ওরাল কসাক সৈনিক

ইউরাল কসাক উপদল হলো ইউরাল কসাকদের একটি ইউরেশীয় উপগোত্র, যারা ইউরাল নদীর তীর বরাবর বসতি স্থাপন করে। এদের বিকল্প নাম ইয়াইক কসাক নদীর পুরনো নাম অনুসারে এসেছে।

এছাড়া এই দলের অন্যান্য পরিচিত নাম:

  • রুশ: Ура́льские каза́ки (ура́льцы) (ইউরালস্কিয়ে কাজাকি (ইউরালৎসিও)); Ура́льское каза́чье во́йско (ইউরালস্কিয়ে কাজাশিয়ে ভইস্কো), Яи́цкое каза́чье во́йско (ইয়াৎস্কোয়ে কাজাশিয়ে ভইস্কো)
  • ইউক্রেনীয়: Ура́льскі козаки́ (ইউরালস্কি কোজাকি); Ура́льське коза́цьке ві́йсько (ইউরালস্কি কোজাৎস্কে ভিয়স্কো), Яї́цьке коза́цьке ві́йсько (ইয়াইৎস্কে কজাৎস্কে ভিয়স্কো)
  • বাশকির: Урал казактары (уралец) (ইউরাল কাজক্তারিয়ো (ইউরালেটস)); Урал казак ғәскәре (ইউরাল কাজাক গেস্কেরিয়ে), Яйыҡ казак ғәскәре (ইয়োক কাজাক গেস্কেরিয়ে)

ইতিহাস

ওরেনবার্গ কসাকের একটি দল, ১৯১২। ওরেনাবার্গ কসাকেরা সাকমারা বসতিতে ইউরাল কসাকদের বংশধর। ইয়িক কসাকদের দ্বারা ওরেনাবার্গের প্রতিষ্ঠার পূর্বে সাকমারা বসতি গড়ে গড়ে ওঠে।

ইয়িক (ইউরাল) কসাকেরা প্রাথমিকভাবে রুশভাষী এবং জাতিতাত্ত্বিকভাবে তাদের রুশদের বংশধর বলে দাবি করলেও তাতারদের সাথেও এদের সম্পর্ক রয়েছে।[১] পিটার রিচকোভের মতে কিছু তাতার, যারা নিজেদের বুলগেরীয় খাজার বলে দাবি করে, এবং এই তাতার ও রুশ জাতিসহ প্রথম ইয়িক কসাকেরা ১৪শ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে বিরাজমান ছিল।[২] এই তাতারেরা খুব সম্ভবত শুভাশ বা মিশারি (রুশ ভাষায় মেশেরা এবং তাতার ভাষায় মিশার) জাতির অংশ হয়ে থাকতে পারে। শেষোক্ত জাতির মধ্যে শুধু মুসলিম এবং ইহুদিই ছিল না, বরং খ্রিষ্টানরাও ছিল, যারা রুশদের সাথে তাদের মিশতে সহায়তা করেছিল।[৩] ডন হিসেবেও মেশেরা জাতি গুরুত্বপূর্ণ। পুশকিনের মতে, পরবর্তীতে বিপুল সংখ্যক নোগাই ইয়িক কসাকদের সাথে যোগ দেয়। ১৫৭৭ খ্রিষ্টাব্দে কাজান থেকে অ্যাস্ট্রাখান পর্যন্ত ভল্গা অধিগ্রহণের কুড়ি বছর পর[৪] মস্কো ভল্গা অঞ্চলে জলদস্যু হটানোর জন্য সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করে (যার অংশ ছিল এরমাক)। ফলে এদের কিছু দক্ষিণ-পূর্বে ইউরাল নদীর দিকে পলায়ন করে এবং ইয়িক কসাকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। ১৫৮০ খ্রিষ্টাব্দে এরা একত্রে সরাইচিক দখল করে। ১৫৮১ সাল নাগাদ তারা মস্কোর হয়ে যুদ্ধে শামিল হয় এবং পরবর্তী শতকের কোনো এক সময়ে তাদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৭১৭ খ্রিষ্টাব্দে আলেকজান্ডার বেকোভিভ-চেরকাসস্কির খিভা অভিযানের সময় এদের ১,৫০০ লোক প্রাণ হারায়। ১৭২৩ খ্রিষ্টাব্দের একটি শুমারী অনুযায়ী এদের ৩,১৯৬ জন সামরিক বাহিনীর জন্য উপযোগী ছিল।

