ইয়ান রেডপাথ

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

ইয়ান রিচি রেডপাথ, এমবিই (ইংরেজি: Ian Ritchie Redpath; জন্ম: ১১ মে, ১৯৪১) ভিক্টোরিয়ার জিলং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ও সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারঅস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৬ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে টেস্টএকদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছেন তিনি।

ইয়ান রেডপাথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ইয়ান রিচি রেডপাথ
জন্ম (1941-05-11) ১১ মে ১৯৪১ (বয়স ৮৩)
জিলং, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামগান্ধী
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২২৭)
১ জানুয়ারি ১৯৬৪ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৩১ জানুয়ারি ১৯৭৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ )
৫ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ ওডিআই২০ ডিসেম্বর ১৯৭৫ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬১ - ১৯৭৬ভিক্টোরিয়া বুশর‍্যাঞ্জার্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা৬৬
রানের সংখ্যা৪৭৩৭৪৬
ব্যাটিং গড়৪৩.৪৫৯.১৯
১০০/৫০৮/৩১০/০
সর্বোচ্চ রান১৭১২৪
বল করেছে৬৪
উইকেট
বোলিং গড়--
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট-
সেরা বোলিং--
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং৮৩/০২/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১ জানুয়ারি ২০১৬

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। গ্রেগ চ্যাপেল তার সম্পর্কে বলেন যে, তার জানা দু’জন ব্যক্তির মধ্যে ইয়ান রেডপাথ একজন যিনি অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলকে ধ্বংসস্তুপ থেকে রক্ষা করতে পারতেন; অন্যজন হচ্ছেন রডনি মার্শ[১]

প্রারম্ভিক জীবন

জিলং কলেজের ছাত্র রেডপাথের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে অংশ নিয়েছেন। দলটিতে তিনি ৯২ খেলায় অংশ নিয়ে ৬,১০৩ রান তোলেন। তন্মধ্যে, নিজস্ব দশম প্রথম-শ্রেণীর ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৬১ রান করেন। ফেব্রুয়ারি, ১৯৬২ সালে ওয়েস হলের ন্যায় বোলারদের আক্রমণ রুখে দিয়ে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছিলেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৬৬ টেস্ট ও ৫ ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় খেলায় তাঁর অভিষেক ঘটে। মেলবোর্নে নববর্ষের দিনে অনুষ্ঠিত টেস্টে বিল লরি’র সাথে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন তিনি। এ জুটি ২১৯ রান তুলে ও তিনি ব্যক্তিগত ৯৭ রানে বোল্ড হন।

ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিডনি টেস্টে তিনি প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির সন্ধান পান। একই সিরিজের অ্যাডিলেড টেস্টে বোলার প্রান্তে চার্লি গ্রিফিথের কাছ থেকে কোনরূপ সতকর্তামূলক সঙ্কেত ছাড়াই নিন্দনীয় পর্যায়ের রান আউটের শিকার হন। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিংরত অবস্থায় তরুণ গ্রেগ চ্যাপেলের অভিষেক সেঞ্চুরির সঙ্গী ছিলেন।

১৯৭৩-৭৪ মৌসুমের নিউজিল্যান্ড সফরে দুইটি ওডিআইয়ের প্রথমটিতে অস্ট্রেলিয়া দল সাত উইকেটে জয় পেলেও ইয়ান রেডপাথ দুই বলে শূন্য রান করেছিলেন।[২] ফলশ্রুতিতে দ্বিতীয় ওডিআইয়ে অ্যাশলে উডকককে রেডপাথের স্থলাভিষিক্ত করা হয়। ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে ইয়ান চ্যাপেল ও ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে গ্রেগ চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া দলে সহঃ অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

সাতটি সেঞ্চুরির সবগুলোই খেলোয়াড়ী জীবনের দ্বিতীয়ার্ধে পেয়েছেন। তন্মধ্যে, শেষ ১৫ টেস্টে করছিলেন পাঁচটি ও ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে মাইকেল হোল্ডিংঅ্যান্ডি রবার্টসের ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করে শেষ তিনটি করেছিলেন।[৩]

নিজস্ব সর্বোচ্চ টেস্ট রান ১৭১ করে রে ইলিংওয়ার্থের হাতে কট এন্ড বোল্ড হন। ষষ্ঠ উইকেটে তরুণ চ্যাপেল ও তিনি ২১৯ রান তোলেন। সিরিজে ৪৯.৭০ গড়ে ৪৯৭ রান পান। এ প্রসঙ্গে ইংরেজ ফাস্ট বোলার জন স্নো লিখেন যে, সকলের চেয়ে তার বিপক্ষেই বোলিং করতে পছন্দ করতাম। সাথে তিনি এ কথাও জুড়ে দেন যে, তিনি প্রকৃত ব্যাটসম্যান ছিলেন।[৪]

খেলার ধরন

স্লিপ কিংবা শর্ট লেগে দণ্ডায়মান থেকে ফিল্ডিং করেছেন। ৮৩ টেস্ট ক্যাচ নিয়েছেন তিনি। তবে তার বোলিংয়ের মান ভাল ছিল না। ১৯৬৪ সালে গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে থ্রোয়িংয়ের জন্য তাকে বল করা থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। অস্ট্রেলিয়ার সর্বশেষ টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে তিনি শৌখিন ক্রিকেটার ছিলেন। ফুটবলেও তিনি শৌখিন খেলোয়াড় ছিলেন ও শুরুর দিককার টেস্টগুলোর জন্যে তিনি ম্যাচ ফি নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।[৫] দলীয় সঙ্গীরা তাঁকে ‘গান্ধী’ নামে আখ্যায়িত করেছিল। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে ভারত সফরে স্থানীয় সমর্থকেরা তাকে এ নামকরণ করে।

অবসর

জিলংয়ে ব্যবসায় মনোনিবেশ ঘটানোর লক্ষ্যে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। ১৯৭৫ সালের অ্যাশেজ সফরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে তার অবসর ক্ষণস্থায়ী ছিল। এক মৌসুম বিরতি নেয়ার পর বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে চুক্তিবদ্ধ হন। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে ভিএফএল পার্ক ওয়াভার্লিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট খেলার প্রথমদিকে আঘাতপ্রাপ্তির ফলে তাকে দলের বাইরে অবস্থান করতে হয়। কিন্তু ক্যারি প্যাকার ঘোষণা দেন যে, রেডপাথ এ সময়ের জন্য অর্থ পাবেন। ভিক্টোরিয়ার সর্বকালের সেরা রান সংগ্রহকারীদের শীর্ষ দশে আজো অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

১৯৭৫ সালে এমবিই পদবীতে ভূষিত হন[৬] ১৯৭৬ সালে নেইল ফিলিপসনের সাথে যৌথভাবে স্মৃতিমূলক গ্রন্থ ‘অলওয়েজ রেড্ডি’ প্রকাশ করেন। খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর ভিক্টোরিয়ার কোচিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যবসায় থেকে অবসর নেয়ার পর জিলং ক্রিকেট ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী