কুমারী কমলা

ভারতীয় অভিনেত্রী

কুমারী কমলা (জন্ম ১৬ জুন ১৯৩৪) একজন ভারতীয় নৃত্যশিল্পী এবং অভিনেত্রী (তিনি কমলা লক্ষ্মণ নামেও পরিচিত)। প্রাথমিকভাবে তিনি শিশু নৃত্যশিল্পী হিসাবে কাজ করা শুরু করেন, কমলা তার পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে প্রায় ১০০ টি তামিল, হিন্দি, তেলুগু এবং কান্নাডা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৭০ এর দশকে তিনি বাজুভুর শৈলীর নৃত্যের একজন শিক্ষক হয়েছিলেন, এই নৃত্যে তিনি বিশেষীভাবে পারদর্শী ছিলেন।

কুমারী কমলা
১৯৫০ এর দশকের শুরুতে কুমারী কমলা
জন্ম (1934-06-16) ১৬ জুন ১৯৩৪ (বয়স ৯০)
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামবেবী কমলা, কমলা লক্ষ্মণ, কমলা লক্ষ্মণ কমলা লক্ষ্মণ, কমলা নারায়ণ, কমলা লক্ষ্মী নারায়ণন
পেশানৃত্যশিল্পী, অভিনেত্রী
দাম্পত্য সঙ্গী
  • আর.কে. লক্ষ্মণ (বিবাহবিচ্ছেদ ১৯৬০)
  • টি. ভি. লক্ষ্মীনারায়ণ

প্রাথমিক জীবন ও কর্মজীবন

তিনি ভারতের মায়ুরামের একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তার বোন রাধা ও বাসন্তীও নৃত্যশিল্পী ছিলেন। খুব অল্প বয়সেই কমলা বোম্বাইয়ের লাছু মহারাজের কাছ থেকে কথক নৃত্যশৈলীর পাঠ গ্রহণ শুরু করেন। তিনি শঙ্কর রাও ব্যাসের কাছ থেকে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের উপরও পাঠ গ্রহণ করেন। তিনি চার বছর বয়সে যখন নাচের আবৃত্তিতে অংশ নিয়েছিলেন তখন তামিল চলচ্চিত্র পরিচালক এ.এন. কল্যাণসুন্দরাম আইয়ার তাকে আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি তাঁর ভালিবর সঙ্গম (১৯৩৮) এবং রমানামা মহিমাই (১৯৩৯) ছবিতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তাকে বাছাই করেন, সেখানে তাকে কমলা নামে বিল করা হয়েছিল।[২] তাঁর নাচটি অন্যান্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তিনি ১৯৩৮ সালে জেইলোর এবং ১৯৪৩ সালে কিসমত এবং রাম রাজ্য ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে হিন্দি ছবিতে চলে আসেন। কমলার মা মাদ্রাজে চলে আসেন যাতে তাঁর কন্যা ভরতনাট্যম শিক্ষক কাট্টুমান্নারকোয়েল মুথুকুমারা পিল্লাই এবং বাজুভুর বি. রামাইয়া পিল্লাইয়ের অধীনে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। ১৯৪৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি সফল তামিল চলচ্চিত্র জগথালাপ্রথাপনে কমলা প্রথম কোন চরিত্রে অভিনয় করেন, তিনি পাম্পু আত্মা নৃত্য পরিবেশন করেছিলেন। কমলা তার পরবর্তী ছবি শ্রী ভাল্লীতে (১৯৪৫) দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন এবং মীরা ছবিতে কৃষ্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন। তবে তার অভিনীত চলচ্চিত্র নম ইরুভার তামিল সিনেমার জগতে প্রভাব ফেলে। নম ইরুভার দেশপ্রেম এবং গান্ধীবাদ গানে পূর্ণ ছিল এবং এর নৃত্যগুলি ভারতনাট্যমকে পুনরুজ্জীবিত ও বিধিসম্মত করতে সহায়তা করেছিল। এই ছবিটি ভারতের তামিল ভাষী অঞ্চল জুড়ে "সাংস্কৃতিক বিপ্লব" ছড়িয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করে।[২]

