ্যে বৃহত্তম, যার মালিকানা ছিল কোডিসিয়া (কোয়েম্বাটুর জেলা ক্ষুদ্র শিল্প সমিতি)-এর হাতে।[৪৯] লিমকা বুক অব রেকর্ডস অনুসারে এটি ভারতের বৃহত্তম স্তম্ভহীন হল ঘর।[৫০] কোয়েম্বাটুর এর রয়েছে যথেষ্ট সংখ্যক মাঝারি এবং বৃহৎ টেক্সটাইল কারখানা। এখানে কেন্দ্রীয় টেক্সটাইল গবেষণা কেন্দ্র তথা কেন্দ্রীয় কার্পাস গবেষণা কেন্দ্র বা সিআইসিআর এবং সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ইন্টার্নেশনাল স্কুল অব টেক্সটাইল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট রয়েছে। সাউথ ইন্ডিয়ান টেক্সটাইলস রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন বা সিট্রা প্রতিষ্ঠানটিও রয়েছে কোয়েম্বাটুর শহরে। শহরে রয়েছে বয়ন শিল্পে উন্নতির জন্য ভারত সরকার প্রস্তাবিত দুটি উৎকর্ষতাবর্ধন কেন্দ্র বা সেন্টারস অব এক্সিলেন্স, এগুলি হল, সিট্রায় অবস্থিত মেডিকেল টেক্সটাইল রিসার্চ সেন্টার মেডিটূক অপরটি পিএসজি কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজিতে অবস্থিত ইন্ডুটেক‌।[৫১] নিকটবর্তী শহর তিরুপুরে রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম হোসিয়ারি বস্ত্র বিপণন কেন্দ্র, যেটি প্রতিবছর ৫০,০০০ মিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রার বিপণন নিশ্চিত করে‌।

চেন্নাইয়ের পরে কোয়েম্বাটুর তামিলনাড়ুর দ্বিতীয় বৃহত্তম সফটওয়্যার উৎপাদক জেলা। শহরাঞ্চল এবং তার আশেপাশে একাধিক তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যান এবং পরিকল্পনামাফিক তৈরি কোয়েম্বাটুর টাইডেল পার্কের কারণে তথ্য প্রযুক্তি এবং ব্যবসোন্নতি বহিঃউৎসায়ন ক্ষেত্রে উন্নতি এবং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে। বৈশ্বিক ভাবে বহিরুৎসায়িত শহর গুলির মধ্যে কোয়েম্বাটুরের অবস্থান ১৭ তম।[৫২][৫৩] ২০০৯-১০ অর্থবর্ষে সফটওয়্যার রপ্তানির ক্ষেত্রে পূর্বের অর্থবছরের তুলনায় ৯০ শতাংশ অধিক লাভ হয়, যা ৭.১ বিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রা।[৫৪] কোয়েম্বাটুরে রয়েছে বড় এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং এই সংস্থাগুলির ইন্ধন যোগায় তামিলনাড়ু এগ্রিকালচার বিশ্ববিদ্যালয়, সিট্রা ও বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মতো একাধিক প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা কেন্দ্র।[৫৫]

কোয়েম্বাটুরে আছে ভারতের অন্যতম বৃহৎ অটো মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থাসমষ্টি। মারুতি সুজুকি এবং টাটা মোটরস-এর মত গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা তাদের ৩০% অটোমোটিভ কম্পোনেন্ট এই শহর থেকেই পেয়ে থাকে।[৫৬][৫৭] ভারতে প্রথম দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি গাড়ির ডিজেল ইঞ্জিন ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে কোয়েম্বাটুরে প্রস্তুত হয়‌[৫৮] সমগ্র জেলা জুড়ে বিভিন্ন শ্রেণীর টায়ার, দ্বিচক্রী, চতুর্চক্রী প্রভৃতি নির্দিষ্ট ও অনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক যানবাহনের এবং ট্রাক্টরের টায়ার তৈরি হয়।[৫৯] কোয়েম্বাটুর জেলায় রয়েছে ৭০০ টিরও বেশি পেষণযন্ত্র প্রস্তুতকারক কোম্পানি, ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই কোম্পানিগুলি ৭৫,০০০ ইউনিট যন্ত্র প্রস্তুতিতে সক্ষম।[৬০] কোয়েম্বাটুর পেষণযন্ত্র বর্তমানে ভৌগোলিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত।[৫৮][৬১]

