কশ্যপ
কশ্যপ প্রাচীন আয়ুর্বেদ চর্চাকারী এক ঋষি যাকে বর্তমান মন্বন্তরের সপ্তর্ষির প্রথম হিসেবে উল্লেখ পাওয়া যায়। (অন্যরা হচ্ছে অত্রি, বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, জমদগ্নি, ভরদ্বাজ ও গৌতম এদেরকে মহর্ষি বলা হয়ে থাকে)। কাশ্যপ সংহিতা বা জীবকীয় তন্ত্র নামক প্রাচীন আয়ুর্বেদগ্রন্থটি তার অর্জিত চিকিৎসা-জ্ঞানের সংকলন যেখানে আয়ুর্বেদীয় শিশুস্বাস্থ্য, প্রসূতিস্বাস্থ্য ও আবেশবিজ্ঞান নিয়ে পর্যবেক্ষণ, প্রয়োগ ও সিদ্ধান্তসমূহ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।[১]
কশ্যপ | |
---|---|
অন্তর্ভুক্তি | মহর্ষি |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
মাতাপিতা |
|
সঙ্গী | দিতি , অদিতি , |
সন্তান | সূর্য (দেবতা) |
সংস্কৃত ভাষায় রচিত প্রাচীনতম প্রার্থনাগাথা ঋগ্বেদ-রচয়িতা এক ঋষি এ কশ্যপ যিনি ৬ সূক্তের একক ও ৪ সূক্তের সহ-রচয়িতা।[২]
মহাভারতে কশ্যপকে একজন প্রজাপতি (প্রধান প্রতিপালক) ব'লে উল্লেখ করা হয়েছে।
কশ্যপের ১৩ ধর্মপত্নী ও বংশধর
প্রজাপতি দক্ষ তার ১৩ কন্যা (অদিতি, দিতি, কদ্রু, দানু, অরিষ্ট, সুরসা, সুরভী, বিনতা, তমরা, ক্রোধভাষ, ইরা, বিশ্বা ও মুনি) কশ্যপ হস্তে সমর্পণ করেছিলেন।[৩][৪] অদিতির থেকে দ্বাদশ আদিত্য জন্ম হয়েছিল, যার মাঝে ইন্দ্র একজন। দিতির থেকে অসুররা জন্মগ্রহণ করেছিল। এভাবে তার বংশের থেকে দৈব, দৈত্য, মানুষ, সাপ, পাখি ইত্যাদির সৃষ্টি হয়েছে। ভগবান বিষ্ণু কশ্যপের স্ত্রী অদিতির ছেলে বামন অবতার হয়ে এসেছিলেন।
গোত্র
কশ্যপ গোত্র খুব বিখ্যাত। সকল জীব কশ্যপের বংশধর। আজ যখন কোনও মানুষ নিজের গোত্র সম্পর্কে অবগত নয় তখন পুরোহিত কাশ্যপ গোত্রের কথা বলেন।
কাশ্মীর
কশ্যপ মুনির সুর ও অসুর আশ্রমটি মেরু পর্বতের (শ্রীনগর থেকে তিন মাইল) শীর্ষে অবস্থিত। কাশ্মীর নামটি তার নাম থেকেই এসেছে। তাঁর হাতে নবজীবন লাভ করেছিল বলে এই জায়গার নাম হয় "কাশ্মীর"। লোককাহিনি অনুসারে এই প্রাচীন উপত্যকায় সতীসার বা পার্বতীসাগর নামে বিশাল এক হ্রদ ছিল। সেই জলাশয়ে এক দৈত্যের আবির্ভাব ঘটে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য কাশ্যপ মুনি দীর্ঘ তপস্যা করে হিমালয়ের কোলে গড়ে ওঠা ওই মনোরম উপত্যকাকে রক্ষা করেন।