১৯৫৩ সালে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাজ্যাভিষেক উৎসবে সময় জন্য পরিবেশনার জন্য কমলা আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।[৩] ১৯৫০ এর দশকের শেষের দিকে তিনি চীন এবং জাপানে আন্তর্জাতিকভাবে পরিবেশানর জন্য ভ্রমণ করেন। ১৯৭০ সালে ভারত সরকার তাকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ পদকে ভূষিত করে।[৪] তিনি ১৯৭৫ সালে ব্রান্তা অধ্যাপকশিপে ভূষিত হওয়ার পরে কোলগেট বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই মেয়াদে নৃত্যের শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৮০ সালে কমলা স্থায়ীভাবে নিউইয়র্ক শহরে চলে যান এবং সেখানে শাস্ত্রীয় নৃত্য শেখানো শুরু করেন।[৫] তিনি লং আইল্যান্ডে শ্রী ভারত কমলালয় নামে একটি নাচের বিদ্যালয় স্থাপন করেন।[৪] শিল্পকলায় তাঁর অবদানের জন্য ২০১০ সালে তিনি ন্যাশনাল এন্ডোমেন্ট ফর দ্য আর্টস থেকে জাতীয় ঐতিহ্য ফেলোশিপ অর্জন করেন।[৬]

ব্যক্তিগত জীবন

তিনি কার্টুনিস্ট আর. কে. লক্ষ্মণের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, তবে ১৯৬০ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের মাধ্যমে বৈবাহিক সম্পর্কের অবসান ঘটে।[৭] তাঁর দ্বিতীয় স্বামী টি. ভি. লক্ষ্মীনারায়ণন ১৯৮৩ সালে মারা যান। তার দ্বিতীয় স্বামীর ঔরশে তাঁর এক পুত্র সন্তান আছে, তার নাম জৈনন্দ নারায়ণ, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা ।[৫]

পুরস্কার

[৮]

  • ১৯৬৭ - কালাইমামনি
  • ১৯৬৮ - সঙ্গীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার
  • ১৯৭০ - পদ্মভূষণ[৯]
  • ১৯৭৫ - কোলগেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্রান্তা অধ্যাপকত্ব
  • ১৯৮৯ - শ্রুতি ফাউন্ডেশন থেকে ই. কৃষ্ণা আইয়ার পদক
  • ১৯৯৩ - ক্লিভল্যান্ড থায়াগারজা আরাধনায় সংগীতা রত্নাকর
  • ২০০২ - মাদ্রাজ সংগীত একাডেমি থেকে প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী পুরস্কার
  • ২০১০ - জাতীয় ঐতিহ্য ফেলোশিপ
  • ২০১২ - ৪র্থ সেন্ট লুই ভারতীয় নৃত্য উৎসবে সুরিয়া আজীবন সম্মাননা পুরস্কার

চলচ্চিত্রের আংশিক তালিকা

  • ১৯৩৮ ভালিবর সঙ্গম
  • ১৯৩৮ জেইলোর
  • ১৯৩৯ রমানামা মহিমাই
  • ১৯৪১ কাঞ্চন
  • ১৯৪২ চাঁদনী
  • ১৯৪৩ কিসমত
  • ১৯৪৩ রাম রাজ্য
  • ১৯৪৪ জগথালাপ্রথাপন
  • ১৯৪৫ শ্রী ভাল্লী
  • ১৯৪৫ মীরা
  • ১৯৪৫ এন মাগান
  • ১৯৪৭ একম্ববানান
  • ১৯৪৭ কাটাগাম
  • ১৯৪৭ মহাত্মা উদঙ্গর
  • ১৯৪৭ নম ইরুভার'
  • ১৯৪৮ ভেদালা উলাগাম
  • ১৯৫০ বিজয়কুমারী
  • ১৯৫০ দিগম্বর সামিয়ার
  • ১৯৫১ লাবণ্য
  • ১৯৫১ দেবকী
  • ১৯৫১ মোহনা সুন্দরম
  • ১৯৫৩ মানিথন
  • ১৯৫৩ উলাগাম
  • ১৯৫৪ বিলায়াত্তু বোম্মাই
  • ১৯৫৬ দেবতা
  • ১৯৫৬ নানে রাজা
  • ১৯৫৬ চোরি চোরি
  • ১৯৫৬ কুলা দেইভাম
  • ১৯৫৭ কাঠপুতলি
  • ১৯৫৮ ভুকৈলাস
  • ১৯৫৮ তিরুমানাম
  • ১৯৫৮ ইল্লারামে নল্লারাম
  • ১৯৫৮ যাহুদি
  • ১৯৫৯ শিবাগঙ্গাই সীমায়
  • ১৯৫৯ নাচ ঘর
  • ১৯৫৯ নয়া সংসার
  • ১৯৬০ পার্থিবান কানাভু
  • ১৯৬০ পাবাই বিলাক্কু
  • ১৯৬০ বীরাক্কানাল
  • ১৯৬১ ভক্ত কুচেলা
  • ১৯৬১ সৌগন্ধ
  • ১৯৬২ কনজুম সালংগাই
  • ১৯৬২ সুমাইথাঙ্গি
  • ১৯৭১ জ্বালা
  • ১৯৭৩ চেণ্ডা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:পদ্মভূষণ পুরস্কার প্রাপ্তগণ ১৯৭০-৭৯

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী