উমা ডোগরা | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্ম | (1957-04-23) ২৩ এপ্রিল ১৯৫৭ (বয়স ৬৭) নতুন দিল্লি, ভারত |
ধরন | ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য |
পেশা | কত্থক নর্তকী, শিক্ষক, নৃত্য পরিকল্পক, প্রচারক, সংগঠক |
কার্যকাল | ১৯৭২-বর্তমান |
ওয়েবসাইট | umadogra.com |
উমা ডোগরা (জন্ম ২৩ শে এপ্রিল ১৯৫৭) হলেন ভারতীয় ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য কত্থকের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব।[১] তিনি পণ্ডিত দুর্গা লালের বরিষ্ঠতম এক শিষ্য। [২] পণ্ডিত লাল হলেন জয়পুর ঘরানার বিখ্যাত কত্থক কলাকার। উমা একক কত্থক নৃত্য প্রদর্শন করেন। তিনি একজন নৃত্য পরিকল্পক এবং শিক্ষক।[১][৩] তিনি ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে এবং বিদেশে নৃত্য প্রদর্শন করে আসছেন।
তিনি নতুন দিল্লির মালব্য নগরে মতিরাম এবং শকুন্তলা শর্মার গৃহে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। উমা ৭ বছর বয়সে নাচ শুরু করেন। তিনি প্রথমে গুরু বংশীলালের অধীনে প্রশিক্ষণ নেন এবং তারপরে নতুন দিল্লিতে কত্থক কেন্দ্রের রেবা বিদ্যার্থীর শিষ্য হন তিনি। তারপরে তিনি জয়পুর ঘরানার পণ্ডিত দুর্গা লালের কাছে নৃত্য শিক্ষা শুরু করেন।[৪] তিনি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শেখেন তাঁর পিতা পণ্ডিত মতিরাম শর্মার কাছে, যিনি বিখ্যাত সেতার বাদক পণ্ডিত রবিশঙ্করের শিষ্য ছিলেন।।
উমা ডোগরা হলেন পণ্ডিত দুর্গা লাল গাঁঠ বাঁধা (এটি একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান যা গুরু এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করে) শিষ্য।[৫] তিনি ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত রেবা বিদ্যার্থী এবং পণ্ডিত বিরজু মহারাজেরর অধীনে কত্থক শিখেছিলেন। এরপর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল অবধি তিনি পণ্ডিত দুর্গা লালের অধীনে কত্থক শিখেছিলেন,[৪] এবং এসবিকেকে, রামলীলা, সুরদাস, শাহ-নে-মুঘল প্রভৃতি চলচ্চিত্র প্রযোজনাগুলিতে নৃত্য করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে মুম্বাই চলে এসেছিলেন এবং নৃত্য ভারতী, ধারাবাহিক নূপুর এবং ব্যালে 'মীরা'তে হেমা মালিনীর সঙ্গে কাজ করেছিলেন। তিনি ঝঙ্কার ধারাবাহিকে আশা পারেখের সাথে কাজ করেছিলেন।গুরুর মৃত্যুর পর, ১৯৯০ সালে, উমা ডোগরা স্যাম বেদ সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল এর মাধ্যমে পরিবেশন শিল্পকলা শেখানো এবং প্রচার ও উন্নত করা।[৩] এই সংস্থার পতাকা তলে, গত ২৫ বছর ধরে,[৫][৬][৭] মুম্বাইয়ের সাংস্কৃতিক নির্ঘণ্টে, তিনি দুটি উৎসব আয়োজন করে চলেছেন।[৬] প্রথমটি, পণ্ডিত দুর্গা লাল উৎসব, বছরের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হয়।[৫] এটিতে সংগীত, নৃত্য এবং থিয়েটারের ক্ষেত্র থেকে প্রথিতযশা শিল্পীরা এসে অনুষ্ঠান করেন।[৩] দ্বিতীয়টি, ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের রেইনড্রপস উৎসব,[৫] জুলাই মাসে, উঠতি একক শিল্পীদের সবার সামনে নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।তিনি খাজুরাহো নৃত্য উৎসব, মারগাজি উৎসব সহ অনেক উৎসবে অংশ নিয়েছেন। [৮]তিনি মুম্বাইয়ের উমা ডোগরা কত্থক বিদ্যালয়ে কত্থকের শিক্ষা দেন। তিনি প্রচুর সংখ্যক ছাত্রকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যার মধ্যে কয়েকজন বলিউড থেকে আগত। সোনম কাপুর,[৯] and রচনা পারুলকর[১০] তাঁর শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যতম।
নৃত্যশিল্পীরা যখন মঞ্চে যায়, তারা হিন্দু ধর্ম, ইসলাম বা এটা ওটাকে চিত্রিত করে না। এটি তোমার নিজের জীবনের একটি অভিব্যক্তি, তোমার নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং তোমার নিজস্ব জ্ঞান।[১১]
— উমা ডোগরা
২০০৪ সালে তাঁকে 'পণ্ডিতা' সম্মান দেওয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালের সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার সহ বেশ কয়েকটি স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং জাতীয় পুরস্কার তিনি জিতেছেন।[১২][১৩][১৪]
১৮ই মে ২০১৬-তে, উমা তাঁর দুই শিষ্য সরিতা কালেলে এবং গীতাঞ্জলি শর্মার সাথে, এক মাসব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব উজ্জয়িনী সিংহস্ততে নৃত্য পরিবেশন করেছিলেন।[১৫][১৬]
উমা ডোগরা কে রায়পুরের আইটিএম বিশ্ববিদ্যালয় ১২ই ডিসেম্বর ২০১৬ সালে সম্মানসূচক ডক্টরেট পুরস্কার প্রদান করেছিল। আইটিএম গ্রুপ এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ও আইটিএম বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ডক্টর পি.ভি. রামনার কাছ থেকে তিনি ডক্টরেট পেয়েছিলেন।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা চিত্রার্থ সিংহকে উমা ডোগরা বিবাহ করেছেন। তাঁদের একটি কন্যা, সুহানি সিং এবং একটি পুত্র মানস সিং। সুহানি ইন্ডিয়া টুডের লেখক ও সাংবাদিক এবং মানস একজন অভিনেতা। উমা মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন।
নৃত্যশিল্পী হিসাবে তাঁর যাত্রা এবং কত্থকের কৌশল সম্পর্কে তিনি একটি বই লিখেছেন "ইন প্রেইস অফ কত্থক"।[১৭]এই বইটি, সংসদ সদস্য হেমা মালিনী, ২০১৫ সালের ৩০ শে জানুয়ারী, সামবেদের রজত জয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে প্রকাশ করেছিলেন।[১৮]
নির্বান থ্রু ডান্স - একটি চলচ্চিত্র যা উমার গুরু পণ্ডিত দুর্গা লালের জীবন ও কৃতিত্ব উদযাপনের জন্য নির্মিত হয়েছিল।[১৯]
উমা ডোগরা মুম্বই তে স্কুল অফ কত্থক চালাচ্ছেন।[১৫] এর ক্রিয়াকলাপগুলির মধ্যে রয়েছে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান, কর্মশালা, মাস্টার ক্লাস, নৃত্য প্রদর্শন, সেমিনার এবং উৎসব।