কোয়েম্বাটুর সারা ভারতের প্রয়োজনীয় মোটর এবং পাম্পের দুই-তৃতীয়াংশ যোগান দেওয়ার ফলে এই শহরটিকে "পাম্প সিটি অব ইন্ডিয়া" আখ্যা দেওয়া হয়।[৫৮] বিশ্বব্যাপী পরিচিত কিছু বৃহত্তর পাম্প প্রতিষ্ঠান হল ফ্লোসার্ভ পাম্পস, লক্ষ্মী পাম্পস, সুগুনা পাম্পস, শারপ ইন্ডাস্ট্রিজ, সিআরআই পাম্পস, টেক্সমো ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেকান পাম্পস এবং কেএসবি পাম্পস। কোয়েম্বাটুর জেলা গহনা রপ্তানির জন্যো পরিচিত,[৬২] সাধারণত এখানে ঢালাই গয়না এবং যন্ত্র দ্বারা তৈরি গয়না প্রস্তুত করা হয়। এছাড়াও এটি দক্ষিণ ভারতের পরিচিত হীরক কাটার কেন্দ্র।[৬৩][৬৪][৬৫][৬৬] কোয়েম্বাটুর শহর শহরে রয়েছে প্রায় ৩,০০০ গয়না প্রস্তুতকারক কোম্পানি এবং ৪০,০০০ স্বর্ণকারের বসতি।[৬৭][৬৮][৬৯]

কোয়েম্বাটুর জেলায় রয়েছে বড় সংখ্যায় পৌলট্রি ফার্ম যেখানে সাধারণত মুরগির ডিম এবং মাংসের চাহিদা বেশি। মোট প্রাপ্ত মাংসের ৯৫ শতাংশ বিদেশে রপ্তানি করা হয়।[৫৮][৭০] ভারতের কিছু পুরানো গমকল রয়েছে এখানে। দক্ষিণ ভারতে গমের চাহিদা মাসিক ৫০,০০০ মেট্রিকটনের কিছু বেশি। অতিসম্প্রতি শহরে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু নামকরা তারকা হোটেল।[৭১][৭২][৭৩][৭৪][৭৫] কোয়েম্বাটুর দক্ষিণ ভারতের বৃহত্তম মেট্রোবিহীন ই-কমার্স শহর।[৭৬]

প্রচার ও সংবাদ মাধ্যম

চারটি বৃহত্তর ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য হিন্দু,দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডেকান ক্রনিকল এবং দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর‌ প্রতিটিরই রয়েছে কোয়েম্বাটুর সংস্করণ। বিজনেস লাইন, ব্যবসা সংক্রান্ত এই সংবাদপত্রটিরও কোয়েম্বাটুর সংস্করণ রয়েছে। তামিল ভাষার সংবাদপত্রের মধ্যে রয়েছে দিনমালার, দিন তন্তি, দিনমণি, দিনকরন (প্রতিটি প্রত্যুষ সংবাদপত্র) এবং তামিল মুরসুমালাই মালার (উভয় সান্ধ্য সংবাদপত্র)। দুটি মালয়ালম ভাষার সংবাদপত্র – মালয়াল মনোরমা এবং মাতৃভূমি ও রয়েছে।

আকাশবাণী সর্বভারতীয় বেতারের একটি মধ্যম তরঙ্গের রেডিও স্টেশন রয়েছে যেখানে তামিল, ইংরেজি এবং হিন্দি ভাষার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। কোয়েম্বাটুর থেকে নিয়ন্ত্রিত পাঁচটি এফএম সম্প্রচার হলো – আকাশবাণী রেইনবো এফএম, সান টিভি নেটওয়ার্কের সূর্যন এফএম ৯৩.৫[৭৭][৭৮] রেডিও মির্চি,[৭৯] রেডিও সিটি এবং হ্যালো এফএম।[৮০][৮১] এইসকল নিজস্ব রেডিও স্টেশন শুধু তামিল ভাষার স্থান এবং চলচ্চিত্রের গান সম্প্রচার করে থাকে। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি দূরদর্শন পুনঃপ্রচার শুরু করে। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে কোড়াইকানাল-এর একটি রিপিটার টাওয়ার থেকে মাদ্রাস দূরদর্শনও পুনঃপ্রচার শুরু করে‌। সম্প্রতি টেলিভিশন তরঙ্গ গ্রহণ ডিটিএইচ বা কেব্‌ল মারফত শুরু হয়েছে। ২০০৫ দূরদর্শন কোয়েম্বাটুরে একটি স্টুডিও চালু করে।[৮২]