১৭৭৪-১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্রোহের সময় ইয়িক কসাকেরা ইয়েমেলিয়ান পুগাচেভের প্রধান শক্তি ছিল। এদের প্রধান জীবিকা ছিল মৎস্যশিকার এবং খাজনা আদায়, যা কসাক এবং রাজপরিবারের সংঘর্ষের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। ফলশ্রুতিতে ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে একটি বিদ্রোহ জেগে ওঠে, যার ফলে জেনারেল ভন ট্রবেনবার্গ নিহত হন। ট্রবেনবার্গ কসাকদের সমস্যা ও অভিযোগ পর্যবেক্ষণ ও নিষ্পত্তির দায়িত্বে নিয়োজিত একটি কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, কিন্তু তার ব্যবহার সাধারণ কসাকদের ক্ষিপ্ত করে। প্রতিশোধ নিতে এদের বেশকিছু লোক আটক হয়, মৃত্যুদণ্ড পায় এবং নির্বাসিত হয়। পুগাচেভ এই সময়ে আবির্ভূত হয়ে এদের বিদ্রোহে শামিল করতে সক্ষম হয়।

বিদ্রোহের পর ইউরালের পুনর্নামকরণ করা হলে ইউরাল আবাসের নামে ইয়িক কসাকদের জাতির নাম পালটে যায়।

ইউরাল রেজিমেন্ট পরবর্তীতে সুভোরভের ইতালি ও সুইস অভিযান, ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দের দেশপ্রেমিক মহাযুদ্ধ, রুশ-তুরস্ক যুদ্ধ, ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর গণঅভ্যুত্থান এবং ক্রিমিয়ার যুদ্ধে অংশ নেয়। এছাড়াও ১৮৭০ এর দশকে রাশিয়ার তুর্কিস্তান আক্রমণেও এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

১৯১৯–১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ইউরাল-গুতইয়েভ অভিযানে তুর্কিস্তান ফ্রন্ট বলশেভিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারী ইউরাল বাহিনীকে পরাজিত করে। ইউরাল বাহিনী ইউরাল কসাক এবং অন্যান্য জাতি নিয়ে গঠিত হয়েছিল। ১৯২০ খ্রিষ্টান্দের শীতকালে ইউরাল কসাক ও তাদের পরিবারের প্রায় ১৫,০০০ সদস্য কাস্পিয়ান সাগরের পূর্বতট ধরে দক্ষিণে আলেকজান্দ্রোভস্ক দুর্গের দিকে যাত্রা করে। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে এদের মাত্র কয়েক শত লোক পারস্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।[৫]

প্রভেদ

ইউরাল আবাসনের বৈশিষ্ট্যসূচক রং হলো ক্রিমসন/লাল, যা স্টিপ কসাকদের মতো ঢিলাঢালা নীল আড়াআড়ি দাগকাটা পায়জামাবিশিষ্ট উর্দির সাথে টুপির ব্যান্ড, এপোলেটে ব্যবহার করা হয়।[৬] আলাদা রেজিমেন্ট কাঁধের হলুদ বর্ণের সংখ্যার ব্যবহার দ্বারা পৃথক করা যায়। ক্রিমসন রঙের কাপড়ের সাথে কখনো উঁচু পশমী টুপি পরিধান করা হতো। ইউরাল কিংবা অন্যান্য কসাক জাতি কখনোই স্পার পরিধান করতো না। ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দের পর মাঠপর্যায়ে নীলচে ধূসর পায়জামার সাথে খাকি ধূসর রঙের জ্যাকেট যুক্ত হয়।[৭] তার ওপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় শান্তিকালীন পোশাক হিসেবে ক্রিমসন/লাল আড়াআড়ি দাগকাটা ফোলা পায়জামার সাথে অ্যাস্ট্রাখান টুপি বজায় থাকে।[৮]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী