কেলুচরণ মহাপাত্র
কেলুচরণ মহাপাত্র (৮ জানুয়ারি ১৯২৬ - ৭ এপ্রিল ২০০৪) একজন কিংবদন্তি ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী, গুরু এবং ওডিশি নৃত্যের উদ্গাতা ছিলেন যাঁর কৃতিত্বে বিশ শতকে এই ধ্রুপদী নৃত্যের পুনরুজ্জীবন এবং জনপ্রিয়তা অর্জিত হয়েছিল।[২] তিনি ওডিশা থেকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে পদ্ম বিভূষণ পুরস্কার পেয়েছিলেন।[৩]
কেলুচরণ মহাপাত্র | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৭ এপ্রিল ২০০৪ | (বয়স ৭৮)
পেশা | ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী, নৃত্যপরিকল্পক |
কর্মজীবন | ১৯৩৫-২০০৪ |
দাম্পত্য সঙ্গী | লক্ষ্মীপ্রিয়া মহাপাত্র [১] |
সন্তান | রতিকান্ত মহাপাত্র |
পুরস্কার | পদ্মবিভূষণ |
ভারতের একজন প্রসিদ্ধ সংস্কৃত কবি এই গুরু সম্বন্ধে লিখেছেন: সাঙ্গো-পাঙ্গা-সুভাঙ্গি-লাস্য-মধুরম সমুত্তীর্ণ-নৃত্যার্ণবম, যা অনুবাদ করলে দাঁড়ায় - 'তাঁর নৃত্যে দেহের প্রতিটি অঙ্গ সঞ্চালন অলৌকিক ভঙ্গি ও অঙ্গবিন্যাসের পরম মাধুর্য সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে গুরু কেলুচরণ মহাপাত্র নৃত্যশৈলীর সাগর পার করেছিলেন।'[৪]
প্রারম্ভিক জীবন ও ইতিহাস
কেলুচরণ মহাপাত্র তাঁর নবীন বয়সে গতিপোয়া নামে ওডিশার এক ঐতিহ্যপূর্ণ নৃত্যশৈলী প্রদর্শন করতেন যাতে প্রভু জগন্নাথ দেবের প্রশংসা লাভ করার জন্যে যুবা ছেলেরা নারীর পোশাক পরিধান করত। পরবর্তীকালে তিনি তাঁর জীবনে গতিপোয়া এবং মহারী নৃত্যের ওপর নিবিড় গবেষণা করেছিলেন, যেটা তাঁর ওডিশি নৃত্যের পুনর্গঠনের পক্ষে সহায়ক হয়েছিল। গুরু কেলুচরণ মহাপাত্র মৃদঙ্গ, পাখোয়াজ এবং তবলা এই তালবাদ্যগুলোতে একজন বিশারদ ছিলেন, যে ব্যাপারটা তাঁর নৃত্য গ্রন্থনায় সরাসরি সহায়ক হয়েছিল। ঐতিহ্যপূর্ণ পটচিত্র অঙ্কনেও তাঁর পারদর্শিতা ছিল।
গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের স্ত্রীর নাম লক্ষ্মীপ্রিয়া মহাপাত্র। লক্ষ্মীপ্রিয়া নিজেও একজন নৃত্যশিল্পী। তাঁদের পুত্রসন্তানের নাম রতিকান্ত মহাপাত্র। তিনি ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে সৃজন নামে এক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[৫]
পুরস্কারসমূহ
- সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার, ১৯৬৬
- পদ্মশ্রী, ১৯৭৪ [৬]
- পদ্মভূষণ, ১৯৮৮
- সংগীত নাটক আকাদেমি ফেলোশিপ, ১৯৯১
- পদ্ম বিভূষণ, ২০০০
- মধ্য প্রদেশ রাজ্য সরকার থেকে কালিদাস সম্মান
উদ্ধৃতিসমূহ
- "জনগণকে প্রমোদ প্রদানের জন্যে ওডিশি শুধুমাত্র একটা নৃত্যশৈলীই নয় আসলে অনুপ্রেরণা এবং উন্নয়নের উৎস। আমি আদতে নৃত্য প্রদর্শন করিনা বরং সমবেদনার সঙ্গে প্রার্থনা করি এবং দর্শকদের ভাষায় যেন এই 'শৈলী' নৃত্যরত ।"[৭]
- "প্রকৃত নৃত্য নিশ্চিতভাবে অবিভক্ত অস্তিত্বের অনুভূতি প্রকাশ করে, যাতে একটি দর্শকের অনুভূতি হয় যে, সে উপলব্ধি করা বিষয় থেকে ভিন্ন নয়"।
- "নৃত্য আমার জীবনে শুধু অভীষ্টসাধনই করেনি, এটাই ছিল আমার সম্পূর্ণ জীবন। আজকে আমি যা-ই হই-না-কেন সেটা পুরোপুরি আমার গুরুর আশীর্বাদেই।"
তথ্যসূত্র
অধিকতর পাঠ
- দ্য মেকিং অফ আ গুরু কেলুচরণ মহাপাত্র, হিজ লাইফ অ্যান্ড টাইমস, লিখেছেন ইলিয়ানা সিটিরিস্টি । মনোহর, ২০০১ দ্বারা প্রকাশিত। আইএসবিএন ৮১-৭৩০৪-৩৬৯-৮ আইএসবিএন 81-7304-369-8 ।
- দ্য ডান্সিং ফেনোমেনন: ম্যাড বয়, শ্যারন লোয়েন, কেলুচরণ মহাপাত্র, অবিনাশ পাসরিচা। লাস্টার প্রেস, রলি বুকস, ২০০১ আইএসবিএন ৮১-৭৪৩৬-১৭৯-০ আইএসবিএন 81-7436-179-0 ।
বহির্সংযোগসমূহ
- ভিডিও সংযোগ