জেলায় ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ইন্টারনেট কানেকশন ও ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রডব্যান্ড কানেকশন স্থায়ীভাবে চালু হয়। ২০১০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বিএসএনএল, রিলায়েন্স কমিউনিকেশন, ভারতী এয়ারটেল, টাটা টেলিসার্ভিস কানেকশনগুলি মোবাইল, এমটিএস মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু করে।[৮৩] ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রথম সেলুলার টেলিফোনি চালু হয়‌।[৮৪] কোয়েম্বাটুর তামিলনাড়ু রাজ্য সেলুলার সার্ভিস প্রোভাইডার সাইকেলের সদর।[৮৫]

কোয়েম্বাটুরে রয়েছে দক্ষিণ ভারতের বেশ কিছু পুরাতন ফিল্ম স্টুডিও। চলচ্চিত্র প্রদর্শক স্বামীকন্নু ভিনসেন্ট এই শহরে প্রথম মুভি স্টুডিও সংস্থাপন করেন।[৮৬] ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের রঙ্গস্বামী নাইডু সেন্ট্রাল স্টুডিও এবং ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে এস এম শ্রীরামালু নাইডু পক্ষীরাজ স্টুডিও চালু করেন।[৮৭]

সংস্কৃতি

পেরূর পট্টীশ্বর মন্দির
মরুধমালাই মন্দির

কোয়েম্বাটুর এর স্থানীয় জনবসতি শিল্প উদ্যোগের জন্য সমাদৃত।[৮৮][৮৯] ঐতিহ্যবাহী বলে বিচার করা হলেও কোয়েম্বাটুর শহর তামিলনাড়ুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্যময় এবং বিশ্বজনীন শহর।[৮৮][৯০] তামিল অগ্রহায়ণ (মার্গলী) মাসে এই স্থানে শিল্পকলা এবং সঙ্গীতের বাৎসরিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়ে থাকে।[৯১] ২০১০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্ব শাস্ত্রীয় তামিল সম্মেলন কোয়েম্বাটুর শহরে অনুষ্ঠিত হয়।[৯২][৯৩] অত্যধিক শিল্পায়নের ফলে সমগ্র জেলা তথা শহরজুড়ে শ্রমিক সংঘগুলির সংগঠন লক্ষণীয়।[৯৪]

ধর্ম

কোয়েম্বাটুর জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম হিন্দু হলেও সর্বাধিক সংখ্যালঘু মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। স্বল্প সংখ্যায় খ্রিস্টান, শিখ এবং জৈন ধর্মাবলম্বী লোকের বসবাসও রয়েছে। ‌‌ সমগ্র জেলা জুড়ে রয়েছে একাধিক হিন্দু মন্দির যথা পেরূর পট্টীশ্বর মন্দির, শ্রী বেঙ্কটেশ্বর পেরুমাল মন্দির, নাগ সাই মন্দির, কোণ্ণিয়াম্মান মন্দির, তণ্ডু মারিয়াম্মান মন্দির, মাসানিয়াম্মান মন্দির, তেন তিরুপতি, বন ভদ্রকালী আম্মান মন্দির, কারমঠা রঙ্গনাথ মন্দির, সুলাক্কল মারিয়াম্মান মন্দির, বালাই তোট্টদু আইয়ান মন্দির, ইসকন মন্দির, ঈক্ষনারী বিনায়ক মন্দির, মরুধমালাই মন্দির, লোকনায়ক শনীশ্বর মন্দির, অষ্টাংশ বরদ অঞ্জনেয় মন্দির, পঞ্চমুখ অঞ্জনেয় মন্দির, অনুবাবী সুব্রহ্মণ্যম মন্দির এবং ধ্যানলিঙ্গ যোগী মন্দির।[৯৫] গ্রীষ্মকালে অনুষ্ঠিত মারিয়াম্মান অনুষ্ঠানটি এই জেলার একটি বড় উৎসব।[৯৬]

ওপ্পঙ্করা স্ট্রীট এবং বিগ বাজার স্ট্রিটে অবস্থিত মসজিদ দুটি কোয়েম্বাটুর এর অন্যতম পুরাতন এবং হায়দার আলীর সমকালীন।[৯৭] স্থানীয় নায়ক রাজ বংশের রাজারা ১৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকদের গির্জা তৈরির অনুমতি দেন। বর্তমানে এই গীর্জাটি রয়েছে ১২ কিমি (৭.৫ মা) দূরে কারুমতমপট্টিতে। এছাড়াও ‌ কোয়েম্বাটুর শহরে রয়েছে শিখদের গুরুদ্বার এবং জৈন মন্দির।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

কোয়েম্বাটুর শহরতলীতে অবস্থিত একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়

কোয়েম্বাটুর দক্ষিণ ভারতে শিক্ষার কেন্দ্র। ২০১০ এর তথ্য অনুসারে কোন ব্যক্তির জেলায় সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়, আটাত্তরটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পাঁচটি মেডিকেল কলেজ, দুটি ডেন্টাল কলেজ, পঁয়ত্রিশটি পলিটেকনিক কলেজ, দেড়শ টি কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগীয় কলেজ এবং বিদ্যালয় রয়েছে।[৯৮][৯৯][১০০] শহরের বেশ কিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে যেমন ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত তামিলনাড়ু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত ভারতীয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত অবিনাশীলিঙ্গম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত আন্না বিশ্ববিদ্যালয় কোয়েম্বাটুর প্রাঙ্গণ।[১০১] কোয়েম্বাটুর এর রয়েছে কেন্দ্রীয় কার্পাস গবেষণা কেন্দ্র, আখ ফলন প্রতিষ্ঠান, বন বংশানু বিজ্ঞান এবং বৃক্ষ প্রজনন প্রতিষ্ঠান (আইএফজিটিবি), ভারতীয় বনাঞ্চল গবেষণা এবং শিক্ষা পরিষদ ও তামিলনাড়ু নাগরিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।[১০২] এই অঞ্চলে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা চলছে।[১০৩][১০৪] কোয়েম্বাটুর জেলায় রয়েছে একাধিক মাল্টি ক্যাম্পাস, মাল্টি ডিসিপ্লিনারি বেসরকারি বিবেচ্য বিশ্ববিদ্যালয়, অমৃতা বিশ্ব বিদ্যাপীঠম[১০৫]

কোয়েম্বাটুর জেলায় ১৮৭৫-৭৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম কলেজ, "গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ, কোয়েম্বাটুর" স্থাপিত হয়।[১০৬] ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বন প্রতিপালন বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হয়। গোপালস্বামী দুরাইস্বামী নাইডু ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে জেলায় প্রথম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ আর্থার হোপ কলেজ অফ টেকনোলজি প্রতিষ্ঠা করেন। পরে এই কলেজটিই কোয়েম্বাটুর গভমেন্ট কলেজ অফ টেকনোলজিতে নামান্তরিত হয়। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত হয় পিএসজি কলেজ অব টেকনোলজি। ভারতীয় বায়ুসেনা সৈনিকদের প্রশিক্ষিত করার জন্য কোয়েম্বাটুরে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে দ্য এয়ারফোর্স অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কলেজ চালু হয়। ১৯৫০-এর দশকে চালু হয় কোয়েম্বাটুর প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান বা সিআইটি। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে কোয়েম্বাটুর মেডিকেল কলেজ ও ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে গভমেন্ট ল কলেজ চালু হয়। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এগ্রিকালচারাল স্কুল ১৯৭১-এ সম্পূর্ণভাবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে চালু হয় সেলিম আলি পক্ষীবিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক ইতিহাস কেন্দ্র। ১৯৯০ এর দশকে বেশকিছু বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলা বিভাগ এবং বিজ্ঞান বিভাগীয় কলেজ স্থাপিত হয়। কিছু বিখ্যাত কলা ও বিজ্ঞান বিভাগীয় কলেজ হল পিএসজি কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স, ড. জি আর দামোদরন কলেজ অফ সায়েন্স, শ্রীকৃষ্ণ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স কলেজ।

১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে কোয়েম্বাটুর জেলা থেকে প্রথম একগুচ্ছ শিক্ষার্থী তামিলনাড়ু মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আপিল করে। এই জেলায় রয়েছে কোয়েম্বাটুর এবং পোল্লাচি দুটি শিক্ষা জেলা।[১০৭][১০৮]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী